মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারক নাথ বিশ্বাস জানান, অগ্নিদগ্ধ ছাত্রীর দাদা মো. রতন আলী বাদী হয়ে সোমবার ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৩ জনের নামে মহম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
অগ্নিদগ্ধ ওই ছাত্রী বর্তমানে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মামলার এজাহারে ওই ছাত্রীর দাদা রতন আলী বলেন, তার নাতনী কলেজ ছাত্রী আকলিমা খাতুনের (১৮) সাথে দুই বছর আগে একই গ্রামের মাসুদ মোল্যার ছেলে নাজমুল মোল্যার সাথে বিয়ে হয়। প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হলেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনি-বনা হয়নি। সাত মাস পর আকলিমা খাতুন নাজমুলকে তালাক দেয়।
এর কিছু দিন পর থেকে নাজমুল আকলিমাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতে থাকে। আকলিমা তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নাজমুল ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে আকলিমা তার পরিবারকে জানায়, এতে উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, এরই মধ্যে গত শনিবার বিকালে ওই ছাত্রী বাথরুমে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা নাজমুলের লোকজন আকলিমার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে বেঁধে এবং ডিজেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে আকলিমার শরীরে বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে, সরেজমিনে গিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।
মামলার প্রধান আসামি নাজমুল মোল্যার চাচী রত্না ও স্বজনরা জানান, নাজমুল মরতে রাজি কিন্তু ওই মেয়েকে ছাড়া বিয়ে করবে না। মেয়েও তার কাছে দুই বছরের সময় চেয়েছিল। তিন চার দিন আগে নাজমুল গ্রাম্য মাতুব্বরদের ডেকে আনে এবং ওই মেয়েকে চায়। মেয়ের পরিবার তাকে দিতে রাজি হয়নি। এদিকে মেয়েকে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য ছেলে দেখে তার পরিবার। মেয়েটিও অন্য কোথাও যাবে না বলেই আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
ওসি তারক নাথ বিশ্বাস বলেন, ‘এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। মামালার ৫ আসামিকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত চলছে।’