মৃত্যুর পরে তিনদিন কেটে গেলেও আইনি ও ময়নাতদন্ত জটিলতায় আটকে আছে এক ব্যক্তির লাশ। তাই তার শেষ ঠিকানা হয়েছে মাগুরা হাসপাতালের লাশ কাটা ঘরে। সেখানে বাবার লাশের অপেক্ষায় কাঁদছে তার ১০ বছরের সন্তান।
নিহত ব্যক্তির নাম আজিজুর রহমান (৫০)। তিনি মাগুরার সত্যজিতপুর গোয়ালবাতান গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন শিক্ষক।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মৃতের গলার মাঝ বরাবর রক্ত জমাট এবং বাম বগলের নিচে আঘাতের ক্ষত,বুক ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এছাড়াও পায়ের আঙুলে রক্ত জমাটের চিহ্ন।
মৃত আজিজুল মোল্লার ছেলে মাহিদ (১০) সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন,জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জেরে তার পিতাকে হত্যা করা হয়েছে।
আইনের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করে সে।
মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান জানান, সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিকাল ৪টা ১৭ মিনিটে মৃতের সুরতহাল প্রতিবেদনে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির নাম আজিজুর রহমান। গত ২৯ বছর আগে মাগুরা নিজনান্দয়ালি পশ্চিমপাড়া তিন শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ি করেছেন। গত ২৯ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ৭টায় আজিজুল মোল্লা তার ছেলে মাহিদকে নিয়ে নিজনান্দয়ালি পশ্চিমপাড়া মাগুরা শহরের বাড়িতে আসেন। এরপর ছেলে মাহিদকে মাদরাসায় দিয়ে নিজনান্দয়ালির বাসায় আসেন তিনি। এরপর মাদরাসা ছুটি হলেও ছেলেকে আনতে যাননি তিনি। এ সময় মাদরাসার শিক্ষক আজিজুলকে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন দিয়ে না পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় আত্মীয়-স্বজনরা শহরের বাড়িতে সন্ধান করতে এলে আজিজুলকে ঘরের মেঝোতে চটের ওপর হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার আজিজুল ইসলামকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেই থেকে আজ অব্দি সদর হাসপাতাল মর্গে পড়ে আছে মৃত আজিজুল ইসলামের লাশ।
মাগুরা পৌরসভার সাত নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাকিব আল হাসান তুহিন বলেন,আজিজুল একাই এ বাসায় থাকতেন। তার হঠাৎ মৃত্যুতে তার পরিবার শোকাহত, তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পেলে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব না। তবে আইনগত ভাবে বিষয়টি তদন্ত করছেন মাগুরা থানা পুলিশ।
তবে এ ব্যাপারে মাগুরা থানা পুলিশ জানিয়েছেন, সংবাদ পাওয়ার পর পরই মৃতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে তার মৃত্যুর কারণ। লাশ এখন মর্গে রয়েছে।