তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বর্তমান বিশ্বের যে দেশ দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে পারবে না তারা আগামী দিনে পিছিয়ে পড়বে।
রবিবার রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি) ওয়ার্ল্ড ফাইনালস’ এর ‘স্পন্সর নাইট’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জাপান কিংবা দক্ষিণ কোরিয়া খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ নয় উল্লেখ করে পলক বলেন, তারা দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তোলার কারণে বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সেই লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প পূরণের পর নতুন একটি রূপকল্প দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের ওপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সাশ্রয়ী, টেকসই ,বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। যে বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম সমস্যা সৃষ্টিকারী না হয়ে সমাধানকারী প্রজন্ম হবে। সে জন্যই দেশে একটি উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং কনটেস্ট শুরু করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আগামী ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবসে আরও ৫ হাজার ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে অফশোর ক্যাম্পাস স্থাপনের আহ্বান পলকের
আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. বিল পাউচার অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ৪৫তম আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস উদযাপন করছি। আইসিপিসি এর লক্ষ্য হল আজকের তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গীতশিল্পী ও ক্রীড়াবিদদের আবেগের পাশাপাশি কম্পিউটিংয়ের শিল্প ও বিজ্ঞানে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে অনুপ্রাণিত করা। এই শিক্ষার্থীরা ৩ লাখ ২০ হাজার আইসিপিসি সাবেক ছাত্রদের সঙ্গে সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ডেভেলপার, বিজ্ঞানী, অধ্যাপক ও প্রযুক্তি নেতা হিসেবে যোগদান করবে। যারা আজ ও আগামী প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধি ও শক্তি যোগাবে।’
সবশেষে, পলক আইসিপিসি ঢাকার চূড়ান্ত পর্বে পৃষ্ঠপোষকতার জন্য কর্পোরেট প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ ও বাংলাদেশ কম্পিউার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার।
অনুষ্ঠানে আইসিপিসি কনটেস্টটি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রেজেন্টেশন আকারে উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল কবির। তিনি জানান, আগামী ৬-১১ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ঢাকায় বসবে এবারের আসর। এই আসরে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্বের ৭৫ টিরও বেশি দেশ থেকে ১৪০০ বিদেশি অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যান্যের মধ্যে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করা হয় বাংলাদেশে আইসিপিসি’র প্রবর্তক খ্যাতিমান প্রকৌশলী প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরীকে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর সহযোগিতায় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ‘ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’ (আইসিপিসি) ফাইনালস বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:‘সাইবার সেন্টার ফর এক্সিলেন্স’ উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ: পলক
গণহত্যার ৫ম বার্ষিকী উপলক্ষে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ