নিহত ব্যক্তির বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর এলাকায়। তার বাবার নাম ফিটু মিয়া।
বুধবার সকালে নগরীর বিলশিমলা বন্ধগেট এলাকায় তিনি আত্মহত্যা করেন।
লাশ উদ্ধারের পর এমরুলের পকেট থেকে সুইসাইড নোটও পেয়েছে পুলিশ।
এতে এমরুল লিখেছেন, ‘জালাল, কালাম ও রানা আমার হাত ও পা ভেঙেছে। এ কষ্টে আমি জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিলাম।'
তার বাড়ির সামনের রাস্তা দুইবার বন্ধ করে দেয়া হয় বলে অভিযোগও লিখে যান তিনি।
এছাড়া মৃত্যুর পর কোন মোবাইল নম্বরে ফোন করে খবর দেয়া যাবে এবং তার মরদেহ কোন কবরস্থানে দাফন করা হবে সেটিও ওই চিরকুটে লেখা পাওয়া যায়।
দুটি চিরকুটের একটিতে এমরুল লিখেছেন, ‘আমার জীবনে আমার আপনজন আমার বেটি (মেয়ে) ও স্ত্রী। তিনজন আমার প্রিয়। আমাকে আর ভালো লাগছে না। আমার লেখা কাগজ দুইটা আমার স্ত্রীকে দিবেন। কাগজের ফটোকপি পুলিশকে দিবেন। কাগজের মেন (মূল) কপি দুইটা আমার স্ত্রীকে দিবেন।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এমরুল ক্র্যাচে ভর দিয়ে রেললাইনের পাশ ধরে হাঁটছিলেন। ওই সময় রাজশাহী থেকে রহনপুরগামী একটি কমিউটার ট্রেন আসে। ট্রেনটি খুব কাছে চলে এলেই এমরুল রেললাইনে মাথা পেতে দেন। এতে তার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
নিহত এমরুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, গত সোমবার চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে গিয়ে তারা নগরীর তেরোখাদিয়া এলাকায় তার বোনের বাড়িতে ওঠেন। সকালে এমরুল তাকে জানান তিনি চা খেতে বের হচ্ছেন। এরপর গিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। পরে পুলিশ চিরকুটে থাকা তার বোনের নম্বরে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করে।
আয়েশা আরও জানান, প্রায় পাঁচ মাস আগে জালাল ও কালামেরা তাদের জমি দখল করে বাড়ি করেছেন। এমরুল বাধা দিতে গেলে পিটিয়ে তার হাত ও পা ভেঙে দেয়া হয়। তার স্বামীকে ক্র্যাচে ভর দিয়ে চলতে হতো। জমি দখলের বিষয়ে মামলা করলেও হাত-পা ভাঙার কারণে তিনি চলাচল করতে পারতেন না। সে কারণে জমিও উদ্ধার করতে পারেননি। সেই ক্ষোভে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান জানান, রেলওয়ে থানা পুলিশ এমরুলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে আইননুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।