করোনা মহামারির কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে বিদ্যালয় খোলা হলেও শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। তাদের পাঠদান হয়েছে রাস্তায় পাটি বিছিয়ে।
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ১৩০নং দক্ষিণ ভুতেরদিয়া নব আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে ডুবে থাকায় শিক্ষার্থীদের রবিবার এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রোমান্স আহমেদ।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর কবির বলেন, দক্ষিণ ভুতের দিয়া এলাকাটি অত্যন্ত নিচু। পানিতে ডুবে থাকে। খবর পেয়ে আমি সেখানে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাকে পরিদর্শনের জন্য পাঠিয়েছি। আজ বিদ্যালয় চালুর দিনে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে উঁচু একটি স্থানে ক্লাস নেয়া হয়েছে। তবে বিদ্যালয় ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ হওয়ায় মন্ত্রণালয়ে ভবন পুনরায় নির্মাণের জন্য আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তাছাড়া ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, পরিবেশ প্রতিকূল হলে তারা আপতত বিদ্যালয় বন্ধ রাখবে।
আরও পড়ুন: প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরল শিক্ষার্থীরা
এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম খান বলেন, অবহেলিত চর এলাকার শিশুদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সীমাবদ্ধতা অনেক। বিদ্যালয় ভবন নেই। শৌচাগার নেই। শিক্ষার্থীদের আসতে যেতে কষ্ট হয়। তারপরও আজ সরকার নির্ধারিত দিনে স্কুলে ক্লাস নিয়েছি। যেহেতু সন্ধ্যা নদী বিধৌত এলাকা; তাই অনেক অঞ্চলই পানিতে নিমজ্জিত। বাঁশ-কাঠের তৈরি আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি পানিতে ডুবে থাকায় পাটি বিছিয়ে রাস্তায় ক্লাস নিয়েছি। তারপরও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিমুখ করিনি।
সেলিম খান আরও বলেন, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে শতাধিক শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত দক্ষিণ ভূতেরদিয়া নতুন চর এলাকায় সন্ধ্যা নদীর কোল ঘেঁষে ৭৪ শতাংশ জমির ওপর ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা বিদ্যালয়টি। ২০১৩ সালের ১ জুলাই ২য় ধাপে জাতীয় করণের পর বিদ্যালয়টির নাম দেয়া হয় ১৩০ নং দক্ষিণ ভূতেরদিয়া নব আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু জাতীয় করণের আট বছর পার হলেও এখনও বিদ্যালয়টির পাকা কোন একাডেমিক ভবন নেই।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনিয়ম দেখলে কঠোর ব্যবস্থা: শিক্ষামন্ত্রী