মঙ্গলবার রাতে রায়হানের মা সালমা বেগম ও স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নির সাথে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা অপরাধী তারা অপরাধীই। তারা কোন বাহিনী, কোন পেশা তা কোনো ম্যাটার নয়। অপরাধী যেই হোক সে অপরাধী। এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে এসএমপি কমিশনার বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সকল বাহিনীই পলাতক রায়হানকে ধরার চেষ্টা করছে। এছাড়া আকবরকে পালাতে সহায়তাকারীদের চিহ্নিত করে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেট মেয়রের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন রায়হানের মা
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ভূমিকা কেন বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে? এ নিয়ে তার পরিকল্পনা কি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আজ এসেছি। জয়েন করব। এসব তথ্য আমার কাছেও এসেছে। আমি তা ভেরিফাই করে দেখব।’
‘এছাড়া কিছু এসাইনমেন্টও (পরিকল্পনা) আমার রয়েছে। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কিছু ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশনা) রয়েছে। এসব ইনস্ট্রাকশন আমি পালন করব। আমি প্লান, প্লেসমেন্ট এবং কন্ট্রোল নীতিতে বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি সকল কিছু গুছানো সম্ভব হবে,’ বলেন তিনি।
পলাতক এসআই আকবরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পলাতক এসআই আকবরকে গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল ইউনিট কাজ করছে। পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে কেউ আকবরের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেন বা ধরতে পারবেন। আর যদি আকবরকে জনসাধারণের কেউ আটক করেন তাহলে দ্রুত আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সিলেট এসে পৌঁছান নতুন কমিশনার। বিমানবন্দরে এসএমপির কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন কমিশনার সরাসরি দরগাহে হযরত শাহজালাল (র.) মাজার জিয়ারত করেন। এরপর তিনি পুলিশি নির্যাতনে নিহত রায়হানের বাড়িতে যান এবং সেখানে তার মা সালমা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করেন।
রায়হান হত্যা নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত ২২ অক্টোবর কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা হয়। গোলাম কিবরিয়ার স্থলে সিলেটের নতুন কমিশনার হিসাবে নিশারুল আরিফকে নিয়োগ দেয়া হয়।
গত ১১ অক্টোবর সিলেটেোর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে খুন হন রায়হান আহমদ (৩৪)। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির দুই সদস্য টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশীদকে গ্রেপ্তারর করে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। এছাড়া এসআই আকবরসহ ৫ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন রায়হানকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বহিস্কৃত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া।
পুলিশ কর্মকর্তা নিশারুল আরিফ এসপিবিএন-এর উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি থাকাকালীন সময়ে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান তিনি। এরপর ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিশারুল আরিফকে এসপিবিএনের উপ-মহাপরিদর্শক হিসেবে পদায়ন করা হয়।