গত ১১ দিনে জেলায় এক হাজার ৯৮০ জেলেকে আটক, প্রায় ৩৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার এবং তিন শতাধিক ট্রলার ও ২০টি স্পিডবোট জব্দ করেছে প্রশাসন।
মা ইলিশ রক্ষায় জাজিরা উপজেলার বিলাশপুরে পদ্মা নদীর তীরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র্যাব) অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করার পরেও সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু জেলেরা দিনে-রাতে নদীতে মাছ শিকার করে যাচ্ছেন।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন থাকবে। মৌসুমের ২২ দিনই নদীতে প্রশাসনের অভিযান চলবে। তারা প্রথম দিন থেকেই নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী জেলেদের আটক করছে।
জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, র্যাব ও প্রশাসনের অন্যান্য শাখা গত ১১ দিনে যৌথভাবে ১১২টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে ৮৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৬৮৯ জনকে এক বছর করে জেল এবং ১ হাজার ২২৮ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া, ৩৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মাছ ধরার ৩৫০টি ট্রলার ও ১৫টি স্পিডবোট আটক করে তা ইঞ্জিনসহ ধ্বংস করা হয়েছে। প্রায় ২৫০০ কেজি মা ইলিশ আটক করে তা এতিমখানা ও গরিব লোকদের মাঝে বিতরণ করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
নিষেধাজ্ঞার ১১তম দিন আজ শনিবার জাজিরা উপজেলায় আটক ৬৮ জেলের ৪৯ জনকে এক বছর করে কারদণ্ড এবং ১৯ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা দেয়া হয়। সেই সাথে ১৮টি ট্রলার এবং ৬৫ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়।
নড়িয়া উপজেলায় ৭৩ জনকে আটক করে এদের মধ্য ৬৪ জনকে এক বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আর ১৮ বছরের নিচে বয়স হওয়ায় নয়জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া, একটি স্পিডবোট, দুটি ট্রলার ও ৩০ হাজার মিটার জাল ধ্বংস করা হয়।
ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৫০ জনকে আটক করে সাজা এবং একটি স্পিডবোট আটক করা হয়। গোসাইরহাট উপজেলায় জব্দ করা হয় ৪০ হাজার মিটার জাল এবং ৪০ কেজি মা ইলিশ। শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘জেলার জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার ১৯ হাজার জেলেকে ২০ কেজি করে মোট ৩৮০ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দেয়া হয়েছে। তারপরও অনেক জেলে আইন অমান্য করে মাছ ধরতে নদীতে নামছেন। শুধু শরীয়তপুর জেলারই নয়, বাইরের জেলার অনেক জেলেকেও আমাদের জেলার নৌ সীমানায় প্রবেশ করে মা ইলিশ শিকারের সময় আটক করা হয়েছে।’
প্রশাসনের সহায়তায় বাকি দিনগুলোতেও অভিযান অব্যাহত রাখা হবে জানান তিনি।