ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কার্ড ছাড়াই টিসিবির পণ্য জোর করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) শৈলকূপার কাঁচেরকোল ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির পণ্য বিক্রি করার সময় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএনপি নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খবরের সত্যতা পান। প্রকাশ্যে টিসিবির পণ্য ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে কাঁচেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে টিসিবির পণ্য বিতরণের সময় ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক জুলিয়াস লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক ১০০টি কার্ডের বিপরীতে টিসিবির পণ্য নিয়ে যান। ডিলারের লোকজন বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাদের মারধরের হুমকি দেন।
শৈলকুপা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউনিয়নের প্রশাসক মো. শরীফ উদ্দীন জানান, টিসিবির ডিলারের কাছ থেকে যুবদলের আহ্বায়ক জুলিয়াসের নেতৃত্বে অন্তত ১০০টি টিসিবির পণ্য নিয়ে গেছে। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত টিসিবির মাল ফেরৎ কিংবা টাকাও দেয়নি। পরে তিনি ইউএনওকে ঘটনাটি অবহিত করেন বলে জানান।
টিসিবির ডিলার মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষ জানায়, হুট করেই জুলিয়াসের লোকজন এসে ১০০টি কার্ডের পণ্য জোর করে নিয়ে যায়। বিষয়টি তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১০০টি কার্ডের পণ্য তিনি কিনে বৃহস্পতিবার বিতরণ করবেন। তবে যুবদল নেতা জুলিয়াস ১০০টি পণ্যের দাম পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু এখনো টাকা পায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা জুলিয়াস বলেন, ঘটনাস্থলে সিসি টিভি ক্যামেরা আছে। ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করুন। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। কে বা কারা টিসিবির পণ্য নিয়ে গেছে আমি কিছুই জানি না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসানোর জন্য এরকম অভিযোগ তুলেছে বলে তিনি দাবি করেন।
আরও পড়ুন: পতেঙ্গায় মব তৈরি করে পুলিশকে মারধরের ঘটনায় জড়িত সবাই আটক
কাঁচেরকোল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল উদ্দীন বলেন, ঘটনা শোনার পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। জুলিয়াস মালগুলো ফেরত দিতে চেয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ফেরত দিয়েছে কিনা জানিনা। ব্যক্তির দায় দল বহন করবে না বলেও জানান তিনি।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান জানান, টিসিবির পণ্য ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে থানায় এখনো পর্যন্ত টিসিবির ডিলার বা অন্য কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রশাসনকে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এখনো কেন আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে না তা আমি খতিয়ে দেখছি।