বুধবার দুপুর দেড়টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে তুলে পিবিআই। এসময় তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গত রবিবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে তাকে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে তুলে তদন্ত কর্মকর্তা মুহিদুল ইসলাম পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২০ অক্টোবর রায়হান হত্যাকাণ্ডে প্রথম গ্রেপ্তার কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। এদিকে রায়হান হত্যায় অপর গ্রেপ্তার কনস্টেবল হারুন রশিদও পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর ভোরে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩৪) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার অভিযোগ তুলেন তার স্বজনরা। নিহত ওই যুবক সিলেটের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করেছে।
পরে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠিত করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যু ও নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতাও পায় তদন্ত কমিটি।
এরপর বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। অন্য তিনজন হলেন- কনস্টেবল হারুনুর রশীদ, কনস্টেবল তৌওহিদ মিয়া ও কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস।
একই সাথে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারো হলেন- এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন।
অন্যদিকে, আকবরকে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গায়েব করার অপরাধে ফাঁড়ির টু-আইসি হাসান উদ্দিনকে বহিষ্কার করে সিলেটের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
ঘটনার পর ১৩ অক্টোবর থেকে লাপাত্তা হন বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া।
এ ঘটনায় গত ১১ অক্টোবর দিবাগত রাতে নিহত রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজন আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর গত ১৪ অক্টোবর থেকে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। সেদিন তদন্ত দল বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ি, কাষ্টঘর ও রায়হানের পরিবারের সাথে কথা বলে।
আর গত ১৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ফের ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন বিকালে আবারও রায়হানের মৃতদেহ দাফন করা হয়।