ঘটনার দায় স্বীকার করে শনিবার সন্দেহভাজন আসামি আমির হোসেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে শনিবার রাতে পুলিশ সুপার মো. উল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য জানান।
লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৯ মার্চ নিহত অঞ্জলি মালাকারের স্বামী সনজিৎ বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর কবিরের উপর তদন্তের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তদন্তকালে প্রকাশ পায় অঞ্জলি মালাকারের স্বামী ব্যবসায়ী সনজিৎ ঘটনার সময়ে ব্যবসায়ীক কাজে সুনামগঞ্জে অবস্থান করছিলেন। ঘরে টাকা আছে জেনে বুধবার দিবাগত রাতে একই ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া অভিযুক্ত আসামি আমির হোসেন তার অপর দুই সহযোগিসহ ডাকাতি করার উদ্দেশে ভবনের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেন।
আরও পড়ুন: ‘গালাগাল’ করায় সাবেক চেয়ারম্যানকে খুন,গৃহকর্মীর স্বীকারোক্তি
তিনি জানান, রাত ৩টায় আমির হোসেন তার সহযোগিরাসহ ওই ভবনের তৃতীয় তলায় অঞ্জলী মালাকারের দরজায় গিয়ে ডাক দিলে তিনি দরজা খুলে দেন। আসামিরা ঘরে ঢুকে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ সময় মেয়ে পুজা ঘুম থেকে উঠে কান্না করতে থাকলে তাকেও গলা কেটে হত্যা করে। পরে তারা ঘরে থাকা এক লাখ ৯০ হাজার টাকা, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। আমির হোসেনকে যাতে সন্দেহ না করা হয় সে জন্য তিনি তার বাম হাত জখম করে এবং ডাকাতরা তাকে মেরে বাড়ির পাশের একটি জমিতে ফেলে রেখে গেছে বিশ্বাস করানোর জন্য অজ্ঞান হওয়ার ভান করে জমিতে পড়ে থাকেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠান।
আরও পড়ুন: রংপুরে মেয়েকে জবাই করে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
মো. উল্লাহ জানান, আসামি আমির হোসেনের স্বীকারোক্তি মতে ঘটনার সাথে জড়িত মনির মিয়াকে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আসামিদের দেখানো ঘটনাস্থলের পাশে একটি ডোবা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা, লুন্ঠিত মোবাইল ফোন ও আসামির ঘর হতে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়। অপর সহযোগিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ও লেভেল শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’: মামলায় আসামির স্বীকারোক্তি
উল্লেখ্য, গত বুধবার দিবাগত রাতে বাহুবল উপজেলার দিগম্বর বাজারে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ব্যবসায়ী সনজিতের স্ত্রী অঞ্জলি ও তাদের আট বছরের মেয়ে পূজাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।