গত মঙ্গলবার দুই শিশুর কান্নার এমন দৃশ্য রাস্তার ওপার থেকে প্রত্যক্ষ করেন কে এম সাদ্দাম হোসাইন নামে স্থানীয় এক তরুণ। বাচ্চাদের কাঁদো কাঁদো মুখ দেখে এই তরুণের বুকের ভেতরটা নাড়া দেয়ায় রাস্তা পার হয়ে দ্রুত বাচ্চাদের কাছে পৌঁছে যান তিনি।
বাচ্চাদের কাছে গিয়ে কান্নার কারণ জানতে চাইলে তারা বলে, ‘বাড়িতে যামু, মা'র কাছে যামু’। নাম জিজ্ঞাসা করলে জবাব দেয় সামি ও সাজিদ, তারা আপন দুই ভাই।
বাচ্চা দুটোর কথা শুনে তরুণ সাদ্দাম বুঝতে পারেন তারা পথ হারিয়ে ফেলেছেন। পরবর্তীতে তিনি বাচ্চা দুটোকে পাশের দোকানে নিয়ে যেয়ে খাবার কিনে দিতে চান। কিন্তু বাচ্চা দুটো কিছুই খেতে না পেয়ে বাড়ি যাবো বলতে থাকে এবং কান্না করতে থাকে।
বাচ্চাদের কাছে তাদের বাসা বা ঠিকানা জানতে না পেরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন সাদ্দাম। সেখান থেকে বাচ্চাদের দেখেশুনে রাখার পরামর্শ দিয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই সোহাগ মল্লিকের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয় ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে এসআই সোহাগ মল্লিক ফোর্সসহ উক্ত স্থানে এসে বাচ্চাদের সাথে কথা বলেন।
সাদ্দাম বলেন, ‘বাচ্চাদের গায়ে মাদরাসার পোশাক দেখে অনুমান করে আমরা চাঁদপুর পৌরসভাস্থ ১৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ তরপুরচন্ডী চাঁদপুর দারুস সুন্নাত দিনীয়া মাদরাসায় যাই। সেখানকার শিক্ষকরা নিশ্চিত করেন, দুই শিশু তাদের মাদরাসার নতুন ছাত্র। মাত্র একদিন আগে ভর্তি হয়েছে।’
বাচ্চা দুটোকে স্থানীয় অভিভাবকদের কাছে তুলে দেয়ার পর সস্তি প্রকাশ করে সাদ্দাম বলেন, ‘মনে হলো বুকের ভেতর থেকে যেন ভারী একটি পাথর সরে গেলো, দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শান্তির নিঃশ্বাস নিলাম।’
পরবর্তীতে মাদারাসা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই দুই শিশুর বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার তুলপাই এলাকায়। তাদের বাবার নাম হুয়ায়ুন সরকার এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম।