রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। তবে, গত পাঁচদিনে ধরে হাসপাতালে থাকলেও স্বজনদের কেউ তাকে দেখতে আসেনি।
জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে হারুন অর রশিদের মেয়ে ইতি খানমের সাথে একই গ্রামের মামাতো ভাই তিতাস কাজীর সাথে প্রায় দুই বছর আগে বিয়ে হয়। তিতাস কাজী সিরাজগঞ্জে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন।
এর আগে তিতাস কাজী তিনটি বিয়ে করেছিলেন। নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যায় আবং অপর স্ত্রী মারা যায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর ধরে ইতিকে তার স্বামী প্রায়ই নির্যাতন করে। গত ১ জুন তালাক দেয়ার জন্য তার স্বামী বাড়িতে ম্যারেজ রেজিষ্ট্রারকে ডেকে নেয়। তালাকে স্বাক্ষর না করায় সারাদিন মারধর করে বিকালে বাড়ি থেকে বের করে দিলে পার্শ্ববর্তী আতশপাড়া নামক স্থানে পৌচ্ছে জ্ঞান হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রভাবশালী হওয়ায় দুই বছর আগে জোর করে তাকে বিয়ে করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে জানালে লোহাগড়া থানা পুলিশ সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ইতির পিতা হারুন অর রশিদ জানান, তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুবই খারাপ। হাসপাতালে দেখতে গেলে এবং খোঁজ-খবর নিলে আমাদের ওপর চাপ দেবে যা সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই মেয়েটির খোঁজ নিতে যায়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইতি খানম বলেন, ‘আমি এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার বাবার বাড়ি থেকে তাকে তালাক দিতে বলে। আমি এতে রাজি না হওয়ায় বাবার বাড়ি থেকে আমার খোঁজ নিচ্ছে না। শ্বশুর বাড়ি থেকেও তালাক দিতে চায়। কিন্তু আমি স্বামীর সংসার করতে চাই।’
হাসপাতালে আসার পর কোনো আত্মীয়-স্বজন খোঁজ নেয়নি অভিযোগ করে অসহায় এ নারী প্রশ্নে রেখে বলেন, ‘আমি এখন কোথায় আশ্রয় পাবো?’
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্বামী তিতাস কাজীর মুঠোফোন কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘তাকে (ইতি খানম) আমরা হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এ ঘটনার পর তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন পালিয়ে আছে।’