উৎপাদন বন্ধ
গ্যাস সংকট: ৪ সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ
চট্টগ্রামে আবাসিক গ্যাস সংকট কিছুটা কমলেও শিল্প কারখানায় গ্যাস সংকট এখনো কাটেনি।
গত ৯ দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত বৃহৎ সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) সহ চারটি সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
অন্য তিনটি সার কারখানা হলো- কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো), সিইউএফএল এর ডিএপি-১ ও ডিএপি-২ ইউনিট।
গ্যাস সংকটের পাশাপাশি কারখানাগুলোয় চলমান কারিগরি সমস্যাকে উৎপাদন বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।
জানা গেছে, গত ১৯ জানুয়ারি সকাল থেকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) কারিগরি ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। দুই দিন পর আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও শিল্প কারখানায় গ্যাস সংকট থেকেই যায়। গ্যাসের চাপ পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভারী শিল্প কারখানাগুলোকে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ফলে গত ৯ দিন ধরে চট্টগ্রামের বড় বড় শিল্প কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: তীব্র গ্যাস সংকটে চট্টগ্রাম নগরবাসী
এদিকে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হলেই আবার কারখানা চালু হবে বলে জানান, সিইউএফএলের কর্মকর্তারা।
সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে গত ১৯ জানুয়ারি রাত থেকেই সিইউএফএল কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধের আগ পর্যন্ত সিইউএফএল থেকে প্রতিদিন ১২০০ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হতো।
দেশে সার উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখে কাফকো ও সিইউএফএল।
কেবলমাত্র কাফকো থেকেই বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন সার দেশের বিভিন্ন গুদামে পাঠানো হয়। দেশে মোট ২৭ লাখ টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ টন দেশীয় কারখানাগুলো উৎপাদন করে। বাকি ১৭ লাখ টন কাফকো ও বিদেশ থেকে আমদানি করে।
তবে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এবং কারখানার যন্ত্রপাতি মেরামতের কাজ শেষ হলে- পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই কর্মকর্তা।
গ্যাস বিপণনকারী সংস্থা কর্ণফুলী ডিস্ট্রিবিউশন (কেজিডিসিএল) সূত্র বলছে, প্রথমে কারিগরি সমস্যার কারণে চট্টগ্রামের কাফকো ও সিইউএফএল এর কারখানাগুলো বন্ধ রাখা হয়, পরে গ্যাস সংকটে ব্যাহত হয় উৎপাদন। এরপরে গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়ার পরে, আবারও কারিগরি সমস্যায় বন্ধ হয় উৎপাদন।
চট্টগ্রামে মোট গ্যাসের চাহিদা ৩০ থেকে ৩২ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে শিল্প কারখানায় দৈনিক চাহিদা ৮ থেকে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের।
এর মধ্যে চাহিদার দুই–তৃতীয়াংশ পরিমাণ গ্যাসও পাচ্ছে না কারখানাগুলো।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে গ্যাস সংকট পুঁজি করে সিলিন্ডার ও বৈদ্যুতিক চুলার দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিরামিকস ছাড়া চট্টগ্রামে নিবন্ধন করা কারখানা আছে ৪ হাজার ৯৪৯টি। এর মধ্যে ১ হাজার ২৪টি পোশাক কারখানা, বাকি ৩ হাজার ৯২৫টি নন-আরএমজি কারখানা।
আর ছোট-বড় মিলিয়ে চট্টগ্রামে ইস্পাত কারখানা রয়েছে ২৯টি। অন্যদিকে সিমেন্ট কারখানা আছে ৮টি। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এসব কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার লোকসান গুনছেন কারখানা মালিকরা। এতে পিছিয়ে পড়ছে চট্টগ্রামের শিল্প খাত।
দেশের অন্য অঞ্চলে নিজস্ব গ্যাসকূপ থেকে সরবরাহ দেওয়ায় সেখানে গ্যাসের সংকট খুব বেশি নেই। এলএনজি টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। তাই এলএনজি টার্মিনালে সমস্যা হলেই চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। আর তাতে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়।
কেজিডিসিএল সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ১ হাজার ২০০-এর বেশি শিল্পগ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে বিএসআরএম, জিপিএইচ ইস্পাতসহ বড় বড় কারখানা আছে ১৫ থেকে ২০ট। এর বাইরে সিইউএফএল, কাফকো, ডিএপি সার কারখানা ও রাউজান ও শিকলবাহায় দুইটি করে চারটি পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে।
সরকারি এই সাতটি প্রতিষ্ঠানসহ সবগুলো শিল্প কারখনা ও আবাসিক গ্রাহককের গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ছাড়া বেসরকারি শিল্প কারখানা ও আবাসিক গ্রাহকদের চাহিদা প্রতিদিন প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। মহেশখালীতে স্থাপন করা দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকেই গ্রাহকদের এই গ্যাস সরবরাহ করা হয়।
এরই মধ্যে শনিবার ভোর থেকে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানির (কাফকো) উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা। বাকি ৩টি প্রতিষ্ঠানের সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: কনকনে শীতেও তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যেই চলছে লোডশেডিং
গ্যাস নিয়ে শিল্প কারখানাগুলোর টালমাটাল অবস্থা হলেও এ নিয়ে অন্য কথা বললেন বিপণনকারী সংস্থা কর্ণফুলী ডিস্ট্রিবিউশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, গ্যাসের প্রেশারের এখন কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সাধারণ যেসব গ্রাহক রয়েছে- শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক ও বাসাবাড়ি, তাদের স্বাভাবিকভাবেই গ্যাসের সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে।
তবে যারা বাল্ক গ্রাহক, যেমন বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সার কারখানা, সেগুলোর মধ্যে কাফকোকে স্বল্প পরিমাণ করে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। কারণ উপর থেকে নির্দেশনা এসেছে।
৯ মাস আগে
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটি, উৎপাদন বন্ধ
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাত থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু
এর আগে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়েছিল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এদিকে হঠাৎ করে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর।
এছাড়া খুলনাসহ এই অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারও উৎপাদন শুরু করা হবে।
কয়লা সংকট নেই দাবি করে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কেন্দ্রে পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রয়েছে। বেশকিছু কয়লা আমদানি করা হয়েছে। যা এখন পথে রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমুদ্র পথে বিদ্যুৎকেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলায় আরও এক জাহাজ
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লাবোঝাই জাহাজ নদীর চরে আটকা
১ বছর আগে
আখের অভাবে জয়পুরহাট চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ
দেশের বৃহত্তম চিনিকল-জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেডের চলতি ২০২২-২ মৌসুমের আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
মাড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আখ না পাওয়ায় ধার্যকৃত সময়ের আগেই বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে গেল চিনিকলটি।
ফলে ব্যাহত হয়েছে চিনি উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা। তাই এবারও জয়পুরহাট সুগার মিলকে বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাট সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু
জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যানুসারে, চলতি মৌসুমে জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেডে ৩০ হাজার ১০০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে এক হাজার ৮শ' ৬৬ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
এবার আখ থেকে চিনি আহরণের হার (রিকোভারি) ধরা হয়েছিল ছয় দশমিক ২০ শতাংশ। আখ মাড়াইয়ের জন্য মোট ২৫ কর্মদিবস চিনিকলটি চালু রাখার লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রয়োজনীয় আখ সরবরাহ না পাওয়ার কারণে মিলটির (চিনিকলের) কোন লক্ষ্যমাত্রাই অর্জিত হয়নি।
আখের অভাবজনিত কারণে ১৯ কর্মদিবসে মোট ২৩ হাজার ১৬৯ দশমিক ১৬ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১২শ’ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬শ’ ৬৬ মেট্রিক টন কম।
এবার আখ থেকে চিনি আহরণের হার কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক দশমিক ১২ শতাংশ কম, মাত্র পাঁচ দশমিক ০৮ শতাংশ পাওয়া গেছে।
ফলে সঙ্গত কারণে এবারও লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে বৃহৎ এ চিনিকলটিকে।
জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখলাছুর রহমান জানান, জয়পুরহাট চিনিকলের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার বাইরের অন্য চিনিকল (মিল) এলাকার আখ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাড়াইয়ের জন্য এ চিনিকলে ঠিকমত সরবরাহ না পাওয়ায় কার্যত আখ সংকটের কবলে পড়ে চিনিকলের আখ মাড়াই নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ হয়েছে।
এছাড়া আখের গুড়ের চেয়ে চিনির দাম কম হওয়ায় এবং আখের চেয়ে অন্যান্য ফসলের চাষ বেশি লাভজনক হওয়াসহ নানা কারণে ২০ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনোক্ষম জয়পুরহাট চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল।
গত ২০২১-২২ মৌসুমের ৬৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর এ চিনিকলে চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হয়েছিল।
উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় আখের অভাবে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ক্রমাগত ব্যাহত হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের এ বৃহৎ চিনি শিল্প ইউনিটটিকে প্রতি মৌসুমেই বিশাল অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৃহত্তম চিনিকল জয়পুরহাট সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু
চিনিকল রক্ষায় জাতীয় সমাবেশ ২৭ ফেব্রুয়ারি
১ বছর আগে
পানি স্বল্পতায় কাপ্তাই বিদ্যুত কেন্দ্রের দুটি জেনারেটরে উৎপাদন বন্ধ
চরম পানি সঙ্কটে পড়েছে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুত কেন্দ্র। বৃহত্তর কাপ্তাই হ্রদে প্রতিদিনই পানি কমছে। তার সাথে কমছে বিদ্যুত উৎপাদনের পরিমানও।
৪ বছর আগে
যশোরে মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন বন্ধ
করোনাভাইরাসের কারণে আগামী ২৮ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হ্যাচারিতে মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যশোর জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতি।
৪ বছর আগে