জিডিপি
জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছর: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, সব ধরনের 'বিচক্ষণ নীতি ব্যবস্থা’ অনুসরণ আগামী অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মধ্যমেয়াদে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তার ফলে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছেন তারা।
জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
চলতি বছরের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রথম জাতীয় বাজেট।
আরও পড়ুন: দেশের সর্বোচ্চ বাজেট উপস্থাপন করতে পেরে গর্বিত অর্থমন্ত্রী
মাহমুদ আলী তার প্রথম বাজেটে বলেন, বিচক্ষণ ও যথাযথ নীতিগত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি তার গতি বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, যা বিশ্বের সব দেশের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ।
কোভিড-১৯ মহামারির ঠিক এক বছর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিল দেশ ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যথাক্রমে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ (অস্থায়ী) প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়, যা আমাদের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তির প্রমাণ।
ভবিষ্যতে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে সব ধরনের যৌক্তিক সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
মাহমুদ আলী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়ানোর লক্ষ্যে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে।
ঋণের সরবরাহ এবং ব্যাংকার ও গ্রাহকের মধ্যে সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে ঋণের চাহিদা ও সুদের হার নির্ধারিত হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি সফল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
রাজস্ব খাতেও সহায়ক নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সৃষ্ট প্রতিকূলতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার লক্ষ্যে ফ্যামিলি কার্ড ও ওএমএস কর্মসূচির মতো সরকারি সহায়তা জোরদার করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
৫ মাস আগে
২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিবিবরণী (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শেষ নাগাদ জিডিপির ১১ দশমিক ২ শতাংশ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
এতে বলা হয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ফলাফলের উন্নয়নে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে একটি পরিমিত বাজেট ঘাটতি ( সাধারণত জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ ) বজায় রেখে একটি সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব অবস্থান বজায় রেখেছে।
এছাড়া বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত তার সমকক্ষদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এজন্য সরকার রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতির জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে।
তবুও এটি বলেছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধির দ্রুত গতি অনুপাত বাড়ানোকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।
যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে করের পরিমাণ ও করদাতার সংখ্যা উভয়ই বৃদ্ধি করে রাজস্ব আদায় ধীরে ধীরে বাড়বে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি ব্যয় নীতিমালার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা এবং সম্পদের দক্ষ পুনর্বণ্টন নিশ্চিত করার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং এভাবেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জীবনযাত্রার মান হ্রাস থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি জীবন বাঁচানোর দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করে।
এতে বলা হয়, এ জন্য সরকার কর্মসংস্থান বজায় রাখা, আয় সহায়তা প্রদান, সরবরাহ শৃঙ্খল সচল রাখা, গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুনরায় সক্রিয় করা এবং খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।
এজন্য সরকার ব্যয় বৃদ্ধি করে এবং ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে ব্যাপক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
প্রণোদনা প্রচেষ্টা ভাল কাজ করেছিল এবং ফলস্বরূপ অর্থনীতি দ্রুত উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে এসেছিল যখন অন্যান্য দেশগুলো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল।
যাইহোক, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আবারও যথেষ্ট ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য সরকার অভ্যন্তরীণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারি ব্যয়কে যুক্তিসঙ্গত করার নীতি অনুসরণ করছে।
কল্যাণ ও উন্নয়ন সর্বাধিক করার জন্য অর্থনীতি পরিচালনার সময় সরকার মধ্যমেয়াদে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ বাজেট ঘাটতি বজায় রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে, রাজস্ব সংগ্রহ এবং বাজেট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশে জিডিপির তুলনায় সরকারি ব্যয়ের আকার কম ছিল।
পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারি ব্যয় বাড়ানোর জন্য কিছু কৌশল গ্রহণ করেছে সরকার।
আরও পড়ুন: আইএমএফকে ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আহ্বান বাংলাদেশের
২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে জিডিপির প্রায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশ।
তাছাড়া, সরকার এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট (পিএফএম) সংস্কার প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে।
সামগ্রিক জনসেবা প্রদান, বাজেট বরাদ্দের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বাস্তবায়নের রিয়েল-টাইম মনিটরিং এবং পুনরাবৃত্ত ও মূলধন ব্যয়ের সংহতকরণের জন্য পিএফএম অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২৩) বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে এবং সংশোধিত পিএফএম সংস্কার কর্মপরিকল্পনা (২০২৪-২০২৮) সম্প্রতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
পিএফএম সংস্কারের আওতায় পেনশন অটোমেশন এবং ই-চালান অটোমেশন সিস্টেমগুলো আইবিএএস ++ সফ্টওয়্যারের সাহায্যে চালু করা হয়েছে।
এই ব্যবস্থা বাজেট ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সহজীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। একই সঙ্গে আইবিএএস++ সফটওয়্যারের সাহায্যে গভর্নমেন্ট টু পারসন (জিটুপি) পেমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে, যা সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় আরও স্বচ্ছতা আনবে।
এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সব প্রতিষ্ঠানের সব সরকারি বরাদ্দ মধ্যমেয়াদে আইবিএএস++ পদ্ধতির মাধ্যমে ট্রেজারি সিঙ্গেল অ্যাকাউন্টের (টিএসএ) আওতায় আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
১ বছর আগে
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২.১ শতাংশ বাড়াতে সহায়তা করবে বিআরআই: প্রতিবেদন
বাংলাদেশের প্রকৃত মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমপক্ষে ২ দশমিক ১ শতাংশ বাড়াতে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহায়তা করবে বলে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাংলাদেশে অতিরিক্ত আড়াই শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ১ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। এতে ১ দশমিক ৩ শতাংশ চরম দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার(২১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইন বাংলাদেশ অ্যাচিভমেন্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শিরোনামের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিআরআই কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে তিনটি ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করে- অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সহযোগিতা এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়।
আরও পড়ুন: বিআরআই’র আঞ্চলিক সংযোগে অবদান রাখতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও চীন
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল এবং পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণের উদাহরণ নিয়েও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মডেলিং পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে আনুমানিক জিডিপি, বাণিজ্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাসের উপর উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রভাব নির্দেশ করে।
প্রতিবেদন অনুসারে, নির্দিষ্ট পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে বিআরআই প্রকল্পগুলো অতিরিক্ত ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন থেকে ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
এ ছাড়াও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিআরআই অবকাঠামো ও সংযোগ প্রকল্পগুলোতে চীনা বিনিয়োগ ও অর্থায়নের জন্য একটি অতিরিক্ত সুযোগ দেয়। এটি বাংলাদেশের সরবরাহ প্রতিক্রিয়া ও বাহ্যিক প্রতিযোগিতাকে উদ্দীপিত করতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটি বিআরআইয়ের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য থেকে জনগোষ্ঠীকে উন্নীত করার ক্ষেত্রে রূপান্তরকারী শক্তির প্রকাশ ঘটায়।’
এ ছাড়াও, প্রতিবেদনে উভয় দেশকে ব্যবসা সহজতর করতে, বিনিয়োগের বাধাগুলো শনাক্ত ও নির্মূল করতে এবং বিনিয়োগকারী ও ভোক্তাদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি অনুকূল আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান প্রতিবেদনের বার্তা প্রসঙ্গে বলেছেন, চীনের বিআরআই বৈশ্বিক সহযোগিতা জোটের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীনের আর্থিক বিনিয়োগ এবং চুক্তিভিত্তিক নির্মাণ বাধ্যবাধকতাসহ বিআরআই থেকে লাভবান হতে শুরু করেছে।
মান্নান বলেন, 'বিআরআইর বিনিয়োগ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক উন্নয়ন উদ্যোগগুলোতে অবদান রাখবে এবং ভিশন-২০৪১ অর্জনে সহায়তা করবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, 'গত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখেছি, বিআরআই বাংলাদেশের দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ বাংলাদেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নে সক্ষম করেছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল খাতে এই বিনিয়োগ ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছে এবং সড়ক ও রেলপথে বিনিয়োগ বাংলাদেশের বাণিজ্য দৃশ্যপটকে বদলে দিয়েছে এবং দেশ ও দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, আমি নিশ্চিত যে, বিআরআইর কাঠামোর আওতায় আরও বেশি সংখ্যক চীনা উদ্যোগ ও জনগণ স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে নিজেদের নিয়োজিত করবে, চীনা সমাধান প্রস্তাব করবে এবং 'ভিশন ২০৪১' বাস্তবায়নে আরও বেশি অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন ৪ সেপ্টেম্বর
বিআরআই সংশ্লিষ্ট সব দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে: চীন
১ বছর আগে
জিডিপির ৩.২% জলবায়ু অর্থায়ন হিসাবে দাবি অধিকার-ভিত্তিক নাগরিক সমাজের
অধিকার ভিত্তিক সুশীল সমাজ প্রতি বছর জাতীয় বাজেট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) কমপক্ষে ৩ দশমিক ২ শতাংশ দাবি করে।
এছাড়াও, তারা জলবায়ু অর্থায়নের জন্য অভ্যন্তরীণভাবে প্রয়োজনীয় সংস্থান সংগ্রহের জন্য কর ও আর্থিক ব্যবস্থা সংস্কার করে মূলধন বাড়ানো বন্ধ করতে পরিমিত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুশীল সমাজের নেতারা এ দাবি তুলে ধরেন।
কোস্ট ফাউন্ডেশন, সিপিআরডি (সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট), সিএসআরএল (সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড), ইক্যুইটিবিডি (ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ), এওএসইডি (আর্থিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি সংস্থা)-খুলনা অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি সুশীল সমাজ সংস্থা,কানসা-বিডি (ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক অন সাউথ এশিয়া-বাংলাদেশ) এবং লিডারস-সাতক্ষীরা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের এম. রেজাউল করিম চৌধুরী।
ইক্যুইটিবিডির আমিনুল হক তার বক্তব্যে বলেন, সরকার স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বাজেটের অর্থের একটি অংশ বরাদ্দ করে আসছে। এই অর্থ শুধু জলবায়ু অর্থায়নের নামে স্থানান্তরিত হয়েছে দাতাদের দেখানোর জন্য যা বর্তমান জলবায়ু প্রেক্ষাপট এবং জলবায়ু সহনশীল বাংলাদেশ অর্জনে এর প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন: জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহায়তার নিশ্চয়তা চায় ঢাকা
তিনি আরও দেখিয়েছেন যে সরকারের কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনা যেমন ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০৩০ এবং এনডিসি (জাতীয় নির্ধারিত অবদান ইত্যাদি) প্রতি বছর জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ (বছরে ১,৮৩০০০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ প্রয়োজন যেখানে লক্ষ্যের বিপরীতে বরাদ্দ অনেক কম।
এই প্রেক্ষাপটে, তিনি জলবায়ু অর্থায়ন সংক্রান্ত কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে যে সরকারকে অবশ্যই তাদের কৌশলগত পরিকল্পনা এবং সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়ন হিসাবে জিডিপির কমপক্ষে ৩ দশমকি ২ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারকে এর পরিবর্তে একটি সমন্বিত জাতীয় জলবায়ু বাজেটের কথা ভাবতে হবে। স্বতন্ত্র জলবায়ু অর্থায়নের যা বাস্তবসম্মত নয়।
সিএসআরএল-এর মো. জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, সরকারি জলবায়ু পরিকল্পনা যেমন ডেল্টা পরিকল্পনা এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ইত্যাদির মধ্যে নীতিগত সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ বাজেট বাস্তব জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য ছাড়াই এই অসঙ্গতির ফলাফল।
তিনি আরও বলেন, সরকারকে কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনার বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী জলবায়ু অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
সিপিআরডির মো. শামসুদ্দোহা বলেছেন যে সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর অর্থ ব্যবহারের ক্ষমতার অভাব রয়েছে এবং তাদের একটি সেক্টরাল প্ল্যান নেই যা আলাদা জলবায়ু অর্থায়নের অন্যতম কারণ। এছাড়াও, মন্ত্রণালয়গুলো আইএফআইএস (আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলি) থেকে জলবায়ু অর্থ নিতে খুব আগ্রহী কারণ তাদের সার্বভৌম দাতাদের মতো বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থের তুলনামূলক জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নেই।
আরও পড়ুন: কপ-২৭ এর আগে জলবায়ু অর্থায়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান বাংলাদেশের
এওএসইডির শামীম আরেফিন বলেন, সরকার উপকূল সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষা করেছে। এ কারণেই জলবায়ু জনিত স্থানচ্যুতি ও অভিবাসন ঘটছে এবং আর্থ-সামাজিক ভারসাম্যহীনতা বাড়ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সরকার সমস্যাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে উপলব্ধি করবে এবং সেই অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়ন কৌশলগুলো সংশোধন করবে।
ইভেন্ট মডারেটর এম. রেজাউল করিম একটি সমন্বিত উপকূলীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং অর্থায়নের দাবি জানান। যেখানে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, সামাজিক উন্নয়ন যেমন স্বাস্থ্য, কারিগরি শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি একই সঙ্গে বাস্তবায়িত হয় এবং এটিই হবে প্রকৃত সুরক্ষা এবং উপকূলবাসীদের জন্য উপকারী।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়ন দ্বিগুণ চায় বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো
১ বছর আগে
শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া ৭.৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব: বিজিএমইএ সভাপতি
বর্তমান সংকটকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিম্নমুখী ধারায় সরকার আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, তা শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান
শুক্রবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজেটের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা ও রাজস্ব বাড়ানো।
ফারুক বলেন, যেহেতু জিডিপি’র প্রায় ৩৫ দশমকি ৬ শতাংশ আসে শিল্প খাত থেকে, যা ২০৪১ সাল নাগাদ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। শিল্পের সকল সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ তার।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা মনেকরি অর্থনীতিকে প্রানবন্ত রাখতে, প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে অর্থনৈতিক সুরক্ষা দিয়ে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতি তৈরি করার জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে যা বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পোশাক শ্রমিকদের অন্তভর্‚ক্ত করার বিষয়টির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানিমুখী শিল্পখাতের জন্য ইতিবাচক প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানি ও রপ্তানিতে ব্যবহৃত কন্টেইনার আমদানিতে করভার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা। কৃত্রিম আঁশের তৈরি কাটা ফেব্রিক্স এবং নষ্ট টুকরা (এক মিটারের বেশি দীর্ঘ নয়); বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেষ্টিং ইনস্টিটিউশনের নিকট নমুনা হিসেবে বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ফেব্রিক্স (তিন বর্গমিটারের নীচের আকৃতির) এবং ট্যাপস অ্যান্ড ব্রেইডসের উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদান।
ফারুক প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩টি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ মূসক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে সবধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও এলএনজি ও এলপিজি’র আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেলেও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের জায়গাটিতে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
ফারুক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় আমরা রপ্তানিমূখী বস্ত্র ও তৈরি পোশাকখাতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা খুঁজে পাইনি। বিশেষ করে আমরা উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব না করে ২০২১-২২ অর্থবছরের যেটি ছিল, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। কারণ এমনিতেই কোভিডের কারণে আমাদের শিল্পে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটি পুষিয়ে নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বাজেট বক্তব্যে অন্যান্য বছরের মতো রপ্তানিখাতগুলোর জন্য প্রণোদনা বাবদ অর্থ বরাদ্দের কোনো ঘোষণা আসেনি বলেও জানান তিনি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে বর্তমানে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছে। সে সময়টিতে কিন্তু আমাদের রপ্তানি বেড়েছে, রপ্তানি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ঐ এক বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, আর চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। যদিও শেষের ২মাসে রপ্তানি কমে এসেছে।
বর্তমান সংকট তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের ফলে আমাদের পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। অনেক কারখানা সক্ষমতার বাইরে চলছে, আগামি মাসগুলোতে আমরা এই অবস্থা উত্তরণের কোন লক্ষণ দেখছি না। এর উপর ১ জুলাই থেকে ব্যাংক সুদের যে ক্যাপ নির্ধারিত ছিল তা তুলে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে আমাদের ব্যয় আরও বাড়বে এবং আমরা প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাব।
তিনি বলেন, আমাদের পোশাকের প্রধান দুই বাজার আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে ঋণের সুদের হার অনেক বেড়েছে; মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমেছে। পোশাক রপ্তানির জন্য ইউরোপের জার্মানি অফিসিয়ালি জানিয়েছে, দেশটি মন্দার কবলে পড়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থাও ক্রমশ সঙ্গীন হচ্ছে। আশঙ্কার বিষয় হলো- ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জানুয়ারি-মার্চ মাসের আমদানি তথ্য নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাক আমদানি নভেম্বরে কমেছে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ, এবং ডিসেম্বরে কমেছে ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
নভেম্বর-মার্চ সময়ে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি ভ্যালুতে বেড়েছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ভলিউমে কমেছে ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। অবশ্যই পণ্যের রপ্তানি মূল্য বেড়েছে বলে এমনটি ঘটেছে।
চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উৎসে কর ২০২১-২২ অর্থবছরের ন্যায় শূন্য দশমকি ৫০ শতাংশ ধার্য করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর করার জন্য পুনরায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ফারুক।
এছাড়া নগদ সহায়তার উপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রতাহারের অনুরোধও জানান তিনি। যেহেতু নগদ সহায়তা কোন ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
করারোপ করা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবনাও তুলে ধরে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্যায়নের সময় স্বাভাবিক হারে ৩০ শতাংশ কর আরোপ না করে কর্পোরেট কর হার ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। তৈরি পোশাক শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চুক্তির মূল্য পরিশোধের সময় প্রস্তাবিত ধাপ অনুযায়ী উৎসে কর ধার্য করা, উক্ত করকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা, অন্যথায় মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ হারে কর ধার্য করা। রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য পরিশোধিত ফি হতে উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা।
তিনি বলেন, বিগত চার দশকে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছলেও আমাদের পণ্যের উপাদান পরিবর্তন তুলনামুলকভাবে কম হয়েছে। বিশ্বে মোট টেক্সটাইল চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই নন-কটন এবং বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের ৫২ শতাংশ পণ্য নন-কটনের। আর আমাদের নন-কটন পোশাকের রপ্তানির হার মাত্র ২৬ শতাংশ। সরকারকে নন-কটন খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে এবং প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির উপর ১০ শতাংশ (রপ্তানি মূল্যের) হারে বিশেষ প্রনোদনা প্রদানের অনুরোধ করেন তিনি।
ফারুক বলেন, টেক্সটাইল ও পোশাকখাত থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টনের মতো ঝুট তৈরি হয়। এগুলো রিসাইকেল করে পুনরায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব, যা প্রকারান্তরে আমাদের দেশজ প্রবৃদ্ধি আনবে। তাই, এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে রিসাইকেলিং শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া, পণ্য ও সেবাকে শুল্ক ও ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি করেন তিনি।
বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে ৩ বছর করার দাবি করেন ফারুক। এছাড়া কাঁচামাল আমদানিতে এইচ. এস. কোড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের বিষয়টি বিবেচনার জন্যও পুনরায় অনুরোধ করেন ফারুক।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বে ব্যবসা সহজীকরণে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত করার জন্য সেবা প্রদানকারী সংস্থা, যেমন কাষ্টমস, বন্দর এর সেবা প্রাপ্তি আরও গতিশীল ও সহজ করা গেলে তা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশকে আরও উন্নত করবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি দিতে প্রয়োজন নীতি সহায়তা ও নীতি স্থিতিশীলতা। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক ও রাজস্ব সংক্রান্ত নীতি স্থির করা হলে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তির সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার মাত্র ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এই শেয়ারটি ১২ শতাংশে এ উন্নীত করা এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিরিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা কাজ করছেন বলেও জানান ফারুক হাসান।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তোরণে বাংলাদেশকে সহায়তায় ইইউ’র প্রতি বিজিএমইএ প্রধানের আহ্বান
১ বছর আগে
উচ্চাভিলাষী জিডিপি ও মুদ্রাস্ফীতির অনুমান, বাজেট বাস্তবায়নে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে: সিপিডি
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) শুক্রবার তার বাজেট-পরবর্তী পর্যালোচনায় বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি উভয় ব্যাপারে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ সংকটের আলোকে সেগুলো অর্জনের জন্য কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ না রেখে।
সিপিডি বলেছে, বাজেট কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেছে, তবে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়, তাই ঘাটতি অর্থায়নের পরিমাণ শেষ পর্যন্ত বাড়বে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বাজেট পরবর্তী পর্যালোচনার নেতৃত্ব দেন এবং কয়েকটি টিভি চ্যানেল তা সরাসরি সম্প্রচার করেন।
তিনি বলেন, বাজেট এমন এক সময়ে পেশ করা হয়েছে যখন বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তিগত ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশে অনুমান করা হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ সালে ছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
একটি প্রশ্নের উত্তরে সিপিডি’র বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ সালে রাজস্ব আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রাজস্ব অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বাড়াতে হবে। যা ‘একেবারে উচ্চাভিলাষী’ বা বলা যায় অতিউচ্চাভিলাষী। একটি ভুল ধারণার উপর ভিত্তি করে বাজেটের প্রবৃদ্ধি অনুমান করা হয়েছে।
মোস্তাফিজ বাজেটের আলোকে আর্থিক নীতি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মতো একটি মুদ্রানীতির আশা করেছেন।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেটে কৌশলগতভাবে পুঁজিবাজার উন্নয়ন নীতিকে এড়িয়ে গেছে, যা এ ধরনের উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বাস্তবসম্মত ও টেকসই পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিনিয়োগের অর্থায়ন বাড়তে পারে না, সরকারি প্রণোদনাভিত্তিক পুঁজিবাজার নতুন বিনিয়োগে ভূমিকা রাখতে পারে না।’
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বহিরাগত অর্থ বকেয়া বা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বিষয়ে কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
সিপিডি প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বর্তমান বাজেট অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হবে এবং ১ দশমিক ৪২ লাখ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ৭৫ হাজার কোটি টাকার কম রাজস্বে বাড়বে বাজেট ঘাটতি: সিপিডি
সম্পত্তি কর থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত কর আদায় করা যাবে: সিপিডি
১ বছর আগে
বিবিএসের জিডিপি ও মুদ্রাস্ফীতির তথ্য নতুন পদ্ধতিতে হালনাগাদে সন্তুষ্ট আইএমএফ
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) দেওয়া শর্তাবলী বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধি দল।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস কার্যালয়ে বিবিএসের সঙ্গে এক বৈঠকে আইএমএফ দল এ সন্তোষ প্রকাশ করে।
বৈঠকে আইএমএফ গতানুগতিক পদ্ধতির পরিবর্তে মুদ্রাস্ফীতি (ভোক্তা মূল্য সূচক), জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) এবং ত্রৈমাসিক জিডিপি সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য জানতে চায়।
বৈঠকে এসব বিষয়ে আইএমএফকে অবহিত করেছে বিবিএস।
সূত্র জানায়, আইএমএফ প্রতিনিধিদল স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক তথ্যও চেয়েছে।
বিবিএসের মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান ইউএনবিকে বলেন, আইএমএফ মুদ্রাস্ফীতির নতুন পদ্ধতিতে যাওয়ার অগ্রগতি জানতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে মুদ্রাস্ফীতি গণনা করি তা আর এভাবে করা হয় না, এটি পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রায় ৯৫ শতাংশ দেশ আইএমএফের মিশ্র পদ্ধতি ব্যবহার করে মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করে, বাংলাদেশ নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করবে।’
আরও পড়ুন: আইএমএফ-বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক: সমন্বিত এক্সচেঞ্জ রেট ও প্রতিযোগিতামূলক ঋণের হারকে অগ্রাধিকার
নতুন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্যপণ্যের দাম হবে ১৫৩টির পরিবর্তে ২৬৩টি। পণ্য ৭২০টি। তারা (আইএমএফ দল) বিষয়টির অগ্রগতি জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান বিবিএস মহাপরিচালক ।
বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই তাদের জিডিপি পরিসংখ্যান ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রকাশ করে। বাংলাদেশ বছরে একবার করে। নিম্নমুখী হলে প্রকৃত জিডিপি প্রকাশ করতে দেড় থেকে দুই বছর সময় নেওয়ার উদাহরণও রয়েছে দেশে। আবার বিবিএসের যে কাজগুলো করার কথা তা অনেক সময় অর্থ মন্ত্রণালয় করে থাকে।
ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রসঙ্গে মতিয়ার বলেন, সরকার বছরে চারবার জিডিপির তথ্য প্রকাশ করবে। তবে এটি ২০২৪ ক্যালেন্ডার বছর থেকে শুরু হবে। তথ্য-উপাত্তের কাজ এগিয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কিছুটা স্বস্তির জন্য আইএমএফের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ: আইএমএফের এমডিকে প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
তরুণরাই বাংলাদেশে ‘স্মার্ট এগ্রিকালচারের’ নেতৃত্ব দেবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশে স্মার্ট এগ্রিকালচারের ধারণার আবির্ভাব ও গ্রহণে নেতৃত্ব দেবে।
তিনি দেশের জিডিপিতে (১২%) কৃষির অবদান তুলে ধরে বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের আরও উৎপাদনশীলতা প্রয়োজন। স্মার্ট কৃষি সময়ের প্রয়োজন এবং এর জন্য আমাদের একটি যান্ত্রিক চাষপদ্ধতিতে যেতে হবে।’
বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে 'ট্রান্সফরমিং কনভেনশনাল এগ্রিকালচার টু স্মার্ট এগ্রিকালচার' (প্রচলিত কৃষিকে স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তর) শীর্ষক সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের নীতি সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অপচয় কমাতে বহুমুখী কোল্ড স্টোরেজ ব্যবস্থারও আহ্বান জানান তিনি। পরে তিনি পণ্যের বৈচিত্র্য, পানির দক্ষ ব্যবহার এবং জলবায়ু প্রতিরোধী ফসল উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় আগামী বছর দেড় থেকে ২ লাখ টন আলু রপ্তানি হবে: কৃষিমন্ত্রী
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামির সাত্তার বলেছেন, কৃষকদের উৎপাদনশীলতা, স্থায়িত্ব ও মুনাফা বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি ও শিক্ষায় বিনিয়োগ অপরিহার্য।
তার মতে, এগুলো বাংলাদেশকে স্মার্ট এগ্রিকালচারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি, আমাদের কৃষকদের প্রযুক্তি গ্রহণ এবং উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়াও অপরিহার্য।’
ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে এবং ১৪৫টিরও বেশি দেশে প্রায় ৭০০ রকমের পণ্য রপ্তানি করেছে।
সাত্তার তার বক্তব্যে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, যা জিডিপির প্রায় শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ অবদান রাখে, বর্তমানে সীমিত মূল্য সংযোজন দক্ষতা, বৈচিত্র্যের অভাব, গুণমান নিশ্চিতকরণ, স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে কম সচেতনতার মতো চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
তিনি বলেন, ‘তদুপরি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স, মেশিন, ইন্টারনেট অব থিংস এবং নতুন কৃষি প্রযুক্তি শিখতে হবে।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন বলেন, খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশকে স্মার্ট এগ্রিকালচারের দিকে যেতে হবে এবং এই ধারণার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হলে আমাদের স্মার্ট টেকনোলজির দিকে যেতে হবে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এখন স্মার্ট টেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন আশীর্বাদ ব্যবহার করছে। অতএব, প্রতিযোগিতা করার জন্য আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি না।
তিনি স্মার্ট কৃষিকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি খাতের প্রতি আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে সরকার বেসরকারি খাতকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। আইসিটি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন এবং ডব্লিউএফপি’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ও বাংলাদেশে এফএও’র ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডমেনিকো স্কাল্পেলি যথাক্রমে বিশেষ অতিথি ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: বহুমুখী সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
এডিবি ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৩% কমিয়েছে
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ২০২৩ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ করেছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এডিবি বলেছিল, এবছরের এপ্রিল মাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।
মঙ্গলবার ২০২৩ সালের এপ্রিলের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে (এডিও) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে। গড় মূল্যস্ফীতি ২০২২ অর্থবছরের ছয় দশমিক দুই শতাংশ থেকে ২০২৩ অর্থবছরে আট দশমিক সাত শতাংশে পৌঁছাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি কম হবে। কারণগুলো হলো- জ্বালানির ঘাটতি ও উচ্চ উৎপাদন খরচ, রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি, মিতব্যয়ীতা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস।
তবে চলতি হিসাবের ঘাটতির দিক থেকে গত অর্থবছরে জিডিপির ৪ দশমিক ১ শতাংশ থাকলেও, এবার তা কমে হবে ১ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশের জন্য এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটা বড় ঝুঁকি হচ্ছে বিশ্বের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে প্রধান রপ্তানি বাজারগুলোর অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়া।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও চাহিদা কমে গেছে, রপ্তানির গতিও কমে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বাহ্যিক প্রতিকূলতার প্রভাবের বিরুদ্ধে তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে দেশ পরিচালনা করছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন: এডিবি’র ১ বিলিয়ন: আলোচনার জন্য রাতে ঢাকায় আসছেন লাভাসা
গিনটিং বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে মূল সংস্কারগুলোকে ত্বরান্বিত করা দেশকে মধ্য মেয়াদে উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এই সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট এবং অভ্যন্তরীণ রিসোর্স মোবিলাইজেশন জোরদার করা, আর্থিক খাতকে সুস্থির করা এবং বেসরকারি খাতে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রতিযোগিতা বাড়ানো।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জলবায়ু এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে অভ্যন্তরীণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারের অস্থিরতার বিরুদ্ধে সহনশীলতা বাড়ানোর জন্য এটাই সঠিক সময়।’
গিনটিং বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ৫০ বছরের অংশীদারিত্বে এডিবি দেশের জনগণের জন্য অবকাঠামো, জনসেবা এবং সামাজিক উন্নয়নের উন্নতির জন্য সহ-অর্থায়নসহ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ও অনুদান পেয়েছে। বাংলাদেশে ৫০টি চলমান প্রকল্পে ১১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামোতে এডিবি’র আরও সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ২ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসবে সুনীল অর্থনীতি থেকে: গবেষণা
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সুনীল অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উন্নত রাষ্ট্র গঠনের জন্য আরও ১০ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। এই ১০ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে দুই ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসবে সুনীল অর্থনীতি থেকে। এর লক্ষ্যে সমুদ্র ও সমুদ্র সম্পদের বিভিন্ন খাতের গবেষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর তার গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইকো সিস্টেমের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে সমুদ্র ও সমুদ্র সম্পদকে টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতি বিরাট ভূমিকা রাখবে। ২০১৪-১৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতির অবদান ছিল ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের জিডিপির ৩ শতাংশ। দেশ যদি জিডিপি ১০ শতাংশ হারে হয়, তাহলে ২০৩৫ সালে ২৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, গ্লোবাল ওশান কমিশন ২০১৪ সালের প্রাক্কলন অনুযায়ী মেরিন ও উপকূলীয় উৎপাদিত সম্পদের মোট বাজারমূল্য ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ব অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান বিশ্বের কর্মসংস্থানের ১০-১২ শতাংশ যার ৯০ ভাগ কর্মসংস্থান হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
আরও পড়ুন: কোরালের প্রজনন গবেষণা সুনীল অর্থনীতিতে অবদান রাখবে: শিক্ষামন্ত্রী
২০১২ সালে মিয়ারমারে সঙ্গে ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি। এতো বড় সমুদ্র এলাকায় নিয়ে বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির একটি বিশাল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। মৎস্য সম্পদ, সামুদ্রিক জৈব সম্পদ, সামুদ্রিক নবায়নযোগ্য শক্তি, ব্লু টুরিজমসহ সুনীল অর্থনীতির সম্ভবনাময় ১১ টি ক্ষেত্র রয়েছে।
বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে মেরিন অ্যাকুরিয়াম স্থাপন, প্লাস্টিক রিডিউস রিইউজ, সামুদ্রিক মৎস্যচাষ, সমুদ্রভ্রমণ পর্যটন, ডলফিন ও তিমি দর্শন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবাল রক্ষা, সমুদ্র ভিত্তিক শিল্প স্থাপন, গবেষণার জন্য জাহাজ ক্রয়সহ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২১০০ সালের বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় সুনীল অর্থনীতির জন্য কৌশল হিসেবে সামুদ্রিক সম্পদের বহুমাত্রিক জরিপ, উপকূলীয় জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সমুদ্র ইকোটোরিজম, সমুদ্র উপকূল ও বন্দর দূষণমুক্ত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
২৯ ডিসেম্বর বিওআরআই এর বিজ্ঞানী কতৃর্ক সম্পাদিত গবেষণা ফলাফল উপস্থাপনা বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সচিব ড. মো. কাউসার আহাম্মদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. রাশেদ-উন-নবী।
আরও পড়ুন: সুনীল অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে কাজ করছি: প্রধানমন্ত্রী
সুনীল অর্থনীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলো বাংলাদেশ
১ বছর আগে