মানবতা
আইসিআরসি: মানবতাকে বাঁচিয়ে রাখাই জেনেভা কনভেনশনের ৭৫ বছরের অর্জন
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনটি (আইএইচএল) ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো যেকোনো পরিস্থিতিতে বেসামরিক নাগরিক, আহত যোদ্ধা এবং যুদ্ধবন্দিদের সুরক্ষার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এই আইন যুদ্ধকালীন নিয়ম বা নীতি নামেও পরিচিত।
বুধবার (২৯ মে) আইসিআরসি বলেছে, এখনো এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও আইএইচএল’র তাৎপর্য ও প্রয়োগ প্রায়ই স্বীকৃতি পাচ্ছে না বা এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।
২০২৪ সালে জেনেভা কনভেনশনের ৭৫তম বার্ষিকী, এটি আধুনিক আইএইচএলের ভিত্তি।
সর্বজন গৃহীত এই নিয়মগুলো যুদ্ধ পরিচালনার উপায় ও পদ্ধতিগুলো সীমাবদ্ধ করতে একটি নির্দেশিকার কাঠামো তুলে ধরে। যারা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে না বা আর যুদ্ধে নেই, তাদের রক্ষা করার জন্যই নির্দেশিকাটি।
আরও পড়ুন: নাগাসাকিতে শান্তি স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেছেন গণপূর্তমন্ত্রী
এই আইনগুলোর ভিত্তি সহজ। এটির আলোকে সশস্ত্র সংঘর্ষের সবচেয়ে খারাপ সময়েও আমাদের সাধারণ মানবতার প্রকৃত মূল্যবোধ অবশ্যই লালন করতে হবে।
এই চুক্তি অবশ্যই কনভেনশনের প্রতিটি ব্যাখ্যায় প্রতিফলিত হতে হবে। গত ৭৫ বছর ধরে আইএইচএল সশস্ত্র সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের রক্ষায় মৌলিক ভূমিকা পালন করেছে।
জেনেভা কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত নীতিগুলো সহিংসতা ও জনমতের মেরুকরণের কারণে জর্জরিত বিশ্বে আজও আগের মতোই প্রাসঙ্গিক।
আইসিআরসি বলেছে, মূল চুক্তিগুলো অনুসমর্থন এবং একটি জাতীয় আইএইচএল কমিটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ জেনেভা কনভেনশন গ্রহণ এবং মানবিক নীতি সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইতালির ওয়ার্ক ভিসা: মূল পাসপোর্ট জমা ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন বাংলাদেশিরা
এটি জেনেভা কনভেনশন ও অ্যান্টি-পার্সোনাল মাইন ব্যান কনভেনশনের বিষয়ে দুটি দেশীয় আইনের খসড়া তৈরি করে আইএইচএলকে জাতীয় আইনে একীভূত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় আইনে আইএইচএলের পূর্ণ সমন্বয়ের জন্য বাংলাদেশ এসব অর্জনকে একীভূত করতে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) হেড অব ডেলিগেশন অ্যাগনেস ধুর বুধবার বলেন, বাংলাদেশে আইসিআরসি এই ঐতিহাসিক মাইলফলক উদযাপনের জন্য বেশ কয়েকটি আউটরিচ ইভেন্ট ও উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এরমধ্যে রয়েছে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যম প্রতিযোগিতা।
ধুর বলেন, ‘আইএইচএল প্রচার ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা তুলে ধরতে আমি উচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষ, শিক্ষাবিদ ও সাধারণ দর্শকদেরও সম্পৃক্ত করব।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা জেনেভা কনভেনশনের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই মানবতার নীতির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে হবে, যা এক শতাব্দীর তিন-চতুর্থাংশ সময় ধরে আমাদের পথ দেখিয়েছে।’
ধুর বলেন, “তারা প্রতিকূলতার মধ্যে মানবতার শক্তির সাক্ষ্য দেয়। এই ঐতিহাসিক ক্ষণে আসুন আমরা রেড ক্রসের প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ডুনান্টের কথাগুলো স্মরণ করি- ‘আরও বেশি মানবিক হতে শেখার মধ্যেই সত্যিকারের অগ্রগতি নিহিত।’আরও পড়ুন: জ্যামাইকা ও ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠক
৬ মাস আগে
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর কোনো দেশ মানবতার কথা বলেনি: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে খুনিরা যখন বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যা করে, তখন পৃথিবীর কোনো দেশ মানবতার গান গায়নি।
তিনি আরও বলেন, সেই মৃত্যুতে শোক বার্তাও পাঠায়নি। আজকে বিভিন্ন দেশ মানবতার জন্য হুঙ্কার দেয়। কিন্তু এতোগুলা মানুষকে যে হত্যা করা হয়েছিল তখন কারো মুখে কোনো কথা শোনা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ অডিটোরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইনডেমনিটি আইনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না এমন কালো আইন তখন করা হয়েছিল। খুনির বিচার করা যাবে না, এমন কালো আইন পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও আছে বলে আমার জানা নাই।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২১ বছর সংগ্রামের পর, সরকারে আসার পর, এই কালো আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করেন।’
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের সন্ত্রাস ও দুর্নীতি ফিরলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: মোমেন
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জেলের ভেতরে জাতীয় ৪ নেতাকেও হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল- স্বাধীনতার চেতনায় যারা বিশ্বাস করে তাদের সম্পূর্ণভাবে মূলোৎপাটন করা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যেসব দল আছে তারা সন্ত্রাস ও খুনখারাবিতে বিশ্বাস করে এবং তারা যখন সরকারে এসেছে তখন তারা এই কাজটাই করেছে।’
বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে দেশের চিত্র তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১-২০০৬ সালে দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটে। সরকারি মদদে বাংলা ভাইয়ের উত্থান ঘটে। প্রকাশ্যে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে মানুষ হত্যা করে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলায় একসঙ্গে বোমাবাজি করে। আদালতে বিচার চলাকালীন বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা করে। বিদেশি একজন রাষ্ট্রদূত সিলেটে মাজারে গিয়েছেন, সেখানেও গ্রেনেড হামলা করে এবং পুলিশসহ তিনজন নিহত হন। রাষ্ট্রদূতসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশ চলাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন, প্রায় ৩০০ জন আহত হন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ওই রকম সন্ত্রাসের দেশ আর দেখতে চাই না। বিএনপি-জামায়াতের সরকার আমরা চিনি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫-এর আগে যেভাবে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সাম্প্রতিক কালেও সেরকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে বিদেশি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন: মোমেন
তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি আমরা সন্ত্রাসীদের হাতে দেশকে তুলে দিতে না চাই, জিহাদিদের হাতে তুলে দিতে না চাই, দুর্নীতিবাজদের হাতে তুলে দিতে না চাই তাহলে আমাদের প্রত্যেকের একটি দায়িত্ব আছে। ২০০১-২০০৬ সালে দেশের অবস্থা কেমন হয়েছিল তা সবাইকে জানান।’
তিনি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যদি আপনার সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ চান তাহলে শেখ হাসিনার সরকারকে আবার জয়যুক্ত করবেন।
বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সিদ্ধান্ত আপনাদেরই নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন ড. মোমেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ মনিরুল ইসলাম মনি, সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি আইনজীবী ড. মশিউর মালেক, তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ড. হারুন অর রশিদ।
আরও পড়ুন: জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের ‘সোনালী অধ্যায়ে’ আরেকটি পালক যোগ করবে: মোমেন
১ বছর আগে
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনার
পবিত্র রমজান মাস ও আসন্ন ঈদ উৎসব উদযাপনের জন্য হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ও তার স্ত্রী মনু ভার্মা ঢাকার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পরিদর্শন করেন।এসময় ফাউন্ডেশন সহায়তায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য খাদ্যসামগ্রী, বই ও উপহার প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় হাইকমিশন এই পরিদর্শনে যান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ওয়ার সিমেট্রি পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনার
হাই কমিশনার তার বক্তব্যে মানবতার মর্ম, সহানুভূতি ও একে অপরের প্রতি সমর্থনকে ঈদ উৎসবের মূল বার্তা হিসেবে তুলে ধরেন।
১ বছর আগে
প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেল প্রতিবন্ধী লিতুন জিরা
হাত পা ছাড়া জন্ম নেয়া যশোরের প্রতিবন্ধী লিতুন জিরার পড়াশোনা ও চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মকবুল হোসেন লিতুন পরিবারের কাছে চেক হস্তান্তর করেন।
চিকিৎসা আর পড়াশুনার জন্য অর্থ পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় লিতুন জিরার পরিবার।
এর আগে গত ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করে চিঠি লিখেন লিতুন জিরা। সেই চিঠি পেয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিতুনের খোঁজ খবর নেয়। সোমবার (২১ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমিত ও পাঁচ লাখ টাকার অর্থসহায়তা পাওয়ার বিষয়ে একটি চিঠি পায় লিতুন।
আরও পড়ুন: শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে
চেক গ্রহণকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম।
এব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সবসময় উপজেলা প্রশাসন লিতুন জিরার খোঁজ খবর রেখেছি। আমাদের প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় প্রতিবন্ধীদের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছেন। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিতুনের পরিবারের হাতে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে লিতুনের মতো অদম্য মেধাবীরা হাজারও মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির মেয়ে লিতুন জিরা। দুই ভাইবোনের মধ্যে ছোট লিতুন। বাবা হাবিবুর রহমান ওই উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে ১৮ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। জন্ম থেকেই লিতুনের দুটি পা ও দুই হাত নেই। তবু লেখাপড়ার চালিয়ে নিচ্ছে সে। এবার উপজেলার গোপালপর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জেএসসি পরীক্ষার্থী। এর আগে ২০২০ সালের খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় বৃত্তি পায় লিতুন জিরা। পড়াশুনার পাশাপাশি লিতুন টানা দ্বিতীয়বারের মতো রচনা প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায় পুরস্কার লাভ করে। এছাড়াও আবৃত্তি, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় নিজের পারদর্শিতা দেখানোর পাশাপাশি খুলনা বেতারেও নিয়মিত গান ও কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাঁচ প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারের করুণ কাহিনী
আর্থিক সহায়তা পেয়ে খুশি লিতুন জিরা বলে, আমার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণে আমি ও আমার পরিবার সংগ্রাম করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু লিতুন জিরার পাশে রয়েছে তা কিন্তু না। দেশের সকল প্রতিবন্ধীদের প্রতি তিনি সবসময় সদয়।
২ বছর আগে
ভালবাসা দিবসের মানে বদলে গেল পঙ্গু মিজানের জীবনে
ভালবাসা দিবসে জীবিকার্জনের জন্য দোকান ঘর উপহার পেয়ে ভালবাসার মানেটাই বদলে গেল সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করা মিজানের। তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ফরিদপুরের সেচ্ছাসেবী সংগঠন 'আমরা করবো জয়'। সংগঠনটি জীবিকা অর্জনের জন্য মিজানের বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকান তৈরি করে দিয়েছে।
সোমবার রাতে দোকান উদ্বোধন করে পুনরায় সংসারের হাল ধরতে পেরে খুশি মিজান।
মিজান তালুকদার (৩২) ফরিদপুর শহরের উত্তর আলীপুর এলাকার রেজাউল করিম তালুকদারের বড় ছেলে । মিজান দুই সন্তানের জনক। পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে সংসারের খরচ সংকুলান করতে না পেরে একদিন মিনি পিক আপের হেলপারি কাজে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: হাত-পা বিহীন এসএসসি পরীক্ষার্থী সালাহ উদ্দিনের স্বপ্ন বড়
গেল বছর ২ অক্টোবর ছিল তার হেলপারি কাজের প্রথম দিন। সন্ধ্যায় ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার থেকে মিনি পিকআপে পান লোড করে রওনা দেন যশোরের উদ্দেশ্যে।
রাত ২টার দিকে যশোরের চৌরাশ এলাকায় কাভার্ডভ্যানের সাথে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন পিকআপের চালক মো. সোহেলসহ মিজান। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ন উইনিট, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা নেন। অবশেষে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় করার পরও বাম পা কেটে ফেলতে হয় তার। শুরু হয় তার পঙ্গু জীবন। সোহেলের কোমরের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ার তিনি এখনও পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।।
২ বছর আগে
যুক্তরাষ্ট্রের মানবতার কথা নিয়ে প্রশ্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মানবতার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘আইন ও মানবতার’ কথা বলে, কিন্তু তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে আশ্রয় দিয়েছে যা সমর্থনযোগ্য নয়।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আমরা সেভাবে ভাবছি না এবং এটা বাংলাদেশের মানসিকতা নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্লেম গেমে বিশ্বাস করে না, আমরা একসাথে কাজ করতে চাই।
ড. মোমেন বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা সরকারি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করছি। পরবর্তী করণীয় বিষয়ে শিগগিরই আবার একসাথে বসব।’
তিনি বলেন, র্যাব দেশে মানবপাচার, অপরাধ ও মাদক পাচার দমনে সফল হয়েছে।
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জনগণ গ্রহণ করেনি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এর আগে বৃহস্পতিবার র্যাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জনগণ গ্রহণ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যুক্তরাষ্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে. ব্লিঙ্কেনের কাছে তুলে ধরেছি।
বুধবার সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছি, ‘আমরা বেশ কয়েকটি সংলাপের মাধ্যমে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আমরা আমাদের প্রতিবেশিদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করেছি। স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আপনি আগেই আমাদের জানাবেন। আমরা এটা পছন্দ করিনি।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি অ্যান্ড স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ঢাকার অসন্তোষ জানাতে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে শনিবার তলব করেন।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যে বিষয়গুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ চলছে, এর মধ্যেই হঠাৎ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানা গেল।
পররাষ্ট্র সচিব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের এমন একটি সংস্থার ক্ষমতা হ্রাস করতে চাইছে, যেটি সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার ও অন্যান্য আন্তদেশীয় অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখ সারিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কাজের প্রয়োজনে প্রায়ই তাদের যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হতো।
আরও পড়ুন: র্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করে না, রক্ষা করে: মুখপাত্র
আইজিপিসহ র্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
২ বছর আগে
দু’হাত হারিয়ে জীবন যুদ্ধে লড়ছে ফরিদগঞ্জের জাহাঙ্গীর
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪নং দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর রামপুর গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর গাজী। বয়স ৪৩ বছর। দু’ হাত হারিয়ে এখনও জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট জাহাঙ্গীরের স্বপ্ন ছিল সন্দুর জীবন গড়ার কিন্তু এক দুর্ঘটনা তার সব কিছু এলোমেলো করে দিলো।
আরও পড়ুন: রমাকান্তরা আবার স্কুলে যেতে চায়
তার সম্পর্কে জানাতে কথা হয় জাহাঙ্গীরের সাথে। জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি একজন রড মিস্ত্রী ছিলাম। আমার দু’হাত ছিল, শরীরও ভালো ছিল। স্বপ্ন ছিল বিদেশ যাবো, সুন্দর জীবন গড়বো। সংসার করবো। সেজন্য প্রচুর পরিশ্রম করতাম। শক্ত হাতে ঝটপট কাজও করতাম, নতুন কাজও শিখতাম, যাতে বিদেশ গিয়ে কোন অদক্ষতা চোখে না পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৯৯ সালের নভেম্বরের দিকে ঢাকার খিলগাঁওয়ে এক নির্মাণাধীন ভবনে একদিন কাজ করতে গিয়ে রড হঠাৎ বিদ্যুতের হেভী লাইনে লেগে গিয়ে শক খেয়ে ছিঁটকে পড়ি, মারাত্মক আহত হই। বাঁচার সম্ভাবনা ছিলই না। দু‘হাত, মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বেঁচে থাকার তাগিদে আমার দু‘হাতের কনুইয়ের উপর পর্যন্ত সম্পূর্ণ কেটে ফেলতে বাধ্য হই। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দুখে দুখে বেঁচে আছি।’
আরও পড়ুন: কোটিপতি ছেলের বাসায় আশ্রয় হলো না মায়ের
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার দু‘হাত হারানোর পর বাড়ি ফিরে এলাম শুন্য হাতে। বাবা মারা গেছেন সেই ১৯৯২ সালে আর এক বছর আগে মাও মারা গেলেন। আমি বাবা-মা’র সবচেয়ে ছোট ছেলে। ঘৃনা করি ভিক্ষাকে। তাই লোন করে বাড়ির পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ছোট্ট দোকান দিলাম। এভাবেই কাজ শুরু করলাম, বাঁচতে তো হবে। ২০০০ সালে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করলাম। আমার তিন মেয়ে এক ছেলে নিয়ে টানাটানির সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর অসহায় হয়ে গেলাম। দু’হাতের অভাবে না পারি কিছু ধরতে, না পারি কিছু করতে। আমি যে সম্পূর্ণ অচল, অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না।’
‘মহান আল্লাহপাকের ইচ্ছায় ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার কেরোয়া গ্রামের এক বিধবা মেয়ে আমার অবস্থা দেখে আমাকে বিয়ে করতে সম্মত হওয়ায় আবার সন্তানদের নিয়ে নতুন সংসার জীবন শুরু হলো। আর্থিক অনটনে হলেও আমার সংসার জীবন মোটামুটি কেটে যাচ্ছে। করোনকালে কোন সাহায্য পাই নাই। চকলেট, কলম, খাতার দোকান দিয়ে ছেলেকে সাথে নিয়ে যা বেচা-বিক্রি হয়, তা দিয়েই অতি কষ্টে সংসার চলছে। আমার দোকানে মালামাল তেমন একটা নাই। টাকার অভাবে মালামালও কিনতে পারি না, দোকানও আর একটু বড় করতে পারি না। টাকার অভাবে ছেলে মেয়েদের ভালোভাবে পড়ালেখাও করাতে পারছি না। বড় মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৬) এসএসসি দিবে। ছেলে তানভির সবার ছোট। হাত না থাকার কারণে আমাকে দোকানে সাহায্য করে।’
আরও পড়ুন:বান্দরবানের সুরের জাদুকর মং নু মং
তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া আর কোন সুযোগ সুবিধা পাই না। চার সন্তান আর আমরা দু‘জন মিলে ছয় সদস্যের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে বিধায় আমি প্রধান মন্ত্রী ও চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুদৃষ্টি ও সহানুভূতি কামনা করছি।’
এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন জানান, ‘জাহাঙ্গীর গাজী ভূমিহীন, তিনি প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। অতি কষ্টে ছেলে মেয়েকে পড়ালেখা খরচ চালাচ্ছেন।’
৩ বছর আগে
শোক দিবসে কোয়ান্টামের দাফন করসেবা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে হাজারো স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ‘দাফন করসেবা’র আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
রবিবার রাজধানীর কাকরাইলে ওয়াইএমসিএ ভবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কার্যক্রমে এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন।
কার্যলয় সূত্র জানায়, এই দিন সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবী কেউ কাফনের কাপড় কাটছেন, কেউ আতর-সুরমা প্যাকেট করছেন। কেউ বডিব্যাগ প্রস্তুত করছেন, কেউ আবার পিপিই গোচ্ছাচ্ছেন। এভাবেই কর্পূর, তুলা, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস প্যাকেটে ভরে প্রস্তুত হচ্ছে একেকটি প্যাকেট। সঙ্ঘবদ্ধভাবে হাত ঘুরে ঘুরে সেগুলো চলে যাচ্ছে গোসলখানা বা হাম্মামখানার স্টোরে।
আরও পড়ুন: করোনায় দাফন: কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবীরা
দাফনকর্মীরা সেখান থেকে একেকটি প্যাকেট ব্যবহার করেন একেকজন লাশের জন্যে। এভাবেই হাম্মামের ভেতরে সহজেই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করতে লাশ ও দাফনকর্মীদের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ করসেবার আয়োজন। পাশাপাশি কাপড় কাটাসহ বডিব্যাগ প্রস্তুতির প্রশিক্ষণে অংশ নেন তারা।
জানা গেছে, ২০২০ সালে করোনার শুরু থেকে শনিবার ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার ৭২০ জনেরও বেশি লাশের শেষযাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। এর মধ্যে মুসলিম ৫ হাজার ৪০ জন, সনাতন ৬০৮ জন, বৌদ্ধ ধর্মের ৩১ জন ও খ্রিষ্টান ধর্মের রয়েছে ৪১ জন। ২০২১ সালের শুরু থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতে এ সংখ্যা ২৭৫০ জন। এর মধ্যে মুসলিম ২৫৮২, সনাতন ১৪৭, বৌদ্ধ ৩ জন এবং খ্রিষ্টান ধর্মের রয়েছে ১৮ জন।
রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের ইনচার্জ খন্দকার সজিবুল ইসলাম জানান, জাতীয় এই শোক দিবসে শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে বাঙালি হিসেবে জাতির যে কোনো দুর্যোগে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাকর্মীরা প্রস্তুত। শোক দিবস উপলক্ষে আজ এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাকর্মীরা এসেছেন। কোয়ান্টাম পরিবারের বিভিন্ন পেশার এই সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সফল করবেন সারাদিনের এ করসেবা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর আর্তমানবতামূলক কার্যক্রমে অ্যাম্বুলেন্স দিল বারভিডা
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা দাফন কাজে সুরক্ষার জন্যে ব্যবহৃত হয় কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী চলছে করোনাকালীন দাফন কার্যক্রম। পাশাপাশি সাধারণ লামের গোসলেরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। দিনে বা রাতে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়ার জন্যে প্রস্তুত রয়েছেন কর্মীরা। মৃতের শেষ বিদায়ে আপনজনের মতই মমতার পরশে যথাযথ সম্মান জানিয়ে যাচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ এই স্বেচ্ছাসেবীরা। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই দেশের যেকোনো দুর্যোগে সাধ্যমতো সেবা দিতে প্রস্তুত কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাকর্মীরা।
৩ বছর আগে
ঠোঙা বিক্রি করে চলছে মা-ছেলের লড়াই
এইচএসসি পাসের পর ২০০৮ সালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা আইডিয়াল কলেজ রোডের নাদিরা খাতুনের বিয়ে হয়েছিল বেসরকারি এক কোম্পানির ম্যানেজারের সাথে। বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় স্বামীর সাথে টুক-টাক ঝগড়া হলেও তাদের ঘরে জন্ম হয় ফুটফুটে ছেলে সানাউলের। ছেলের বয়স যখন এক বছর তখনই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপরেই শুরু হয় সন্তানকে নিয়ে তার জীবন-যুদ্ধের লড়াই।
ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তা করেননি তিনি। ছেলে সানাউল ইসলাম ও বৃদ্ধা মা নিলুফা বেগমকে নিয়ে তিনজনের সংসার। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেই তিনি উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য ডিগ্রিতে ভর্তি হন। কাগজের ঠোঙ্গা বানিয়ে বিক্রি করে নিজের লেখাপড়ার চালিয়ে গেছেন। পাশাপাশি শিশু সন্তান ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তাই আবারও লেখাপড়া ছেড়ে দেন। এরপরে শিশু সন্তান হাটতে শিখলে ফের খুলনার আমদা নাসিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন তিনি । চার বছরের নার্সিং সম্পন্ন করে এক বছরের ইন্টার্নিও সমাপ্ত করেন নাদিরা।
নার্সিং সম্পন্ন হলেও চাকরি মেলেনি তার। ফলে পরিবারের হাল ধরতে জীবিকার জন্য ঠোঙ্গা বানিয়ে তা দোকানে বিক্রি করে সে টাকা দিয়ে চলছে এ তিনজনের জীবনযুদ্ধ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর আর্তমানবতামূলক কার্যক্রমে অ্যাম্বুলেন্স দিল বারভিডা
নাদিরা বলেন, আমি এক বছর ইন্টার্ন করেছি খুলনা সদর হাসপাতাল থেকে। আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখনো যদি চাকরি পাই তাহলে ঠোঙা বানানোর কাজ ছেড়ে দিব।
তিনি বলেন, ‘ছেলের যখন এক বছর বয়স তখন থেকেই লড়াই শুরু। এখন ছেলের বয়স দশ বছর। সে মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আমরা মা ও ছেলে ভালো আছি।’
নাদিরা বলেন, ‘আত্মবিশ্বাসই আমাকে এখানে নিতে পেরেছে। বাবা নেই তবু বাবার বাড়ির আশ্রয়টা এখনো আছে। এখন আর শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের ভয় তাড়া করে না।’
নাদিরার মা নিলুফা বেগম বলেন, আমি পেটে ধারণ করেছি সন্তানকে, সবাই ফেলে দিতে পারে । আমি তো ফেলে দিতে পারি না। শুধু মাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে নাদিরাকে ওর স্বামীর কাছ থেকে নিয়ে আসছি।
নাদিরার প্রতিবেশী মাইমুনা আক্তার মিতু বলেন, শুধু মাত্র তার আত্মবিশ্বাসের কারণে আজও জীবন যুদ্ধে লড়াইটা চালিয়ে আসতে পারছে।
৩ বছর আগে
হাসপাতালের করিডোর এখন বৃদ্ধা হাফেজার ঘর
পরিবারহীন অসহায় অসুস্থ হাফেজা খাতুন। বয়স প্রায় ৭০ বছর। ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনের চতুর্থ তলার করিডোরে দীর্ঘদিন যাবত চিকিৎসাধীন। সবার সহযোগিতায় ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়ের তত্ত্বাবধানে গত তিন বছর তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
৩ বছর আগে