জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে হাজারো স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ‘দাফন করসেবা’র আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
রবিবার রাজধানীর কাকরাইলে ওয়াইএমসিএ ভবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কার্যক্রমে এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন।
কার্যলয় সূত্র জানায়, এই দিন সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবী কেউ কাফনের কাপড় কাটছেন, কেউ আতর-সুরমা প্যাকেট করছেন। কেউ বডিব্যাগ প্রস্তুত করছেন, কেউ আবার পিপিই গোচ্ছাচ্ছেন। এভাবেই কর্পূর, তুলা, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস প্যাকেটে ভরে প্রস্তুত হচ্ছে একেকটি প্যাকেট। সঙ্ঘবদ্ধভাবে হাত ঘুরে ঘুরে সেগুলো চলে যাচ্ছে গোসলখানা বা হাম্মামখানার স্টোরে।
আরও পড়ুন: করোনায় দাফন: কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবীরা
দাফনকর্মীরা সেখান থেকে একেকটি প্যাকেট ব্যবহার করেন একেকজন লাশের জন্যে। এভাবেই হাম্মামের ভেতরে সহজেই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করতে লাশ ও দাফনকর্মীদের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ করসেবার আয়োজন। পাশাপাশি কাপড় কাটাসহ বডিব্যাগ প্রস্তুতির প্রশিক্ষণে অংশ নেন তারা।
জানা গেছে, ২০২০ সালে করোনার শুরু থেকে শনিবার ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার ৭২০ জনেরও বেশি লাশের শেষযাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। এর মধ্যে মুসলিম ৫ হাজার ৪০ জন, সনাতন ৬০৮ জন, বৌদ্ধ ধর্মের ৩১ জন ও খ্রিষ্টান ধর্মের রয়েছে ৪১ জন। ২০২১ সালের শুরু থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতে এ সংখ্যা ২৭৫০ জন। এর মধ্যে মুসলিম ২৫৮২, সনাতন ১৪৭, বৌদ্ধ ৩ জন এবং খ্রিষ্টান ধর্মের রয়েছে ১৮ জন।
রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের ইনচার্জ খন্দকার সজিবুল ইসলাম জানান, জাতীয় এই শোক দিবসে শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে বাঙালি হিসেবে জাতির যে কোনো দুর্যোগে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাকর্মীরা প্রস্তুত। শোক দিবস উপলক্ষে আজ এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাকর্মীরা এসেছেন। কোয়ান্টাম পরিবারের বিভিন্ন পেশার এই সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সফল করবেন সারাদিনের এ করসেবা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর আর্তমানবতামূলক কার্যক্রমে অ্যাম্বুলেন্স দিল বারভিডা
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা দাফন কাজে সুরক্ষার জন্যে ব্যবহৃত হয় কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী চলছে করোনাকালীন দাফন কার্যক্রম। পাশাপাশি সাধারণ লামের গোসলেরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। দিনে বা রাতে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়ার জন্যে প্রস্তুত রয়েছেন কর্মীরা। মৃতের শেষ বিদায়ে আপনজনের মতই মমতার পরশে যথাযথ সম্মান জানিয়ে যাচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ এই স্বেচ্ছাসেবীরা। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই দেশের যেকোনো দুর্যোগে সাধ্যমতো সেবা দিতে প্রস্তুত কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাকর্মীরা।