এনবিআর
আয়কর আইনের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ
আয়কর আইন, ২০২৩-এর ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন আকারে প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গেল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩-এর স্বীকৃত ইংরেজি সংস্করণ (Authentic English Text) সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করে এনবিআর।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এনবিআর এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর থেকেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
‘আয়কর আইনের স্বীকৃত ইংরেজি সংস্করণ না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।’
এবার আয়কর আইনের ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেটে প্রকাশ হওয়ার ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন। এতে করে করদাতাদের আস্থা আরও বাড়বে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-এর ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুব শিগগিরই এই দুটি আইনের ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে বলে আশা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
৪৭ দিন আগে
প্রথম ১০ দিনেই প্রায় এক লাখ করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল
২০২৫-২৬ করর্ষের প্রথম ১০ দিনেই প্রায় ১ লাখ করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ই-রিটার্ন কার্যক্রম উদ্বোধনের পর থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ৯৬ হাজার ৯৪৫ জন করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এনবিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, গত বছর একই সময়ের তুলনায় এ বছর অনলাইন রিটার্ন দাখিলের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রথম ১০ দিনে ই-রিটার্ন জমা পড়েছিল মাত্র ২০ হাজার ৫২৩টি। এ হিসেবে এবার দৈনিক গড় জমা সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ।
আরও পড়ুন: জিরো রিটার্ন’ দাখিল বেআইনি, শাস্তি সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড
এনবিআর গত ৩ আগস্ট এক বিশেষ আদেশে জানায়, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী প্রবীণ, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি ব্যতীত সব ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১১ আগস্টের সংশোধিত আদেশে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের এ বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এনবিআর জানায়, ই-রিটার্ন নিবন্ধনে সমস্যা হলে করদাতারা যৌক্তিক কারণসহ ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের কাছে আবেদন করতে পারবেন। অনুমোদন পেলে তারা পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সেবার মাধ্যমে কর পরিশোধ করে তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তির রশিদ ও কর সনদ প্রিন্ট করতে পারছেন।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত সহায়তার জন্য এনবিআর কল সেন্টার (০৯৬৪৩-৭১ ৭১ ৭১) চালু করেছে। এ ছাড়া www.etaxnbr.gov.bd-এর eTax Service অপশনে লিখিতভাবে সমস্যার সমাধান নেওয়া যাবে।
করদাতাদের যথাসময়ে www.etaxnbr.gov.bd পোর্টাল ব্যবহার করে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় উল্লেখপূর্বক রিটার্ন জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর।
১১২ দিন আগে
জিরো রিটার্ন’ দাখিল বেআইনি, শাস্তি সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, ‘জিরো রিটার্ন’ বা শূন্য কর দাখিল করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এর ফলে করদাতাকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
রবিবার (১০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল বিষয়ক কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, একজন করদাতা তার সব আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় ‘শূন্য’ হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: আরও এক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল এনবিআর
তবে আয়কর আইন অনুযায়ী ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। করদাতাদের অবশ্যই তাদের প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সঠিকভাবে রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে। মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদানের অভিযোগে করদাতাকে আয়কর আইনের ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে শাস্তি দেওয়া হয়, যা সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
আয়করযোগ্য আয়ের নিচে যারা আছেন, তাদের কর দিতে হয় না, তবে সঠিক তথ্যসহ রিটার্ন দাখিল অবশ্যই করতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলেও ‘শূন্য রিটার্ন’ দাখিল করা যাবে না।
এনবিআর করদাতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো প্রতারণামূলক পরামর্শ এড়িয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে রিটার্ন দাখিল করার মাধ্যমে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার এবং আইনগত শাস্তি এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
১১৬ দিন আগে
প্রথম দিনেই ই-রিটার্ন দাখিলে রেকর্ড
চলতি অর্থবছরে স্বাভাবিক ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন (ই-রিটার্ন) দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এ কার্যক্রম শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই রেকর্ডসংখ্যক ১০ হাজার ২০২ জন করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন।
গতকাল (৪ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, এবারের প্রথম দিনে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে।
২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ই-রিটার্ন কার্যক্রম শুরু হওয়ার প্রথম দিন রিটার্ন দাখিল হয়েছিল ২ হাজার ৩৪৪টি।
এরর আগে রবিবার (৩ আগস্ট) এক বিশেষ আদেশে ২০২৫–২৬ করবর্ষের জন্য এ বিধান কার্যকর করা হয়। ওই আদেশের একটি বিশেষ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এসেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি—এই চার শ্রেণির করদাতা বাদে সব ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলকভাবে ই-রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন www.etaxnbr.gov.bd এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দাখিল করতে হবে।
তবে যদি কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা যদি অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে অক্ষম হন, তাহলে তিনি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যথাযথ কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করতে পারবেন। পরে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদন সাপেক্ষে, ওই করদাতা কাগজে (পেপার রিটার্ন) রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক করল এনবিআর
গত বছর আংশিকভাবে ই-রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার পর ১৭ লাখের বেশি ব্যক্তি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন।
চলতি বছর উন্নত সেবার আওতায় করদাতারা বাসা থেকেই ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড অথবা বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কর পরিশোধ করতে পারবেন।
রিটার্ন জমা দেওয়ার পরপরই আয়কর রিটার্ন দাখিলের রসিদ ও আয়কর সনদ অনলাইনে ডাউনলোড ও প্রিন্ট করা যাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের জন্য রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা কল সেন্টার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
১২১ দিন আগে
আরও এক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল এনবিআর
এবার জনস্বার্থে লোকমান আহমেদ নামে আরও এক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তিনি এনবিআরের কর অঞ্চল-২, ঢাকার কর পরিদর্শক (গ্রেড-১০) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রোববার (৩ আগস্ট) এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, লোকমান আহমেদ ইতোমধ্যে সরকারি চাকরির ২৫ বছর পূর্ণ করেছেন। এজন্য তাকে জনস্বার্থে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী তিনি সব অবসর সুবিধা পাবেন। তাছাড়া জনস্বার্থে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রাজস্ব কর্মকর্তাদের আন্দোলনে লোকমান আহমেদ তার পদমর্যাদার মধ্যে অন্যতম নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। আন্দোলনের পর এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করতে শুরু করে।
পরে ‘ভয়ভীতি মুক্ত ও পক্ষপাতহীন’ হয়ে কাজ করার জন্য এনবিআর কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তাছাড়া, এনবিআর চেয়ারম্যানকেও অতীতের বিরোধ ভুলে দেশের জন্য কাজ করার জন্য বলেন উপদেষ্টা। এতে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক করল এনবিআর
প্রসঙ্গত, আন্দোলন ও কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে দেশজুড়ে এনবিআরের অধীন রাজস্ব আদায় কার্যক্রম প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছিল। গত ২৮ ও ২৯ জুন এনবিআরের প্রধান শাখা, বিশেষ করে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগ, এনবিআর রিফর্ম ইউনিটি কাউন্সিলের ডাকা ‘পূর্ণ কর্মবিরতি’ ও ‘এনবিআর অভিমুখে পদযাত্রা’ কর্মসূচির কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
আন্দোলনরত এনবিআর রিফর্ম ইউনিটি কাউন্সিল প্রশাসনিক অনিয়ম, কর্মকর্তা হয়রানি ও সংস্কার প্রচেষ্টায় বাধার অভিযোগে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণসহ কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল।
গত ১২ মে সরকার এক আদেশে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতিমালা বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয়।
এর ধারাবাহিকতায় কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা কর্মবিরতি, অনশন, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে যান। এতে দেশের কর, ভ্যাট ও শুল্কসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
১২৩ দিন আগে
ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক করল এনবিআর
স্বাভাবিক ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রবিবার (৩ আগস্ট) এক বিশেষ আদেশে ২০২৫–২৬ করবর্ষের জন্য এ বিধান কার্যকর করা হয়েছে।
তবে ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি—এই চার শ্রেণির করদাতার ক্ষেত্রে এ বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য হবে না।
তাদের ক্ষেত্রে ইচ্ছা করলে অনলাইন পদ্ধতিতেই রিটার্ন দাখিল করা যাবে, তবে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
ফলে এখন থেকে যেসব করদাতা রিটার্ন জমা দেবেন, তাদের তা অনলাইনে দাখিল করতেই হবে। তবে কেউ যদি ১ জুলাই থেকে এর মধ্যে কাগুজে রিটার্ন জমা দিয়ে থাকেন, তা গ্রহণযোগ্য হবে।
আরও পড়ুন: এনবিআর আন্দোলনে সরকারি ক্ষতি নিরূপণে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন
আদেশে আরও বলা হয়েছে, ‘উল্লেখিত করদাতাদের বাইরে কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা যদি অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে অক্ষম হন, তাহলে তিনি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যথাযথ কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করতে পারবেন।’
পরে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদন সাপেক্ষে, ওই করদাতা কাগজে (পেপার রিটার্ন) রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
২০২৪–২৫ অর্থবছরে ১৭ লাখ ১২ হাজার ৪৯২ জন করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই–টিআইএন) নিবন্ধন হয়েছে।
২০২৩–২৪ অর্থবছরে ই–রিটার্ন দাখিল করেছিলেন মোট পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৭ জন করদাতা।
১২৩ দিন আগে
এনবিআর আন্দোলনে সরকারি ক্ষতি নিরূপণে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে দেশের রাজস্ব ও অর্থনৈতিক খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ এবং কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচি পালনের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আদেশে আরও জানানো হয়, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও রাজস্ব আদায় ব্যাহত হওয়ার কারণে রাজস্ব হারানোসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব পর্যালোচনা করবে এ কমিটি।
আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় বরখাস্ত ৮ এনবিআর কর্মকর্তা
আইআরডির যুগ্মসচিব সৈয়দ রবিউল ইসলামকে আহ্বায়ক ও উপসচিবকে (প্রশাসন-১) সদস্যসচিব করে গঠিত এ কমিটিতে অর্থ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় (চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-১) কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ওই আদেশে কমিটির কার্যপরিধি নিয়ে বলা হয়েছে, গত ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস বন্ধ থাকার কারণে যে পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তার পরিমাণ নিরূপণ; দুই মাসব্যাপী চলমান ধর্মঘট ও কর্মবিরতির ফলে কাস্টম হাউস, ভ্যাট অফিস, বন্ড কমিশনারেট, কর অঞ্চল ও আপিল সংস্থাসমূহে রাজস্ব আদায়ে যে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে, তার পরিমাণ নির্ণয় এবং দীর্ঘ ২ মাসব্যাপী কর্মসূচি পালনের কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম এবং সকল স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ক্ষয়ক্ষতিসহ দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
এদিকে, রাজস্ব কর্মকর্তাদের কর্মবিরতিকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এতে সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন এবং আমদানি-রপ্তানিকারকদের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন তারা।
১৪১ দিন আগে
প্রকাশ্যে বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় বরখাস্ত ৮ এনবিআর কর্মকর্তা
বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৮ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ সংক্রান্ত পৃথক আদেশ জারি করেছে ।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা্রা হলেন— ঢাকা কর অঞ্চল-২ এর যুগ্ম কর কমিশনার মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫ এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের মোরশেদ উদ্দীন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার আশরাফুল আলম প্রধান, খুলনা কর অঞ্চলের আবগারি কমিশনার শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের আবগারি কমিশনার নুশরাত জাহান এবং কুমিল্লা কর অঞ্চলের আবগারি কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান।
এনবিআরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তারা সবাই গত মাসে এনবিআরে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকে ছিলেন নেতৃত্বে।
আদেশে বলা হয়, ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ অবজ্ঞা করে তা প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মতো ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আচরণের অভিযোগে বিভাগীয় তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পড়ুন: ‘জাতীয় সংস্কারক’ স্বীকৃতি পেতে ইচ্ছুক নন অধ্যাপক ইউনূস: সরকার
তাদের এনবিআরের স্পেশাল ডিউটি অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তারা সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রাপ্য ভাতা পাবেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবদুর রহমান খান এ আদেশে স্বাক্ষর করেন। গত মাসে এনবিআরের কর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে ‘যৌক্তিক সংস্কার’-এর দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন দেশের বিভিন্ন স্থানে কার্যক্রম বন্ধ রাখেন তারা।
পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এ পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহারের পর তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও কাজ বন্ধ রাখার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনবিআরের দুই সদস্যসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তাদের অধিকাংশই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন।
১৪২ দিন আগে
এনবিআরে সচিব নিয়োগে নতুন নীতিমালার পরামর্শ দেবে কমিটি
এনবিআর নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে দুই বিভাগে (রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন) কীভাবে সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, তার জন্য নীতিমালা করার পরামর্শ দেবে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল রাখার লক্ষ্যে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই কমিটির অগ্রগতি সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলওয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ কথা জানান।
এ সময় কমিটির সদস্য শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে পাঁচটি বৈঠক করেছি। এখন আমরা মাঠ পর্যায়ের আয়কর ও শুল্ক বিভাগের কার্যক্রম দেখব। এনবিআরের ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিদের মূল বক্তব্য হলো, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অটুট রাখতে হবে। এছাড়া এনবিআর ভেঙে যে দুটি বিভাগ হবে—রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন বিভাগ, সেখানে শুধু ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ করতে হবে। তারা দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এখন তারা আর আগের অবস্থানে নেই।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেছেন, তাদের গত দুই মাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারা এনবিআর কর্মকর্তাদের হয়রানির শিকার। এনবিআর সংস্কার কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের পূর্ণ সমর্থন আছে। তারা আরেকটা বিষয়ে বলেছেন শাস্তির ক্ষেত্রে, কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে, কাউকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছে। এগুলো সব ঠিক আছে, তবে একটু ধীরগতি অবলম্বন করতে হবে বলে দাবি তাদের।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআর অধ্যাদেশ নিয়ে সমস্যা কোথায়—জানতে গিয়ে আমরা দেখলাম, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্যান্য ক্যাডারের যে বিরোধ, এটাই মূল কারণ। তবে অধ্যাদেশ কেন্দ্র করে এটা হলো কেন? সেখানে দুটি কারণ রয়েছে। এক. অধ্যাদেশে কিছু মৌলিক ত্রুটি আছে। যারা এই অধ্যাদেশ করেছেন তারা একটু চতুরতার আশ্রয় নিয়েছেন। যেমন বিভাগের যিনি সচিব হবেন, তিনি সরকারের সব উপযুক্ত কোনো যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে রাজস্ব বিভাগের সচিব পদে নিয়োগ দেবেন। এখন উপযুক্ত ব্যক্তি—এটা একটা সমস্যা। একই সমস্যা আছে অধ্যাদেশের ৭ ও ৩ অনুচ্ছেদে। সরকারের রাজস্ব আহরণ সংক্রান্ত যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে—অধ্যাদেশের এই ধরনের কতগুলো সমস্যা চিহ্নিত করেছি। আমরা যেহেতু পরামর্শক কমিটি, সেহেতু আমরা এগুলো সমাধানের একটি পরামর্শ দেব।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনের পথ হলো অধ্যাদেশে যে সমস্ত ত্রুটি আমরা পেয়েছি সেগুলো নিয়ে কাজ করা। এরপর আরেকটি বিষয় হচ্ছে, এনবিআর আর থাকছে না। এনবিআরে কেউ চাকরি করে—এটা শুনলে সবাই একটা অট্টহাসি দেয়। মানুষ কেন হাসি দেয় এটা আমরা-আপনারা সবাই কিন্তু জানি। তো এজন্যই এনবিআর না থাকাটা সবার জন্য ভালো। এই নামটাও সবার জন্য ভালো। দুটি ডিভিশনের কথা বলা হয়েছে, সেটা হবে।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে চিরুনি অভিযান শুরু হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
উপদেষ্টা আরও বলেন, তাদের দাবি—শুধু দুটি ক্যাডারের সদস্য নিয়ে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বিভাগ গড়তে হবে। এ দাবিটি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। এটা গ্রহণযোগ্য না। একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে প্রশাসন ক্যাডারের খবরদারি এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। ওরা বলেছে যে, সব লোক আমাদের হতে হবে—এটাও গ্রহণযোগ্য না। এজন্য আমাদের যেটা করতে হবে, সেটা হলো নতুন দুটি বিভাগ হবে—রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের নতুন যে দুটি বিভাগ হবে (রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন), সেখানে সচিব কে হবেন সেটার জন্য একটা নীতিমালা করতে হবে। এই এই যোগ্যতা থাকলে তাকে সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হবে—এমন একটা নীতিমালা থাকতে হবে।
‘যেহেতু রাজস্ব কার্যক্রম চালাতে হবে, সেহেতু নীতিমালা করা প্রয়োজন। শুধু সচিব না, ঊর্ধ্বতন যে পদগুলো রয়েছে, সেগুলোর জন্যও নীতিমালা করতে হবে—যাতে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমটা আরও বেগবান হয়। রাজস্ব আদায় অত্যন্ত কম—এটা যেন বাড়ে। গ্রাহক সেবা বাড়ে, বন্দরে কনটেইনার জট না থাকে ও হয়রানি বন্ধ হয়—এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এখন আমরা ফিল্ড ভিজিট করে একটা পরামর্শ আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে দেব। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় যা করার করবে,’ যোগ করেন তিনি।
১৪৪ দিন আগে
এনবিআর কর্মকর্তাদের ‘নিরীহ’ আন্দোলন সরকারবিরোধী রূপ নেয়: উপদেষ্টা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের নিরীহ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এই কথা জানান। এ সময় কমিটির সদস্য শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এনবিআর কর্মকর্তাদের রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এটি নিরীহ আন্দোলন ছিল। পরে এটি সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়। অর্থনৈতিক ক্ষতি করার উদ্দেশ্য হয়ে পড়েছিল। রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত করার একটা উদ্দেশ্য ছিল।'
একটি পত্রিকার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথা বলা হয়েছে। সেখানে আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী অবস্থান তৈরি হয়েছে। সরকার কিন্তু অপরিসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা আমাদের বলেছেন, আপনারা এতদিন এটাকে (আন্দোলন) কন্টিনিউ করতে দিলেন কেন? এটা ১৫ দিনের মাথায় কেন থামালেন না? নিপীড়নমূলক না হয়ে কীভাবে এটার সমাধান করা যায় সেজন্য উনি বারবার আলোচনা করেছেন, কিন্তু সেটাতে কাজ হয়নি।’
আরও পড়ুন: এনবিআরের প্রথম সচিব তানজিনা সাময়িক বরখাস্ত
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ইতোমধ্যে পাঁচটি সভা করেছে। ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন, আয়কর অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, এনবিআর, সংস্কার কমিশন এবং সর্বশেষ ব্যবসায় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট কার্যক্রম দেখব। আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের প্রধান বক্তব্য ছিল, এনবিআর অটুট রাখতে হবে; রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়নের যে দুটি ডিভিশন, সেখানে ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ করতে হবে। তবে তারা দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আর দুই বিভাগ করার ক্ষেত্রে তাদের কোনো আপত্তি নেই। সংস্কার কমিটির যে বক্তব্য, সেটিও অভিন্ন।’
‘ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুই মাস আন্দোলনের কারণে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা এটাও জানিয়েছেন যে প্রতিনিয়ত শুল্ক, আয়কর ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের হয়রানির শিকার। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন তাদের আছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, এনবিআরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছে। কিছু কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা (ব্যবসায়ীরা) বলেছেন, এটি ঠিকই আছে, তবে এ বিষয়ে একটু ধীরগতি অবলম্বনের জন্য তারা অনুরোধ করেছেন।’
গত ৩০ জুন ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটি গঠনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে নড়েচড়ে বসেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা
পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে আরও সদস্য হিসেবে রয়েছেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
উল্লেখ্য, ফাওজুল কবির খান ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল করতে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আহ্বায়ক।
১৪৪ দিন আগে