পবিত্র রমজান
খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
পবিত্র রমজান মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে যে ফলটির চাহিদা সর্বাধিক বৃদ্ধি পায় তা হলো খেজুর। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশিদের কাছেও এটি ইফতার শুরুর একটি ঐতিহ্যবাহী উপায়। জাতভেদে প্রতিটিরই রয়েছে অনন্য স্বাদ। এছাড়া অধিকাংশ খেজুরেরই রং, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগুণ প্রায় কাছাকাছি। রোজা ছাড়া প্রতিদিনের জলখাবার বা ভারী খাবারের সঙ্গেও খেজুর দারুণ একটি সংযোজন। এই ফলটি নিয়েই আজকে স্বাস্থ্য বিচিত্রা। চলুন, দেশের বাজারে চলমান বিশ্ব নন্দিত ১০টি খেজুরের জাত, উৎস, পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও বাজার দর সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমান বাজারের জনপ্রিয় ১০টি খেজুর
.
আজওয়া
মাঝারি ডিম্বাকৃতি কুঁচকুঁচে কালো বর্ণের আজওয়া খেজুর উৎপন্ন হয় সৌদি আরবের মদিনায়। সম্পূর্ণ চর্বিহীন এই ফল প্রাকৃতিক চিনির শর্করা উপাদানসহ প্রোটিনে ভরপুর। এতে আরও আছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাসিয়াম। খনিজ পুষ্টিগুলো হাড়ের গঠনকে মজবুত করে। পেশীর ফাংশন ও হৃদযন্ত্রে সামগ্রিক সুস্থতার বিকাশ ঘটায়। আর ফাইবার হজমশক্তি ত্বরান্বিত করে পরিপাকতন্ত্র স্বাভাবিক রাখে।
আরও পড়ুন: বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদন বাকৃবি গবেষকের
মানের ভিত্তিতে খুচরা কাঁচা বাজারে আজওয়ার দাম কেজি প্রতি ৬৪০-৮০০ টাকা। কোনো কোনো বাজারে এগুলো ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়।
মেডজুল
বৃহদাকৃতি ও সুমিষ্ট স্বাদের জন্য বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত মেডজুল। এই খেজুর উৎপন্ন হয় মরক্কোর তাফিলাল্ত অঞ্চলে। এগুলো ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা প্রজাতির উদ্ভিদ থেকে চাষ করা হয়। বর্তমানে এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইস্রায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়।
শরীরের পর্যাপ্ত ক্যালরির জন্য মাত্র দুটি মেডজুলই যথেষ্ট। এর কার্বহাইড্রেটের বিশাল অংশ হচ্ছে অর্গানিক শর্করা, যা দেহে প্রয়োজনীয় শক্তির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে। মেডজুলে বিদ্যমান পুষ্টিকর ফাইবার ও প্রোটিন হজমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এতে আরও আছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ও আয়রনের মতো খনিজ পদার্থ।
এই উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন উপাদানগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফাইবার সামগ্রী রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে ও ওজন ঠিক রাখার ক্ষেত্রে উপযোগী ভূমিকা পালন করে। আকার ও বাজারের পৌঁছানোর পূর্বে প্রক্রিয়াকরণের উপর ভিত্তি করে এই খেজুরের দামে যথেষ্ট তারতম্য হয়। এই পরিধি নিম্নে ৯২০-৯৬০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০০- ১৮০০ টাকা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: খেজুর আমদানিতে আগাম কর প্রত্যাহার
মারিয়াম
প্রাথমিকভাবে ইরানে চাষকৃত এই খেজুর মাঝারি থেকে বড় আকারের হয়ে থাকে। ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা প্রজাতি ভুক্ত গাছ থেকে উৎপন্ন এই খেজুর মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলে যায়। প্রাকৃতিক শর্করার আধার এই ফল মানবদেহে শক্তি যোগানের একটি মূল্যবান উৎস।
পুষ্টি উপাদান হিসেবে হজম-সহায়ক ফাইবারের উপস্থিতি হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ অংশ নেয়। পাশাপাশি বিদ্যমান পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মতো খনিজ উপাদানগুলো রক্তনালীগুলোকে শিথিল রাখে ও হাড়কে শক্তিশালী করে। বিভিন্ন স্থানীয় বাজারভেদে বর্তমানে মারিয়াম খেজুরের দাম ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে।
খুরমা খেজুর
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি খুরমা খেজুরের উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ারও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। বাংলাদেশে খেজুরের এই জাতকে সাধারণত শুকনো খেজুর বলা হয়। বাজারজাত করার পূর্বে কড়া রোদে শুকানো হয় বিধায় এগুলো খাওয়ার জন্য উপযোগী গঠন ও মিষ্টি স্বাদ পায়।
শুকনো খেজুর কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দেহে শক্তি যোগায় ও হজম এবং অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজের উপস্থিতি থাকায় এগুলো হৃদরোগ, পেশীর নড়াচড়া ও রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে অবদান রাখে। এ ছাড়াও এতে রয়েছে পরিশোধিত চিনি সমৃদ্ধ জৈব শর্করা, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের অধিকারি। সুতরাং নিত্য আহারে এই ফল রাখা মানে শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাওয়া। দেশের নানা স্থানের কাঁচা বাজারগুলোতে এগুলোর দাম প্রতি কেজিতে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা। তবে প্রিমিয়াম জাতের মূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় রস সংগ্রহে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত গাছিরা
সুক্কারি
ক্যারামেল ও মধুর মিশ্রণযুক্ত স্বাদ ও সোনালী বর্ণযুক্ত সৌদি আরবের সুক্কারি সারা বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়। অধিকাংশ নরম খেজুরগুলোর মতো এটিও মুখে দিতেই ব্যতিক্রমি স্বাদে পুরো মুখ ভরে যায়। পুষ্টিগত দিক থেকে সুক্কারি দ্রুত শক্তিবর্ধক অর্গানিক শর্করায় ভরপুর। এতে থাকা ফাইবারগুলো পরিপাক সচল রেখে হজমের সুস্বাস্থ্যে অবদান রাখে।
খনিজ উপাদানগুলোর মধ্যে পটাসিয়ামের আধিক্য বেশি, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার বিকাশ ঘটায়। এগুলোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। মান ও জাতের ভিন্নতার উপর নির্ভর করে সুক্কারির প্রতি কেজির দাম ২৫০ থেকে ৬৩০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
মাবরুম
সৌদি আরবে চাষকৃত মাবরুম খেজুর বেশ লম্বাকৃতি ও লালচে-বাদামী রঙের হয়। এর আবরণটি বেশ দৃঢ় হয় ও অন্যান্য খেজুর থেকে এর মিষ্টতা কিছুটা কম। চিনি কম থাকলে মাবরুম হজম-সহায়ক ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা পরিপাকতন্ত্রের যাবতীয় সমস্যা নিরসণে অংশ নেয়।
ফলটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ৬ ও আয়রন সরবরাহ করে থাকে। পুষ্টি উপাদানগুলোর পরিমিত সমন্বয় হৃদরোগ, রক্ত, পেশী ও মস্তিষ্ক-জনিত স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো দূর করে। প্রতি কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা। তবে সৌদিতে বাছাইকৃতগুলোর মূল্য ১২০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হয়।
আরও পড়ুন: খেজুরের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
কালমি
সৌদি আরবের মদিনায় উৎপন্ন হওয়া এই খেজুরের আরেক নাম সাফাভি। আকারে মাঝারি থেকে লম্বা, রঙ কালো। বাহ্যিক আবরণ হাল্কা আর্দ্র ও নরম। এটি দ্রুত শক্তিবর্ধকের জন্য অপরিশোধিত শর্করা ও স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের বিকাশে উপযোগী ফাইবারের যোগান দেয়।
খনিজ পদার্থের এই ভান্ডারে রয়েছে পটাসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমিত সমন্বয়। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হৃদপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য, পেশীর সচলতা, স্নায়ুর কার্যকারিতা ও হিমোগ্লোবিনের সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালমির বর্তমান বাজারের দর কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে।
আম্বার
ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা গাছ ও মদিনায় উৎপন্ন খেজুরের এই জাতকে ‘আনবারা’ নামেও ডাকা হয়। মোটা খেজুরগুলোর গঠন একটু ব্যতিক্রম আকৃতির ও রঙে গাঢ় বাদামীর সঙ্গে থাকে কালচে আভার মিশ্রণ। আম্বারের প্রধান পুষ্টিগুনগুলোর মধ্যে রয়েছে— অপরিশধিত শর্করা ও ফাইবার, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম।
তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আম্বার খেজুর রাখা মানে হজম, রক্তচাপ, পেশী ও হাড়ের সমুন্নত কার্যকারিতা বজায় রাখা। স্থানীয় বাজারে প্রাপ্যতা ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে এগুলোর প্রতি কেজির মূল্য ৭০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
জাহেদী
হালকা সোনালী-বাদামী রঙের ও ডিম্বাকৃতির মাঝারি আকারের এই খেজুরের উৎপত্তিস্থল ইরাক। বাইরের বাদামের গন্ধ বিশিষ্ট আবরণটি আধা-শুষ্ক ও দৃঢ় এবং স্বাদ হাল্কা মিষ্টি।
জাহেদী খেজুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হজমকারী ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, শর্করা, পটাসিয়াম ও সোডিয়াম সরবরাহ করে। এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬, আয়রন, ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো সক্রিয়ভাবে পরিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্ত প্রবাহে অক্সিজেন পরিবহন বাড়ায়। বাজার প্রতি কেজির মূল্য ন্যূনতম ২২০-২৫০ টাকা।
দাব্বাস
একদম ছোট থেকে মাঝারি গড়নের গাঢ় বাদামী রঙের দাব্বাস খেজুর চাষের প্রধান অঞ্চল সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রায় সব ধরণের খেজুরের মতো এটিও সংগৃহীত হয় ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা উদ্ভিদ থেকে।
এই ফলে আছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও সেলেনিয়াম। পুষ্টি উপাদানগুলো সামগ্রিক ভাবে হজম, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ও রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে কার্যকরি অবদান রাখে। এই খেজুরের অ্যান্টি-ডিহাইড্রেশন, সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এগুলোর মূল্য সাধারণত প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা।
আরও পড়ুন: গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
শেষাংশ
বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে উৎসরিত অনন্য স্বাদের এই ১০ রকম খেজুর রমজানে রোজাদারদের স্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নতিতে অবদান রাখে। তন্মধ্যে কালো বর্ণের আজওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। আকারে বড় ও সুমিষ্ট খেজুর হিসেবে স্বীকৃত মেডজুল ও আম্বার, অন্যদিকে নমনীয়তার দিক থেকে মারিয়াম খেজুর প্রসিদ্ধ।
দাব্বাসের ভেতরটাও একই রকম কোমল। দক্ষিণ এশিয়ার প্রসিদ্ধ খাবার খুরমা খেজুর, আর সুক্কারির জনপ্রিয়তা তার ক্যারামেল-সদৃশ স্বাদের জন্য। দীর্ঘক্ষণ মুখে রেখে সুঘ্রাণ সৃষ্টির জন্য মাবরুম বেশ উপযোগী। জাহেদীতে রয়েছে হালকা বাদামের স্বাদ, আর অন্যান্য খেজুরের তুলনায় অত্যধিক খনিজ উপদান মিলবে কালমি বা সাফাভিতে। সব মিলিয়ে রোজাকালীন আহার থেকে দীর্ঘ বিরতিতে এই খেজুরগুলো হতে পারে দেহের শক্তি সঞ্চয়ের উৎকৃষ্ট মাধ্যম।
আরও পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
১৬ দিন আগে
পবিত্র রমজানে কোরআন তেলাওয়াত শোনার ১০ মোবাইল অ্যাপ
সিয়াম সাধনার মাসে প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত শোনার মাধ্যমে প্রতিটি মুহূর্তে ইবাদতে মশগুল থাকা সম্ভব। রমজানের মাহাত্ম্য অর্জনের এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করা যেতে পারে স্মার্টফোনে কুরআন তেলাওয়াত শোনার মাধ্যমে। অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপল উভয় প্ল্যাটফর্মের জন্যই রয়েছে দারুণ কিছু অ্যাপ— যেগুলো এই ইবাদতের জন্য সহায়ক হতে পারে। চলুন, স্মার্টফোনে কোরআন তেলাওয়াত শোনার শীর্ষ-রেটিংপ্রাপ্ত অ্যাপগুলো দেখে নেওয়া যাক।
রমজানে যে ১০টি মোবাইল অ্যাপ হতে পারে কোরআন তেলাওয়াত শোনার উৎকৃষ্ট উপায়
.
কোরআন মাজিদ (Quran Majeed - القران الكريم / Quran Majeed - Ramadan 2025)
গুগল প্লে স্টোরে ৪.৬-স্টার এবং অ্যাপেল অ্যাপ স্টোরে ৪.৮-স্টার রেটিংপ্রাপ্ত এই অ্যাপটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পাকডাটা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করা গেলেও প্রিমিয়াম ফিচারগুলোর জন্য ন্যূনতম ৮০ টাকা খরচ করতে হবে। অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য অ্যাপটির সাইজ ৮৩ এমবি (মেগাবাইট) এবং অ্যাপেল ডিভাইস বা আইওএস-এর জন্য ১১০.৭ এমবি।
‘Quran Majeed - Ramadan 2025’-এ আছে আব্দুর রাহমান আল-সুদাইসের মতো বিখ্যাত সব ক্বারিদের তেলাওয়াত। দেশ-বিদেশের নানান ধরণের ভাষার পাশাপাশি পুরো ইন্টারফেসটি বাংলাতে এবং অফলাইনে চালানো যাবে।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.pakdata.QuranMajeed
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/quran-majeed-ramadan-2025/id365557665
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
আল কোরআন (তাফসির অ্যান্ড বাই ওয়ার্ড) | Al Quran (Tafsir and By Word)
গ্রীন্টেক অ্যাপ্স ফাউন্ডেশনের সরবরাহ করা এই সেবাটি কেবল শোনার জন্য নয়, কোরআন অধ্যয়নের জন্যও উপযোগী। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য জায়গা নিবে মাত্র ৪১ এমবি এবং আইওএস ডিভাইসের জন্য ২৬.২ এমবি।
সম্পূর্ণ ফ্রি অ্যাপটিতে আছে তাফসির ইবনে কাসির, তাজবীদ এবং বিভিন্ন ক্বারিদের তেলাওয়াতের অডিও— যেগুলো একাধিক ভাষায় অনুবাদকৃত। এর মধ্যে বাংলাও আছে।
‘Al Quran (Tafsir and By Word)’-এর গুগল প্লে স্টোরে সংগৃহীত রেটিং ৪.৮-স্টার এবং অ্যাপেল অ্যাপ স্টোরে ৪.৯-স্টার।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.greentech.quran&hl=en
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/al-quran-tafsir-by-word/id1437038111
আরো পড়ুন: ছোটদের বাংলা ভাষা শেখার ১০টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ
তার্তিল - মেমোরাইজ কোরআন (Tarteel ترتيل - Memorize Quran)
পবিত্র কোরআনভিত্তিক অ্যাপ তার্তিলের বিশেষ দিক হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সুরা সঠিক পদ্ধতি অনুসারে মুখস্ত করার জন্য এটি ব্যবহারকারীর উচ্চারণ শুনে তা যাচাই করতে পারে। এই কারণে অ্যাপটি তার্তিল এআই নামেও পরিচিত।
অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের ডিভাইসে জায়গা থাকতে হবে ন্যূনতম ১৬৩ এমবি। আর আইফোন ব্যবহারকারিদের প্রয়োজন হবে কমপক্ষে ২৩৩.২ এমবি স্টোরেজ। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তার্তিল ইনকরপোরেশন উদ্ভাবনী অ্যাপটিকে ফ্রিতে ডাউনলোডের সুযোগ দিচ্ছে।
এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ‘Tarteel ترتيل - Memorize Quran’-এর রেটিং ৪.৭-স্টার, আর অ্যাপেলের অ্যাপ স্টোরে ৪.৮-স্টার।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.mmmoussa.iqra&hl=en
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/tarteel-%D8%AA%D8%B1%D8%AA%D9%8A%D9%84-ai-quran/id1391009396
আরো পড়ুন: কীভাবে জানবেন ঢাকার যানজটের সর্বশেষ অবস্থা?
মুসলিম প্রো: কোরআন আযান নামাজ / Muslim Pro: Prayer Times Qibla
অডিও তেলাওয়াত, নামাজের ওয়াক্তের নোটিফিকেশন, এবং কিবলার দিকনির্দেশ ফিচারের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি অ্যাপ ‘Muslim Pro: Prayer Times Qibla’। বিটসমিডিয়া পিটিই লিমিটেডের তৈরি অ্যাপটিতে আরও রয়েছে বঙ্গানুবাদের সুবিধা।
এখন পর্যন্ত আইফোন ব্যবহারকারীদের নিকট থেকে অ্যাপের প্রাপ্ত রেটিং ৪.৭-স্টার এবং অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা দিয়েছে ৪.২ স্টার।
বিনামূল্যে ডাউনলোডের জন্য সরবরাহকৃত অ্যাপটির সাইজ আইফোনের জন্য ৩৯৭.৮ এমবি এবং অ্যান্ড্রয়েডের জন্য ৬৫ এমবি।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.bitsmedia.android.muslimpro&hl=en
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/muslim-pro-prayer-times-qibla/id388389451?platform=iphone
আরো পড়ুন: নতুন স্মার্টফোন কিনছেন, জেনে নিন সেটি আসলেই নতুন কিনা!
আয়াত - কোরআন অ্যাপ (Ayah - Quran App)
আইওএস সমর্থিত ডিভাইসে ১৮৮.৯ এমবি এবং অ্যান্ড্রয়েডে ১৪৫ এমবি সাইজের এই অ্যাপটি ডেভেলপ করেছে আয়াত অ্যাপ। এতে আছে একাধিক ক্বারির কণ্ঠে সবগুলো সুরার অডিও প্লেব্যাক, বঙ্গানুবাদ এবং তাফসির। আয়াত শোনার সময় বুকমার্ক করার ফিচারটির মাধ্যমে পরবর্তীতে কতটুকু শোনা হয়েছে তা বোঝা যায়।
অ্যাপল অ্যাপ এবং গুগল প্লে উভয় স্টোরে ‘Ayah - Quran App’-এর রেটিং ৪.৮-স্টার। সহজাত ইন্টারফেসের এই ডিজিটাল পণ্যটি স্টোরগুলো থেকে বিনামূল্যেই ডাউনলোড করা যাবে।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.ayah
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/ayah-quran-app/id706037876?platform=iphone
আরো পড়ুন: শিশুদের টিকটক আসক্তি: ঝুঁকি থেকে যেভাবে বাঁচবেন
ইসলাম৩৬০: কোরআন, হাদিস, ক্বিবলা (Islam360: Quran, Hadith, Qibla)
জাহিদ হোসেন চিহ্পা এবং ইসলাম৩৬০ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট নির্মিত এই অ্যাপটি সব ধরণের ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য ফ্রি। ডাউনলোড সাইজ অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে ১৮০ এমবি এবং আইফোনের জন্য ৬১১.৬ এমবি।
অ্যাপেল অ্যাপ স্টোর থেকে ‘Islam360: Quran, Hadith, Qibla’-এর অর্জিত রেটিং ৪.৯-স্টার আর অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের কাছে ৪.৮-স্টার। এতে একাধিক ভাষায় অনুবাদ, বিভিন্ন ক্বারিদের তেলাওয়াত, নামাজের ওয়াক্ত ও কিবলা দিকনির্দেশনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হাদিস সংকলন। এর কার্যকারিতার আরও একটি দিক হলো এর বুকমার্কিং এবং সার্চ ফিচার।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islam360
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/islam360-quran-hadith-qibla/id1006098149
আরো পড়ুন: লেখকদের সৃজনশীলতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব: ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা
এমপিথ্রি কোরআন (MP3 Quran القرآن الكريم)
অফলাইনে ইন্টারনেটের সাহায্য ছাড়াই ব্যবহারযোগ্য অ্যাপগুলোর মধ্যে এটি বেশ জনপ্রিয়। সহজ ইন্টার্ফেসের আওতায় এখানে উন্মুক্ত রয়েছে কোরআনের সবকটি সুরার অডিও লাইব্রেরি। এই সংগ্রহশালাকে সমৃদ্ধ করেছে বিশ্বজুড়ে খ্যাতিমান সব ক্বারিদের কণ্ঠ। এছাড়াও রয়েছে সার্চ, বুকমার্ক, ও স্লিপ টাইমারের ফিচার।
সম্পূর্ণ ফ্রি অ্যাপ ‘MP3 Quran القرآن الكريم’ সংরক্ষণের জন্য অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোতে জায়গা থাকতে হবে ৪৬ এমবি এবং আইফোনে ১৫৪.৭ এমবি। ডিভাইস নির্বিশেষে সব ব্যবহারকারীরা অ্যাপটিকে ৪.৮-স্টার রেটিং দিয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=my.smartech.mp3quran
অ্যাপল: https://apps.apple.com/us/app/mp3quran/id533029431
আরো পড়ুন: ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
আব্দুর রাহমান আল-সুদাইস - ফুল (Abdul Rahman Al-Sudais - Full)
বিশ্ববরেণ্য ক্বারি মক্কার পবিত্র মাসজিদুল হারামের ইমাম শেখ আবদুর রাহমান আল-সুদাইস। তার তেলাওয়াতকৃত সম্পূর্ণ কোরআনকে একীভূত করা হয়েছে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।
শুধু অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য অ্যাপটি ডেভেলপ করেছে লাফ্জ অ্যাপ্স। ১২০ এমবির এই অ্যাপটি ইন্টারনেটের সংযোগ ছাড়াই চালানো যায়। এর ব্যাকগ্রাউন্ড প্লে ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ফোনের অন্যান্য অ্যাপ চালানোর সময়েও তেলাওয়াত শুনতে পারেন।
রিভিউদাতাদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ‘Abdul Rahman Al-Sudais - Full’ অ্যাপ ৪.৮-স্টার রেটিং অর্জন করেছে।
অ্যান্ড্রয়েড: https://play.google.com/store/apps/details?id=rooh.apps.naaz.com.quran.al.sudais.offline
আরও পড়ুন: অনলাইন বই বাজার: ঘরে বসেই যে ১০ ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন পছন্দের বই
ফুল কোরআন শরীফ অফলাইন অ্যাপ (Full Quran Sharif Offline App)
অফলাইনে কোরআন পড়া ও শোনার জন্য আরও একটি কার্যকরি অ্যাপ ‘Full Quran Sharif Offline App’। কেবল অ্যান্ড্রয়েডের জন্য প্রযোজ্য ৪৯ এমবি সাইজের অ্যাপটি বানিয়েছে ডিকশনারী ওয়ার্ল্ড১১। ইতোমধ্যে ব্যবহারকারীদের নিকট থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোডযোগ্য এই অ্যাপের সংগ্রহ ৪.৫-স্টার রেটিং।
অনলাইনে পরিচালিত অন্যান্য অ্যাপগুলোর মতো এতেও আছে বিখ্যাত সব ক্বারিদের তেলাওয়াত, একাধিক ভাষায় অনুবাদ, সার্চিং ও বুকমার্কিং ফিচার।
অ্যান্ড্রয়েড:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.fullquransharif.quranpak.translation.qibladirection&hl=en&gl=US
আরো পড়ুন: এয়ার পিউরিফায়ার: প্রয়োজনীয়তা, দাম, জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ও নতুন মডেল
ইজি কোরআন এমপিথ্রি অডিও অফলাইন (Easy Quran Mp3 Audio Offline)
অফলাইন কোরআন শোনার এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি সংক্ষেপে ইজি কোরআন নামেও পরিচিত। মুসলিম ওয়ার্ল্ডঅ্যাপ নির্মিত অ্যাপটি এর সহজ ইন্টারফেসের জন্য ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। ব্যবহারকারীদের পর্যালোচনায় মাত্র ৪২ এমবির অ্যাপটি ৪.৫-স্টার রেটিং পেয়েছে।
‘Easy Quran Mp3 Audio Offline’ অ্যাপ শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের জন্য এবং তা বিনামূল্যেই ডাউনলোড করা যায়। এটি একদম পৃথক আয়াত পর্যন্ত সার্চ করার সুবিধা দেয়। একই সঙ্গে বারবার শোনার জন্য অন্যান্য অ্যাপের তুলনায় বেশ সহজভাবে একই আয়াতের পুনরাবৃত্তি করা যায়।
অ্যান্ড্রয়েড:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslimappassistant.Islampro.qiblafinder.quranprayerdua
আরো পড়ুন: ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের উপায়
পরিশিষ্ট
কোরআন তেলাওয়াত শোনার এই ১০টি মোবাইল অ্যাপ হচ্ছে সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং স্টোরগুলোতে সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত। তন্মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে ‘ইসলাম৩৬০’ এবং ‘আল কোরআন (তাফসির অ্যান্ড বাই ওয়ার্ড)’, ডিভাইস ভেদে যেগুলোর রেটিং ৪.৮ থেকে ৪.৯। ‘আয়াত’, ‘এমপিথ্রি কোরআন’, এবং ‘আব্দুর রাহমান আল-সুদাইস - ফুল’ অ্যাপগুলোর প্রত্যেকটির অর্জন ৪.৮। ৪.৭ থেকে ৪.৮-এ রয়েছে ‘তার্তিল’, ৪.৬ থেকে ৪.৮-এ ‘কোরআন মাজিদ’, এবং ৪.২ থেকে ৪.৭-এ ‘মুসলিম প্রো’। সর্বনিম্ন ৪.৫ রেটিং সংগ্রহে থাকা অ্যাপ দুটি হচ্ছে ‘ফুল কুরআন শরীফ অফলাইন’ এবং ‘ইজি কুরআন এমপিথ্রি অডিও অফলাইন’।
এই ডিজিটাল সেবাগুলোর যেকোনোটি হতে পারে পুরো রমজান মাসে রোযাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলার উৎকৃষ্ট উপায়।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালে যে প্রযুক্তিগত দক্ষতাগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকবে
১৮ দিন আগে
চট্টগ্রামে রোজার প্রথম দিনেই ওয়াসার পানির সংকট
চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের শুরুতেই পানি সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছে নগরবাসী।
চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি উৎপাদন কমে যাওয়ায় নগরীতে এই সংকট দেখা দিয়েছে।
নগরীর অনেক এলাকায় সারা দিনই পানি মিলছে না। উঁচু এলাকায় পানির সংকট আরও বেশি দেখা দিয়েছে।
মহানগরীর চকবাজার, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, হালিশহর, পতেঙ্গা, কাট্টলী, আগ্রাবাদ, দেওয়ান বাজার ও মুরাদপুর এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দারা গত কয়েকদিন ধরে ওয়াসার পানি পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। অনেকের অভিযোগ, মাঝরাতে সেহরির সময়ও তারা পানি পাননি। এত রাতে দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এতে প্রথম সেহরিতেই তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় পানিবন্দি ২ হাজার পরিবার, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
বহদ্দার হাটের মর্জিনা আক্তার নামে এক গৃহবধূ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘সোমবার রাত থেকে বাড়িতে পানি নেই। সেহরিতে বোতলজাত পানি কিনে খেয়েছি, কিন্তু ওজু-গোসল কীভাবে করব বুঝতে পারছি না। প্রতি বছর শুনি ওয়াসার নতুন নতুন প্রকল্প হয়, কিন্তু গ্রীষ্মকাল এলেই তাদের সব জারিজুরি শেষ হয়ে যায়। রমজানে পানির সংকটের বিষয়টি আগে থেকেই ভাবা উচিত ছিল। অথচ মাসে মাসে ঠিকই ওয়াসাকে পানির বিল নিচ্ছে।’
ওয়াসার কর্তৃপক্ষ জানান, উৎসগুলো থেকে লবণ পানি উঠে আসায় ওয়াসার পানি পরিশোধন কমে গেছে। তাতে নগরজুড়ে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। আবার রোজায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি থেকে ওয়াসার প্রতি লিটার পানিতে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ২১০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণ পাওয়া যাচ্ছে। মূলত কাপ্তাই লেকে পানি কমে যাওয়া এবং হালদার বিভিন্ন শাখা খালে বাঁধ দেওয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘আমরা এখন রেশনিং করে পানি সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এলাকা ভাগ করে একদিন পরপর পানি সরবরাহ দেওয়া হবে। পানির উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ৪৫টি গভীর নলকূপ আবার চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণেও পানির উৎপাদন ও সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কাপ্তাই লেকে স্বাভাবিক অবস্থায় সর্বোচ্চ পানি থাকে ১০৯ ফুট। কিন্তু বর্তমানে পানির স্তর কমে ৮৩ ফুটে নেমে এসেছে। লেকে পানির উচ্চতা কমে যাওয়ায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। কাপ্তাই লেক থেকে পানি না ছাড়ার কারণে হালদায় লবণাক্ততা বেড়ে গেছে।
ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানায়, চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির উৎস হালদা ও কর্ণফুলী নদী। পানির উচ্চতা নিচে নেমে যাওয়ায় ভাটার সময় নদী থেকে পানি নেওয়া যাচ্ছে না। আবার জোয়ারের সময় লবণাক্ততা বেড়ে যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্য ওয়াসার থেকে বিকল্প কোনো সোর্স নেই। এখন দৈনিক প্রায় ৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন কমে গেছে। নগরীতে রেশনিং করে পানি সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়াসা মদুনাঘাটে শেখ রাসেল ও মোহরা পানি শোধনাগারের জন্য হালদা নদী থেকে এবং রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত কর্ণফুলী শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার ১ ও ২ এর জন্য কর্ণফুলী নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে। কিন্তু এখন দুটি নদীতে পানির উচ্চতা কমে গেছে। কাপ্তাই লেকে পানির স্তর কমে যাওয়ায় পানি ছাড়া হচ্ছে না। এতে জোয়ারের সময় হালদার অনেক ভেতরে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ছে।
নদীর পানিতে লবণাক্ততা বিষয়ে ওয়াসা পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লবণাক্ততার মাত্রাটা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। লবণাক্ততা দূরীকরণে শোধনাগারের জন্য নদীর যেখান থেকে পানি সংগ্রহ করা হয় সেখানে ‘রিভার্জ অসনোসিস সিস্টেম’ বসানো যেতে পারে। তখন গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা পানিতে লবণের মাত্রা থাকবে না।
চট্টগ্রাম ওয়াসা বর্তমানে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-১ থেকে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-২ থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার, মোহরা পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার, শেখ রাসেল পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার ও গভীর নলকূপ থেকে দৈনিক ৪ কোটি লিটার নিয়ে দৈনিক মোট ৪৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে। নগরে বর্তমানে পানির চাহিদা প্রায় ৫৫ কোটি লিটার। কিন্তু লবণাক্ততার কারণে উৎপাদন আরও কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি।
আরও পড়ুন: সুপেয় পানির সংকট নিরসনের দাবিতে খালি কলসি মিছিল!
৩৭১ দিন আগে
রমজানে অফিসের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ
পবিত্র রমজান মাসে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে সরকার।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইজতেমা উপলক্ষে সড়ক ও পার্কিং নির্ধারণ করল ডিএমপি-জিএমপি
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রমজান মাসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অফিসের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জোহরের নামাজের জন্য দুপুর সোয়া ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ১৫ মিনিটের বিরতি থাকবে।
মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডাক, রেলওয়ে, হাসপাতাল ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা এবং অন্য জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এ সময়সূচির আওতার বাইরে থাকবে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকতার যোগ্যতা নির্ধারণের দাবির সঙ্গে সরকার একমত: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
এসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে সময়সূচি নির্ধারণ ও অনুসরণ করবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট ও এর আওতাধীন সব কোর্টের সময়সূচি সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারণ করবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ মার্চ থেকে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় মোবাইলের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে: বিটিআরসি চেয়ারম্যান
৩৮৪ দিন আগে
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনার
পবিত্র রমজান মাস ও আসন্ন ঈদ উৎসব উদযাপনের জন্য হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ও তার স্ত্রী মনু ভার্মা ঢাকার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পরিদর্শন করেন।এসময় ফাউন্ডেশন সহায়তায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য খাদ্যসামগ্রী, বই ও উপহার প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় হাইকমিশন এই পরিদর্শনে যান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ওয়ার সিমেট্রি পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনার
হাই কমিশনার তার বক্তব্যে মানবতার মর্ম, সহানুভূতি ও একে অপরের প্রতি সমর্থনকে ঈদ উৎসবের মূল বার্তা হিসেবে তুলে ধরেন।
৬৯৮ দিন আগে
পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোয় কিছু ব্যবসায়ীদের কঠোর সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র রমজান মাসে অসাধুভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের একাংশের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মসজিদগুলোর উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাস আসছে। আমরা জানি, রমজানের সময় কিছু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।’
শেখ হাসিনা বলেন, রমজান এমন একটি মাস যা সংযম ও কৃচ্ছতাকে উৎসাহিত করে এবং প্রত্যেককে অবশ্যই ধর্মীয় কার্যক্রম ও আধ্যাত্মিকতা নিশ্চিত ও সহজতর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই মাসে এই মুনাফালোভীরা দাম বাড়ায় এবং জনগণের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য বিশেষ কার্ড বিতরণ করেছে। পবিত্র রমজানের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত এক কোটি মানুষকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেবে সরকার। যারা কাজের যোগ্য নন তারা সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ২০ কেজি করে চাল পাবেন। আমরা প্রাইস কার্ডের মাধ্যমে জনগণকে ন্যায্যমূল্যে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা সমাজের বিত্তবানদের রমজানে অভাবগ্রস্তদের প্রতি আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানান।
কেউ যাতে খাদ্যে ভেজাল, মজুদ, কালোবাজারি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ইনসুলিন পাবেন ডায়াবেটিস রোগীরা: প্রধানমন্ত্রী
৭৩৪ দিন আগে
লকডাউনের চতুর্থ দিন: জনমানবহীন শহরে রূপ নিয়েছে ঢাকা
গতবছরের মতো এবছরও বাংলাদেশের মানুষ কঠোর লকডাউনের মধ্যেই পবিত্র রমজান পালন করছে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) সরকারের কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনে ঢাকার চিত্র অনেকটাই জনমানবহীন।
করোনা সংক্রমণ কমাতে গত বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে আরোপিত সরকারের কঠোর লকডাউন চলবে আগামী বুধবার (২১ এপ্রিল) মধ্যরাত পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিন: ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তা নির্জন
শনিবারে সকালে ঢাকার রাস্তায় খুব কম ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা যায়। স্বাভাবিক সময়ে রাজধানীর ব্যস্ততম বিজয় স্মরণী এবং মিরপুর রোড ঘুরেও একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
নগরবাসীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের জন্য শহরের প্রতিটি সড়কে এবং মোড়গুলোতে পুলিশের চেকপোস্ট দেখা যায়। সাধারণ মানুষের জরুরি গন্তব্যে পৌঁছানোর একমাত্র সম্বল হিসেবে আবাসিক এলাকাগুলোর ভেতরে চলছে গুটিকয়েক রিকশা।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, সরকার নির্দেশিত সময়ে বাজারের দোকানগুলো খুললেও, নেই ক্রেতাদের ভীড়।
উত্তরা রাজলক্ষ্মী এলাকার একজন ট্রাফিক পরিদর্শক আখতার ইউএনবি প্রতিনিধিকে জানান, লকডাউনের গত তিনদিনের তুলনায় আজ ঢাকার রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেক কম। রাজধানীর কোনো এলাকাতেই যানজট নেই বলে দাবি করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: লকডাউন: সিরাজগঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ৪০ জনকে জরিমানা
মহাখালীর আরেক পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘এই এলাকাতে তিনটি পুলিশ চেকপোস্ট রয়েছে। আমরা পুলিশ পাস ছাড়া কাউকেই রাস্তায় গাড়ি নিয়ে চলাচল করতে দিচ্ছি না। উপযুক্ত কারণ ছাড়া রাস্তায় বের হবার কারণে অনেককেই জরিমানা করা হয়েছে।’
লকডাউনে রাজধানীর সকল বিপণীবিতান ও বড় দোকানগুলো বন্ধ রাখা হলেও, জনগণের চাহিদা মেটাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এসকল দোকানগুলো প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকে।
করোনার সাম্প্রতিক সংক্রমণ বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই সরকার কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুন: যেমন গেল লকডাউনের দ্বিতীয় দিন
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশে প্রথমবারের ২৪ ঘণ্টায় এক শতাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এদিন মৃতের সংখ্যা ১০১ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৪১৭ জন ছিল।
১৪৩২ দিন আগে
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টার সাথে কয়েকটি দেশের একাত্মতা প্রকাশ
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টার সাথে তুরস্ক, নেপাল, প্যালেস্টাইন, ইরান, বসনিয়া ও হার্জেগভিনা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
১৭৫৪ দিন আগে
মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে আরও ১১ প্রতিষ্ঠানকে বিএসটিআই’র চিঠি
আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাত করতে আরও ১১টি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়ে পত্র পাঠিয়েছে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
১৮০১ দিন আগে