আকস্মিক বন্যা
সুমাত্রা দ্বীপে ভূমিধস-বন্যায় নিহত ১৬
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের পার্বত্য গ্রামগুলোতে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় চাপা পড়ে এবং বন্যায় ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার কর্তৃপক্ষ জানায় এখনও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার ও শনিবারের ভারী বৃষ্টির পর মাটির স্তূপ, পাথর ও গাছপালা পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে এবং নদীগুলোর পানি বাঁধ ভেঙে উত্তরের সুমাত্রা প্রদেশের চারটি পার্বত্য জেলা প্লাবিত হয়। এতে বাড়িঘর ভেসে গেছে এবং কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান জাস্প্রি এম. নাদেক জানান, পুলিশ, সেনা ও উদ্ধারকর্মীরা সেমাংগাত গুনং, কোরো জেলার একটি রিসোর্ট এলাকায় ধ্বংসাবশেষে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। লাশ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে এক্সকাভেটর ও কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন তারা।
তিনি বলেন, রবিবার রাতে ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি বাড়ি এবং একটি কটেজ থেকে উদ্ধারকর্মীরা ছয়টি লাশ উদ্ধার করেছেন। আহত নয়জন লোক কোনোভাবে সরে যেতে সক্ষম হয়েছেন। সোমবারও উদ্ধারকর্মীরা দুই শিশুসহ চারজন নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে কাজ করছেন।
স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান পুপুত মাশুরি জানান, রবিবার উদ্ধারকর্মীরা একটি নদী থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১০টি বাড়ি ভেসে গেছে এবং দক্ষিণ তাপানুলি জেলার গ্রামগুলোর প্রায় ১৫০টি বাড়ি ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যায় কয়েক ডজন লোক আহত হয়েছে। এছাড়া ১৩০ হেক্টরের (৩২১ একর) বেশি কৃষিজমি এবং বাগান ধ্বংস করেছে।
রবিবার আকস্মিক বন্যায় দেলি সেরদাং জেলায় চারজন মারা গেছে এবং সোমবার উদ্ধারকর্মীরা ভেসে যাওয়া দু'জনের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
পাদাং লওয়াস জেলার পাহাড়ি গ্রামে হারাং জুলুতে ভূমিধসে বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান মুস্তারি এ সব তথ্য জানান।
শনিবার রাতের দিকে উদ্ধারকর্মীরা একটি গ্রাম থেকে একই পরিবারের চার সদস্যের লাশ উদ্ধার করেন। এর মধ্যে দুটি শিশু ছিল। এছাড়া তিনজন আহত মানুষকে উদ্ধার করেন।
প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধস হয়। এই দ্বীপপুঞ্জে হাজার হাজার মানুষ পাহাড়ি এলাকায় অথবা উর্বর বন্যার তীরবর্তী অঞ্চলে বাস করতে বাধ্য হয়।
৩ সপ্তাহ আগে
কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা, ফেনী-চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত: এফএফডব্লিউসি
কুমিল্লা জেলায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নিচু এলাকাগুলোতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী ও হালদা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এছাড়াও মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও নিচু এলাকাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হবে না।
আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টা সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে: এফএফডব্লিউসি
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও গোমতী নদীর পানির স্তর নামার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা নদীর পানি কমলেও পদ্মার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি আরও কমতে পারে। তবে বাড়ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি।
আরও পড়ুন: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে: এফএফডব্লিউসি
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে: এফএফডব্লিউসি
৪ মাস আগে
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় শত শত মানুষের মৃত্যু, নিখোঁজ অনেক
উত্তর আফগানিস্তানের বাঘালানের প্রাদেশিক রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকস্মিক বন্যায় শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। বন্যা কবলিত এলাকার একজন বাসিন্দা ব্যবসায়ী নাজের মোহাম্মদের বর্ণনায় বন্যার ভয়াবহতা উঠে এসেছে।
বন্যার আঘাতের বর্ণনায় তিনি বলছিলেন, আকস্মিক বন্যার খবর পেয়ে তিনি দ্রুতই বাড়িতে যান। কিন্তু, তিনি যখন বাড়িতে পৌঁছান, ততক্ষণে তার পাঁচ সদস্যের পরিবারসহ কিছুই অবশিষ্ট থাকেনি। বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে সব।
৪৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ বন্যার ক্ষতির দৃশ্য তুলে ধরে বলছিলেন, ‘সবকিছু হঠাৎ করেই ঘটে গেল। আমি বাড়িতে ফিরে আসি, কিন্তু সেখানে কোনও বাড়ির অস্তিত্ব ছিল না, পরিবর্তে আমি সমস্ত আশেপাশের কাদা এবং পানিতে ডুবে আছে।’
আরও পড়ুন: বিদেশিদের জন্য ৩০ দিনের একক প্রবেশ ভিসার বর্তমান ফি বহাল রাখবে শ্রীলঙ্কা
তিনি বলেন, তিনি তার স্ত্রী এবং ১৫ এবং ৮ বছর বয়সী দুই ছেলেকে কবর দিয়েছেন। তবে তিনি এখনও ৬ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়ের সন্ধান করছেন।
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ধারণা করছে আফগানিস্তানে অস্বাভাবিক ভারী মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ফলে শুক্রবারের বন্যায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে ধ্বংস হয়েছে কয়েক হাজার বাড়িঘর। আর এসব ক্ষতির বেশিরভাগই হয়েছে উত্তরাঞ্চলীয় বাঘলান প্রদেশে।
রবিবার (১২ মে) মোহাম্মদ বলেন, শুক্রবার গভীর রাতে বাগলান প্রদেশের রাজধানী পুলি খুমরির নিকটবর্তী এলাকায় তিনি তার স্ত্রী ও দুই ছেলের লাশ দেখতে পান।
কান্না চেপে রেখে তিনি বলেন, 'আশা করি কেউ আমার মেয়েদের জীবিত খুঁজে পেয়েছে। ‘চোখের পলকে আমি সবকিছু হারিয়েছি- পরিবার, বাড়ি, জিনিসপত্র, এখন আমার কাছে কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
ত্রাণকর্মীদের দল, ওষুধ, কম্বল ও অন্যান্য ত্রাণ পাঠাচ্ছে এমন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ইউনিসেফের মতে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ২৪০ জনের মধ্যে ৫১ শিশুও রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, তারা ওষুধসহ সাত টন জরুরি উপকরণ সরবরাহ করেছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় নিহত ৫০, নিখোঁজ অনেক
ত্রাণ সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাঘলানের পাঁচটি জেলায় প্রায় ছয় লাখ মানুষ বাস করে, যাদের অর্ধেকই শিশু।
গ্রুপটি আরও বলেছে যে, তারা শিশু এবং তাদের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য ভ্রাম্যমান স্বাস্থ্য ও শিশু সুরক্ষা দলের সঙ্গে একটি ‘ভাসমান একটি চিকিৎসা কেন্দ্র’ পাঠিয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর আরশাদ মালিক বলেন, 'অনেক প্রাণ ও জীবিকার উপকরণ ভেসে গেছে। ‘আকস্মিক বন্যায় গ্রামগুলো ভেসে গেছে, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং গবাদি পশুও মারা গেছে। শিশুরা সবকিছু হারিয়েছে। যে পরিবারগুলো তিন বছরের খরার অর্থনৈতিক প্রভাবে ভুগছে, তাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, আফগানিস্তান এমন একটি দেশ যা জলবায়ু পরিবর্তনের ধরন মোকাবিলায় সবচেয়ে কম প্রস্তুত। এ জন্য ভারী মৌসুমি বৃষ্টিপাত মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রয়োজন।
এর আগে গত এপ্রিলে দেশটিতে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও প্রায় দুই হাজার বাড়ি, তিনটি মসজিদ এবং চারটি স্কুল ধ্বংস করেছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় নিহত ৩ শতাধিক: জাতিসংঘ
৭ মাস আগে
ভারতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ৩১ জনের মৃত্যু
ভারতের চারটি রাজ্যে শুক্রবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা রবিবার জানিয়েছেন।
এর মধ্যে শুধু হিমাচল প্রদেশে গত ৩৬ ঘণ্টায় ২২ জন নিহত হয়েছে। সেখানে সেতু এবং বাড়িঘর ভেসে যাওয়ার পর বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
একজন সিনিয়র দুর্যোগ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘মান্দি, কাংড়া এবং চাম্বা জেলা থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১০ জন নিখোঁজ বলেও জানা গেছে।’
তিনি বলেন, বন্যায় মান্দিতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে। যেখানে এখন পর্যন্ত ১৩ জন মারা গেছে।
স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো হিমাচলের উদ্ধার অভিযানের ফুটেজ প্রচার করেছে। তবে অনেক জায়গায় ভারী বর্ষণে কারণে উদ্ধার অভিযান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ভারতের বিরোধী দলীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যু খবরে শোক জানিয়েছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ দেয়ার জন্য হিমাচল সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন।
গান্ধী আজ সকালে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভূমিধস ও বন্যার কারণে হিমাচল প্রদেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।’
হিমাচল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উত্তরাখণ্ড এবং পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশা থেকে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঝাড়খণ্ডে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তরাখণ্ড রাজ্য জুড়ে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন ওড়িশার বাসিন্দা।
পড়ুন: উপকূলীয় ১৫ জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে
ইরানে বন্যায় ২১ জন নিহত, ৩ জন নিখোঁজ
২ বছর আগে
হাওরের অর্ধেক ধান ইতোমধ্যে কৃষকের ঘরে উঠেছে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক রবিবার জানিয়েছে, হাওর অঞ্চলের কৃষকরা ইতোমধ্যে অর্ধেক ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন।
৪ বছর আগে