কুষ্টিয়ার মিরপুরে আওয়ামী লীগের নেতা ও পল্লী চিকিৎসক লুৎফর রহমান সাবুকে হত্যার দায়ে ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সুমিয়া খানম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই তাদের পুলিশি পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিরা হলেন— কুষ্টিয়ার মিরপুরের উপজেলা আমবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জাসদের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মিলন। আমবাড়িয়া এলাকার জসিম উদ্দিন বুড়ো, এখলাস আলী, মুরাদ আলী, মাহাবুল হোসেন, রাশেদুল আলী, ওয়াসিম আলী, রফিকুল ইসলাম ও হেলাল উদ্দিন শিলু।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খন্দকার সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পল্লী চিকিৎসক সাবুকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, লুৎফর রহমান সাবু ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে চড়ে মিরপুরের আমবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে আমবাড়িয়ার কাছে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা সাবুর মোটরসাইকেল গতিরোধ করে ও এলোপাতাড়িভাবে রামদা দিয়ে তার মাথা, পিঠ, মুখ, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাবুর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান হাবিব বাদী হয়ে মিরপুর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত দিনে এ মামলার ৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন ও একজনকে খালাস দেন।
নিহত লুৎফর রহমান সাবু মিরপুরের আমবাড়িয়া গ্রামের মৃত অজিত মোল্লার ছেলে। তিনি মিরপুর উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগদান করেন।