নিরাপত্তা পরিষদ
গাজায় 'মানবিক বিরতির' আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ফ্রান্সের দুঃখ প্রকাশ
নিরাপত্তা পরিষদে ব্রাজিলের আনা খসড়া প্রস্তাবের ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় অবস্থিত ফরাসি দূতাবাস বলেছে, ফ্রান্স খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। এটি কাউন্সিলকে সাধারণ নীতির কাছাকাছি আনতে পারে এবং এটি ১২টি দেশের সমর্থন পেয়েছিল।
এই খসড়াটিতে দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের ‘সন্ত্রাসী হামলার’ নিন্দা; জিম্মিদের মুক্তির দাবি; আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, মানবিক বিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিক জনগণের মৌলিক পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে গাজায় জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) এবং মানবিক সংস্থাগুলোর পূর্ণ, নিরাপদ ও বাধাহীন মানবিক প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মিশরকে গাজায় সীমিত মানবিক সহায়তা সরবরাহের অনুমতি ইসরায়েলের
খসড়া প্রস্তাবে নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে পাশাপাশি বসবাসকারী দু’টি রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির কথাও স্মরণ করা হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা রোধে প্রচেষ্টা বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রাজিলকে তার উদ্যোগ ও সমন্বয়কারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে ফ্রান্স। মানবিক জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় এবং আঞ্চলিক সংঘাত এড়ানোর জন্য ফ্রান্স এর অংশীদারদের সঙ্গে সংঘবদ্ধ থাকবে।
ফ্রান্স ইতোমধ্যে গাজার জনগণের জন্য অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা হিসেবে ১০ মিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করেছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজার দক্ষিণাঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪০ ফিলিস্তিনি
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারি বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইয়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য স্থায়ী শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ফিলিস্তিন প্রশ্নসহ মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওআইসি।
রাষ্ট্রদূত মুহিত জেনিন শরণার্থী শিবিরে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আগ্রাসন বৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ক্রমাগত আগ্রাসনের নিন্দা জানান। তিনি আরও বলেন, এই আগ্রাসন বৃদ্ধির ফলে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক হতাহতের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিচার ব্যবস্থার আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ইসরায়েলিরা
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ ধরনের আগ্রাসন শুধু ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবাধিকারই লঙ্ঘন করে না, বরং অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। একই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা কেড়ে নেয় এবং তাদের মানবিক মর্যাদার মারাত্মক অবমাননা করে।
মুহিত এসব কর্মকাণ্ডের জন্য জরুরি জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন। জবাবদিহির অভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের কাজ করতে উৎসাহ পাচ্ছে ইসরায়েল।
ওআইসি'র পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সব ধরনের বসতি স্থাপন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অপরাধের পূর্ণ, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের দাবিও জানান মুহিত।
আরও পড়ুন: আল-আকসায় ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ১৫০ ফিলিস্তিনি আহত
তিনি নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালা ৯০৪ (১৯৯৪) এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের সুরক্ষায় জাতিসংঘ মহাসচিবের ২০১৮ সালের রিপোর্টে দেওয়া সুপারিশসহ আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষায় ওআইসির জরুরি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ওআইসি'র অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি মুহিত ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটল ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অবিচল অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: বিতর্কিত ইসরায়েলি নজরদারি প্রযুক্তি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের ভয়ঙ্কর হাতিয়ার: টিআইবি
রোহিঙ্গা রেজুলেশন বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা রেজুলেশন বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ আব্দুল মোমেন।
নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি গৃহীত রেজুলেশনের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ব সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সফলতা না আসায় হতাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি এর ফলে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্ভাবনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মত ছোট আয়তনের দেশে বিশাল জনসংখ্যাসহ অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তার ওপর মিয়ানমার থেকে আসা এক দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া কোনওভাবেই বাস্তবসম্মত নয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ান-এর নেতৃত্বের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবেন
সভায় ব্রুনেই দারুসসালাম, কানাডা, জিবুতি, মিশর, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সেনেগাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এবং অন্যান্য পর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসির স্থায়ী পর্যবেক্ষণ মিশনের রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মত মিয়ানমারের পরিস্থিতি বিষয়ক একটি রেজুলেশন (২৬৬৯) গৃহীত হয়। এতে মিয়ানমারের বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যাসহ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়টিও বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়।
এছাড়া, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিগত বছরগুলোতে নিয়মিতভাবে রোহিঙ্গা বিষয়ক রেজুলেশন পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের রোহিঙ্গা বিষয়ক এই রেজুলেশনগুলোকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জোরালো আহ্বান জানানোই ছিল এই সভার মূল উদ্দেশ্য।
সভায় বক্তারা রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তারা আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐক্যমত্যের সফল বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেন।
এছাড়া, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা।
সভায় অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা মিয়ানমার থেকে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় এবং সকল ধরনের মানবিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনকে ‘গ্লোবাল পাবলিক গুডস’ ঘোষণার ব্যাপারে জোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মেক্সিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ আসছে মার্চে
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ে প্রথম রেজ্যুলেশন গ্রহণ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সঙ্কট ও এর টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ‘মিয়ানমারে পরিস্থিতি’ বিষয়ে প্রথমবারের মতো রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে।
মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, এর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ক্রমাগত অবনতি ও রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিচারে আটকের কথা উল্লেখ করে রেজ্যুলেশনে সহিংসতা বন্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতির পেনহোল্ডার হিসেবে যুক্তরাজ্য রেজ্যুলেশন পেশ করে যা ১২টি ভোটে গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন: ইরান ইস্যুতে জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বাংলাদেশের সারা হোসেন
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন অনুযায়ী, যদিও নিরাপত্তা পরিষদের কোনো সদস্যই এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি বা ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেনি। রবে চীন, রাশিয়া ও ভারত ভোটদান থেকে বিরত থাকে।
রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বসহ বহুমুখী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে এই রেজ্যুলেশন মিয়ানমারে চলমান সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই সংস্থার দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করে।
এই রেজ্যুলেশন রোহিঙ্গা সঙ্কটের দিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ আরও নতুন করে তুলে ধরবে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে আসছেন।
বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।
রেজ্যুলেশনে রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়েছে।
এটি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর তাদের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবকেও স্বীকৃতি দেয়।
এটি রাখাইন রাজ্যে সঙ্কটের মূল কারণগুলোকে মোকাবিলা করার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে 'গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস' গঠন
রেজ্যুলেশনটি ২০২১ সালে সম্মত হওয়া পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে আসিয়ানের ভূমিকার ওপরও তাৎপর্যপূর্ণ আলোকপাত করে।
অবিলম্বে পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাবটি জাতিসংঘের মহাসচিব ও মিয়ানমার বিষয়ক তার বিশেষ দূতকে ২০২৩ সালের ১৫ মার্চের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে জাতিসংঘের সম্ভাব্য সমর্থনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করে।
রেজ্যুলেশনটি গৃহীত হওয়া মিয়ানমারের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের নিয়মিত আলোচনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।
এটি রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টাকেও শক্তিশালী করবে।
বাংলাদেশের পক্ষে বলা হয়, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন রেজ্যুলেশনের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়গুলো রেজ্যুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা নিশ্চিত করেছেন।
এই রেজ্যুলেশন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মাইলফলক সাফল্যের সাক্ষ্য বহন করবে।
আরও পড়ুন: আত্মস্বীকৃত খুনিদের যেন কোন দেশ আশ্রয় না দেয় সে জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব তোলা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদকে ব্রিফ করলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত
শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সভাপতি হিসেবে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত নিরাপত্তা পরিষদ আয়োজিত ‘আফ্রিকাতে শান্তি ও নিরাপত্তা: টেকসই শান্তির জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত বিতর্কে বক্তব্যে দিয়েছেন।
উন্মুক্ত বিতর্কটিতে শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত মুহিত। এসময় তিনি আফ্রিকার শান্তি বিনির্মাণ অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা জোরদার করার ক্ষেত্রে পিবিসি’র প্রসারিত সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করেন।
এছাড়া টেকসই উন্নয়ন, অন্তর্বর্তীকালীন ন্যায়বিচার, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীদের সমান অংশগ্রহণ, যুবদের ক্ষমতায়ন এবং আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক শান্তি বিনির্মাণ উদ্যোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে পিবিসির অতীত এবং চলমান কর্মকাণ্ডসমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা জাতিসংঘ মহাসচিবের
আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক আর্থিক সংস্থাগুলির সাথে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি এবং আফ্রিকার জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান পিবিসি’র সভাপতি।
তিনি আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থাগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আফ্রিকায় সক্ষমতা তৈরিতে সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মূহিত।
রাষ্ট্রদূত মুহিত আফ্রিকায় শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তার ক্ষেত্রে শান্তিবির্নিমাণ তহবিলের অমূল্য অবদানের স্বীকৃতি দেন এবং শান্তি বিনির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত, অনুমানযোগ্য এবং টেকসই অর্থায়নের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
আারও পড়ুন: জুলাইয়ে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমেছে: জাতিসংঘ
পিসবিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) হল ৩১ সদস্যের একটি আন্তঃসরকারি উপদেষ্টা সংস্থা যা সংঘাত-আক্রান্ত দেশগুলিতে শান্তিপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান।
সাংবাদিক শিরিন আবু আকলাকে হত্যায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিন্দা
আল-জাজিরার ফিলিস্তিনি-মার্কিন সাংবাদিক শিরিন আবু আকলাকে হত্যা এবং আরেক সাংবাদিকের আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
শুক্রবার এক সংবাদ বিবৃতিতে পরিষদের সদস্যরা নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। আবু আকলাকে হত্যার অবিলম্ব, পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিনকে হত্যায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমের নিন্দা
পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে সাংবাদিকদের বেসামরিক নাগরিকদের মতো সুরক্ষা দেয়া উচিত বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন পরিষদের সদস্যরা।
বুধবার জেনিনে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান কভার করার সময় আবু আকলাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই ঘটনায় আরেকজন সাংবাদিক আহন হন।
রাশিয়ার অনুরোধে বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ
যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইউক্রেন রাসয়নিক ও জীবাণু অস্ত্রের গবেষণাগার পরিচালনা করছে রাশিয়ার এমন অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
পরিষদের কূটনীতিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম অনুযায়ী সকাল ১০টায় এ বৈঠক হবে।
জাতিসংঘে রুশ প্রথম ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বৃহস্পতিবার বিকালে এক টুইট বার্তায় এই বৈঠকের জন্য অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হলো ইউক্রেন-রাশিয়া বৈঠক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন রাশিয়ার এমন দাবি প্রত্যাখ্যানের পরপরই এই বৈঠকের আহ্বান জানানো হলো।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি রাশিয়ার দাবিকে ‘ভ্রান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন রাশিয়া তার প্রতিবেশী ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাসায়নিক বা জীবাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
তবে বুধবার আরেক রুশ ডেপুটি ইউএন অ্যাম্বাসেডর দিমিত্রি চুমাকভ এই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে পশ্চিমা গণমাধ্যমকে ‘ইউক্রেনের গোপন জীবাণু (অস্ত্রের) গবেষণাগারের’ খবর প্রচারের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের হাসপাতালে বিমান হামলায় শিশুসহ নিহত ৩
মিয়ানমারে আটক বন্দীদের মুক্তির আহ্বান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
মিয়ানমারের স্টেস কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সাম্প্রতিক সামরিক অভ্যুত্থানের পর আটক ‘সকল বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু তুলবে তুরস্ক
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পরবর্তী বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি তুরস্কের পক্ষ থেকে ওঠানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভাসগলু।