রোহিঙ্গা রেজুলেশন বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ আব্দুল মোমেন।
নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি গৃহীত রেজুলেশনের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ব সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সফলতা না আসায় হতাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি এর ফলে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্ভাবনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মত ছোট আয়তনের দেশে বিশাল জনসংখ্যাসহ অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তার ওপর মিয়ানমার থেকে আসা এক দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া কোনওভাবেই বাস্তবসম্মত নয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ান-এর নেতৃত্বের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবেন
সভায় ব্রুনেই দারুসসালাম, কানাডা, জিবুতি, মিশর, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সেনেগাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এবং অন্যান্য পর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসির স্থায়ী পর্যবেক্ষণ মিশনের রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মত মিয়ানমারের পরিস্থিতি বিষয়ক একটি রেজুলেশন (২৬৬৯) গৃহীত হয়। এতে মিয়ানমারের বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যাসহ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়টিও বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়।
এছাড়া, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিগত বছরগুলোতে নিয়মিতভাবে রোহিঙ্গা বিষয়ক রেজুলেশন পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের রোহিঙ্গা বিষয়ক এই রেজুলেশনগুলোকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জোরালো আহ্বান জানানোই ছিল এই সভার মূল উদ্দেশ্য।
সভায় বক্তারা রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তারা আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐক্যমত্যের সফল বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেন।
এছাড়া, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা।
সভায় অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা মিয়ানমার থেকে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় এবং সকল ধরনের মানবিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনকে ‘গ্লোবাল পাবলিক গুডস’ ঘোষণার ব্যাপারে জোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মেক্সিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ আসছে মার্চে