রিভিউ
বুক রিভিউ লিখবেন যেভাবে
সুনিপুণভাবে সৃষ্ট শিল্পের সার্থকতায় নতুন মাত্রা যোগ করে তার গঠনমূলক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা। প্রবন্ধ বা গল্প-উপন্যাস নির্বিশেষে সযত্নে লেখা একটি বইও তার ব্যতিক্রম নয়। বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলী নিয়ে পক্ষপাতহীন অন্তর্দৃষ্টি নিছক কতক কাগজের গণ্ডি ছাড়িয়ে বইকে দান করে অবর্ণনীয় বিশালতা। এই দৃশ্যমানতা পাঠকদের কাছে বইকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে। সঙ্গত কারণেই একটি বই ঠিক কতটা পাঠক পৃষ্ঠপোষকতা পাবে- তার রূপরেখা গড়ে দেয় বই রিভিউ। এই সৃজনশীলতারই সাতকাহন নিরূপণ করা হবে আজকের নিবন্ধে। চলুন, একটি সার্থক বুক রিভিউ লেখার ধারাবাহিক পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।
বুক রিভিউ লেখার ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা উচিত
স্পয়লার ব্যতিরেকে বইয়ের সারাংশ উত্থাপন
সারসংক্ষেপের মাধ্যমে বইয়ের নির্যাস সংগ্রহ রিভিউয়ের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু কেন্দ্রীয় ঘটনাপ্রবাহ ও উদ্দেশ্য ব্যক্ত করার সময় ক্লাইমেক্স বা প্লট টুইস্টের ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধের পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে চূড়ান্ত পরিণতি এড়িয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে অক্ষুণ্ন থাকে বইয়ের প্রধান আকর্ষণ।
এর পরিবর্তে যে ভিত্তির ওপর বইটির পটভূমি দাঁড়িয়ে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এতে করে রহস্য উদ্ঘাটনের স্বাধীনতাটা পাঠকদের হাতে থাকে। এটি বইয়ের মতো একটি সৃষ্টিকর্মের সার্থকতার জন্য অতীব জরুরি। তাছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ সারাংশ থেকেই বিকশিত হয় সমালোচনা ও পর্যালোচনার খোরাকগুলো।
আরো পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
বইটির কেন্দ্রীয় বিষয় বিশ্লেষণ এবং যুক্তি খণ্ডন
প্রতিটি লেখার মাঝে নিহিত থাকে লেখকের দাবি ও নিজস্ব দর্শন। এই স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি লেখকের দিক থেকে তার রচনাকে ন্যায়সঙ্গত করে। আর এই মতার্দশের ওপর ভিত্তি করেই একটি লেখার অবকাঠামো তৈরি হয়। একজন রিভিউদাতার দায়িত্ব এই ভিত্তিগুলোকে জনসমক্ষে নিয়ে আসা।
একইসঙ্গে প্রয়োজন লেখকের দাবিগুলোকে সুক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করা। এই নিরীক্ষণের আওতায় আসে ঘটনার প্রতীকীকরণ, চরিত্রের বিকাশ ও প্লট গঠন। এখানেই লুকিয়ে থাকে একটি লেখার অন্য লেখা থেকে আলাদা হওয়ার মৌলিক উপাদানগুলো। তাই এই পর্যালোচনা কেবল সমালোচনাই নয়, রচয়িতার সৃজনশীলতা খুঁজে বের করাতেও সাহায্য করে।
লেখকের রচনাশৈলী ও লেখার মূল্যায়ন
একটি বই কতটুকু নিখুঁত তা যাচাইয়ের জন্য একজন রিভিউদাতারও উপযুক্ত যোগ্যতার প্রয়োজন। সাধারণত যে কোনো শিল্পের কারিগরি দিকগুলো সাধারণ দর্শক বা পাঠকদের জন্য নয়। বিশেষজ্ঞদের বিচরণটাই এখানে বরং বেশি থাকে। তবে ব্যাকরণগতভাবে সিদ্ধ লেখা অবচেতনেই পাঠকদের হৃদয়স্পর্শ করে যায়। আর এই কারণেই বইয়ের প্রমিত রূপ মূল্যায়নে অংশ নেওয়া উচিত রিভিউদাতাদের।
সুস্পষ্ট করে বলতে গেলে বাক্যের গঠন, শব্দভাণ্ডার ও সামগ্রিক বর্ণনামূলক প্রবাহ পঠনযোগ্যতাকে উন্নত করে। রূপকের ব্যবহারটি অভিনব হলেও তার প্রাসঙ্গিকতার মাত্রা ও সাহিত্যিক আমেজ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। পাশাপাশি বইয়ের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু বা জনরার সঙ্গেও বাক্য গঠন ও শব্দ চয়নের সমন্বয় সাধন জরুরি।
আরো পড়ুন: ঢাকার সেরা ১০টি জাদুঘর: ইতিহাস রোমন্থনের সঙ্গে জ্ঞান আহরণের অভাবনীয় সুযোগ
বইয়ের শক্তিমান ও দুর্বলতম অংশগুলো তুলে আনা
একটি রিভিউকে এক নজরে দেখে বোঝার উপযোগী করার মোক্ষম উপায় হচ্ছে তুলনামূলক বিশ্লেষণ। আর এই পর্যালোচনার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রভাবকগুলো হচ্ছে শক্তি ও দুর্বলতাগুলো।
চরিত্রের বিকাশ বা উদ্ভাবনী প্লটের মতো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে যেগুলো বইটির প্রতি পাঠকদের আকর্ষণ বাড়ায়। এই শক্তিগুলোকে উদাহরণসহ লিপিবদ্ধ করে ব্যাখ্যা করা যায়। অন্যদিকে, ঘটনার ধারাবাহিকতার আকস্মিক ছন্দ পতন এবং চরিত্রের পূর্ণতা না পাওয়ার মত বিষয়গুলো বইয়ের দুর্বলতাকে জাহির করে। এগুলোর বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্ভাব্য সমাধান দাড় করানো যেতে পারে। এটি রিভিউয়ের সময় গঠনমূলক সমালোচনার অন্যতম একটি উপাদান।
সরাসরি বই থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া
পর্যালোচনার সময় লেখকের দাবিগুলোকে যুক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়ে তা খণ্ডন করার জন্য প্রয়োজন প্রমাণের। এর জন্য সরাসরি লেখকের লেখা বইয়ে থাকা উদ্ধৃতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ আর হয় না। উদ্দেশ্যটি একদম নিরেটভাবে ব্যক্ত থাকলে পুরো বাক্য বা অনুচ্ছেদটি তুলে আনা যেতে পারে। তবে একদম স্পষ্ট করে বলা নেই তবে ইঙ্গিত দেওয়া আছে বা বোঝানো হয়েছে, এমন দাবিগুলোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নিরীক্ষণ দরকার।
এক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা সাধারণ উদাহরণ হলো দীর্ঘ সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোর মাঝের সম্পর্ক ও তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে যাচাই করা। বইয়ের শক্তি বা দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করার জন্যও এই গবেষণা প্রয়োজন।
আরো পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপায়
অনুরূপ সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে তুলনা
তুলনামূলক পর্যালোচনার আরও একটা উপায় হলো একই ধারার বা একই লেখকের অন্যান্য কাজের সঙ্গে বইটির তুলনা করা। এই বিশ্লেষণে উঠে আসবে রচনাশৈলী, বিষয়বস্তু বা চরিত্রের বিকাশ, প্রাঞ্জলতা এবং বোধগম্যতার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য। এছাড়া অন্য বইটি পাঠকের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তার স্বাপেক্ষে রিভিউকৃত বইটির জনপ্রিয়তা পাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করা যায়।
এমনকি এই তুলনামূলক বিবৃতির মাধ্যমে কোন উপাদানগুলো বেশি চাহিদাসম্পন্ন সেগুলো চিহ্নিত হয়। ফলশ্রুতিতে বিষয়টি পাঠকদের উপলব্ধিতে আসার পাশাপাশি স্বয়ং লেখকের দৃষ্টিতেও তা ধরা পড়ে। এমনকি এটি বইয়ের মার্কেট রিসার্চের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং পাঠকদের নতুন বই কেনার সিদ্ধান্তকেও প্রভাবিত করে।
সুসংগঠিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ
একটি সফল রিভিউয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একটি পরিচ্ছন্ন ও যৌক্তিক কাঠামো। প্রথমে তথ্যপূর্ণ সারাংশ দিয়ে শুরু হবে বইয়ের প্রাথমিক উপাদানগুলোর রূপরেখা। অতঃপর এর নিরিখে ধীরে ধীরে গভীর বিশ্লেষণ হবে লেখার শৈলী এবং যুক্তি তর্ক নিয়ে। প্রতিটি পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে পরের পর্যায়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকা উচিত, যা পাঠকদের পরবর্তীতে কি আছে তা জানার জন্য উদ্যত করবে।
আরো পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
এককভাবে শুধুমাত্র লেখা ও লেখকের কথা না বলে প্রাসঙ্গিকভাবে অন্যান্য অনুরূপ কাজেরও হস্তক্ষেপ ঘটানো প্রয়োজন। পরিশেষে ব্যক্তিগত মতামতের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে একটি তথ্যনির্ভর সুপারিশ বা বইটি পড়ার প্রতি নিরুৎসাহিতকরণ অন্তর্ভূক্ত হবে।
ব্যক্তিগত প্রতিফলন
একটি বই একজন পাঠকের ব্যক্তিগত পর্যায়ে কতটা অনুরণন ঘটাতে পারছে তার ওপর নির্ভর করে বইটির সফলতা। তাই বইটি পড়ার পর রিভিউদাতার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেটাও রিভিউয়ে থাকা জরুরি। বিশেষ করে পাঠকের ভালো বা খারাপ লাগা যেখানে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেখানে অন্য পাঠকের অনুভূতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
তাছাড়া স্বাভাবিকভাবেই পাঠক যখন কোনো বই পড়ার কথা ভাবেন তখন আগেই তার রিভিউ খোঁজার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে সেই রিভিউকে তিনি সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেন যেখানে ব্যক্তিগত অভিমতের উপস্থিতি রয়েছে। এই অনুভূতিগুলোর সঙ্গে তারা নিজেদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও আবেগের সম্পর্ক খুঁজে পান। রিভিউ পড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা বইটির কিনতে বাধ্য হন।
ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতার মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা বজায় রাখা
রিভিউ মানেই বইয়ের কেবল ভালো দিক নিয়ে আলোচনা করা নয়। আবার এমনও নয় যে, শুধু মন্দ দিকগুলোকেই তুলে আনতে হবে। একটি পক্ষপাতহীন স্বচ্ছ পর্যালোচনার জন্য ভালো-মন্দ দুটোর মধ্যেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ সুর বজায় রাখা অপরিহার্য। এর ফলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিশ্লেষণটি ব্যক্তিগত পছন্দের বাইরে যেয়ে সুষ্ঠু প্রমাণের ভিত্তিতে করা হয়েছে। গুণগুলো অকপটে স্বীকার করার পাশাপাশি ত্রুটিগুলোর সন্নিবেশ ঘটাতে হবে গঠনমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে। এই ভারসাম্যপূর্ণতা রিভিউয়ের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় এবং একই সঙ্গে তা পেশাদারিত্বেরও পরিচয় বহন করে।
আরো পড়ুন: ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
বইটি পড়ার জন্য সুপারিশ বা নিরুৎসাহিতকরণ
সবশেষে বইটি পড়ার জন্য সময় দেওয়া পাঠকের জন্য সমীচীন হবে কিনা তার একটি স্পষ্ট ঘোষণা থাকা উচিত। এই ঘোষণা শেষে দেওয়া হলে তা ন্যায়সঙ্গত হয় কেননা এরই মধ্যে যথাযথ তথ্য-প্রমাণ পাঠকদের উদ্দেশ্যে পরিবেশন করা হয়ে গেছে। সেই অর্থে চূড়ান্ত মতামতটি অবিসংবাদিতভাবে তথ্যবহুল ও যৌক্তিক হিসেবে প্রতীয়মান হবে।
বইটি সুপারিশযোগ্য হলে কোন ধরনের পাঠক সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে, তা উল্লেখ করা যায়। আর যদি তা না হয় তবে কেন বইটি পড়া উচিত নয় তার নেপথ্যে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে। এতে করে পাঠকরা তাদের নিজ নিজ সাহিত্যিক রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
শেষাংশ
একটি বুক রিভিউ লেখার মাধ্যমে মূলত প্রমাণ ও ব্যক্তিগত অন্তর্দৃষ্টির পটভূমিতে একত্রিত হয় বইয়ের মূল নির্যাস ও রচয়িতার লেখনী। সেই সঙ্গে বইয়ের শক্তি ও দুর্বলতা এবং ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতার ভারসাম্যপূর্ণ মূল্যায়ন একটি উন্মুক্ত মঞ্চ পায়। অন্যান্য সৃষ্টিকর্মের সহিত তুলনা, রিভিউদাতার ব্যক্তিগত প্রতিফলন ও সুপারিশে স্পষ্ট হয়ে ওঠে পাঠকশ্রেণীর প্রতি বইয়ের আবেদন। সর্বোপরি, বইয়ের সুসংগঠিত বিশ্লেষণ পর্যালোচকের সুসংহত চিন্তার পরিচায়ক, যা বইয়ের মতো রিভিউকেও পরিণত করে শিল্পে।
আরো পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
৩ মাস আগে
বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ড নিয়ে রিভিউ শুনানি পেছালো
বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও এবং রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত ১৬৭ ধারার অপব্যবহার রোধে আপীল বিভাগের দেয়া নীতিমালা অনুসরণের রায় পুনর্বিবেচেনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগে বৃহস্পতিবার শুনানির এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগ শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিদ্যামান আইনে কী আছে, রায়ের সুপারিশে কী আছে, তার তুলনামূলক একটি চিত্র দেখানো হবে।
আদালত বলেন, ‘প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন।’
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তৈরি করেছি, আইন ও সুপারিশে কী আছে, তা পাশাপাশি রেখেছি।’
আদালত বলেন, ‘তাহলে দাখিল করেন, আমরা দেখি।’ পরে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
আরও পড়ুন: ডাণ্ডাবেড়ি-হাতকড়া পরানোর নীতিমালা করতে কমিটি গঠনে রুল
এরপর আদালত বলেন, ‘নট টু ডে।’ পরে আইনজীবীরা জানান, রিভিউ শুনানির জন্য নির্ধারিত দিন আগামী বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি ফের শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।
এদিনে এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক, মো. শাহীনুজ্জামান ও এ এম জামিউল হক।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মারা যান রুবেল। এরপর তৎকালীন সরকার রুবেল হত্যা তদন্তের জন্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের সমন্বয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৫৪ ধারার অধীনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া নির্বিচারে আটক বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৫ (৫) এবং আন্তর্জাতিক নির্যাতন প্রতিরোধ সনদ ১৯৮৪ ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার সনদ ১৯৬৬ এর সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। ওই রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল এ ব্যাপারে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করে।
২০১৬ সালে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের পুর্বের রায়টি কিছু পরিবর্তনসহ বহাল রাখেন। আপীল বিভাগ বিনা পরোয়ানায় আটক ও রিমান্ডের অপব্যবহার রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য ১৩ দফা এবং ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারক ও ট্রাইবুন্যালকে অপরাধ আমলে নেয়ার ক্ষমতা প্রদান করে ৯ দফার নীতিমালা প্রদান করেন। পরে এই রায় রিভিউ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন জানায়।
২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ সরকারকে ওই নীতিমালার বিরোধিতার সুনির্দিষ্ট কারণ ও নীতিমালা পরিবর্তনের সুপারিশসমুহ অন্তর্ভুক্ত করে তা একই বছরের ১৬ এপ্রিলের পূর্বে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রদানের নির্দেশ দেন। এরপর কয়েকবার শুনানির জন্য বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় আসে।
আরও পড়ুন: স্বল্প সময়ে বিচারকাজ সম্পন্ন করা বিচারক ও আইনজীবীদের দায়িত্ব: প্রধান বিচারপতি
১ ফেব্রুয়ারি থেকে আপিল বিভাগে প্রবেশে লাগবে ডিজিটাল পাস
১ বছর আগে
রিভিউ আবেদন করবেন আ’লীগের বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করার দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম রিভিউ আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। শনিবার দুপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের মেয়র এ কথা জানান। এ সময় আবেগ তাড়িত কন্ঠে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমার আর্জি জানান।
তিনি অভিযোগ করেন যে ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকে একটি প্রতিপক্ষ নানাভাবে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তার ঘরে বসে তিন ঘন্টার আলাপচারিতাকে খন্ড খন্ড করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি কোন ভুল করিনি, অন্যায় করিনি। তবুও প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা মাথা পেতে নিব। প্রধানমন্ত্রী বললে আমি ফাঁসিতে যেতেও রাজি আছি।’
আরও পড়ুন: গাজীপুরে দুই কারখানায় আগুন
তিনি তার আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আমার অস্তিত্ব জুড়েই বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগ। বাকি জীবন আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য ও সমর্থক হয়ে থাকতে চাই।’
এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে এখানে একটি হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এদিকে দলের সিদ্ধান্তকে সঠিক দাবি করে ওই সিদ্ধান্ত কে অভিনন্দন জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান।
আরও পড়ুন: পিকআপ ভ্যানের চাপায় গাজীপুরে ৩ পথচারী নিহত
গাজীপুরে কেমিকেল কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ছয় ইউনিট
৩ বছর আগে
রিয়েলমি সি১৭ রিভিউ: সাশ্রয়ী মূল্যের ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন
প্রযুক্তির উৎকর্ষতা মোবাইল ফোনকে দিনে দিনে আরও স্মার্ট করে তুলছে। সেই সাথে দামও বাড়ছে। আপনি যদি ট্রেন্ডিং ফিচারসহ একটি সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্টফোন কিনতে চান, তবে রিয়েলমি সি-সিরিজটি আপনার জন্য। বাংলাদেশের বাজারে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রিয়েলমে সি২ ছাড়ার মধ্যে দিয়ে, গ্রাহকদের বাজেটের মধ্যে অত্যাধুনিক ফিচারের উন্নত মানের স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে ট্রেন্ডিং স্মার্টফোন ব্রান্ড রিয়েলমি। এরই ধারাবাহিকতায়, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে প্রথমবারের মতো সি সিরিজের সবশেষ স্মার্টফোন রিয়েলমি সি১৭ নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশের বাজারে পাওয়া নতুন এ স্মার্টফোনটির দাম ও ফিচার সম্পর্কে জানতে পড়ুন এ নিবন্ধটি।
৪ বছর আগে
রিভিউ: ৭৯৯০ টাকায় শক্তিশালী ব্যাটারির ফোন ইনফিনিক্স হট ৯ প্লে
বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের মাঝে এরই মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ইনফিনিক্সের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত হট সিরিজের নতুন সংস্করণ হট ৯ প্লে।
৪ বছর আগে
গ্যালাক্সি এম৩১ ফোনের রিভিউ
স্মার্টফোনে প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ, নান্দনিক ও নজরকাড়া ডিজাইন বিশ্বজুড়েই তরূণদের মাঝে জনপ্রিয় স্যামসাং।
৪ বছর আগে