বৈদেশিক মুদ্রা
ডলারের বিনিময় হার না বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও আবারও বেড়েছে
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারে বড় ধরনের পরিবর্তন না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ওই বৈঠকে গভর্নর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বাজার বা বৈদেশিক মুদ্রার বাজার নিয়ে কোনো নীতিগত পরিবর্তন করবে না।
এ সিদ্ধান্তের পরও সব ক্ষেত্রে ডলারের দর ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানি ও প্রবাসীদের আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা এবং আমদানির ক্ষেত্রে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
গতকাল রবিবার আবারও ডলারের দর বাড়ানো হয়েছিল, যা আজ সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য ডলার বুকিং নীতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মন্দার পর ২০২৩ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক শুরুতেই ডলারের দাম নির্ধারণ করে। এতে সংকট আরও বেড়েছে। পরে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ডলারের দাম নির্ধারণ থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে- অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনকে (বাফেদা)।
এরপর থেকে দুই সংস্থা যৌথভাবে রপ্তানি, রেমিট্যান্স আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের জন্য ডলারের মূল্য নির্ধারণ করে আসছে।
আরও পড়ুন: নতুন টাকা ছাপবেন না: বিবিকে ড. ওয়াহিদউদ্দিনের পরামর্শ
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমেছে ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে
খুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে মৎস্যপণ্য রপ্তানি ২৮২৩ কোটি টাকার
খুলনা জেলা মাছ চাষে সাফল্য অর্জন করেছে, করছে। দিন দিন এই জেলায় চিংড়িসহ সব ধরনের মাছ চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মোট উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ১ লাখ ২১ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন, যা জেলার চাহিদার চেয়ে ৬৪ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন বেশি। এ সময়ে জেলায় ২৫ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে।
খুলনা অঞ্চল থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৩১৬ মেট্রিক টন মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে মোট ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে।
উক্ত সময়ে জেলার বিভিন্ন নদী থেকে ২ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। সাগরে ৬৫ দিন মাছ আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলার ৭ উপজেলার ২৩ হাজার ৮০ জন জেলের মাঝে ১ হাজার ২৯২ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: গুলশান, বনানী ও বাড়িধারা লেকে মাছ চাষ করা হবে: আতিকুল ইসলাম
কোভিড-১৯ মহামারির সময় জেলার ৯ হাজার ৮৫৮ জন মাছচাষীর মাঝে ১৪ কোটি ২০ লাখ ১৩ হাজার টাকার সরকারি অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি জেলায় ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষে অনুমতি দেওয়া হয়েছে যার হেক্টর প্রতি উৎপাদন প্রায় ১০ মেট্রিক টন।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭৪ হাজার ৪২ মেট্রিক টন মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে ৫ হাজার ১৯১ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন ইউএনবিকে বলেন, খুলনা জেলায় অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক এখন মাছ চাষ শুরু করেছে। ফলে একদিকে যেমন বেকারত্ব কমছে, তেমনি লাভবান হচ্ছে।
জেলা মংস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, দেশের অন্য জেলাগুলো থেকে খুলনা মাছ চাষে এগিয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা: নেত্রকোণায় মাছ চাষিদের সাড়ে ১১ কোটি টাকার ক্ষতি
ডলারের আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার লাফিয়ে বেড়ে ১০৯ টাকায় পৌঁছেছে
বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলে মার্কিন ডলারের আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০৯ টাকায় পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) তথ্য প্রকাশ করেছে যে বুধবার আন্তঃব্যাংক লেনদেন হয়েছে ১০৯ টাকায়। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ডলারের লেনদেন হয় ১০৮ টাকা ৭০ পয়সা।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বুধবার ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে ডলার বিনিময় করেছে ১০৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১০৯ টাকা পর্যন্ত।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি মাসে প্রায় প্রতিটি কর্মদিবসেই আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে। ১ জুন প্রতি ডলারের দাম ছিল ১০৮ টাকা।
আরও পড়ুন: ১১ মাসে রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৫০.৫২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: ইপিবি
এক বছর আগে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ৯২ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের তুলনায় দেশীয় মুদ্রার (টাকা) ১৪ টাকা ৮৬ শতাংশ বা ১৬ টাকা ২০ পয়সা অবমূল্যায়ন হয়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমা, আমদানি ব্যয় প্রভাবিত এবং স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম আরও ধাক্কা দিয়েছে।
কিন্তু এর বিপরীতে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয়ে তেমন গতি নেই।
আরও পড়ুন: 'স্মার্ট বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১২,৫০০ ডলার, দারিদ্র্যসীমা ৩ শতাংশের কম হবে'
বৃহস্পতিবার থেকে রেমিট্যান্সের জন্য মার্কিন ডলারের দর ১০৮.৫ টাকা, রপ্তানির জন্য ১০৭ টাকা
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য বাড়ানো এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা প্রধান চ্যালেঞ্জ: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য উন্নয়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা দেশের অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উন্মোচনকালে তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে, আমাদের বর্তমান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, চলতি হিসাবের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে টেকসই উত্তরণ এবং উত্তরণ-পরবর্তী বাস্তবতা মোকাবিলার কৌশলগুলো এখনই নির্ধারণ করা দরকার। বিশেষ করে শুল্ক যৌক্তিককরণ, রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ, ভর্তুকি/নগদ সহায়তা প্রত্যাহার বা বিকল্প অন্বেষণ ইত্যাদি এখন বিবেচনা করা উচিত।
তিনি উল্লেখ করেন, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় মেটাতে এবং প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের ব্যবস্থা করার জন্য জিডিপির শতাংশ হিসাবে রাজস্বের পর্যাপ্ত প্রবৃদ্ধি, সরকারি ব্যয়ের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় অর্থায়ন সহজতর করা এবং দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত।
আরও পড়ুন: শিগগিরই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উন্নতি হবে: বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীর আশাবাদ
তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা সম্পর্কে আপনাদেরকে ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য আমরা একটি কৌশল প্রণয়ন করছি।
বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে থাকে মধ্যমেয়াদী নীতি কৌশল সম্বলিত ‘মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (এমটিএমপিএস)’।
তিনি বলেন, এই নীতি বিবৃতি আমাদের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জগুলোকে বিবেচনা করে মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যগুলোকে ব্যাখা করে।
আরও পড়ুন: বাজেটে দাম বাড়ানো ও কমানো হয়েছে যেসব পণ্যের
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য তরুণ ও নারীদের প্রস্তুত করতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন খাত পাটকাঠির ছাই
মাগুরায় পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছাই। যা দিয়ে তৈরি করা হয় কার্বন পেপার, ফটোকপিয়ার এবং কম্পিউটার প্রিন্টারের কালি।
এই ছাই রপ্তানি হচ্ছে চীনে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সম্ভাবনার নতুন খাত হিসেবে ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে পাটকাঠির ছাই।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মধুমতি নদীর তীরে রুইজানী গ্রামে ২০১৬ সালে গড়ে ওঠে ইমপিগনা প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ছাই উৎপাদন কারখানা।
এ কারখানায় কার্বন উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হাজার হাজার মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: ডিলারদের বৈদেশিক মুদ্রা আমানত হিসাব খোলার অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংকের
কারখানার ম্যানেজার খোরশেদ আলম জানান, পাটকাঠি পোড়ানোর জন্য এই কারখানায় ১৬টি চুল্লি রয়েছে। প্রতিটি চুল্লিতে ৭৫ থেকে ১০০ মণ পাটকাঠি পোড়ানো যায়।
তিনি জানান, প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়। প্রতি মাসে প্রায় ১২ হাজার মণ পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই বা চারকোল পাউডার উৎপাদন করা হয়। ওই হিসাব অনুযায়ী ছয় মাসে (মৌসুম) গড়ে ৬৩ হাজার মণ থেকে ৭২ হাজার মণ পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই তৈরি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পাটকাঠি পোড়ানোর পর টানা পাঁচদিন চুল্লি বন্ধ রাখা হয়। ষষ্ঠ দিন চুল্লি খুলে পোড়া পাটকাঠি জাঁতা মেশিনে ভাঙিয়ে পাউডার করা হয়। ওই পাউডারের নামই চারকোল। যা দিয়ে তৈরি হয় মূল্যবান কার্বন পেপার, ফটোকপিয়ার এবং কম্পিউটার প্রিন্টারের কালি।
ভাঙানো পাউডার সাড়ে ১২ কেজি বা ১৫ কেজির দুই স্তরের পলিব্যাগে ভরা হয়। যাতে করে ব্যাগের মধ্যে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। এরপর লেমিনেটেড ব্যাগের মধ্যে দিয়ে সেলাই করা হয়। সেলাই করা ব্যাগগুলো দুই থেকে তিন দিন খোলা স্থানে খাড়া করে রাখা হয়। এরপর তা গুদামে অন্তত ২১ দিন রাখতে হয়। এই ছাই পরে ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। সেখান থেকে জাহাজে করে পাঠানো হয় চীনে।
বর্তমানে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরাসহ কয়েকটি জেলার প্রায় ৪০ কারখানায় এই চারকোল পাউডার বা ছাই উৎপাদিত হয়। এসব কারখানা থেকে বছরে প্রায় সাত হাজার ৭১ টন উৎপাদিত ছাই বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এতে বছরে আয় হয় প্রায় ৪০ কোটি টাকা।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিব এ হাসান জানান, এখানে প্রতি মাসে গড়ে ১২ হাজার মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়, যা থেকে ৭৫ টন ছাই বা চারকোল পাউডার উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত পাউডার চীনে রপ্তানি করা হয়।
প্রতি টন ছাইয়ের দাম ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ওই হিসাব অনুযায়ী ছয় মাসে (মৌসুম) তিন কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি মালিকানাধীন শিপিং এবং এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে: বিবি
চা শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে, এটির ক্ষতি করা উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশি মালিকানাধীন শিপিং এবং এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে: বিবি
বাংলাদেশি মালিকানাধীন শিপিং কোম্পানি ও এয়ারলাইন্সের নামে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।
এসব শিপিং ও এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো বিদেশে তাদের সেবা সম্প্রসারণ করছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। এসব হিসাব থেকে কোম্পানিগুলো প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিবির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানি ও এয়ারলাইন্সের বৈদেশিক কার্যক্রম সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ বিবেচনায় বিদেশ থেকে আয় হিসেবে যে অর্থ আসবে তার ৭৫ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে জমা করা যাবে।
আরও পড়ুন: এলসি খোলার সংকট শিগগিরই স্বাভাবিক হবে: বিবি গভর্নর
অবশিষ্ট পরিমাণ টাকা নগদ করা হবে। জাহাজ এবং বিমানের পরিচালন ব্যয় বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্ট স্ট্যাটাস সহ করা যেতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানি এবং এয়ারলাইন্স যারা বিদেশি কোম্পানিকে জাহাজ, কন্টেইনার বা বিমান ভাড়া দেয় তারাও বৈদেশিক মুদ্রায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এক্ষেত্রে প্রাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার ৫০ শতাংশ এই হিসাবে জমা করা যেতে পারে। যা জাহাজ, কন্টেইনার বা বিমানের প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিবি কর্মকর্তারা বলছেন, এখন এজেন্টের ওপর নির্ভর করে বিদেশে ব্যবসা করছে শিপিং ও এয়ারক্রাফট কোম্পানিগুলো। নতুন নির্দেশিকা সেই নির্ভরতা কমিয়ে দেবে।
বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব শিথিল করার কারণে স্থানীয় শিপিং ও এয়ারলাইন কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারিত হবে।
আরও পড়ুন: এমএফএসের দৈনিক লেনদেন ৩২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে: বিবি
বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিবেদন দ্রুত পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে বিবি’র নির্দেশ
নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নভেম্বর মাসে এক দশমিক ৫৯ বিলিয়ন (১৫৯ কোটি) মার্কিন ডলার অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স পেয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রবাসী আয় প্রবাহ সামান্য বৃদ্ধি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদ প্রণোদনা এবং বিনা খরচে রেমিটেন্স পাঠানোর সুযোগসহ অর্ধডজন সুবিধা ঘোষণার পর অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স প্রবাহে তীক্ষ্ণ বৃদ্ধির আশা করলেও এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক সাড়া পায়নি।
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স ক্রমাগত কমছে।
অক্টোবরে প্রবাসীরা এক দশমিক ৫২ বিলিয়ন(১৫২কোটি) ডলার পাঠিয়েছেন। জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশ পেয়েছে যথাক্রমে দুই দশমিক ০৯ বিলিয়ন এবং দুই দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সেপ্টেম্বর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। প্রবাসীদের মধ্যে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে অর্থ পাঠানো নিরাপদ নয়, যা স্পষ্টতই রেমিট্যান্স প্রবাহকে প্রভাবিত করেছে।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য ২ মাস চেয়ে আইনজীবীদের আবেদন
বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসে আট দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স পেয়েছে। যেখানে ২০২২ অর্থবছরের একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল আট দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। এতে দেখা যায় যে প্রবাসীরা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩ অর্থবছরে দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।
বিবির মুখপাত্র মো. আবুল কালাম আজাদ ইউএনবিকে বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেমিট্যান্সের জন্য মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের জন্য দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ ঝামেলামুক্ত প্রণোদনা ছাড়াও, বেশ কয়েকটি ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে অতিরিক্ত প্রণোদনাও প্রদান করে।
তিনি বলেন, আইনি কাঠামোতে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ব্যাংকগুলো কোনো ফি নেবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশের বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো হয় অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বাজারে আসছে ২ ও ৫ টাকার নতুন নোট
জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, দেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স; আমদানির তুলনায় উদ্বৃত্ত হওয়ায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার কোনো সংকট থাকবে না।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজিত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে আর্থিক খাতের অবস্থার ওপর বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
রউফ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্তে দেখা গেছে যে চলতি বছরের শুরু থেকে দেশের আমদানির পরিমাণ অস্বাভাবিক ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি বেড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে এবং আমদানিকৃত পণ্য যাচাই-বাছাই করায় আমদানি কমে গিয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: মোবাইলে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন
তিনি বলেন, ‘তদন্তে আমরা দেখেছি যে কিছু পণ্য ২০ শতাংশ থেকে ২০০ শতাংশ ওভার ইনভয়েসিং দিয়ে আমদানি করা হয়েছে। আমরা এ ধরনের ঘটনা যাচাই করার কারণে আমদানির পরিমাণ কমে গেছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আন্ডার-ইনভয়েসিং ও ওভার-ইনভয়েসিং, বৈদেশিক মুদ্রা পাচার এবং রাজস্ব আয় উভয় রোধে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং ইআরডি সচিব শরিফা খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রেমিটেন্স: প্রতি ডলার ১০৭ টাকা নির্ধারণ করল কেদ্রীয় ব্যাংক
অক্টোবরের দুই সপ্তাহে দেশে ৭৬৯.৮৮ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে
ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী
গত এক বছরেরও বেশি সময় থেকে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী অবস্থায় রয়েছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) এর তথ্যানুসারে চলতি মাসের ২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২০ সালের জুলাই থেকে সর্বনিম্ন ৫২৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস ধরে কমে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের সপ্তাহে ৫২৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে।
ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের অক্টোবরে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৬৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল।
আরও পড়ুন: টুইটারের বহিষ্কৃত সিইও পরাগ আগরওয়াল পেতে পারেন ৪২ মিলিয়ন ডলার
এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশিরভাগ বৈশ্বিক পরিস্থিতির চাপ মোকাবিলায় রুপিকে রক্ষা করতে তহবিল ব্যবহারের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে।
শুক্রবার প্রকাশিত আরবিআই-এর সাপ্তাহিক পরিসংখ্যানগত সাপ্লিমেন্টের তথ্যানুসারে ২১ অক্টোবরে শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ (এফসিএ) মোট রিজার্ভের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তিন দশমিক ৫৯৩ বিলিয়ন কমে ৪৬৫ দশমিক ০৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
এফসিএ’র ডলারের পরিভাষায় প্রকাশিত, ইউরো, পাউন্ড এবং ইয়েনের মতো অ-মার্কিন মুদ্রার মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়নের প্রভাবকে অন্তর্ভুক্ত করে যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রাখা হয়।
এটি আরও বলছে, স্বর্ণের রিজার্ভ ২৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়ে ৩৭ দশমিক ২০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
শীর্ষ ব্যাংক জানিয়েছে, ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (এসডিআর) বেড়ে ১৭ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাপ্তাহিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, আইএমএফের কাছে দেশের রিজার্ভের অবস্থান ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে চার দশমিক ৭৯৯ বিলিয়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ-২৭: উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রতিশ্রুত ১০ হাজার কোটি ডলার বাস্তবায়ন করতে বলবে বাংলাদেশ
অক্টোবরের দুই সপ্তাহে দেশে ৭৬৯.৮৮ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে
বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ ২৪.৩৮% কমেছে: ইআরডি
বিগত অর্থবছরের তুলনায় চলতি (২০২২-২০২৩) অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমেছে। যা ৮৬ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৮৬ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল এক দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বৈদেশিক ঋণের ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ হ্রাস দেখায়।
বিগত আর্থিক বছরের ধারাবাহিকতায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের প্রবাহে লাফ দেয়া শুরু করেছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম জুলাই মাসে প্রায় ৪৯ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ দেশে এসেছে যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি।
কিন্তু, আগস্টে তা কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। দাতারা এ মাসে ৩৭ দশমিক ৬৩ কোটি মার্কিন ডলার পাঠানো বন্ধ করেছে। যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২৩ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা: বিবি
করোনা মহামারির পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উল্টে যাওয়া বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে স্বল্প সুদে বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার রেকর্ড গড়েছে। দাতারা এই অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণ মওকুফ করেছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের শাখা ইআরডি বিদেশি ঋণ মওকুফের এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায় যে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) দাতাদের কাছ থেকে ৮৬ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য এসেছে ৮৩ দশমিক ২৯ কোটি মার্কিন ডলার। আর প্রাপ্ত অনুদান হল তিন দশমিক ১৪ কোটি মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি
গত বছরের একই সময়ে প্রকল্প সহায়তা ছিল এক দশমিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে অনুদান এসেছে তিন দশমিক ৪২ কোটি মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ বাড়তে থাকে। একই বছরে বৈদেশিক ঋণ এক লাফে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ছয় দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। তারপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঋণ ছিল ছয় দশমিক ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: শেয়ার বাজার কারসাজিকারীকে চিহ্নিত করতে ৬-১২ মাস সময় লাগে: বিএসইসি চেয়ারম্যান