রোপা আমন
কুমিল্লায় আগামজাতের রোপা আমনের ফলনে খুশি কৃষক
আগামজাতের রোপা আমনে ভালো ফলন পেয়ে খুশি কুমিল্লার কৃষকরা। ধানের জাত গুলোর জীবনকাল স্বল্প হওয়ায় ভালো ফলনের পাশাপাশি সরিষা চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কৃষককেরা রোপা আমনের আগাম জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহে। ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭৫, বিনাধান-১৭ ইত্যাদি নতুন জাত দখল করে নিচ্ছে ব্রি ধান ৪৯ ও স্বর্ণমসুরি ধানের মাঠ। তাছাড়া আবাদ বেড়েছে ব্রি ধান ৮৭ ও ব্রি ধান ৯৫ জাত ধানের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রোপাআমন মৌসুমের শুরুতে বুড়িচং উপজেলার কৃষকদের মাঝে ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৯৫, ব্রি হাইব্রিড ধান ৪, ব্রি হাইব্রিড ধান ৬, বিনাধান-১৬, বিনাধান-১৭, বিনাধান-২০ ও বিনাধান-২২ জাতের ১ টন বীজ কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করে উপজেলা কৃষি অফিস। পুরাতন দীর্ঘ জীবনকালীন জাত গুলোর পরিবর্তে আগাম জাতের ধান আবাদের মাধ্যমে শস্য বিন্যাসে সরিষা চাষ অন্তর্ভুক্তির জন্য এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। জাত গুলোর মধ্যে এ বছর প্রথমবারের মতো ছয় হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া ব্রি ধান ৭১ বেশি পছন্দ হয়েছে কৃষকদের। ১১৫ দিনে ভালো ফলন হওয়ায় ও জাতটিতে রোগ পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় এই আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে রোপা আমনের বাম্পার ফলন
তাছাড়া ব্রি ধান ৭৫ জাতটি ৯৫ হেক্টর, ব্রি ধান৮৭ জাতটি ২৮৫ হেক্টর, ব্রি ধান ৯৫ জাতটি ৩১ হেক্টর ও বিনাধান-১৭ জাতটি ২১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
রোপা আমন মৌসুমে মোট ৯ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন অর্জিত হয়েছে বুড়িচং উপজেলায়। আগাম জাতের ধানে ফলন পাওয়া যাচ্ছে প্রতি হেক্টরে চাউলে দুই দশমিক ৮৭ টন থেকে দুই দশমিক ৯৮ টন পর্যন্ত। যা জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
উপজেলার পাহাড়পুর বেলবাড়ির কৃষক ওমর ফারুক জানান, আগাম জাত বিশেষ করে ব্রি ধান ৭১ চাষ করে আমরা ভালো ফসল পেয়েছি। সঙ্গে সময় কম লাগায় সরিষার চাষ করতে পারবো বলে মনে হচ্ছে।
বুড়িচং উপজেলার রামপুর ব্লকের উপ-সহকারী সুলতানা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের কৃষি অফিসার মহোদয় মাঠে পরীক্ষামূলক আগামজাতের ধানের বীজ দিয়েছেন। আগামজাতের ধানে ভালো ফলন হয়েছে। এতে সরিষা চাষে কৃষক জমি খালি পাবে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিহীন, তীব্র তাপদাহে রোপা আমন ও সবজি নিয়ে বিপাকে নওগাঁর কৃষকরা
উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, বুড়িচং উপজেলার কৃষকেরা সরিষা চাষে অভ্যস্ত ছিলেন না। ফলে ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান৩২ ও স্বর্ণমসুরি ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেশি ছিল। সরিষা আবাদ বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসাবে আগাম জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বেশ কয়েকটি জাত জাত যেমন ব্রি ধান৭১, বিনাধান-২০, বিনাধান-২২ প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে। কৃষকেরা জাত গুলো পছন্দ করছেন।
যে জমি গুলো আগাম জাত করা যাবে সেগুলোকে সরিষা আবাদের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি বলেও জানান কৃষি অফিসার।
আরও পড়ুন: মাগুরায় আমন ধান কাটা উৎসব উদযাপন
২ বছর আগে
সিরাজগঞ্জে রোপা আমনের বাম্পার ফলন
সিরাজগঞ্জে এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে মৌসুমি রোপা আমন ধান কাটা। এরইমধ্যে হাট বাজারে উঠেছে এ নতুন ধান। রোপা আমন চাষে বাম্পার ফলনসহ এখন বাজারমূল্য ভাল থাকায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৭৪ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে এ ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কৃষকরা এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি রোপা আমনের চাষাবাদ করেছে। তবে শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল এলাকার জেলার তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর ছাড়াও রায়গঞ্জ, কামাখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ধান সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ করা হয়েছে।
দফায় দফায় চলা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করে ধানের বীজ বপন করে। এরপর রোপন উপযোগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকেই এ ধানের চারা জমিতে রোপন শুরু করে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও অখুশি কৃষকরা
চলতি মৌসুমে ব্রি ধান-৯০, ৭৫, ৮৭, ৪৯, বিনা ধান-১৭ ও হাইব্রিডসহ নানা জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। অনেক কৃষক আবার ব্যাংক ঋণ ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েও এ চাষাবাদ করেছে।
এ মৌসুমে চাষাবাদে সার ও সেচসহ অন্যান্য খরচ বেশি হলেও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে।
যে দিকে তাকানো যায় সে দিকেই মাঠ ভরা সোনালী ধান কাটার দৃশ্য চোখে পড়ে মন ভরে যায়। বিশেষ করে গত সপ্তাহের প্রথম থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে এ ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এ ধান কেনা-বেচা শুরু হয়েছে এবং অনেক ব্যবসায়ী ধান এখন কেনাও শুরু করেছে। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতিমণ ধান গড়ে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় আদর্শ কৃষকরা বলেছেন, এই ধান চাষাবাদে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং এখন বাজারমূল্য ভাল পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাষাবাদ, কাটা ও মাড়াই খরচ বাদেও ভালো লাভ থাকছে। এছাড়াও ধানের খড়ের দামও অনেক পাওয়া যায়। ইতোমধ্যেই খড় ব্যবসায়ীরা হাট বাজারসহ গ্রামগঞ্জেও ঘুরে এ খড় ক্রয় করতে শুরু করেছে।
এ সবমিলে চলতি আমন মৌসুমে এবার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, চলতি মৌসুমে রোপা আমন চাষাবাদে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের যথাসময়ে পরার্মশ দেয়া হয়েছিল। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকেরা এ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়ে। বিশেষ করে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ ধান চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইতোমধ্যেই জেলায় চাষাবাদের প্রায় অর্ধেক জমির ধান কাটা হয়ে গেছে এবং দুই থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা পুরোপুরিভাবে শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও খুলনার চাষিরা হতাশ
সিরাজগঞ্জে গমের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি
২ বছর আগে
নড়াইলে স্লুইস গেট খুলে বিলে পানি, আমন চাষ ব্যাহতের শঙ্কা
নড়াইলের কালিয়ায় মাছ শিকার করে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় তিনটি খালের স্লুইস গেটে খুলে দিয়ে প্রায় দুমাস ধরে অপ্রয়োজনীয় পানি ঢুকিয়ে জমি প্লাবিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
৪ বছর আগে