সিরাজগঞ্জে এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে মৌসুমি রোপা আমন ধান কাটা। এরইমধ্যে হাট বাজারে উঠেছে এ নতুন ধান। রোপা আমন চাষে বাম্পার ফলনসহ এখন বাজারমূল্য ভাল থাকায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৭৪ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে এ ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কৃষকরা এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি রোপা আমনের চাষাবাদ করেছে। তবে শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল এলাকার জেলার তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর ছাড়াও রায়গঞ্জ, কামাখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ধান সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ করা হয়েছে।
দফায় দফায় চলা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করে ধানের বীজ বপন করে। এরপর রোপন উপযোগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকেই এ ধানের চারা জমিতে রোপন শুরু করে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও অখুশি কৃষকরা
চলতি মৌসুমে ব্রি ধান-৯০, ৭৫, ৮৭, ৪৯, বিনা ধান-১৭ ও হাইব্রিডসহ নানা জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। অনেক কৃষক আবার ব্যাংক ঋণ ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েও এ চাষাবাদ করেছে।
এ মৌসুমে চাষাবাদে সার ও সেচসহ অন্যান্য খরচ বেশি হলেও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে।
যে দিকে তাকানো যায় সে দিকেই মাঠ ভরা সোনালী ধান কাটার দৃশ্য চোখে পড়ে মন ভরে যায়। বিশেষ করে গত সপ্তাহের প্রথম থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে এ ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এ ধান কেনা-বেচা শুরু হয়েছে এবং অনেক ব্যবসায়ী ধান এখন কেনাও শুরু করেছে। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতিমণ ধান গড়ে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় আদর্শ কৃষকরা বলেছেন, এই ধান চাষাবাদে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং এখন বাজারমূল্য ভাল পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাষাবাদ, কাটা ও মাড়াই খরচ বাদেও ভালো লাভ থাকছে। এছাড়াও ধানের খড়ের দামও অনেক পাওয়া যায়। ইতোমধ্যেই খড় ব্যবসায়ীরা হাট বাজারসহ গ্রামগঞ্জেও ঘুরে এ খড় ক্রয় করতে শুরু করেছে।
এ সবমিলে চলতি আমন মৌসুমে এবার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, চলতি মৌসুমে রোপা আমন চাষাবাদে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের যথাসময়ে পরার্মশ দেয়া হয়েছিল। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকেরা এ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়ে। বিশেষ করে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ ধান চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইতোমধ্যেই জেলায় চাষাবাদের প্রায় অর্ধেক জমির ধান কাটা হয়ে গেছে এবং দুই থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা পুরোপুরিভাবে শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।