ভূমিকম্প
বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ
পৃথিবীর ভূত্বকের নিচে আধা-তরল আবরণে ভেসে থাকা ভূত্বকের বৃহৎ অংশগুলো টেকটোনিক প্লেট নামে পরিচিত। এই প্লেটগুলোর নড়াচড়ার সময় প্রতি দুই প্লেটের মাঝের জায়গায় ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়। এই ঘর্ষণের আশেপাশের এলাকায় চাপ সৃষ্টি করে। এর চূড়ান্ত অবস্থায় একটি সিসমিক তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, যা প্লেটগুলোর সংঘর্ষ সংলগ্ন এলাকাজুড়ে ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে। এর প্রচণ্ডতায় ঘনবসতিপূর্ণ বিশেষ করে বড় বড় স্থাপনা সম্বলিত জায়গাগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজকের নিবন্ধে অধিক ঝুঁকিতে থাকা ১০টি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি দেশ
জাপান
ভূমিকম্পন এলাকা হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ একটি দেশ জাপান। ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরি এবং উষ্ণ প্রস্রবণের জন্য রীতিমত প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলা যেতে পারে জাপানকে। এটি ভৌগলিক ভাবে প্রশান্ত মহাসাগরীয়, ফিলিপাইন, ওখটস্ক এবং ইউরেশীয় প্লেট; এই চারটি টেকটোনিক প্লেটের সীমানায় অবস্থিত।
এই সীমান্তগুলোকে ঢেকে রাখা সামুদ্রিক পরিখা ও খাদের বিশাল জলাশয় ঘিরে রয়েছে জাপানী দ্বীপপুঞ্জকে। প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার হিসেবে পরিচিত প্রশস্ত এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পের শিকার হওয়া দেশটি জাপান।
১৯৯০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে জাপানে মোট ৯৪টি ভূমিকম্প হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একুশ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মধ্যে রয়েছে ২০১১-এর তোহোকু ভূমিকম্প ও সুনামি। ৯ থেকে ৯.১ মাত্রার এই ভূ-কম্পনে প্রাণহানি ঘটেছিল ১৯ হাজার ৭৫৯ জন মানুষের।
২০১৬-এর কুমামোটো ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃত্যু সংখ্যা ছিলো ২৭৩ জন।
আরও পড়ুন: মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
১২ দিনের মাথায় সিলেটে আবারও ভূমিকম্প
১২ দিনের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সিলেট। এবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামে।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থলে ৪ দশমিক ১৯ মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত
ভূমিকম্পের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ সজিব হোসাইন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৪ ও ২৯ আগস্ট সিলেটসহ সারাদেশে ভূমিকম্প হয়েছিল। অবশ্য এতে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এ ভূমিকম্পে সিলেটে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভূমিকম্পের সময় লোকজনকে আতঙ্কে বাসা-বাড়ি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ সারা দেশে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৮০০, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
মরক্কোয় শুক্রবার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৮০০ জন নিহত হয়েছে এবং বহুসংখ্যক আহত হয়েছেন। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভূমিকম্পে আটলাস পর্বতমালার গ্রামগুলো থেকে ঐতিহাসিক শহর মারাকেচ পর্যন্ত ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনুসন্ধান অব্যাহত থাকায় এবং উদ্ধারকারীরা দুর্গম এলাকায় পৌঁছালে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মরক্কোর মিডিয়া জানিয়েছে, মারাকেচ শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত ঐতিহাসিক ভবনগুলোর মধ্যে একটি দ্বাদশ শতকের কৌতুবিয়া মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এর পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এর ৬৯-মিটার (২২৬-ফুট) মিনারটি ‘মারাকেচের ছাদ’ নামে পরিচিত।
এছাড়াও মরক্কোর ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট মারাকেশে পুরনো শহরকে ঘিরে থাকা বিখ্যাত লাল দেয়ালের কিছু অংশের ক্ষতি হয়েছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি একটি শহরের মেয়র মরক্কোর নিউজ সাইট টুএম-কে বলেছেন, কাছাকাছি শহরের বেশ কয়েকটি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে এবং কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ ও রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তালাত এন'ইয়াকুব শহরের মেয়র আবদেররহিম আইত দাউদ বলেছেন, কর্তৃপক্ষ আল হাউজ প্রদেশে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য কাজ করছে, যাতে অ্যাম্বুলেন্স ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সহায়তা বহনকারী গাড়িগুলো যাতায়াত করতে পারে।
তিনি বলেন, পাহাড়ি গ্রামের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে সময় লাগবে।
স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রের আশেপাশের পাহাড়ি অঞ্চলে যাওয়ার রাস্তাগুলোয় যানবাহন আটকে আছে। ধসে পড়া পাথরের কারণে এগুলো অবরুদ্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে উদ্ধার প্রচেষ্টা ধীরগতিতে চলছে।
শনিবার সারাবিশ্বের মানুষ এ দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এক্স-এ (টুইটারে) শোক প্রকাশ করেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘ভারত এই কঠিন সময়ে মরক্কোকে সমস্ত সম্ভাব্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘জাতিসংঘ ক্ষতিগ্রস্ত জনসংখ্যাকে সহায়তা করার প্রচেষ্টায় মরক্কো সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন: মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে শত শত নিহত
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, রাত ১১টা ১১ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৮। ঝাঁকুনি সহ যা কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল।
মার্কিন সংস্থা জানিয়েছে, ১৯ মিনিট পরে একটি ৪.৯ মাত্রার আফটারশক আঘাত হানে।
শুক্রবারের কম্পনের কেন্দ্রস্থল ছিল আল হাউজ প্রদেশের ইঘিল শহরের কাছে, মারাকেচ থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার (৪৩ দশমিক ৫ মাইল) দক্ষিণে।
ইউএসজিএস বলেছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) নীচে ছিল।
মরক্কোর সিসমিক এজেন্সি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ১১ কিলোমিটার (৭ মাইল) নীচে ছিল। এই ধরনের অগভীর ভূমিকম্প বেশি বিপজ্জনক।
উত্তর আফ্রিকায় ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে বিরল।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিক্সের সিসমিক মনিটরিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং বিভাগের প্রধান লাহসেন মাহনি টুএম টিভিকে বলেছেন, এবারের ভূমিকম্পটি পাহাড়ি অঞ্চলে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল।
১৯৬০ সালে মরক্কোর আগাদির শহরের কাছে ৫.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে এবং হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়।
আগাদির ভূমিকম্প মরোক্কোতে নির্মাণ নিয়মে পরিবর্তন আনে। কিন্তু অনেক ভবন, বিশেষ করে গ্রামীণ বাড়ি, এই ধরনের ভূমিকম্প সহ্য করার মতো করে নির্মিত হয় না।
২০০৪ সালে ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় শহর আল হোসেইমার কাছে একটি ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল।
শুক্রবারের ভূমিকম্পটি পর্তুগাল ও আলজেরিয়ার মতো দূরবর্তী স্থানেও অনুভূত হয়েছিল।
পর্তুগিজ ইনস্টিটিউট ফর সি অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার এবং আলজেরিয়ার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সিতেও এর জরুরি প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
তুরস্কে ফের ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ১
ইন্দোনেশিয়ার বালি সাগর অঞ্চলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প
ইন্দোনেশিয়ার বালি সাগর অঞ্চলে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ভূমিকম্প হয়েছে।
ইউরোপিয়ান-মেডিটারেনিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ইএমএসসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ইন্দোনেশিয়ার মাতারাম থেকে ২০১ কিলোমিটার উত্তরে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৫১৮ কিলোমিটার গভীরে।
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক ১ রেকর্ড করে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম নুসা টেঙ্গারার বাংসালের কাছে ৫২৫ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে।
এদিকে, মার্কিন সুনামি সতর্কীকরণ ব্যবস্থা বলেছে, সমুদ্রের গভীরে আঘাত হানা ভূমিকম্পের ফলে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প
ঢাকাসহ সারা দেশে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
সিলেটে ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প
সিলেটে ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ সারা দেশে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটের দিকে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) অনুসারে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ২৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষদের ভূমিকম্পের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাতে দেখা গেছে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত
চট্টগ্রামে ৪ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প
ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে: মন্ত্রী
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পূর্ব জাপান, সুনামির সতর্কতা নেই
একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে শুক্রবার টোকিও এবং পূর্ব জাপানের অন্যান্য এলাকা কেঁপে ওঠে, তবে সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পটি চিবা উপদ্বীপের পূর্ব উপকূলে ৪৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) গভীরতায় কেন্দ্রীভূত হয়েছিল।
চিবা ও ইবারাকি প্রিফেকচারে শক্তিশালী কম্পনের খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু ইউএসজিএস বলেছে যে গুরুতর ক্ষতি বা প্রাণহানির সম্ভাবনা কম।
কিয়োডো নিউজ সার্ভিস জানিয়েছে, ইবারাকির টোকাই নং ২ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি।
৫ মে মধ্য জাপানে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, এতে অন্তত একজন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়।
জাপান বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির উত্তর-পূর্বে ২০১১ সালের একটি বিশাল ভূমিকম্পের ফলে একটি বিধ্বংসী সুনামি হয় এবং পারমাণবিক প্ল্যান্ট গলে যায়।
আরও পড়ুন: প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প, ভানুয়াতুতে ছোট সুনামি
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা নেই
নিউজিল্যান্ডে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প, ভানুয়াতুতে ছোট সুনামি
সুদূর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ভানুয়াতুতে ছোট সুনামি ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র (পিটিডব্লিউসি) জানিয়েছে, দ্বীপরাষ্ট্রের বন্দর নগরী লেনাকেলের কাছে শূন্য দশমিক ৫ মিটারের (১ দশমিক ৫ ফুট) কম ঢেউ পরিমাপ করা হয়েছে। ভানুয়াতু এবং নিউ ক্যালেডোনিয়া থেকে অন্য কোথাও ছোট তরঙ্গ পরিমাপ করা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি জানিয়েছে, তারা এখনও সুনামির সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করছে।
পিটিডব্লিউসি আরও জানিয়েছে, ফিজি, কিরিবাতি, পাপুয়া নিউ গিনি, গুয়াম এবং অন্যান্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে ছোট ছোট ঢেউয়ের সম্ভাবনা ছিল।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ফিজির দক্ষিণ-পশ্চিমে লয়্যালটি দ্বীপপুঞ্জ, নিউজিল্যান্ডের উত্তরে এবং অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে যেখানে কোরাল সাগর প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে মিলিত হয়েছে, সেখানে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। যা ৩৭ কিলোমিটার (২৩ মাইল) গভীর ছিল।
এই অঞ্চলটি প্রশান্ত মহাসাগরের চারপাশে ভূমিকম্পের ত্রুটিগুলোর একটি আর্ক ‘রিং অব ফায়ার’ এর অংশ, যেখানে বিশ্বের বেশিরভাগ ভূমিকম্প ঘটে।
আরও পড়ুন: জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা নেই
ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে: মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালানোর উপযোগী করে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।
রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকায় ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজ চালানোর মতো অবকাঠামো ও সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সময় থাকতে আমাদের এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
সোমবার (১৫ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, ভূমিকম্প প্রতিরোধে কোনো প্রযুক্তি না থাকায় অতীতেও ভূমিকম্প হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। আমাদের করণীয় হচ্ছে যেকোনো বিল্ডিং বা অবকাঠামো তৈরি করার সময় ভূমিকম্প সহনীয় ও জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে নির্মাণ করা।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে প্রশস্ত রাস্তা ও উন্মুক্ত স্থান ছিল যেখানে মানুষ ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছিল, ফলে মানুষের প্রাণহানি কম হয়েছে।
ঢাকায় সে বাস্তবতা কতটুকু রয়েছে তা জনগণের সামনে প্রতিনিয়ত উপস্থাপনের মাধ্যমে গণমাধ্যম সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম।
পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণের দায় আমাদের সবার রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ ব্যতীত কোন স্থাপনা তৈরি হতে না পারে সেজন্য যে প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থাপনা তদারকির দায়িত্ব রয়েছে তাদের আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে গণমাধ্যম অপরিকল্পিত নগরায়ন বা বিল্ডিং কোড না মানার ফলে ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগে যে ভয়াবহতা হতে পারে তা অনবরত মানুষের সামনে উপস্থাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঁঞা, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের পুরাকৌশল বিভাগের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী এবং সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী।
আরও পড়ুন: বসবাসযোগ্য ঢাকার জন্য নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সকল শ্রেণির মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য ও টেকসই করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা নেই
জাপানের মধ্যাঞ্চলে শুক্রবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং সুনামির কোনো আশঙ্কাও নেই।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্প তথ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুর মধ্য পশ্চিম উপকূলের কাছে ইশিকাওয়া অঞ্চলে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে।
জাপানের কিয়োডো নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, নিগাতা প্রিফেকচারের নিকটবর্তী একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে চিন্তার তেমন কিছু নেই।
জাপানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছোট ছোট ঢেউ আসতে পারে, তবে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই।
জাপান বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর একটি। ২০১১ সালে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে সুনামি ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ধসের ঘটনা ঘটে, যা আজও সেখানকার মানুষদের মধ্যে প্রতিধ্বনিত হয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত
চট্টগ্রামে ৪ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প