জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
জাবিতে পরীক্ষায় অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সেশনজট কাটানোর কথা বলে একেক পর এক পরীক্ষাবিধি লঙ্ঘন যেন শিক্ষার্থীদের হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক সঙ্গে একাধিক শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং এক শিক্ষাবর্ষের ফলপ্রকাশ না করেই পরের শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার রেওয়াজ যেন চালু হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষের বদলে ব্যক্তিগত কাজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে সময় বেশি দেওয়ায় নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া ও ফলপ্রকাশ না করার জন্য এই অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস সূত্র অনুসারে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি; নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা; আইন ও বিচার; বাংলা এবং ফার্মেসিসহ পাঁচটি বিভাগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনিস্টিউটে ২০১৭-২০১৮ (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ না করেই ২৩ জুলাই থেকে স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা চলমান।
তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ না করে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইনিস্টিউটের পরিচালক অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, ‘আমার ইনিস্টিউটে শিক্ষক সংকট, তাই ফলাফল প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু, প্রতি আসনের বিপরীতে লড়ছেন ১৩৫ জন পরীক্ষার্থী
এদিকে, আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৬-২০১৭ (৪৬ ব্যাচ) এবং ২০১৭-২০১৮ (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২৫ জুলাই থেকে একই রুটিনে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা চলমান। ইতোপূর্বে তাদের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা একই সঙ্গে সম্পন্ন হয়।
স্নাতক পরীক্ষায় ৪৬ ব্যাচে ৯ জন ও ৪৭ ব্যাচে ৮ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। প্রচলিত নিয়মে মান উন্নয়ন পরীক্ষা না দিয়ে বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে তারা স্নাতক শেষ করে, কেন না একই সঙ্গে দু’টি ব্যাচ স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত।
উল্লেখ্য, বিশেষ পরীক্ষা জন্য গুনতে হয় ১৪ হাজার টাকা, যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য বহন করা কষ্টসাধ্য।
এ বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি এবং আইন ও বিচার অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা দুটো শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা একসঙ্গে নিচ্ছি। আমাদের বিভাগে ক্লাসরুম ও শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য দ্রুত শিক্ষাজীবন শেষ করার লক্ষে পরীক্ষা নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও দুটো ব্যচের পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিধিতে বলা নেই তবে উপ উপাচার্য (শিক্ষা) থেকে আমরা নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়েছি।’
বিশেষ পরীক্ষার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীর কোনো ফি ছাড়াই বিশেষ পরীক্ষা দিয়েছে।’
কিন্তু আইন বিভাগের বিশেষ পরীক্ষার দেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা নিজ খরচে পরীক্ষা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গণরুম বিলুপ্তির দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীর অনশন
উল্লেখ্য, আইন ও বিচার বিভাগ এবং জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে সমান সংখ্যক শিক্ষক কর্মরত। তবে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করেছে কোনো রকম আইনের ব্যত্যয় ছাড়াই।
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে ফল প্রকাশের দীর্ঘ্যসূত্রিতা দেখা দেয়, যার ফলে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার পূর্বেই ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার সম্পন্ন হয়।
এই বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. আনিশা নূরী কাঁকন বলেন, আমার বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় শ্রেণিতে থিসিস থাকায় ফল প্রকাশ করতে দেরি হয়েছে। কেন না থিসিস মূল্যায়ন একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাবিধি ২০০৩ এর ২০(৩) ধারায় বলা হয়েছে, প্রতি ৫ খাতার জন্য ১ দিন হিসেবে মোট সময় (দিন) হিসাব করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে খাতা দেওয়া হবে। ২৬(৩) ধারায় বলা হয়েছে লিখিত পরীক্ষা শেষ হবার ৭৫ দিনের মধ্যে অবশ্যই ফল প্রকাশ করতে হবে।
পরীক্ষাবিধির ৩০ ধারায় আছে, থিওরি (ব্যবহারিক) পরীক্ষা শেষ হবার ৩ মাসের মধ্যে অবশ্যই থিসিস জমা দিতে হবে।
এদিকে, ৪৫ ব্যাচের ১২ জন শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তরে অংশ গ্রহণ করেছে। তবে তাদের থিওরি পরীক্ষা ২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হলেও ফল প্রকাশ হয়েছে ১০ মাস পরে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে।
একই ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা দেখা গেছে বাংলা বিভাগে। যেখানে ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ফলপ্রকাশ করার আগেই ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় শুরু হয়।
অন্যদিকে, ফার্মেসি বিভাগ ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার শেষ হয় এবং ফল প্রকাশ করতে প্রায় দুই বছর সময় ব্যয় করা হয়।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক শামসের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ জাবির প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগের ফলাফলের কি অবস্থা তা জানার জন্য এবং সেশনজট কাটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, আইন অনুষদের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক আচরণ করে পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছি। তবে একসঙ্গে দুই শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। আমাদের শিক্ষকদের ৫টি খাতা মূল্যায়নের জন্য ১দিন করে সময় দেওয়া হয়, যা ৭৫ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করার জন্য যথেষ্ট।
বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ব্যপারে তিনি বলেন, ‘নতুন শুরু হওয়া একটি বিভাগে এই ধরনের বিধি লঙ্ঘন করে পরীক্ষা নেওয়া কাম্য নয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট মুক্ত করতে ছাত্র-শিক্ষক সকল অংশীজনের থেকে সহযোগিতা চাই।’
আরও পড়ুন: জাবির ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল স্থগিত
১ বছর আগে
জাবিতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত শিক্ষার্থী লাইফ সাপোর্টে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়েছেন। এ সময় তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি লাইফ সাপোর্টে আছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের মওলানা ভাসানী হলের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত জাহিদ ক্যাম্পাসের কাছে ‘গেরুয়া’ নামক এলাকায় যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে তাকে কয়েক গজ দূরে টেনে নিয়ে যায়। দর্শন বিভাগের ফেরদৌস মাহমুদ নিয়ন মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন।
জাহিদের কয়েকজন বন্ধু ও অন্যান্য শিক্ষার্থী তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: জাবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে আহত ৩০
জাহিদের বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উজ্জল কুমার মন্ডল চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘জাহিদের অবস্থা ভালো না। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার মাথার ডান পাশে ফাটল রয়েছে। মাথার বাম পাশে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমি এনাম মেডিকেলে গিয়ে আহত ছাত্রকে দেখেছি। আমি বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলব।’
এদিকে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ভারতের দেয়া লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর
১ বছর আগে
জাবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে আহত ৩০
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে মঙ্গলবার অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে আশংকাজনক পাঁচজনকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসে ‘চ্যান্সেলর কাপ’ ফুটবল খেলা চলাকালে বিতর্কিত গোলকে কেন্দ্র করে মাওলানা ভাসানী ও আ. ফ. ম. কামাল উদ্দিন হলের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আশংকাজনক ছাড়া আহত সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জাবিতে বর্ণিল আয়োজনে প্রজাপতি মেলা
প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করেছি। দুই হলের শিক্ষার্থীরা আপাতত হলে ফিরে গেছে। সবাইকে নিয়ে বসে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করবে এবং ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান বলেন যে তার সংগঠন সংঘর্ষের দায় নেবে না কারণ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
আরও পড়ুন: জাবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
সাংবাদিক নির্যাতনে জাবির ১১ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
১ বছর আগে
জাবিতে বর্ণিল আয়োজনে প্রজাপতি মেলা
‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ এই স্লোগান সামনে রেখে ‘প্রজাপতি মেলা-২০২২’ এর আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ব শাখা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সম্মুখে প্রজাপতি মেলার উদ্বোধন করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক।
প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে দিনব্যাপী এ মেলার নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল নৃত্য, শিশু কিশোরদের জন্য প্রজাপতিবিষয়ক ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, অরিগামি প্রতিযোগিতা, বারোয়ারি বিতর্ক, প্রজাপতি চেনার প্রতিযোগিতা, প্রজাপতিবিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান।
এ বছর প্রকৃতি সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য তরুপল্লব সংগঠনকে ‘বাটার ফ্লাই অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী দীপ্ত বিশ্বাসকে ‘বাটার ফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়।
এদিকে মেলা উপলক্ষে ক্যাম্পাসে প্রজাপতিপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। মেলা দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রজাপতিপ্রেমীরা ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন। বিশেষ করে বাহারি রঙের প্রজাপতি দেখে শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকার ধানমন্ডি থেকে বাবার সঙ্গে প্রজাপতি মেলা দেখতে আসেন আইমান। ছোট্ট শিশু আইমান বলেন, ‘মেলায় এসে লাল-নীল প্রজাপতি দেখে ভালো লাগছে। ছবি আঁকা ও ঘুড়ি উড়িয়েছি, খুবই ভালো লেগেছে। আমি প্রজাপতির ওপর দুইটা বই কিনেছি।’
আরও পড়ুন: জাবিতে দিনব্যাপী প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘প্রজাপতির সৌন্দর্য আমাদের মনকে আপ্লুত করে। প্রজাপতি না থাকলে পরাগায়ন হবে না। তাই প্রকৃতিতে প্রজাপতিকে টিকিয়ে রাখতে হবে। পরিবেশ-প্রকৃতি আমাদের নিত্য অনুষঙ্গ। প্রকৃতি ভালো থাকলে মানুষ ভালো থাকবে। সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।’
মেলার আহ্বায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা গত এক যুগ ধরে প্রজাপতি মেলার আয়োজন করে আসছি।জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হলে প্রকৃতিও বিরূপ আচরণ করে। ছোট্ট কীটপতঙ্গ আমাদেরকে কীভাবে আলোড়িত করতে পারে, প্রজাপতি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সুষ্ঠু পরিবেশের অভাবে প্রজাতির সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে বাংলাদেশে সাড়ে চারশ’ প্রজাতির প্রজাপতি লক্ষ করা যেত। সেই সংখ্যা এখন কমে এসেছে। আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১০ প্রজাতির প্রজাপতি লক্ষ্য করা যেত। এখন এই সংখ্যা ৫২ তে নেমে এসেছে। প্রজাপতিকে রক্ষায় পরিবেশকে সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: জাবিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপভোগ করলেন ‘মিশন এক্সট্রিম’
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ, বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, কিউট প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ মাতলুব আক্তার, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান প্রমূখ।
উল্লেখ্য, প্রজাপতির প্রতি গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ২০১০ সালে প্রথম ক্যাম্পাসে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে প্রতিবছর নানান আয়োজনে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জাবির নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আফসার আহমদের ৬৩তম জন্মজয়ন্তী
১ বছর আগে
জাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের (গানিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।
কৃর্তপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই ইউনিটের ৭ নভেম্বরের পরীক্ষা ২০ নভেম্বর ও ৮ নভেম্বরের পরীক্ষা ২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মহিউদ্দিনের স্বাক্ষরিক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে জাবিতে শুরু হচ্ছে প্রতীকী প্রতিবাদী ক্লাস
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (৫ নভেম্বর) রাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
তবে ‘এ’ ইউনিট ছাড়া অন্যান্য ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঠিক থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাবিতে বরাদ্দ বেড়েছে গবেষণায়, কমেছে চিকিৎসায়
৩ বছর আগে
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে জাবিতে শুরু হচ্ছে প্রতীকী প্রতিবাদী ক্লাস
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে প্রতীকী প্রতিবাদী ক্লাস। ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত স্থানে নেয়া হবে এসব ক্লাস। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষার্থী এই ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রথম ক্লাস নিবেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন। ক্যাম্পাস খোলা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলতে থাকবে বলে জানান আয়োজক শিক্ষকরা।
কর্মসূচি সম্পর্কে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে আমরা এই কর্মসূচি পালন করবো। এখানে ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য শিক্ষকরা ক্লাস নিবেন। এই কর্মসূচি ক্যাম্পাস খোলা পর্যন্ত চলতে থাকবে। প্রতীকী এই ক্লাসে যেকোন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশগ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্র অন্যান্য প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় কেন খোলা যাবে না? বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আবাসিক শিক্ষক আছেন। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরাও করোনা বিষয়ে সচেতন। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া সবচেয়ে সহজ। আমরা ক্লাস নেয়ার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ করতে চাই যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা সম্ভব।
আর কোন কোন শিক্ষক ক্লাস নিতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রায়হান জানান, অনেক শিক্ষক ক্লাস নিতে ইচ্ছুক। তারা হলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক এএসএম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দীন, অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা প্রমুখ।
এবিষয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ জানান, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকলে যতটা নিরাপদ থাকবে তার চেয়ে আশেপাশে আরও বেশি অনিরাপদ অবস্থায় আছে। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে যাতে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের দ্রুত হলে উঠার ব্যবস্থা করা হয় সেজন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পাশাপাশি চিকিৎসা কেন্দ্রের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, বিভিন্ন টেস্টসহ করোনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ নামে সারাদেশে আমাদের একটি সংগঠন আছে। সেখান থেকেই গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতীকী এই ক্লাস সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলবে। এই কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে জনমত তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: শিগগিরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
প্রসঙ্গত, সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ক্ষেত্রে কিছু করণীয় প্রস্তাব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক শিক্ষকদের এই সংগঠন। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর যাতে শুধু শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলে অবস্থান করতে পারেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া হলগুলোয়ও প্রাথমিক চিকিৎসা এবং শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে কাজ করে পুরোদমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। (২) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোয় শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষা ও টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পাসে ব্যবস্থা করা গেলে সবচেয়ে ভালো হয়, তাতে শিক্ষার্থীরা ভিড় এড়িয়ে টিকা নিতে পারবে। (৩) ক্যাম্পাসগুলোয় অবস্থিত চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো, আইসোলেশনের ব্যবস্থা, অসুস্থ হলে শিক্ষার্থীদের দেখাশোনার ব্যবস্থা উন্নত করার কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। (৪) অনলাইনে সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা চালিয়ে নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প মূল্যে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সার্ভিসের বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। (৫) ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে তাঁদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনার সেফটি নেটের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
পরীক্ষার দাবিতে আমরণ অনশনে জাবির দুই শিক্ষার্থী
৩ বছর আগে
জাবির আবাসিক হল গেটে ফের তালা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলগুলোতে শনিবার বিকালে ফের তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৩ বছর আগে
করোনার বন্ধে জাবির আবাসিক হলে ছাগল পালন
মাহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবং শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আবাসিক হল ছাগলের খামারে পরিণত হয়েছে।
৪ বছর আগে
জাবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিরুদ্ধে শিক্ষক লাঞ্চনার অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রভাষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করেছেন এক প্রভাষক।
৪ বছর আগে
জাবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু, হল নিয়ে ভোগান্তিতে নবীন শিক্ষার্থীরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস আজ (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হয়েছে।
৪ বছর আগে