ত্রাণ
উত্তর-ময়মনসিংহের বন্যার্ত কৃষকদের ত্রাণ সহায়তা চেয়েছে বিএনপি
সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উল্লেখ করে কৃষকদের ত্রাণ সহায়তা, প্রণোদনা ও সুদমুক্ত ঋণসহ সার্বিক সহায়তা দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, বন্যা দুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার এখনও দৃশ্যমান কোনো ত্রাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় গত মাসের শেষ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ভারী বন্যায় প্লাবিত হয়। লাখ লাখ মানুষ বন্যায় অসহায় হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক বিএনপির
বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে এই বিপর্যয়কর বন্যার জন্য মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবং উজানের পাহাড়ি ঢলকে দায়ী করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা, কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় আমন ধান চাষি, সবজি চাষিদের পাশাপাশি মাছ ও পোল্ট্রি খামারের মালিকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
রিজভী বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যার সময় যে ব্যাপক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়েছে তা বর্তমানে দৃশ্যমান নয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের পুনর্বাসনের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারকে মুখ্য ভূমিকা নিতে হবে। বাজারে চাল, ডাল, শাকসবজি, মাছ, মাংস ও ডিমের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে অবশ্যই সক্রিয় হতে হবে। কৃষকদের সার, কীটনাশক এবং বীজের প্রাপ্যতা বাড়ানো বা প্রণোদনার মাধ্যমে সহায়তা পাওয়া উচিত।
বন্যায় যাদের ফসল ও জমির ক্ষতি হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা তৈরি করে পরবর্তী ফসল কাটার উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ সহায়তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরবর্তী ফসলের জন্য বিনা সুদে কৃষি ঋণ, বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করা। পরবর্তী ক্রমবর্ধমান মৌসুমের প্রস্তুতির জন্য তাদের রবি ফসল উৎপাদনের বীজও পাওয়া উচিত।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ, হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর খামারের তালিকা তৈরি করে খামার পুনঃস্থাপনে সুদমুক্ত ঋণ ও অন্যান্য অতিরিক্ত সহায়তা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: যোগ্য ইসির অধীনে জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান গণফোরামের
১ মাস আগে
টিএসসির ত্রাণের ৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে বন্যার্তদের পুনর্বাসনে
আগস্ট মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য টিএসসিতে সংগ্রহ করা ত্রাণের তহবিল থেকে আট কোটি টাকা সরবরাহ করা হবে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত টিএসসিতে সংগ্রহ করা ত্রাণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনের সমন্বয়করা।
পূর্ণাঙ্গ অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, গণত্রাণ কর্মসূচিতে মোট ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা জমা হয়। সংগ্রহ করা এসব অর্থ থেকে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বর্তমানে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা জমা রয়েছে।
অডিট ঘোষণা করেন পি কে এফ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের পার্টনার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অডিটর গোলাম ফজলুল কবির।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সহায়তায় নগদ ২০ কোটি টাকা ও ত্রাণ সংগ্রহ বিএনপির
অডিট অনুযায়ী আয়ের উৎস:
নগদ প্রাপ্ত ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৭২৫ টাকা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায় ৭৮ লাখ ৫৭ হাজার ২১৬ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং এ প্রাপ্ত ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৯ টাকা। ডলার, স্বর্ণ, প্রাইজবন্ড ও অন্যান্য জিনিস বিক্রি বাবদ পাওয়া যায় ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১১০ টাকা। সর্বমোট আয় ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা।
ব্যয়ের খাত:
রিলিফ কেনা বাবদ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ টাকা। অন্যান্য সংগঠনকে ডোনেশন বাবদ ১২ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা। পরিবহন খরচ বাবদ ৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ভলান্টিয়ারদের পেছনে খরচ বাবদ ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ টাকা। প্যাকেজিং পণ্য কেনা বাবদ ১১ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকা। অন্যান্য খরচ ৩ হাজার ১২০ টাকা।
এতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে মোট ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা আছে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা।
এ বিষয়ে অডিটর গোলাম ফজলুল কবির বলেন, ‘আমাদের গত ১০ সেপ্টেম্বর অডিটের জন্য ডাকা হয় যা আমরা ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ করি। সব মিলিয়ে ২০ দিন সময় লেগেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিশেষ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়েছিল। পরে অফিসিয়াল যৌথ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সেখানে ট্রান্সফার করা হয়। এছাড়া ২ লাখ টাকার কয়েন আমাদের হিসাব করতে হয়, এরপর স্ক্র্যাপ, স্বর্ণ বিক্রি করেও অর্থ পাওয়া যায়। যা পরে যোগ হয়। আয়-ব্যয়ের হিসাব স্বচ্ছ করতেই মূলত হিসাব দিতে দেরি হয়েছে।’
আয়-ব্যয়ে গড়মিল ছিল কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কিছু খুঁজে পাইনি যেটা নিয়ে প্রশ্ন করব। তাদের আয়-ব্যয় হিসাব স্বচ্ছ ছিল।’
সমন্বয়ক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা তহবিলের এই অর্থ সরকারের ত্রাণ মন্ত্রালয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেব। এর মধ্যে ৮ কোটি টাকা পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য ব্যয় করা হবে আর এর বাইরে যে টাকা সেটা দিয়ে উত্তরবঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘গত ৪ তারিখ ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করার পরও তহবিলে টাকা যুক্ত হয়েছে। কিছু চেক যেগুলো শুরুতে কোনো কারণে ক্যাশ করা যায়নি সেগুলো পরে ক্যাশ করা হয়েছে। যেমন আমাদের প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট ছিল না। সেকারণে চেকগুলো ব্যবহার করা যায়নি। কিন্তু পরে যখন অ্যাকাউন্ট করা হয় তখন সেগুলো ব্যবহার করা যায়। এজন্য আমাদের পূর্ণাঙ্গ হিসাব করতে একটু সময় লেগেছে।’
হিসাব প্রকাশে দেরির বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য হিসাব প্রকাশে সময় নেওয়া হয়েছে। খুঁটিনাটি প্রতিটি বিষয়ের হিসাব এখানে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের অনেকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিল সেগুলোও এই হিসাবের আওতায় আনা হয়েছে। এই ২০ দিনে প্রতিটি দোকানে কখন কত টাকার জিনিস কেনা হয়েছে, কোথায় কত টাকার জিনিস দেওয়া হয়েছে, ভলান্টিয়ারদের পেছনে কত খরচ হয়েছিল, কতটি কয়েন ছিল, কত টাকার গহনা ছিল সব উঠে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে একটা টাকাও এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা এতদিন অনেক সমালোচনা শুনলেও প্রতিক্রিয়া দেখাইনি কেবল আজকের এই দিনের অপেক্ষায়।’
উত্তরবঙ্গের বন্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে সরকারকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা শুধু খসড়া-দলিল পত্রে নয় এর স্থায়ী সমাধান চাই।’
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর দাতা সংস্থাগুলো পুনর্বাসনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে: ত্রাণ উপদেষ্টা
১ মাস আগে
গবাদিপশুর জন্য ত্রাণ নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দুই জেলা ফেনী ও মৌলভীবাজারে গবাদিপশুর জন্য ত্রাণ হিসেবে প্রায় ৬ টন পশুখাদ্য, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদ ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী ও গবাদিপশুর ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়ক রাকিব রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসময় রাকিব রনি বলেন, আমরা মোট ৬ টন পশুখাদ্য সংগ্রহ করছি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের একটি দল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) আড়াই টন পশুখাদ্য নিয়ে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গিয়েছে। এছাড়া গত ২৮ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আরেকটি দল ৩ টন পশুখাদ্য নিয়ে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়ায় গিয়েছে। এছাড়া বাকি আধা টন পশুখাদ্য দেশের অন্যান্য বন্যাকবলিত অঞ্চলে দেওয়া হবে।
গবাদিপশুর ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়ক আরও বলেন, বাকৃবির শিক্ষার্থী হিসেবে শুধু মানুষ নয়, আমরা প্রাণীদের পাশেও দাঁড়াব। সেক্ষেত্রে আমরা একটি ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করেছি।
আরও পড়ুন: দিনব্যাপী আয়োজনে বাকৃবির ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত এলাকায় ৪টি সেবা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা
১. অসুস্থ প্রাণীগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া।
২. যেসব প্রাণীর ডায়রিয়া, ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি, পুষ্টি সমস্যা তাদের রুচিবর্ধক এবং ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লাই দেওয়া।
৩. পশুখাদ্য সরবরাহ করা।
৪. পরে খামারিদের কোনো সমস্যা হলে টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া।
ত্রাণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে জানা যায়, সংগৃহীত পশুখাদ্যের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা সিপি বাংলাদেশ।
ইনোভা, মিনার এগ্রো ও লোকাল কিছু পেট কোম্পানি পশুখাদ্য পাঠিয়েছে। স্কয়ার, একমি, এসিআই, এসকেএফ ও বায়োল্যাব ওষুধের যোগান দিয়েছে।
টেলিমেডিসিন সেবা সম্পর্কে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মাশশারাত মালিহা বলেন, খামারিদের ভেটেরিনারিয়ানদের নাম্বার দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে গবাদি পশুগুলো যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয় তবে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে খামারিরা আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবে।
ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল প্রতীক সিদ্দিক বলেন, দেশের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যাকবলিত। সেখানে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। প্রচুর পোলট্রি ফার্ম, এ্যানিমেল ফার্ম ধ্বংস হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তারা সমাজের সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ফেনীতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেনীর ৩টি বন্যা দুর্গত এলাকা ফুলগাজী, পশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলাযর প্রায় ৯০০ খামারিদের মাঝে পশুখাদ্য, ওষুধ ও কয়েকটি খামার পরিদর্শন ও বিভিন্ন টেকনিকেল পরামর্শ দেওয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম নারী পরিচালক পেল বাকৃবির আইকিউএসি
উক্ত এলাকাগুলোর বেশিরভাগ জায়গায় মানুষের খাদ্যের অপর্যাপ্ত না হলেও, পশুখাদ্যের অপর্যাপ্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপস্থিত খামারিরা ও ফেনীর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
ফেনী জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক ইউএনবিকে বলেন, বাকৃবির শিক্ষার্থীরা ফেনী জেলার বন্যাদুর্গত ৩টি উপজেলায় প্রাণীদের পশুখাদ্য, চিকিৎসা ও ওষুধ সেবা প্রদান করেছে। শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রমে ওই এলাকার খামারিরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে।
২ মাস আগে
বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কাজে ভলান্টিয়ারদের যা জানা জরুরি
গত এক সপ্তাহ ধরে চলমান বন্যার করাল গ্রাসে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল। এর মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় সময় পার করছে ফেনী, কুমিল্লা, এবং নোয়াখালীবাসীরা। সেনাবাহিনী ও নানা সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের পাশাপাশি দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরাও ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে বিশাল পরিসরে। তবে হেলিকপ্টার ও স্পিড বোট ব্যবহারের পরেও সমন্বয়হীনতার কারণে এই সাহায্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক অসহায় মানুষ। একই সঙ্গে ভলান্টিয়ারদেরও পড়তে হচ্ছে নানাবিধ বিড়ম্বনা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে। এই প্রতিকূলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে তরুণ ভলান্টিয়ারদের কিছু ব্যাপারে দূরদৃষ্টি এবং বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন। চলুন, বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ ও নিরাপদ উদ্ধার কাজে অপরিহার্য বিষয়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী
তৈরি খাবার
বুক সমান পানিতে এ সময় প্রাণ বাঁচানোই দায় হয়ে পড়ে। বহু কষ্টে কোনো শুকনো জায়গায় আশ্রয় নেওয়া সম্ভব হলেও সেখানে রান্নার চুলা খোঁজা চিন্তারও অতীত। এ রকম অবস্থায় থাকা অসহায় মানুষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হচ্ছে তৈরি খাবার। তাই চাল, ডাল, তেল বা চিনির বদলে দেওয়া উচিত মুড়ি, চিড়া, খেজুর, রুটি, গুঁড় ও সিদ্ধ আলু। এছাড়া বিস্কুট, বাদাম, ওট্স বার, বা কেকের মতো মিষ্টি জাতীয় খাবার অনেকক্ষণ দেহে শক্তি সঞ্চয় করে রাখে। সম্ভব হলে খিচুড়ি ও ভাত ভর্তা নেওয়া যেতে পারে।
বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পানি-বিশোধন ট্যাবলেট
বন্যাকালে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব প্রকট আকার ধারণ করে। তাই উত্তম হচ্ছে বোতলজাত খাবার পানি নিয়ে যাওয়া। এর বিকল্প হিসেবে পানি-বিশোধন ট্যাবলেট বা ফিটকিরি নেওয়া যেতে পারে। এতে বিশেষ করে গৃহবন্দি মানুষেরা উপকৃত হবে, কেননা এর মাধ্যমে তারা নিজেরাই পানি বিশুদ্ধ করে নিতে পারবে।
শিশুর খাবার ও পরিধেয়
নবজাতক থেকে শুরু করে বাড়ন্ত বয়সিসহ প্রতিটি শিশুই প্রচণ্ড ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে বন্যার সময়। তাই অন্যান্য খাবার ও পানির সঙ্গে শিশুদের খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এই তালিকায় থাকতে পারে গুঁড়া দুধ, সিরিয়াল, ল্যাক্টোজেন, সুজি, জুস, প্যাকেট স্যুপ ও চিপ্স। এছাড়া ভেজা বা ঠান্ডা থেকে রক্ষা এবং অপরিষ্কারজনিত স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে মুক্ত রাখতে শুকনো পোশাক ও প্যাম্পার্স নিতে হবে।
আরো পড়ুন: বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা করার উপায়
ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম
পানিবাহিত রোগ, চর্মরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ঠাণ্ডা লাগা বা জ্বর, কাশি ও মাথা ব্যথার ওষুধগুলো সংগ্রহে রাখতে হবে। বিশেষ করে এ সময়ের সাধারণ ব্যাধি ডায়রিয়ার জন্য স্যালাইন সঙ্গে রাখা আবশ্যক। নানা ধরনের ক্ষত নিরাময়ের জন্য দরকার হবে ব্যান্ডেজ ও স্যাভ্লনের মতো প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম।
সাপ, মশা ও পোকামাকড় নিরোধক
প্লাবনের সময় সাপ, মশা ও পোকামাকড়ের উপদ্রব হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। সাপকে দূরে রাখার জন্য গাঁদা ফুল, কৃমি কাঠ, রসুন, লবঙ্গের তেল বা ভিনেগার নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। মশা ও পোকামাকড়ের জন্য কয়েল, স্প্রে, ত্বকে লাগানোর লোশন ও কিলার ব্যাট নিতে হবে।
এগুলো সরবরাহের সময় অবশ্যই ব্যবহারের শর্তগুলোও জানিয়ে দেওয়া জরুরি। কারণ স্প্রে নবজাতকদের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া এ সময় গ্যাস পাইপ লিক হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এর মাঝে কয়েল জ্বালাতে গেলে তা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ হতে পারে।
ভেজা অবস্থা থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় পরিধেয়
একদিকে মাথার ওপর দিনভর বৃষ্টি, অন্যদিকে নিচে বুক সমান পানি। এ অবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা অবস্থায় থাকায় শরীর ব্যথা, ঠান্ডা, কাশি বা জ্বর দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় শুকনো পোশাক, ছাতা, ও রেইন কোট অনেক উপকারে আসতে পারে। এছাড়াও লাইফ জ্যাকেট এবং নারীদের জন্য স্যানিটারি প্যাড নেওয়া আবশ্যক। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং মোবাইল সংরক্ষণের জন্য ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ বা ফোল্ডার, প্লাস্টিকের জিপার কিংবা নিদেনপক্ষে পলিথিন দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী
বন্যার দূষিত পানি ও আর্দ্র পরিবেশে জন্ম নেওয়া জীবাণু থেকে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধির সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দরকার হবে সাবান, ডিটারজেন্ট, ডিশ ওয়াশিং পাউডার বা ভীম বার।
ব্যাটারিসহ টর্চ লাইট
প্লাবনের আগ্রাসনে বিশাল এলাকা জুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। সন্ধ্যার নামার পরে সেসব এলাকা হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক। এক্ষেত্রে উপযুক্ত উপায় হচ্ছে ব্যাটারিচালিত টর্চ লাইট ব্যবহার। মোমবাতি বা দেওয়াশলাই না ব্যবহার করাই ভালো। কারণ এ সময় গ্যাস পাইপ লিকেরও ভয় থাকে।
পশুর খাদ্য
বন্যা-দুর্গতদের মধ্যে একটা বিরাট অংশের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উপায় গবাদি পশু। অনেকেই তাদের গৃহস্থালি গরু বা ছাগল নিয়ে পানির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এই পশুগুলোর জন্য আলাদাভাবে কিছু খাবার (যেমন ভুষি, লবণ, বা খৈল) সংগ্রহে রাখা উচিত।
এছাড়া রাস্তার কুকুর-বিড়ালও মানুষের মতোই বিপন্ন হয়ে আশ্রয় ও খাবারের সন্ধান করছে। তাই খাবার সরবরাহের সময় এদের দিকেও খেয়াল রাখা দরকার।
আরও পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
২ মাস আগে
বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবেন
প্রতি বছর ঝড়ের সম্মুখীন হওয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য বন্যা মোকাবিলা করা বেশ স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরেও ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমছে না; বরং বেড়েই চলেছে। প্রতি বছর ঝড়-প্লাবনে প্রাণহানি যেন অগত্যা সাধারণ সংবাদে রূপ নিয়েছে। এ অবস্থার উন্নতির জন্য সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে প্রয়োজন তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো যায়।
বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণের জন্য খাদ্য সামগ্রী
বিশুদ্ধ খাবার পানি
ঝড় ও বন্যার সময় নদী, পুকুর এবং ঘরের ভেতরের পানি দূষিত হতে পারে। তাই আশ্রয়কেন্দ্রে সরবরাহকৃত পানি সঞ্চয় করা উত্তম। সাধারণত একজন ব্যক্তির পানীয় এবং খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিদিন গড়ে ন্যূনতম ১ গ্যালন এবং গোসল, দাঁত ব্রাশ ও থালা-বাসন ধোয়ার জন্য দেড় থেকে আড়াই গ্যালন পানি প্রয়োজন হয়৷ অবশ্য টিনজাত ফলের রস, কোমল পানীয় এবং শাকসবজির রস খাবার পানীয়’র কিছু অংশ পূরণ করতে পারে।
এই পানি সরবরাহের সময় টাইট-ফিটিং বা স্ক্রু টপ ঢাকনা সহ পরিষ্কার পাত্র ব্যবহার করা উচিত। হালকা ওজনের প্লাস্টিকের পাত্র এক্ষেত্রে ভালো কাজ দিতে পারে। যদি কাচের জগ বা বোতল ব্যবহার করা হয়, তাদের মধ্যে খবরের কাগজ বা অন্যান্য প্যাকিং সামগ্রী রেখে সেগুলোকে ভেঙ্গে যাওয়া থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। ধাতব পাত্রগুলোতে পানি রাখলে পানির স্বাদ বদলে যায়; আর মরিচা ধরতে পারে।
খুব জরুরি অবস্থায় বাড়ির গরম পানির ট্যাঙ্ক থেকে নিষ্কাশন করা পানি সংগ্রহ করা যেতে পারে। তবে এগুলোতে দূষণের সম্ভাবনা থাকে। তাই এই পানি সরবরাহের আগে বিশুদ্ধ করা উচিত।
প্রায় সময় অনেক বেশি পানি বহন করা কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে ক্লোরিন ডাই অক্সাইড বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ফিটকিরি ইত্যাদি নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এতে করে প্লাবিত লোকজন নিজেরাই পানি বিশুদ্ধ করে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প
যথাসম্ভব সংরক্ষণ করে রাখার মত বিশুদ্ধ খাবার
যে কোন দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় দুর্যোগ পরবর্তী খাবারের চাহিদা পূরণের জন্য মুড়ি, চিড়া, সবজি খিচুড়ি ইত্যাদি খাদ্য ত্রাণ হিসেবে দেয়া যেতে পারে। জরুরি অবস্থায় ত্রাণ হিসেবে সরবরাহের জন্য আগে প্রয়োজনীয় খাদ্যগুলো সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এখানে খাবারের পরিমাণ এবং ধরণ বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে। যেমন- দুর্গত এলাকার পরিবারের সদস্যদের বয়স এবং বিশেষ খাদ্য চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি যেমন- শিশু, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক। এছাড়াও তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং খাদ্য প্রস্তুত করার ক্ষমতার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
স্বল্পমেয়াদী খাদ্য সরবরাহের জন্য সাধারণত পানীয় এবং বিশেষ খাদ্যের চাহিদা মেটাতে হয়। কাচের পাত্র ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই জরুরি খাদ্য সরবরাহের জন্য টিনজাত পণ্যই সেরা। টিনজাত খাবারের মধ্যে রয়েছে-
শাকসবজি, মটরশুটি, ফল ও ফলের রস, স্যুপ, দুধ এবং বোতলজাত পানি। এছাড়াও তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে চিনি, লবণের মতো প্রধান খাবার, বিস্কুট, চকলেট, উচ্চ শক্তির খাবার যেমন পিনাট বাটার, জেলি, বাদাম, শুকনো ফল, চাল এবং আলু। বাচ্চাদের জন্য সুজি, সেরেলাক নেয়া যেতে পারে।
টিনজাত খাবার প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য রাখা যেতে পারে, যতক্ষণ না টিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এগুলো সরবরাহের পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রে তা সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে হবে। নতুবা যে কোনও সময় সেগুলো পোকামাকড় এবং ইঁদুরের মতো কীটপতঙ্গের পাশাপাশি বন্যার পানি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরো পড়ুন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ভোলায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ বিপর্যস্ত
বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণের জন্য অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী
খাবার ছাড়াও বন্যার্তদের টিকে থাকার জন্য আরও কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। অতিবৃষ্টি অথবা বন্যার কারণে অনেক সময় অসহায় লোকদের এক কাপড়েই কাটিয়ে দিতে হয় দীর্ঘ দিন। তাই নারী-পুরুষ ও ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদাভাবে কাপড় নেয়া যেতে পারে। বন্যার পানি থেকে পা বাঁচানোর জন্য দেয়া যেতে পারে গামবুট। এ ব্যাপারে শিশু ও বয়স্কদের ওপর বিশেষ নজর দেয়া যেতে পারে।
স্বাস্থ্যবিধি সামগ্রীর মধ্যে সাবান, টুথব্রাশ ও টুথপেস্ট, মশা ও পোকা-মাকড় নিরোধক, মশা স্প্রেয়ার ত্রাণ হিসেবে সঙ্গে নেয়া যেতে পারে।
ওষুধপত্রের মধ্যে খাবার স্যালাইন, জ্বর ও মাথা ব্যথার ওষুধ, কাশির সিরাপ নেয়া যেতে পারে।
বিভিন্ন মাত্রার বর্ষণ থেকে বাঁচার জন্য ছাতা ও রেইন কোট উত্তম। কাপড়ের বিকল্প হিসেবে নয়; বরং আলাদা কাপড়ের তালিকায় এই সামগ্রী রাখা উচিত।
ঝড়ের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট খুব সাধারণ বিষয়। এই লোডশেডিং-এর কথা মাথায় রেখে মোমবাতি, টর্চ লাইট, ম্যাচ দেয়া যেতে পারে।
দুর্যোগ যখন বন্যা তখন এ থেকে বাঁচার জন্য নৌকাই একমাত্র ভরসা। তাই ত্রাণ হিসেবে নৌকার কথাও ভাবা যেতে পারে। স্থানীয় নৌকার দাম সাধারণত সাধ্যের বাইরে থাকে। তাই ত্রাণ হিসেবে কয়েকটি ইনফ্ল্যাটেবল বোট পেলে অসহায় মানুষ হাফ ছেড়ে বাঁচতে পারে। গ্যাসে ভরা এসব নৌকা ওজনে বেশ হালকা হয়; আর দামেও সাশ্রয়ী। ৩ জন মানুষের জায়গা সংকুলান হয় এই নৌকায়। ফলে সহজেই তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পারেন।
আরো পড়ুন পাকিস্তানে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কারণ
শেষাংশ
বন্যা দুর্গত এলাকায় খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ বির্পযস্ত জনজীবনকে কেবল টিকিয়েই রাখে না, এটি ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক দিক থেকে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা বজায় রাখে। প্রতিবারের মত এবারো সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ে হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে। এ সবকিছুর সঙ্গে লড়াই করে অসহায় মানুষ তীর্থের কাকের মত ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করে। তাই পর্যাপ্ত খাবার ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী তাদের এই ক্ষতিগুলো অনেকাংশে পুষিয়ে দিতে পারে। প্রত্যেকের সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসা উচিত এই দুর্গত মানুষদের সাহায্যার্থে।
২ বছর আগে
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ডব্লিউএফপিএ'র কান্ট্রি ডিটেক্টরের সাক্ষাৎ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ডব্লিউএফপিএ'র কান্ট্রি ডিটেক্টর ডোমেনিকো স্কেল পিলি। রবিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর অফিসকক্ষে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে বলপূর্বক ব্যস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আলোচনা হয়। ব্যস্তুচ্যুত এসকল মিয়ানমার নাগরিকের সহায়তা দানে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর মানবীয় পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়।
কক্সবাজারের ক্যাম্পসমূহে এ সকল নাগরিকদের আহার, সুপেয় পানি, চিকিৎসা, শিক্ষা, পয়:নিস্কাশন ইত্যাদি বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: জিএম কাদেরের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, আলোচনায় রাজনীতি-অর্থনীতি
এছাড়া সিলেট বিভাগসহ সারাদেশে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি, উদ্ধার কার্যক্রম এবং আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত মানুষজনের নিকট শুকনো ও রান্না করা খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
প্রতিমন্ত্রী মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিক রোহিঙ্গাদের তাঁদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিবছর হাজার হাজার নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে, এতে প্রতিবছরই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব জনমত গঠনে এগিয়ে আসতে প্রতিমন্ত্রী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জিএম কাদেরের সাক্ষাৎ
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা
২ বছর আগে
প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সব দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ প্রতিরোধী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে। আমরা দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম…আমাদের এটি বজায় রাখতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন:অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করুন, দুর্যোগ এড়ান: ফারাক্কা কমিটি
এসময় তিনি ২৫টি জেলায় ত্রাণ গুদাম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৮০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৫০টি মুজিব কিল্লা বা বন্যার সময় জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য নির্মিত স্থাপনা উদ্বোধন করেন।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিড়ে বিএনপির দায়িত্বহীনতার সমালোচনা করে, ভবিষ্যতে যাতে বিএনপির মতো শক্তি আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য দেশের জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন,তার দল যখন সংসদে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপি সরকারের গাফিলতির কথা তুলে ধরেছিল, তখন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দাবি করেছিলেন যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল তাতে খুব বেশি মানুষ মারা যায়নি।
শেখ হাসিনা বলেন,এ ধরনের মন্তব্য করে বিএনপি তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ এড়াতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
১৯৯০ সালের শেষ দিকে এইচএম এরশাদের পতনের পর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি দেশের ক্ষমতায় আসে এবং খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৯১ সালের এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আনুমানিক এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং প্রায় এক কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। সামগ্রিক সম্পত্তির আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল বিলিয়ন ডলারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান যে এটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে মারাত্মক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে একটি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারের সাফল্য ও পদক্ষেপের প্রতি আলোকপাত করে তিনি বলেন,বাঙালি জাতিকে কেউ আর অবমূল্যায়ন করতে পারবে না।
তিনি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্রদের রাজনৈতিক সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগই নয়, বাংলাদেশ অগ্নিসংযোগের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগেরও সম্মুখীন হয়।’
তিনি বলেন, দেশকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোনো কিছুই বাধা দিতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন,‘আমরা সব ধরণের দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব – হোক সেটা প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ডিজাইন করেছে এবং এটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় তার সরকার সব সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সতর্ক থাকে। ‘রাস্তা,সেতু ও স্কুল নির্মাণের সময় আমরা বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানির চ্যানেল করার প্রক্রিয়াটি অন্তর্ভুক্ত করা বিষয়েও সজাগ থাকি।’
তিনি আরও বলেন, পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে সরকার খাল-বিল ও অন্যান্য জলাশয় পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি নদীগুলো ড্রেজিং করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নদীভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন,সরকার দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস,প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫) প্রণয়ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সারাদেশে মোট চার হাজার ২০০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৬৬টি ত্রাণ গোডাউন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করেছে তার সরকার।
এছাড়া সরকার প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হওয়ার মতো কার্বন নিঃসরণ করে না বাংলাদেশ, তবুও আমাদের দেশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি বলেন,উন্নত দেশগুলো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে জলবায়ু তহবিল প্রদানে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে দুর্ভাগ্যজনক যে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো তাদের (উন্নত দেশের) প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খুব কমই তহবিল পায়।
আসলে আমাদের নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করতে উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ এলাকা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দেশে ‘দুর্যোগের জন্য প্রাথমিক সতর্কতা, সবার জন্য পদক্ষেপ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন দিবস-২০২২ উদযাপিত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসান।
অনুষ্ঠানে সাইক্লোন প্রিপারেডনেস প্রোগ্রামের (সিপিপি) আওতায় দুইজন সেরা স্বেচ্ছাসেবক- লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার জয়শ্রী রানী দাস এবং ভোলার লালমোহনের মো. জসিম উদ্দিনকে পুরস্কৃত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ডা. এনামুর রহমান তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
ভবিষ্যতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক আয় বৃদ্ধিতে কৃষিপণ্য বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সামনের কঠিন দিনগুলো মোকাবিলা করার জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ান: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১২শ’ ছাড়িয়েছে
পাকিস্তানের বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর মানুষদের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে মানবিক সহায়তা বিশুদ্ধ খাবার সরবরাহ করার পরও মৃত্যু বেড়ে ১২শ’ ছাড়িয়েছে।
শুক্রবার দেশটির কর্মকর্তারা বলেন, বাস্তুচ্যুত পরিবার ও তাদের শিশুরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে আছে।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় প্রায় ৩০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার অভিযানে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করতে আরব আমিরাতের ৯টি বিমান ও উজবেকিস্তানের একটি বিমান এসেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের আরও দুটি ত্রাণবাহী বিমান শুক্রবারের পর পাকিস্তানে পৌঁছাবে এবং বন্যা আক্রান্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে তুরস্কের একটি ট্রেন পণ্যসামগ্রী নিয়ে পাকিস্তানের পথে রয়েছে।
ইতোমধ্যে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বন্যায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতরেসেসহ অনেক কর্মকর্তা বর্ষা পরবর্তী এই অস্বাভাবিক বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। তিনি এই সপ্তাহের শুরুতে বিশ্বকে এই ভয়ানক সংকটের মুহূর্তে ‘সজাগ ভূমিকা’ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘের বুধবারের তহবিলের আবেদনের ফলাফল ‘খুবই উৎসাহব্যঞ্জক’ হলেও আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ১৬ কোটি ডলারের জরুরি সহায়তার আবেদন জাতিসংঘের
ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র ম্যাথিও সল্টমার্শ বলেন, বন্যার্তদের জন্য তারা খুব দ্রুতই তাবু, কম্বল, প্লাস্টিক শিট, বাকেট ও অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রী পাঠাবে।
তিনি বলেন, ‘দেশটিতে থাকা আমাদের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, মানুষ অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিমানে করে খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও তাবু পাঠানো হয়েছে। দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফর স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে চীন, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্য দেশ ত্রানসামগ্রী পাঠিয়েছে পাকিস্তানে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বন্যা কবলিতদের জন্য তিন কোটি মার্কিন ডলার ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
পাকিস্তান দাবি করছে, সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারী বর্ষণ ও বন্যা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসিম ইফতেখার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিজ্ঞানীরা বলেছিল এই সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের সতর্কতাকে বিশ্বাসযোগ্যতা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটি কোন ষড়যন্ত্র নয়, এটি বাস্তবতা এবং আমাদের সচেতন হওয়া দরকার।’
সরকারের প্রাথমিক হিসাবে বন্যার এই ধ্বংসযজ্ঞে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা: পাকিস্তানে মৃত্যু হাজার ছাড়াল
২ বছর আগে
গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমলেও বেড়েছে রোগব্যাধি
একটু সাহায্যের আশায় বাড়ির সামনে কলাগাছের ভেলায় বসে থাকলেও গাইবান্ধার বন্যা কবলিত খরজানির চরের করিমন বেগমসহ অনেকের মিলছে না কোনো সহায়তা।
করিমন বেগম ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা কীভাবে বেঁচে আছি, আমরা কী খাচ্ছি তা দেখতে এখনও কেউ আসেনি।’
গাইবান্ধার চর উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে বন্যার পানির কারণে সৃষ্ট চর্মরোগ। ডায়রিয়ার মতো পানিবাহিত রোগও উদ্বেগের বিষয়।
আর কোনো সমাধান না পেয়ে ওই এলাকার করিমন ও তার প্রতিবেশী হালিমা, মতিন কোবাজ্জামান, মিঠু মিয়াসহ আরও অনেকে জানান, ক্রমাগত চুলকানি থেকে কিছুটা উপশমের জন্য কেরোসিন তেলের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে লাগাচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন: বন্যা: আরও ২ জনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪
করিমন বলেন, রাত দিন চুলকায়। পায়ে কেরোসিন তেলে হলুদ মেখে কষ্ট নিবারনের চেষ্টা করেন। রাতে ঘুম নেই, কখন সাত বছরের ছোট ছেলেটা পানিতে ভেসে যায় সেই ভয়ে। যেমনটা অন্য অনেক পরিবারের ক্ষেত্রে ঘটেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যা কবলিত অঞ্চলে পর্যাপ্ত সংখ্যক মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে কিন্তু করিমনরা এখনও সেই সহায়তা পান নি।
করিমন আরও বলেন, এ অঞ্চলে পানীয় জলের সংকট প্রকট। এমনকি এই পরিস্থিতিতেও দিনের বেলা নদীর ওপার থেকে পানীয় জল আনতে আমাদের নৌকা ভাড়া দিতে হয়।
গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রবিবার কিছুটা কমছে।
কামারজানীর চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, সুন্দরগঞ্জ,সাঘাটা,ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার বেশ কয়েকদিন যাবৎ পানি বন্দি কামারজানি, মোল্লারচর, কাপাসিয়া, হরিপুর, ফজলুপুর, উড়িয়া, রতনপুর, ফুলছড়ি,গজারিয়া, এ্যাড়েন্ডাবাড়ি, কঞ্জিপাড়া, শ্রীপুর, তারাপুর, বেলকা সহ ২৫টি চর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যার পানিতে আটকা পড়েছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি নামায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান
তিনি বলেন, অনেকের ঘরে খাবার আছে। কিন্তু রান্না করার মতো জায়গা নাই। তাই পানিতে নেমে কলার ভেলায় চুলা রেখে তাতে রান্না করছেন। এক বেলার রান্না খাচ্ছেন তিন বেলায়। খাবার পানির তীব্র সংকটের পাশাপাশি কোনো টয়লেটও নেই।
কর্তৃপক্ষের মতে, জেলায় মোট ৬০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে তবে মাত্র ১২টিতে আশ্রয় নিতে পেরেছে মানুষ। কারণ অধিকাংশ কেন্দ্রই পানির নিচে অথবা নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অনেক লোক তাদের একমাত্র আয়ের উৎস, গবাদি পশু নিয়ে লড়াই করছে যা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখা যাচ্ছে না।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসএম ফয়েজ উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত পুরুষ, নারী এবং শিশু সহ মাত্র ১৩৫ জন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ১২৫ মেট্রিক টন চাল, ৬ লাখ টাকা ও শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে বন্যার্ত মানুষের সহায়তায় কনসার্ট সোমবার
২ বছর আগে
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা, ধরলাসহ অন্যান্য নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পানিবন্দি থাকার কারণে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে অনেক এলাকার বন্যার্তরা। একই সঙ্গে গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সহায়তায় শাবি শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম অব্যাহত
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের নামা জয়কুমর গ্রামের এনছাফুল হক জানান, গো খাদ্যের অনেক দাম। তাই বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়া খড় বাধ্য হয়ে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো গোখাদ্য বিতরণ করা হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত থাকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে দুর্গম এলাকার অনেকেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে। চাহিদার তুলনায় এখনও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ।
সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত পাঁচ হাজার দরিদ্র পরিবার পানিবন্দী হলেও এই পর্যন্ত ৯ মেট্রিক টন চাল পাওয়া গেছে। যা দিয়ে ৯০০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সহায়তায় শাবি শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম অব্যাহত
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে, ত্রাণের কোনো সমস্যা নেই। পর্যায়ক্রমে সবাই ত্রাণ পাবেন। জেলার বন্যার্তদের জন্য আরও ২০০ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, এই নিয়ে জেলায় ৫৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও পশু খাদ্য বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ করা হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে।
২ বছর আগে