পাকিস্তানের বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর মানুষদের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে মানবিক সহায়তা বিশুদ্ধ খাবার সরবরাহ করার পরও মৃত্যু বেড়ে ১২শ’ ছাড়িয়েছে।
শুক্রবার দেশটির কর্মকর্তারা বলেন, বাস্তুচ্যুত পরিবার ও তাদের শিশুরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে আছে।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় প্রায় ৩০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার অভিযানে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করতে আরব আমিরাতের ৯টি বিমান ও উজবেকিস্তানের একটি বিমান এসেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের আরও দুটি ত্রাণবাহী বিমান শুক্রবারের পর পাকিস্তানে পৌঁছাবে এবং বন্যা আক্রান্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে তুরস্কের একটি ট্রেন পণ্যসামগ্রী নিয়ে পাকিস্তানের পথে রয়েছে।
ইতোমধ্যে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বন্যায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতরেসেসহ অনেক কর্মকর্তা বর্ষা পরবর্তী এই অস্বাভাবিক বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। তিনি এই সপ্তাহের শুরুতে বিশ্বকে এই ভয়ানক সংকটের মুহূর্তে ‘সজাগ ভূমিকা’ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘের বুধবারের তহবিলের আবেদনের ফলাফল ‘খুবই উৎসাহব্যঞ্জক’ হলেও আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ১৬ কোটি ডলারের জরুরি সহায়তার আবেদন জাতিসংঘের
ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র ম্যাথিও সল্টমার্শ বলেন, বন্যার্তদের জন্য তারা খুব দ্রুতই তাবু, কম্বল, প্লাস্টিক শিট, বাকেট ও অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রী পাঠাবে।
তিনি বলেন, ‘দেশটিতে থাকা আমাদের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, মানুষ অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিমানে করে খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও তাবু পাঠানো হয়েছে। দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফর স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে চীন, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্য দেশ ত্রানসামগ্রী পাঠিয়েছে পাকিস্তানে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বন্যা কবলিতদের জন্য তিন কোটি মার্কিন ডলার ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
পাকিস্তান দাবি করছে, সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারী বর্ষণ ও বন্যা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসিম ইফতেখার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিজ্ঞানীরা বলেছিল এই সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের সতর্কতাকে বিশ্বাসযোগ্যতা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটি কোন ষড়যন্ত্র নয়, এটি বাস্তবতা এবং আমাদের সচেতন হওয়া দরকার।’
সরকারের প্রাথমিক হিসাবে বন্যার এই ধ্বংসযজ্ঞে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা: পাকিস্তানে মৃত্যু হাজার ছাড়াল