বন্যা মোকাবিলা
কমছে প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)।
এফএফডব্লিউসির এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী পূর্ব কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলা এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় তেমন বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে।
ফলে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি দেখা যাচ্ছে।
হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে।
আরও পড়ুন: ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ চান খুলনার ১৪ গ্রামের মানুষ
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি কমতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজান অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি কমতে পারে এবং আশপাশের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কোথাও কোথাও স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিসারদের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানাঞ্চলে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলী, হালদাসহ অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর পানি পর্যায়ক্রমে বাড়তে পারে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানির স্তর নামছে, অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির স্তর অপরিবর্তিত রয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর পরিস্থিতিও স্বাভাবিক, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: সবাইকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
২ মাস আগে
বন্যা মোকাবিলায় এনজিওগুলোর দক্ষতা কাজে লাগানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
চলমান বন্যা পরিস্থিতি এবং বন্যা পরবর্তী কার্যক্রম দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলায় এনজিওগুলোর স্থানীয় জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূসকে উদ্ধৃত করে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ‘এনজিওগুলো বাংলাদেশের শক্তি। তরুণদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সেটা করতে পারি। আমাদের সমন্বিতভাবে বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে এনজিও প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান শফিউল আলম।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে এমন এনজিওগুলো বৈঠকে অংশ নেয়। সভায় ক্ষুদ্র ও কমিউনিটি পর্যায়ের সংগঠনসহ প্রায় ৪৪টি এনজিওকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে সব অংশীদারের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সমন্বিতভাবে পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূসকে উদ্ধৃত করে আলম বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময় মানুষ যেভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল, একইভাবে এখনো উদ্বুদ্ধ হয়েছে দেখে আমরা অভিভূত।’
দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির চমকপ্রদ দৃশ্যের কথাও উল্লেখ করেন।
আলম বলেন, বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ, টেলিকম সংযোগ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ চালুর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, এনজিওগুলো সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পুনর্গঠনেও এনজিওগুলো ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
এ সময় উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, রাশেদা কে চৌধুরী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের প্রধান ফারাহ কবির, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ সালেহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ে এনজিওগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
তিনি বলেন, প্রয়োজন যাচাইবাছাই করা হবে। তারা কার্যকর সমন্বয়ের দিকে মনোনিবেশ করবেন, যাতে ত্রাণ সামগ্রী প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির কাছে পৌঁছায়।
আসিফ বলেন, ‘এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন প্রয়োজন। প্রবাসীদের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের আরেকটি বিষয়েও আলোচনা হয়। সেখানে চ্যানেল তৈরির সুযোগ রয়েছে। অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।’
সমন্বিত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা চাহিদা নিরূপণ শুরু করেছেন এবং চাহিদা নিরূপণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরা এগিয়ে আসছেন।
স্বাস্থ্য ও খাদ্য সংকট সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে আসিফ বলেন, 'এখন পর্যন্ত নেওয়া উদ্যোগ দেখে আমরা অভিভূত। আমরা আমাদের আইডিয়া শেয়ার করলাম। যেহেতু আমরা মাঠে কাজ করছি তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।’
জাতীয়, জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ে যারা কাজ করছেন, তাদের সম্পৃক্ত করে কিছু কর্মপরিকল্পনা ও সমন্বয়ের বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
সমন্বিত ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে আসিফ বলেন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, দাতাদের সঙ্গে সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা দাতা সংস্থাগুলোকেও আমন্ত্রণ জানাবেন।
আসিফ বলেন, যেকোনো মানবিক সংকটে তথ্য ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারত উচ্চ পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার
২ মাস আগে
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে 'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল' গঠন
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. হারুন-অর-রশিদ সেলের দৈনন্দিন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল'-এ জরুরি যোগাযোগের জন্য-
টেলিফোন নম্বর: ০২-৪৭১১৮৭০০, ০২- ৪৭১১৮৭০১, ০২-৪৭১১৮৭০২, ০২-৪৭১১৮৭০৩, ০২-৪৭১১৮৭০৪ ও ০২-৪৭১১৮৭০৫
মোবাইল নম্বর: ০১৩১৭৭৪৯৯৮০ ও ০১৮২০১১৭৭৪৪।
এই সমন্বয় সেল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে এবং সার্বক্ষণিক ফলোআপ দিতে থাকবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল
২ মাস আগে
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ বেশ কয়েকটি জেলা। বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে সেসব এলাকার মানুষ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহীদের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের নিম্নোক্ত অ্যাকাউন্টে সহায়তার অর্থ পাঠাতে বলা হয়েছে-
▫️ হিসাবের নাম: 'প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল'
▫️ ব্যাংক: সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
▫️ হিসাব নম্বর: ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩
এই তহবিলের অর্থ ত্রাণ ও কল্যাণ কাজে ব্যয় করা হয়।
এর যথাযথ হিসাব রাখা ও ব্যয় করা হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের পাঠানো বার্তায় জানানো হয়েছে।
২ মাস আগে
বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা করার উপায়
ভৌগলিক দিক থেকে নিম্নাঞ্চল ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে ফি বছর বন্যাপ্লাবিত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল। প্রতিবার দুর্যোগের সময় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এবং সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আগের থেকে বহুগুণে বেড়ে যায়। এ অবস্থায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, খাবার, ভিটে-বাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে বন্যাদুর্গত মানুষগুলো। এ অবস্থায় তাদের সহায়তায় প্রত্যেকেরই নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। তাই চলুন, বন্যাদুর্গতদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার কার্যকর উপায়গুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-
বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে যে কার্যকর পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে
স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে অংশ নেওয়া
একদম প্রান্তিক পর্যায়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে মোক্ষম ভূমিকা রাখতে পারে স্বেচ্ছাসেবকরা। এই বিপর্যস্ত সময়ে দুর্যোগের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ বিভিন্ন সেবামূলক কাজের চাপ থাকে অনেক বেশি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- যাতায়াতের অযোগ্য জায়গা থেকে মানুষকে উদ্ধার কাজ, অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান। এর সঙ্গে আরও রয়েছে খাদ্য, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহগুলো সুসংগঠিত এবং বিতরণ করা। এরকম চাপের মধ্যে আলোকবর্তিকা হয়ে আবির্ভূত হয় স্বেচ্ছাসেবকরা, যাদের মাধ্যমে সংস্থাগুলো অসহায় মানুষদের কাছে আরও বেশি সাহায্য পৌঁছাতে পারে।
এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবীরা অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের কাজেও সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও বন্যা থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের মানসিক সমর্থন এবং মনোবল বাড়াতেও স্বেচ্ছাসেবীদের যথেষ্ট করণীয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
জরুরি সামগ্রী সরবরাহ
বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে অপুষ্টি ও ডিহাইড্রেশন স্বাভাবিক বিষয়। এগুলো প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে অপচনশীল খাদ্য সামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ।
কাটা-ছেঁড়া বা জখমের চিকিৎসা এবং রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করার জন্য ফার্স্ট এইড কিট, ওষুধ এবং স্বাস্থ্যবিধি পণ্যগুলো অতীব জরুরি। এই সরবরাহগুলো অবশ্যই স্কুল-কলেজ বা স্থানীয় বহুতল ভবনগুলোর মতো অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছানো উচিত। মূলত তাৎক্ষণিক ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত এই স্থাপনাগুলোতে আশ্রিতদের প্রত্যেকের চাহিদা পূরণের জন্য সরবরাহগুলো সুসংগঠিত বিতরণ আবশ্যক।
স্থানীয় সংস্থা বা এলাকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এই কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করা উচিত। এতে করে যাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য প্রয়োজন সর্বপ্রথম তাদের কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বাড়বে।
আরও পড়ুন: বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযান
বন্যায় আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারে যেহেতু পানি পেরিয়েই যেতে হয়, তাই এখানে সাধারণত নৌকাই বেশি ব্যবহৃত হয়। এই নৌকাগুলোর মাধ্যমে উদ্ধারকারীরা জলমগ্ন রাস্তা পেরিয়ে ভাসমান লোকদের কাছে পৌঁছাতে পারে। তবে দ্রুত পৌঁছাতে এবং কম সময়ে বেশি সংখ্যক এলাকার লোকদের উদ্ধার কাজে স্পিডবোট ব্যবহার করা উচিত। যাতায়াতের একদম অযোগ্য স্থানগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে হেলিকপ্টার। এর মাধ্যমে বিপজ্জনক জায়গা থেকে অনায়াসেই অসহায় মানুষদের তুলে নেওয়া যেতে পারে।
প্রাণিসম্পদ উদ্ধার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা
গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ পরিবারেরই জীবন-জীবিকার প্রধান উপায় হচ্ছে গবাদিপশু। বন্যার সময়ে এই প্রাণীসম্পদের ক্ষতি পরিবারগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা ও আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের রক্ষার্থে অর্থায়ন কিংবা প্রাণীগুলোর উদ্ধার কাজে সরাসরি যোগদান করা উচিত।
এরই ধারাবাহিকতায় পশুর খাদ্য, পশুচিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবার প্রসঙ্গও আছে। কেননা এর ওপর বন্যা পরবর্তীতে তাদের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি নির্ভর করছে। এমনকি অল্প কিছু আর্থিক অনুদানও পরিবারগুলোর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্যে আসতে পারে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
প্রসিদ্ধ এনজিওগুলোতে অর্থ দান
দেশব্যাপী বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বিভিন্ন দুর্যোগে ব্যাপক পরিসরে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তারা দীর্ঘ সময় ধরে অভিজ্ঞতার সঙ্গে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসা সেবার মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে আসছে। এমনকি তারা অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ও স্যানিটেশন অবকাঠামোও স্থাপন করে থাকে।
এই কার্যক্রমগুলোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ ছাড়া শুধুমাত্র অর্থদানও করা যেতে পারে। এই অর্থ সংস্থাগুলোর জরুরি দ্রব্য, ওষুধ ক্রয় ও পরিবহন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধন এবং জরুরি সহায়তা দানকারী দল গঠনে সাহায্য করতে পারেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পৌঁছানো, তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী উভয় ধরনের প্রয়োজন মেটানো নিশ্চিত করতে এই সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক্ষতিকারক পোকামাকড় এবং সাপ নির্মূল অভিযান
প্লাবনকালে বেড়ে যায় মশা ও অন্যান্য ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের উপদ্রব। আর এর রেশ ধরে পরবর্তীতে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু জ্বর এবং ম্যালেরিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি। এমতাবস্থায় মশার ফাঁদ, মশা তাড়ানোর উপকরণ এবং রোগ-ব্যাধি সম্পর্কে দরকারি শিক্ষা উপকরণ স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
আরও পড়ুন: স্পঞ্জ সিটি: ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বন্যা-জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান
এছাড়াও, বিষধর সাপের উপস্থিতি বন্যাগ্রস্ত অসহায় মানুষদের আরও একটি হুমকি। বিশেষ করে বাস্তুচ্যুত ও ভাসমান জনগোষ্ঠীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে থাকে। তাই এমন একটি নিবেদিত দল থাকা প্রয়োজন যাদের উদ্দেশ্যই হবে সাপ খুঁজে বের করে তা নিধন করা। একই সঙ্গে এরা জনসাধারণকে সাপবিরোধী বাধা স্থাপন এবং সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসাও শেখাবে।
গণসচেতনতা সৃষ্টি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এলাকাভিত্তিক মাইকিংয়ের মতো অফলাইন পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে বৃহৎ পরিসরে বন্যাকালীন জরুরী প্রয়োজনগুলো প্রচার করা যায়। এখানে বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানির অভাব, চিকিৎসা সরবরাহ, বা অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র-এর বিষয়গুলোর উপর গুরুত্বারোপ করা উচিত। এর ফলে বিভিন্ন সংস্থানগুলোর পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায় থেকেও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অবস্থা সৃষ্টি হবে।
সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানগুলো অনুদান এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজকেও উৎসাহিত করতে পারে। সেই সাথে বিশ্বব্যাপী সংহতি বোধের অনুকূলে সরকার ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোও সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে। এই গণসচেতনতার পরিপ্রেক্ষিতে নিকট ভবিষ্যতে দুর্যোগের বিষয়ে এমনকি উপযোগী নীতি নির্ধারণের দিকে ধাবিত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুন: প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পশু-পাখির সুরক্ষা: বন্যা, খরা ও শৈত্য প্রবাহে করণীয়
২ মাস আগে
বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারত উচ্চ পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার
বন্যার মতো জরুরি পরিস্থিতি যৌথভাবে মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের পরিকল্পনার ধারণার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই ধারণা দেন তিনি।
এসময় তিনি জরুরি ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) পতাকা বৈঠকের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
সাক্ষাতের বিষয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, পানির বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে এটি সক্রিয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের 'অসহযোগিতা'র কথা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ
ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত ও বন্যার বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে।
বৈঠকে বন্যা ইস্যুতে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘পানি বেড়ে যাওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি বের হয়ে যায়। পানি অনেক বেড়ে গিয়েছিল।’
ত্রিপুরার বন্যাকে 'অত্যন্ত নজিরবিহীন’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এতে ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় পক্ষেই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
বৈঠকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তির কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যৌথ নদীর পানি বণ্টন একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি ‘বড় পরিবার’।
বৈঠকে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়।
এর আগে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদনগুলো "অতিরঞ্জিত"।
ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফর করে সরেজমিনে প্রতিবেদন তৈরির আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি।
ফোনালাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বিষয়টি উত্থাপন করলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার সংখ্যালঘুসহ দেশের প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৈঠকে বিমসটেক ও সার্ক নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের একত্রিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বন্যার জন্য ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ দায়ী নয়: নয়াদিল্লি
ভারতের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সেখানে তার অনেক বন্ধু রয়েছে। ভারতের ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সেন্টার চালু রয়েছে।
তিনি ‘তিন শূন্যের বিশ্ব – শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নীট কার্বন নিঃসরণের’ কথাও বলেন।
এসময় শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নে দুই দেশের জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার ভার্মা।
তারা বৈঠকে অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে মতবিনিময় এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: বন্যায় ৬ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১৮ লাখ মানুষ
২ মাস আগে
বাংলাদেশে মৌসুমি বন্যা মোকাবিলায় ১০ লাখ ইউরো মানবিক সহায়তা দেবে ইইউ
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে গত কয়েক সপ্তাহে আঘাত হানা বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ১০ লাখ ইউরো বা প্রায় ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ইইউ জানিয়েছে, এই তহবিল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করবে।
ইইউ'র ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কমিশনার জানেজ লেনারসিক বলেন, মৌসুমি বন্যা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘মৌসুমি ঘূর্ণিঝড় রিমালের পরে আমরা যেমনটি করেছিলাম, ইইউ আবারও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য তার সহায়তার হাত প্রসারিত করেছে। এই তহবিল অনেক প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহ করতে সহায়তা করবে।’
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যাদের বাসস্থান, খাদ্য, সুপেয় পানি, স্বাস্থ্যবিধি এবং স্যানিটেশন সরবরাহের প্রয়োজন তাদের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়াসহ সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়কে সহায়তায় ব্যবহার করা হবে এই তহবিল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সহিংসতার স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব: মুখপাত্র
চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশকে মানবিক সহায়তায় ইতোমধ্যে তিন কোটির বেশি অর্থ এসেছে। এর পরেই নতুন এই বরাদ্দ পেল বাংলাদেশ।
এই সহায়তা মূলত কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সহায়তার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য জরুরি অবস্থা যেমন সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহ এবং মৌসুমি ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি আগাম পদক্ষেপের জন্যও অর্থায়ন করা হয়।
গত দুই মাসে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই ৩৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ চলছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও।
ক্ষতিগ্রস্ত ছয় লাখেরও বেশি মানুষের আশ্রয় প্রয়োজন বলে অনুমান করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম এখনো থাকায় অতিরিক্ত বন্যার ঝুঁকি রয়েছে। ফলে এটি বিদ্যমান চাহিদাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ঢাকার ইইউ দূতাবাস জানিয়েছে, মে মাসে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এ পর্যন্ত দেশের ৩০ শতাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ‘দেখামাত্র গুলি’ নীতি ও ‘আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে’ ইইউয়ের গভীর উদ্বেগ
৩ মাস আগে
বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
দেশে সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার(২ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে নতুন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রথম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘বন্যা (দেশে) আঘাত হানতে পারে। বন্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: অর্থমন্ত্রীর বাজেটোত্তর নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসের আলোকে আগামী দিনগুলোতে সম্ভবত আগস্ট মাসে সারা দেশে বন্যা দেখা দিতে পারে- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
নির্দেশনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে বৃষ্টিপাতের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এবং প্রধান নদীগুলোর উজানে পানি বৃদ্ধির কারণে আগস্টে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বন্যার প্রভাব ও ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশের জনগণকে রক্ষার লক্ষ্যে বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বেসামরিক প্রশাসন ও মাঠ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রকল্পগুলো সম্পর্কে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, একনেক ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি বলেন, মোট ব্যয়ের মধ্যে ৫ হাজার ২১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে, ১৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে এবং বাকি ১০৫ কোটি ৯ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।
সচিব বলেন, ১১টি প্রকল্পের মধ্যে সাতটি নতুন প্রকল্প এবং চারটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশে সব সম্প্রদায় সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে : প্রধানমন্ত্রী
৩ মাস আগে
বন্যা মোকাবিলায় সিসিকের হটলাইন নম্বর চালু
পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সিলেট নগরীতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিলেট সিটি করপারেশনের (সিসিক) মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া বন্যাকবলিতদের সহায়তায় হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত ৯টার দিকে সিসিকের নগর ভবনের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় সিসিক মেয়র বলেন, ‘চলমান বন্যায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সিটি করপোরেশন কতৃর্পক্ষ। প্রধানমন্ত্রীও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।’
তিনি জানান, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবারসহ ওষুধ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। দুর্গত এলাকায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে নগর ভবন। বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় ডুবেছে সিলেটের সব উপজেলা, ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি
নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘বন্যায় আতঙ্কিত না হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন। যাদের বাসার বৈদ্যুতিক লাইন পানির নিচে ডুবে গেছে, তারা স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানিয়ে সিটি করপোরেশনের সহায়তা নিন।’
এসময় জরুরি প্রয়োজনে নগর ভবনে সরাসরি কিংবা হটলাইন নম্বরে (০১৯৫৮২৮৪৮০৭) যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি জানান, দলমত নির্বিশেষে সম্মিলিতভাবে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সমাজের বৃত্তবান ও প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে, সন্ধ্যা ৭টায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বিশেষ সভা করে সিটি করপোরেশন পরিষদ। সভায় বন্যা পরিস্থিতিতে করণীয়, পানিবন্দিদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থা এবং ত্রাণ সহায়তা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়।
তার আগে, মঙ্গলবার বিকালে নগরীর বরইকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র রক্ষায় সেনাবাহিনীর একটি টিম নিয়ে বন্যাকবলিত কয়েকটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
আরও পড়ুন: সিলেটে ফের বন্যা, হু হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি
৪ মাস আগে
বন্যা মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান পরিকল্পনামন্ত্রীর
বন্যা মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
তিনি বলেছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পাশে সরকার রয়েছে। সরকারি ভাবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। সরকারের পাশাপাশি যারা বেসরকারি ভাবে ত্রাণ বিতরণ করছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। এখন দুর্গত মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সামগ্রী। তাই এ বন্যা মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দাঁড়াতে হবে অসহায় মানুষের পাশে। করতে হবে সাধ্যমতো সহায়তা।
শনিবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন এলাকায় বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বন্যায় অসহায় মানুষের ক্ষতি হওয়া কাঁচা ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণে সরকারের পদক্ষেপ কী- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বন্যায় ক্ষতি হওয়া কাঁচা ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য সরকারিভাবে টিনসহ মেরামত সামগ্রী দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কুড়িগ্রামে কৃষি খাতে ক্ষতি ১২৭.৫৪ কোটি টাকা
এ সময় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিদ্দিক আহমদ, জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকমল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপম দাস, সহকারি পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) শুভাশীষ ধর, জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ূম মশাহিদ, যুগ্ম-সম্পাদক লুৎফুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য মাহতাবুল হাসান সমুজ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম মুন্না, সহকারি জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবদুর রব সরকার, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মধূ সদন ধর, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, পাটলি ইউপি চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল, রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম, উপজেলা আ.লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক মাসুম আহমদ, আ.লীগ নেতা আকমল খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর কৃষ্ণ চন্দ্র চন্দ, যুবলীগ নেতা হুমায়ূন আহমদ, পৌর যুবলীগ নেতা রাজিব চৌধুরী বাবু, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মুকিত, সাবেক সভাপতি কল্যাণ কান্তি রায় সানি, জেলা ছাত্রলীগ নেতা সজিব রায় দুর্জয়, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতা শাহ জামাল, আজিজ মিয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: ৩৭ হাজার মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে
২ বছর আগে