বন্যার মতো জরুরি পরিস্থিতি যৌথভাবে মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের পরিকল্পনার ধারণার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই ধারণা দেন তিনি।
এসময় তিনি জরুরি ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) পতাকা বৈঠকের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
সাক্ষাতের বিষয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, পানির বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে এটি সক্রিয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের 'অসহযোগিতা'র কথা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ
ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত ও বন্যার বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে।
বৈঠকে বন্যা ইস্যুতে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘পানি বেড়ে যাওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি বের হয়ে যায়। পানি অনেক বেড়ে গিয়েছিল।’
ত্রিপুরার বন্যাকে 'অত্যন্ত নজিরবিহীন’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এতে ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় পক্ষেই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
বৈঠকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তির কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যৌথ নদীর পানি বণ্টন একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি ‘বড় পরিবার’।
বৈঠকে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়।
এর আগে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদনগুলো "অতিরঞ্জিত"।
ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফর করে সরেজমিনে প্রতিবেদন তৈরির আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি।
ফোনালাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বিষয়টি উত্থাপন করলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার সংখ্যালঘুসহ দেশের প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৈঠকে বিমসটেক ও সার্ক নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের একত্রিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বন্যার জন্য ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ দায়ী নয়: নয়াদিল্লি
ভারতের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সেখানে তার অনেক বন্ধু রয়েছে। ভারতের ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সেন্টার চালু রয়েছে।
তিনি ‘তিন শূন্যের বিশ্ব – শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নীট কার্বন নিঃসরণের’ কথাও বলেন।
এসময় শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নে দুই দেশের জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার ভার্মা।
তারা বৈঠকে অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে মতবিনিময় এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।