জোয়ার
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে জোয়ারের পানিই ভরসা, বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
সুন্দরবনে নদ-নদী ও খাল জালের মতো বিস্তৃত। জোয়ারে পানি বাড়লে উপচে পড়ে নদী-খালের পানি, প্রবেশ করে সুন্দরবনে। কিন্তু সেই সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে পর্যাপ্ত পানি মেলে না। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় একের পর এক বনভূমি পুড়তে থাকে। এমতাবস্থায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস ও বনকর্মীদের। অনেক সময় আগুন নেভানোর জন্য ভরসা করতে হয় জোয়ারের পানির ওপর—কখন জোয়ার হবে। এমনকি ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকলে, বন্ধ হয়ে যায় আগুন নেভানোর কাজও। এ অবস্থায় পানির উৎস তৈরি করতে সুন্দরবনের মধ্যে বড় বড় পুকুর খনন করার পরিকল্পনা নিচ্ছে বন অধিদপ্তর। একই সঙ্গে পানি প্রবাহ বাড়াতে সুন্দরবনের নদী-খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনে জরুরি প্রয়োজনে পানির চাহিদা মিটবে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী তাদের পানির চাহিদাও মেটাতে পারবে সহজে।
জানা গেছে, সম্প্রতি সুন্দরবনের শাপলার বিলে জ্বলতে থাকা আগুন নেভাতে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়েছে—কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায়। পানির জন্য প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরের ভোলা নদীতে পাম্প মেশিন বসিয়ে পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়। তবুও চাহিদা মাফিক সার্বক্ষণিক পানি মেলেনি ভোলা নদীতে। জোয়ারের পানির জন্য ফায়ার সার্ভিসের এবং বন কর্মীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। জোয়ারে সময় পানি মিললেও ভাটার সময় নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ থাকে আগুনে পানি ছিটানোর কাজ—দীর্ঘায়িত হয় আগুন নেভানোর কাজ। পুনরায় জোয়ারের জন্য তাদের কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ভোলা নদীর তলদেশ পলিমাটি জমে ভরাট হওয়ার কারণে জোয়ারের সময়েও পর্যাপ্ত পানি প্রবেশ করে না। আর ভাটার সময়তো নদীতে পানি থাকে না। ভোলা নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকলে অনেক আগেই শাপলার বিলের আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো সম্ভব হতো বলে জানিয়েছে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের ৪ একর বনভূমি পুড়ে ছাই, আগুন নিয়ন্ত্রণে
শুধু সুন্দরবনের শাপলার বিলের আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হয়েছে—এমন নয়। বনের এই অংশ বিভিন্ন সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় একই অবস্থা তৈরি হতে দেখা গেছে অতীতেও। দ্রুত পানি দিতে না পারায় আগুনের ব্যাপকতা বেড়েছে। কয়েক কিলোমিটার দূরে নদীতে পাইপলাইন স্থাপন করে পানি নিয়ে আগুনে ছিটানো হয়। কাছাকাছি পানির উৎস থাকলে সহজে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো যেত। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় প্রায় প্রতিবার আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয়।
কয়েকটি সূত্র জানায়, শুধু ভোলা নদী নয়। সুন্দরবনের মধ্যে খড়মা, আড়ুয়ারবের নদীসহ বিভিন্ন নদী এবং খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। জোয়ারে পর্যাপ্ত পানি নদী-খালে প্রবেশ করতে পারে না। আর ভাটার সময় অনেক নদী-খাল পানিশূন্য থাকে। নদী-খালে পানি না থাকলে বনসংলগ্ন গ্রামের মানুষ অহরহ সুন্দরবনে প্রবেশ করে। একই সঙ্গে অনেকে আবার তাদের গবাদি পশু সুন্দরবনে চড়ায়। নদী-খালে পানি প্রবাহ থাকলে মানুষ যত্রতত্র সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পরবে না। আর গবাবি পশু নদী-খাল পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনে বিচরণ সম্ভব হতো না। আর সুন্দরবনে আগুনের মতো ঘটনা ঘটলে নদী-খাল থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানো সহজ হতো। যুগযুগ ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে আছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল নদী-খাল খননের।
সুন্দরবন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে প্রায় ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল রয়েছে। এসব নদ-নদী ও খাল সমগ্র সুন্দরবনে জালের মতো ছড়িয়ে আছে। অধিকাংশ নদ-নদী ও খাল দীর্ঘদিন ধরে পুনঃখনন না করায় তলদেশ পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এসব নদ-নদী ও খাল পুনঃখনন করা হলে পানি সংকট দূর হবে। পাশাপাশি বন সংলগ্ন গ্রামের মানুষ যত্রতত্র সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না। আর সুন্দরবনে গবাদি পশুর বিচরণ ঠেকানো যাবে।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সাকরিয়া হায়দার জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিল এলাকায় রবিবার দুপুরে জ্বলতে দেখা আগুন নেভানোর কাজে ৮টি ফায়ার স্টেশন, বন বিভাগ এবং স্থানীয় লোকজন অংশ নেয়। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদীতে পাইপ লাইন স্থাপন করে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করা হয়। শুধুমাত্র জোয়ারের সময় ভোলা নদীতে পানি পাওয়া গেছে। ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকায় আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ রাখতে হয়। পুনরায় জোয়ারের পানির জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। ভোলা নদীতে সার্বক্ষণিক পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলে একদিনের মধ্যে আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো যেত।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ওই এলাকার কাছাকাছি পানির উৎস নেই। একারণে ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে আগুনে ছিটানো হয়। শুধুমাত্র জোয়ারের সময় পানি মিলেছে ভোলা নদীতে। পানির অভাবে ভাটার সময় আগুনে পানি ছিটানো যায়নি। সার্বক্ষণিক পানি থাকলে অনেক আগেই আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো সম্ভব হতো।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম আরও জানান, সুন্দরবনের ভোলা, আড়ুয়ারবের এবং খড়মা নদীসহ বিভিন্ন নদী-খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে আছে। এ কারণে নদী-খালে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ভাটার সময় নদী-খালে পানি না থাকায় বনসংলগ্ন গ্রামের মানুষ অবৈধভাবে অহরহ সুন্দরবনে প্রবেশ করছে। সেই সঙ্গে আইনভঙ্গ করে মানুষ তাদের গবাদি পশু সুন্দরবনে বিচরণ করাচ্ছে। নদী-খালে পানি প্রবাহ থাকলে মানুষ এবং গবাদি পশু এইভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন, পানির উৎসের অভাবে নিয়ন্ত্রণে জটিলতা
বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন পিসি বারুইখালী গ্রামের ধানসাগর টহল ফাঁড়ি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের লিডার লুৎফর রহমান জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিলে জ্বলতে থাকা আগুন নেভানোর কাজে অন্যদের সঙ্গে সে নিজেও অংশ নিয়েছে। ভোলা নদীর জোয়ারের পানি আগুন নেভানোর একমাত্র ভরসা ছিল। জোয়ারের সময় আগুনে পানি দিতে পারলেও ভাটায় সময় নদীতে পানি না থাকায় আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ ছিল। নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বনসংলগ্ন গ্রামের মানুষ যত্রতত্র সুন্দরবনে প্রবেশ করে। কেউ কেউ তাদের জ্বালানি কাঠ সুন্দরবন থেকে সংগ্রহ করে। দ্রুত নদী-খাল খনন করার দাবি জানান লুৎফর রহমান।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, সুন্দরবনে শাপলার বিল এলাকার কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হয়। একারণে সুন্দরবনের মধ্যে পানির উৎস তৈরি করতে ফাঁকা স্থানে বড় বড় পুকুর খননের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। একই সাথে পানি প্রবাহ বাড়াতে সুন্দরবনের ভোলা, খড়মা ও আড়ুয়ারবের নদী এবং খাল পুনঃখননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জোয়ারের পানি যাতে সহজে বনভূমিতে প্রবেশ করতে পারে, সে জন্য নদীর উঁচু পার নিচু করা হবে। সুন্দরবনের মধ্যে পানির উৎস সৃষ্টি এবং পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করা গেলে জরুরি প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বন্যপ্রাণী তাদের পানির চাহিদা মেটাতে পারবে।
৩৮ দিন আগে
এমন জোয়ার সৃষ্টি হবে, যেখানে ভোট ছাড়া কোনো চিন্তা থাকবে না: সিইসি
আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সবার সহযোগিতা নিয়ে তারা এমন একটি জোয়ার সৃষ্টি করবেন, যেখানে ভোট ছাড়া মানুষের আর কোনো চিন্তা থাকবে না।’
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডির নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিইসি বলেন, ‘তারা আগেভাগে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না, তবে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন। আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে।’
‘ভোটারতালিকা তৈরি এবং অন্যান্য প্রস্তুতি তারা নিচ্ছেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণের অনেকগুলো আবেদন ঝুলে আছে, আইনি জটিলতার কারণে তারা নিষ্পত্তি করতে পারছেন না। ৫০-এর বেশি আসন নিয়ে ৩৫০ বেশি আবেদন ঝুলে আছে। এই আইন সংশোধন করার জন্য তারা এরইমধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না: সিইসি
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আরও কিছু বিষয়ে সরকারের কাছে প্রস্তাব দেবে নির্বাচন কমিশন। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে যতটুকু সংস্কার দরকার, তার জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি, যা সংস্কার দরকার, তার প্রস্তাব আমরা সরকারের কাছে দেব।’
বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব কিনা; প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তারা মনে করছেন, ডিসেম্বর আসতে আসতে এই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। থিংক দিজ থিং উইল সেটল ডাউন বা দিজ টাইম। সবার সহযোগিতা নিয়ে তারা এমন একটি জোয়ার সৃষ্টি করবেন, যেখানে ভোট ছাড়া মানুষের আর কোনো চিন্তা থাকবে না।’
৭০ দিন আগে
কক্সবাজারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের উখিয়ায় জোয়ারের পানির সঙ্গে নাফ নদী হয়ে খালের ঝিরি দিয়ে মিয়ানমার থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ভেসে এসেছে। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বালুখালী কাস্টমস এলাকায় লাশটি দেখতে পায় স্থানীয়রা।
বালুখালী স্থানীয় যুবক কায়সার বলেন, লাশটির মুখে কালি রয়েছে। মাথায় হেলমেট ও গায়ে খাকি পোশাক। দেখে মনে হচ্ছে, এটা মিয়ানমার বাহিনীর কোনো সদস্যের লাশ। লাশটি খালের ঝিরির চলন্ত পানিতে মিয়ানমারের ঢেকিবুনিয়া থেকে ভেসে এসেছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, খালের ঝিরি দিয়ে লাশ ভেসে আসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা ফিরে এলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
৪৪৯ দিন আগে
জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা বৃষ্টি, নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে।
সোমবার দুপুরে ভৈরব, বলেশ্বর, পানগুছি, পশুরসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলার রামপাল ও মোংলায় জোয়ারে আর এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেলে প্রায় দুই হাজার চিংড়িঘের ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে ওঠায় কয়েকশ’ ট্রলার নিয়ে জেলেরা বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলারচর, নারিকেলবাড়িয়া ও কটকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, স্থল নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশে ও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পূর্ণিমা ও স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সমূহের নিম্নাঞ্চল এক থেকে দুই ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
৯৬৫ দিন আগে
কুয়াকাটা সৈকতে ফের ভেসে এলো মৃত ডলফিন
কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে একটি মৃত ডলফিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত ডলফিনটি সৈকতে পরে থাকতে দেখতে পায় স্থানীয় জেলেরা।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৬-৭ ফুট দৈর্ঘ্যের ডলফিনটির মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালের আঘাতে মাছটি মারা গেছে।
আরও পড়ুন: সীতকুণ্ড উপকূলে ভেসে এলো আরও ৩টি মৃত ডলফিন
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, ভেসে আসা ডলফিনটি গঙ্গা নদীর শুশুক প্রজাতির। এ প্রজাতির ডলফিনগুলো সাধারণত মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে। এটি জেলেদের মাছ ধরার জালে আটকে মারা যেতে পারে। আবার বয়সের কারণেও এরা অনেক সময় মারা যায়। জোয়ারের তোপে মৃতদেহ সমুদ্র তীরে চলে আসে।
এর আগেও বেশ কয়েকটি মৃত ডলফিন এবং তিমি সৈকতে ভেসে এসেছে।
১৩১৯ দিন আগে
খুলনায় ইয়াসের প্রভাবে সুপেয় পানির অভাব, মরছে মাছ
গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে খুলনার উপকূল কয়রার বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, ফসলি জমি। এখনো জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। প্রতিদিন জোয়ারে পানি উঠে যাওয়ায় বানভাসিদের সীমাহীন দুর্ভোগে পরতে হচ্ছে।
চারিদিকে এতো পানি, কিন্তু সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। খাবার পানির উৎস বন্ধ। নেই পর্যাপ্ত ওষুধ, খাবার স্যালাইন। রান্না তো দূরের কথা, ঘরের চৌকির ওপর থাকাও দুরূহ ব্যাপার হয়ে পরেছে। ফলে রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়াসহ বিভিন্ন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন কয়রা উপকূলীয় এলাকার মানুষজন।
মহারাজপুর ইউনিয়নের শিমলারাইট পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মুজিবুর রহমান বলেন, পানি রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ও মসজিদে পর্যন্ত প্রবেশ করেছে। পুকুর ও ঘেরগুলো নোনা পানিতে ভেসে গিয়েছে। বিশেষ করে রুই, কাতলাসহ মিষ্টি পানির মাছ মরে ভেসে উঠেছে। মরা এসব মাছ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না কি অবস্থা।
দশহালিয়া গ্রামের বিকাশ চন্দ্র মৃধা বলেন, ঘর-বাড়ি ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। মাছ মরে যাচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল হাসান বলেন, 'এই সময় মৎস্য চাষের একটা উপযুক্ত সময়। কিন্তু নদী ভাঙনে সবকিছু শেষ। একবছরেও টেকসই বাঁধ পেলাম না। যে কারণে সামান্য জোয়ারেও পানি প্রবেশ করছে। আমার ঘর-বাড়ি, ঘেরসহ সবকিছু শেষ।'
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা কোমড় সমান পানি সাঁতরিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রান্না করা খাবার দিয়ে আসলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অনেকেই একবেলা খেয়ে অন্যবেলা না খেয়ে দিন পার করছেন। এছাড়া গরু-ছাগল, হাস-মুরগি এক ঘরে নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।
টিউবওয়েলগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক কষ্টে পানি জোগাড় করতে হচ্ছে তাদের।
মহারাজপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল বলেন, দুর্ভোগের শেষ নেই। উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের সময় ঘর তলিয়ে যাচ্ছে। ভাটার সময় কিছুটা কমছে। তবে মাঝামাঝি লোকালয়ে যারা থাকে ভাটার টানে ওই এলাকার পানি কমে যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। আমার এলাকায় কিছু উঁচু টিউবওয়েল রয়েছে সেটা থেকে পানি খাচ্ছে এই এলাকার মানুষ। তবে অন্য এলাকাগুলোতে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। হাটু পানি পেরিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এখানকার মানুষের।
তিনি বলেন, ‘মাছের ঘের-পুকুর তলিয়েছে। নোনা পানি প্রবেশ করায় অনেক স্থানে মাছ মরেছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: খুলনা উপকূলে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আলাউদ্দিন জানান, উপজেলার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর এলাকা তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ১০০টি ঘের এবং ৭৫০টি পুকুর তলিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে ২১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, মিষ্টি পানির পুকুরগুলোর মাছ মরে ভেসে উঠেছে। যেসব এলাকায় মাছ মরেছে সেখানে কিছুটা দুর্গন্ধও ছড়িয়েছে। সার্বিক বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুদীপ বালা বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলয়েট, খাবার স্যালাইন, ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। কর্মী স্বল্পতা রয়েছে ১১৭টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ফিল্ডে কর্মী রয়েছে ৫২ জন। এই জনবল দিয়ে উপজেলায় কাজ করতে হচ্ছে। তাদের নিজেদের বাড়িতেও পানি প্রবেশ করেছে। তবুও চেষ্টা করা হচ্ছে। কয়রা উপকূলীয় এলাকার মানুষ লবণ পানিতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। পুকুর এবং নলকূপের পানি খেয়ে অভ্যস্ত তারা।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল পানি সরবরাহ করছে। ফলে বড় ধরনের কোন সমস্যা হচ্ছে না। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু এলাকায় ডায়রিয়া হতে পারে। তবে প্রকোপ আকার ধারণ করেনি।’
১৪৩৫ দিন আগে
জোয়ারের পানিতে ভেসে এল দুটি মৃত হরিণ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানির চাপে বন থেকে ভেসে যাওয়া দুটি চিত্রল হরিণ মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার বিকালে সুন্দরবনের দুবলারচর এবং বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদী থেকে মৃত ওই হরিণ দু’টি উদ্ধার করে বন বিভাগ ও স্থানীয় লোকজন।
তবে পানিতে সুন্দরবনের বন্য প্রাণীর কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানাতে পারেনি বন বিভাগ। তবে পানিতে সুন্দরবনের মিষ্টি পানির পুকুর ও অফিসসহ বেশ কিছু অবকাঠামোর ক্ষতির তথ্য জানিয়েছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: ভোলায় ইয়াসের প্রভাবে চরাঞ্চল প্লাবিত, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা ডুবে যায়। বুধবার দুপুরে জোয়ারের সময় সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। পানির চাপে সুন্দরবন থেকে ভেসে যাওয়া দু’টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ওই মৃত হরিণ দু’টি মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে।
বেলায়েত হোসেন জানান, ইয়াসের প্রভাবে ঝড় ও জলোচ্ছাসে সুন্দরবনের ১১টি জেটি, ৬টি মিষ্টি পানির পুকুর, বন বিভাগের দু’টি অফিস, একটি স্টাফ ব্যারাক, ১২টি রাস্তা, একটি ফুটটেইল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৪৩৯ দিন আগে
বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে পড়ে ৪ বছরের শিশুর মৃত্যু
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে ঘরের পাশে জোয়ারের পানিতে পড়ে চার বছরের এক শিশু মারা গেছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার চালতেবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জিনিয়া আক্তার জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চালতেবুনিয়া গ্রামের কালাম গাজীর মেয়ে।
আরও পড়ুন: ইয়াসের প্রভাবে খুলনায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি
মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারে পানগুছি নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই পানিতে চালতেবুনিয়া গ্রামের কালাম গাজীর ঘরের পাশে একটি নালা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। হঠাৎ করে তার চার বছর বয়সি শিশু কন্যা জিনিয়া ওই নালায় পড়ে গেলে পানিতে ডুবেই তার মৃত্যু হয়।
১৪৪০ দিন আগে
ফেনীতে জোয়ারের পানিতে ডুবে জেলের মৃত্যু
ফেনীর সোনাগাজীতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে ডুবে হাদিউজ্জামান (২৬)নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে জেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত জেলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর এলাকার শেখ পাড়ার আবদুল বারী গাজীর ছেলে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে জাটকা ধরায় ২৫ জেলে আটক
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে হাদিউজ্জামান, তার চাচা জাহিদুল ইসলাম ও আবদুর রহিম ছোট ফেনী নদীতে ঠেলাজাল দিয়ে চিংড়ির পোনা মাছ ধরতে যান। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র স্রোতে হাদিউজ্জামান ডুবে নিখোঁজ হয়ে যান। অন্য দুজন কোনো রকম সাঁতার কেটে উপকূলে এসে প্রাণে বাঁচেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মা ইলিশ রক্ষায় নৌ-পুলিশের যৌথ অভিযান
সোনাগাজী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা মো. জামিল আহমেদ খান বলেন, উপকূলীয় এলাকা সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়ায় বাহিরের চরের ছোট ফেনী নদী থেকে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ওই জেলের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম পলাশ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃত হাদিউজ্জামান মৌসুমি জেলে। গলদা চিংড়ির পোনা ধরতে আসেন সোনাগাজী অঞ্চলে। তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১৪৪০ দিন আগে
ভোলায় জোয়ারে ধসে গেছে ইলিশা লঞ্চঘাটের পল্টুন
বৈরী আবহাওয়ার কারণে বুধবার সকাল থেকে ভোলায় দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বাতাসসহ থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে মেঘনা নদী। ধসে পড়েছে ইলিশা লঞ্চঘাটের পল্টুন।
১৭১২ দিন আগে