স্বৈরশাসক
জিয়া জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে
দেশের প্রথম স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ৩০ মে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছে 'রাজনীতির সাতকাহন'অনুষ্ঠানের বক্তারা।
আইয়ুব খানের মত করেই জোর করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছেন বলে মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামস রহমান বলেন, ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান যেভাবে ক্ষমতায় এসেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে জিয়াও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেই এসেছেন। উনি যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান এবং জরুরি অবস্থায় সামরিক সরকারেরও প্রধান। আপনারা যদি দেখেন একইভাবে ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান ছিলেন সেনা বাহিনীর প্রধান এবং সামরিক সরকারের প্রধান। দুইজনই 'হ্যাঁ'/'না' ভোটের আয়োজন করেন এবং সেখানে ভোটের ব্যালট পেপারে নিজেদের 'গ্লোরিফাই' করেছেন। পার্থক্য ছিলো একটাই, আইয়ুব খান ইংরেজিতে ব্যালট পেপারে নিজের পক্ষে লিখেছিলেন আর জিয়া লিখেছিলেন বাংলায়।
লেখক ও সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত বলেন, ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ সালে বিচারপতি আবু সায়েমের কাছ থেকে জিয়া জোর করে ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় তখন বঙ্গবন্ধুর গায়েবি জানাজা আমরা পড়েছি। সেই সংবাদও কোন পত্র-পত্রিকায় ছাপাতে দেয়া হয় নাই। আর জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পর পত্রপত্রিকা-রাস্তাঘাট সবখানে শূন্যতা, শুধু জেলখানাগুলো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীতে পূর্ণ। এর পর প্রহসনের গণভোট এবং এই স্বৈরশাসনের ধারাবাহিকতা আমরা এরশাদের আমলেও দেখেছি।
আরও পড়ুন: জিয়া-এরশাদ-খালেদা দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিল: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলের সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ৭৫ সালের পর সকল রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছিল। শুধুমাত্র যারা জিয়াকে তোষামোদ করে চলতো, ফুলের তোরা নিয়ে যেতো, তাদের খবরই বেশি দেখা যেতো। আমরা একটা পর্যায়ে আটক হই এবং জেলে থাকি।
জিয়ার ভোট কারচুপির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল অল্প কিছুদিনের জন্য রাজনৈতিক কার্যক্রম উন্মুক্ত করা হয়। এই অল্প সময় নেতাকর্মীরা প্রচণ্ডভাবে চেষ্টা করেন জেনারেল ওসমানীর জন্য। কিন্তু ভোটের ফলে জেনারেল ওসমানী পান শূন্য ভোট। তারা প্রমাণ করতে চেয়েছিল যে, জেনারেল ওসমানীর পোলিং এজেন্টরাও তাকে ভোট দেয়নি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোন পোলিং এজেন্টকে ঢুকতেই দেয়া হয়নি ভোট কেন্দ্রে। তাদের মত করে সিল মেরে ভোটের বাক্স নিয়ে যায় তারা। তখনতো এখনকার সময়ের মতো এত ভিডিও ছিল না। থাকলে বিষয়টি আরও ভালো করে দেখানো যেতো।'
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়েব টিমের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে সোমবার (৩০ মে) দলীয় অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি ঈর্ষান্বিত হয়ে মেগা প্রকল্প নিয়ে মিথ্যাচার করছে: কাদের
রাস্তা থেকে জিয়ার নাম ফলক সরিয়ে দিল বাল্টিমোর সিটি
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোর সিটির একটি রাস্তা থেকে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম ফলক সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মেরিল্যান্ড রাজ্যের বাল্টিমোর সিটির মেয়রের কার্যালয়ে একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: জিয়ার মরণোত্তর বিচার হতেই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
যুক্তি ছিল জেনারেল জিয়া একজন সামরিক স্বৈরশাসক যিনি রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন এবং আমেরিকায় তার নাম ফলক দিয়ে সম্মান দেয়া উচিত নয়।
শুনানি শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে আ’লীগ নেতারা বলেন, মেয়র কার্যালয় স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা কোনো সামরিক স্বৈরশাসকের নামে নামকরণ করে সম্মান করবে না।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল কি জিয়ার লাশ দেখেছেন: তথ্যমন্ত্রী
এর আগে আওয়ামী লীগ নেতারা জিয়াউর রহমানের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য মেয়রের কার্যালয়ে আবেদন করেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, জিয়ার নাম মুছে ফেলা হয়েছে কারণ তিনি বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক ছিলেন।
সামরিক অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ শব্দ বাদ দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
দেশ ও সশস্ত্র বাহিনীর কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না বলে সামরিক অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ শব্দটি বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।