পুরুষ
নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
একটি সুস্থ জীবনের জন্য দৈহিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই যত্নশীল হওয়া জরুরি। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আশেপাশের মানুষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা নারী ও পুরুষ দুজনের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই বিপজ্জনক। প্রচন্ড হতাশায় এমনকি আত্মহত্যা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে এই সমস্যা। ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই পরিস্থিতির নিত্যতার পাল্লা পুরুষদের দিকেই বেশি ভারী। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার আধিক্য থাকলেও নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি। এই সমস্যার শিকড় কোথায়, চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বজুড়ে নারী ও পুরুষের আত্মহত্যা
নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকলেও, সেটি পুরুষদের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায়। জেন্ডার প্যারাডক্স হিসেবে পরিচিত এই অসঙ্গতির জন্য বিশ্বজুড়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা নারীদের তুলনায় বেশি।
২০০৮ সালে আত্মাহুতির মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা ছিল নারীদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। ৭ বছর পর ২০১৫ সালেও আনুপাতিক হারটা প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল, যা ১ দশমিক ৭। পশ্চিমা দেশগুলোতে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুতে নারীদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা হরহামেশাই তিন থেকে চার গুণ বেশি থাকে। এই বৃহৎ পরিসরটি পরিলক্ষিত হয় ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
১৯৫০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের আত্মহত্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ২০১৯ সালে পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার নারীদের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি ছিল। ২০২১ সালে এই আনুপাতিক হার বেড়ে ৩ দশমিক ৯০- এ দাঁড়িয়েছে। মার্কিন জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশই পুরুষ, আর এই হিসাবে আত্মহত্যা জনিত কারণে পুরুষের মৃত্যুর হার দাঁড়ায় প্রায় ৮০ শতাংশ।
কিশোর এবং তরুণদের আত্মাহুতির হার অন্যান্য বয়সের তুলনায় কম। তবে আত্মঘাতী বিষয়টি এখনও মার্কিন তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
অন্যদিকে, আত্মহত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটে নারীদের মধ্যে বেশি, যা পুরুষদের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ। পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৩৩ গুণেরও বেশি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা। শিক্ষার্থীদের মাঝেও এমন প্রবণতা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ১ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
আশঙ্কাজনক আত্মহত্যার হারে পশ্চিম ইউরোপের একমাত্র দেশ হলো বেলজিয়াম। সেখানে প্রতি ১ লাখে আত্মহত্যা করে ১৮ দশমিক ৩ জন, যার মধ্যে প্রতি লাখে ২৪ দশমিক ৯ জন পুরুষ এবং ১১ দশমিক ৮ জন নারী।
২০১৯ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার ছিল আফ্রিকার দেশ লেসোথোতে। সেখানে প্রতি লাখে আত্মাহুতির রেকর্ড ছিল ৭২ দশমিক ৪ জনের, যাদের মধ্যে প্রতি লাখে পুরুষ সংখ্যা ১১৬ জন এবং নারী ৩০ দশমিক ১ জন।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০০০ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যায় পুরুষের মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। নারী-পুরুষ উভরে ক্ষেত্রে এই হার ২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত কমতে থাকে। অতঃপর ২০১৬ সাল পর্যন্ত কিছুটা ওঠা-নামার পর আবার বাড়তে শুরু করে। ২০১৯ সালে পুরুষ মৃত্যুহার ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা নারীদের ক্ষেত্রে ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক-এর অপপ্রয়োগ: কেন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না?
ডেঙ্গুতে আরও ৩ জন আক্রান্ত
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি।
তবে এই সময়ের মধ্যে এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ২ জন এবং নারী ১ জন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ১১ জন আক্রান্ত
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ জন। আর ঢাকার বাইরে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ জন।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। এদের মধ্যে পুরুষ ৬ জন এবং নারী ১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৩১৯ জন।
এদের মধ্যে পুরুষ ৮৩৫ জন এবং নারী ৪৮৪ জন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৬
ডেঙ্গুতে আরও ৬ জন আক্রান্ত
নারী ও পুরুষ সভ্যতার দুই হাত: সিমিন হোসেন
মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেছেন, সভ্যতার দুইটি হাত, একটি পুরুষ অন্যটি নারী। কাউকে পেছনে ফেলে কেউ অগ্রসর হয় না।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রথম অফিস করছেন নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা
তিনি বলেন, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমি নারী ও শিশু নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করি। সেজন্য আমার খুবই ভালো লাগার জায়গা এটি।
আরও পড়ুন: আমি পেশায়-নেশায় সবকিছুর মধ্যে কৃষক: কৃষিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কর্মপরিকল্পনা তো একটা থাকবে। কিন্তু সেটি একশ দিন বা সে রকম কিছু না। কারণ এটি চলমান একটি কাজ। সেহেতু সেভাবেই আমরা কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাব।
আরও পড়ুন: চলমান কাজগুলো শেষ করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ: ইয়াফেস ওসমান
পুরুষের সামনে মুখ দেখালে নারীর মর্যাদা কমে যায়: তালেবান কর্মকর্তা
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বলেছেন, জনসমক্ষে পুরুষদের সামনে মুখ দেখালে নারীদের মর্যাদা কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের ধর্মীয় নেতারা একমত যে বাড়ির বাইরে থাকার সময় নারীদের মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
তালেবান সরকার ২০২১ সালের আগস্টে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর থেকে পার্ক, চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশিরভাগ জনপরিসরে নারীদের নিষিদ্ধ করার কারণ হিসেবে তারা যথাযথভাবে হিজাব (মাথা ঢেকে রাখার ইসলামিক পোশাক) পড়তে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছে।
তালেবানের ভাইস ও ভার্চু (পাপ ও পূণ্য) মন্ত্রণালয়ের (পূর্বনাম নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়) মুখপাত্র মৌলভী মোহাম্মদ সাদিক আকিফ বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, নারীদের মুখ জনসমক্ষে দেখা গেলে ফিতনা বা পাপে জড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
আকিফ বলেন, ‘কিছু এলাকায় (বড় শহর) নারীদের (হিজাব ছাড়া) খুবই খারাপভাবে দেখা যায়। আমাদের পণ্ডিতরাও একমত যে নারীদের মুখ ঢেকে রাখা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন না যে এতে তার মুখের কোনো ক্ষতি হবে। একজন নারীর নিজস্ব মর্যাদা আছে এবং পুরুষরা তাকে দেখলে সেই মর্যাদা কমে যায়। আল্লাহ হিজাব পরা নারীদের সম্মান দেন এবং এতে মর্যাদা রয়েছে।’
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ডিভিনিটি অনুষদের ইসলামিক স্টাডিজের শেখ জায়েদ লেকচারার টিম উইন্টার বলেছেন, নারীর মুখ ঢেকে রাখার ব্যাপারে ইসলামে কোনো শাস্ত্রসম্মত কোনো আদেশ বা হাদিস নেই। এ ছাড়া তালেবানরা ইসলামি ধর্মগ্রন্থে (কোরআন) এমন কিছু খুঁজে পাবে না যা তাদের হিজাবের নিয়মের ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
তিনি এপিকে বলেন, ‘তাদের নাম থেকেই বোঝা যায় যে তারা ধর্মীয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন। তালেবান শব্দের অর্থ শিক্ষার্থী (জ্ঞান আহরণকারী)।’
তিনি বলেন, তালেবানরা গ্রামের মাদরাসা ও ধর্মীয় বিদ্যালয়ে ব্যবহৃত পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা চালান। এ ছাড়া তালেবান শাসনের দুই মেয়াদে আফগানিস্তানে যাওয়া মুসলিম পণ্ডিতদের ধর্মীয় জ্ঞানের দ্বারা তারা প্রভাবিত। তাই ‘তারা বৃহত্তর মুসলিম সম্প্রদায় থেকে এত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ করেছে তালেবান
মেয়ে ও নারীদের উপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে কিছু মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসহ বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষ দূত গর্ডন ব্রাউন বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আফগান মেয়ে ও নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অধিকার হরণ করায় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তালেবান নেতাদের বিচার করা উচিত।
ভাইস অ্যান্ড ভার্চু মন্ত্রণালয়ের প্রধান মুখপাত্র আকিফ বলেন, মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজে সাধারণ মানুষ কোনো বাধা দেয়নি। বরং আফগানরা এই আইনগুলোতে সমর্থন করেছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষ এখানে শরিয়া (ইসলামি আইন) বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। এখন আমরা শরিয়া বাস্তবায়ন করছি।’
তিনি আরও বলেন, এগুলো সব ইসলামিক বিধি-বিধান। তালেবানরা এতে অতিরিক্ত কিছুই যোগ করেনি। ‘শরিয়ার আদেশ ১৪০০ বছর আগে জারি করা হয়েছিল এবং তা এখনও আছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসনে পুরুষরা আগের সরকারের আমলের মতো নারীদের হয়রানি করবে না বা তাকাবে না।
তালেবান সরকার আরও বলেছে, তারা মদ্যপান ও ছেলেশিশুদের শ্লীলতাহানীর মতো ‘ঘৃন্য’ কাজ বন্ধ করেছে।
এই মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দারুল আমান প্রাসাদের কাছে একটি সুরক্ষিত কম্পাউন্ডে অবস্থিত। নারীদের মন্ত্রণালয়ের প্রাঙ্গণে ঢোকা নিষেধ।
আকিফ বলে, জনগণ নিয়ম মেনে চলছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা ও তথ্যদাতাদের নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ন্যায়পালরা বাজার, উন্মুক্ত স্থান, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, মাদরাসা ও মসজিদে ঘুরে বেড়ায়। ‘তারা এই সব জায়গায় যান এবং লোকজনদের দেখেন। তারা তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের শিক্ষা দেন। আমরা তাদের পর্যবেক্ষণ করি এবং লোকেরাও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে এবং আমাদের জানায়।’
নারীরা পার্কে যেতে পারবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই জায়গা থেকে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কিছু শর্ত পূরণ করে তারা সেখানে যেতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি সেখানে কোনো পুরুষ না থাকে তাহলে নারীরা পার্কে যেতে পারে। কিন্তু যদি পুরুষ থাকে, তাহলে শরিয়া তা অনুমোদন করে না। আমরা বলি না যে একজন নারী খেলাধুলা করতে পারবে না, তবে সে পার্কে গিয়ে খেলতে বা দৌড়াতে পারবে না। সে এসব করতেই পারে, তবে অর্ধ-উলঙ্গ হয়ে পুরুষদের মধ্যে এসব করতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: কাবুলে তালেবান শাসন: ম্যানিকুইনেরও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ!
কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
নারী ও পুরুষের বৈষম্য দূর করতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে নারী ও পুরুষের সমান ভূমিকা রয়েছে। এজন্য নারী ও পুরুষের বৈষম্য দূর করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারী-পুরুষের সকল বৈষম্য দূর করতে চেয়েছিলেন।
এছাড়া নারীকে তার যোগ্যতায় নিজের জায়গা করে নিতে হবে।
তিনি বলেন, তিনি আমৃত্যু শোষণ-বঞ্চনাহীন একটি বাংলাদেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল অগ্রগতি-অগ্রযাত্রায় নারীরা অনন্য ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুন: সমাজের কাছে ইমামদের কথা গুরুত্ব বহন করে: শিক্ষামন্ত্রী
শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে চাঁদপুরে উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে রোটারি ভবনে উদ্যোক্তাদের মেলা পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যা নারী ছাড়া হয়। নারীদের জড়তার জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নারীদের হাত ধরে এগিয়ে দিয়েছেন। এখন আমাদের কাজটা করে যেতে হবে। নারীদের প্রযুক্তি শিখতে হবে। নারীকে তার যোগ্যতায় নিজের জায়গা করে নিতে হবে।
ডা. দীপু মনি আরও বলেন, চাঁদপুরের মেয়েরা বহুকাল আগে থেকেই শিক্ষা-সাহিত্য-সস্কৃতিতে এগিয়ে আছে। এখনও দেশে-বিদেশে চাঁদপুরের মেয়েরা তাদের কর্মদীপ্ত আলো ছড়াচ্ছে। গত কয়েক বছরে চাঁদপুরে অসংখ্য নারী উদ্যোগতা সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া চাঁদপুর উইমেন চেম্বারের আয়োজনে উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করেছে। এটি নারীদের প্রেরণা দিতে একটি মহৎ উদ্যোগ।
আমি এ মেলার আয়োজক এবং অংশগ্রহণকারী সবাইকে অভিনন্দন জানাই।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করবে: শিক্ষামন্ত্রী
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রধান হাতিয়ার শিক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী
আমার স্বপ্ন, একদিন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তিনি যখনই সময় পান ফুটবল খেলা দেখেন এবং স্বপ্ন দেখেন একদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলবে।
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বকাপ হচ্ছে, কিন্তু ফুটবলে আমাদের কোনো অবস্থান নেই। এটা আসলে আমাকে কষ্ট দেয়।’ তিনি সেই দিনের স্বপ্ন দেখেন যেদিন ‘আমাদের ছেলেরা এবং মেয়েরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে’।
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের সমাপনী ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তৃতীয় বারের মতো ১২টি ইভেন্টে দেশের ১২৫টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ৮৫০ জন মহিলাসহ প্রায় ছয় হাজার ৯৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
তরুণ প্রজন্মকে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক চর্চার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা মাদক, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস চাই না। আমরা শান্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্বাস করি। আমি জানি শিক্ষা, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য সরকারের সহযোগিতা সবসময় প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: বিলাসিতা পরিহার করে জনগণের সেবা করুন: নির্বাচিত জেলা পরিষদকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে। এসব প্রতিযোগিতার ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে আরও ভালো করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, দেশের শিশুরা বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সুবাদে নিজেদের সাজিয়ে তুলছে। ‘শিশুরা যতটা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারে ততই তাদের জন্য ভাল হবে।’
বাংলাদেশের শিশুদের অত্যন্ত প্রতিভাবান ও মেধাবী হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, একটু সুযোগ পেলেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণসহ খেলাধুলার উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর আলোকপাত করেন।
ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল, বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস এবং ব্যাডমিন্টন, কাবাডি ও দাবাসহ ১২টি ইভেন্টের অধীনে সেরা পারফরমারদের মধ্যে প্রায় ৭২০টি পদক বিতরণ করা হয়।
প্রতিযোগিতার তৃতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আর ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছেন- যৌথভাবে সেরা পুরুষ অ্যাথলেট উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশিফ রেজা ও মাহমুদুন নবী এবং সেরা মহিলা ক্রীড়াবিদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) তামান্না আক্তার।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মেসবাহ উদ্দিন।
এর আগে, গণবিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) ৩-১ গোলে পরাজিত হলে নারী ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিভিন্ন ইভেন্টের অধীনে চ্যাম্পিয়ন দলগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরুষ ফুটবলে ড্যাফোডিলস ইউনিভার্সিটি, মহিলাদের হ্যান্ডবল, মহিলাদের ভলিবল এবং মহিলাদের কাবাডি; নারী ফুটবল, পুরুষ ভলিবল ও পুরুষ কাবাডিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়; পুরুষদের হ্যান্ডবল এবং পুরুষদের বাস্কেট বলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়; মহিলাদের বাস্কেট বলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি; পুরুষদের ক্রিকেটে এআইউবি এবং মহিলাদের ক্রিকেটে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৯ সালে প্রবর্তন করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য প্রস্তুত যশোর
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপের সেরা ৬ ক্যাপ্টেন
প্রতিটি ম্যাচের হারজিতের জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী থাকেন দলনায়ক। খেলার মাঠে জটিল মুহূর্তগুলোতে সিদ্ধান্ত দিয়ে স্কোয়াডের শক্তিগুলো কাজে লাগান তিনি। পাশাপাশি নিজের ভাগের কাজটুকুর প্রতিও তাকে নিরঙ্কুশ খেয়াল রাখতে হয়। টি-২০-এর মত দ্রুততম ক্রিকেট ফরম্যাটে অধিনায়কের দায়িত্ব আরো দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। কারণ এখানে পুরো ম্যাচ ঘুরে যাওয়ার ধাক্কাটা আসে প্রতি বল ও ব্যাটে। দলের প্রতিটি খেলোয়ারের সম্মিলিত প্রয়াস স্বাভাবিকভাবেই দলকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। তবে কখনো কখনো একজনের হাতেই পুরো ম্যাচ জয়ের শাতকাহন রচিত হয়। আর সেই একজনটা যদি হয় স্বয়ং দলপতি, তখনি সৃষ্টি হয় ইতিহাস। আজকের নিবন্ধে ২০২২ আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের সেরা ৬ ক্যাপ্টেন বাছাই করা হয়েছে, তাদের বিগত জয় এবং নিজ নিজ পারফর্মেন্সের পরিসংখ্যান যাচাই করে।
আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২ এর শীর্ষ ৬ ক্যাপ্টেন
রোহিত শর্মা | ভারত
অধিনায়কত্বে সবচেয়ে বেশি ২০ ওভারের ম্যাচ জয় এবং ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের পরিসংখ্যানের দিক থেকে শীর্ষস্থানীয় নামটি হচ্ছে মাহেন্দ্র সিং ধনী। তার ৪১টি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটি এখনো স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে। ২০০৭ থেকে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করে অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগ পর্যন্ত ৮৯টি স্বল্পদৈর্ঘ্য খেলায় তার সংগ্রহ ছিল গড়ে ৩০.৬১ রান। আর নেতৃত্ব অর্জনের পর থেকে ৪৫টি খেলায় ব্যাট করে তিনি সংগ্রহ করেছেন গড়ে ৩৪.৭১ রান।
আরও পড়ুন: আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২: বাংলাদেশ দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণ
সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে তার ভালো দিনগুলোতে তার সমকক্ষ কেউই নেই। চাপ সামলাতে জানা এই ব্যাটসম্যান যে কোন ইনিংসকে বহুদূর টেনে নিয়ে যেতে পারদর্শী। বিরাট কোহলির পর থেকে রোহিতের অধীনে ভারত ৪৫টির মধ্যে জয় পেয়েছে মোট ৩৫টি ম্যাচে। অর্থাৎ জয়ের সংখ্যা শতকরা ৭৭.৭৮ ভাগ। এবার তিনি ভারতকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয় হবে।
সাকিব আল হাসান | বাংলাদেশ
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ২০২২ এর ঠিক আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে সাকিব আল হাসানকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টি-টোয়েন্টিতে সাকিব আল হাসান এ পর্যন্ত ১০৩ ম্যাচে ১২১.৪৯ স্ট্রাইক রেটে ২১৩১ রান করেছেন। বোলিংয়ে ৬.৭১ ইকোনোমির পাশাপাশি ১২২ উইকেট শিকার করেছেন।
সাকিবের নেতৃত্বে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ভালো করতে পারেনি, বাদ পড়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই। তবে সেই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভালো কৌশল কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে কিছু ধারণা পেয়েছেন সাকিব।
আরও পড়ুন: ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ: ভেন্যু ও প্রাইজ মানি
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বাংলাদেশ দল ভালো করছে না, ফলে সাকিবের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং বড় দলের বিপক্ষে জয়ের অভ্যাস তৈরি করা। বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার একজন স্মার্ট ক্রিকেটার হিসেবে জানেন যে কীভাবে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হয়।
বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে অন্যান্য অধিনায়কদের তুলনায় সাকিবকে সম্ভবত খেলোয়াড় হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হবে। তবে বাংলাদেশ যখনই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে তখনই সাকিব তা করেছেন।
বাবর আজম | পাকিস্তান
৫৬টির মধ্যে ৩৪টিতেই জয়; অর্থাৎ জয়ের শতাংশ ৬০.৭১। পরিসংখ্যানটি মধ্যম ক্যাটাগরির জন্য দারুণ একটি রেকর্ড। ২০১৯ থেকে দলের ভার পাওয়ার পর থেকে এই রেকর্ডটাই অর্জন করেছেন বাবর আজম। ২১ শতকে পাকিস্তানের জন্য সেরা উপহার ছিল ২০০৯ এর টি-২০ বিশ্বকাপ জয়।
আরও পড়ুন: আমাদের উন্নতি করতে হবে: সাকিব
কিন্তু ২০১০ এর পর কিছু উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়ের বিদায় গোটা দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ২০১৬ তে ক্রিকেট অঙ্গনে পা রাখেন আজম। অতঃপর গত ২ বছর ধরে তার অধিনায়কত্বে দলটি মোটামুটি আত্মবিশ্বাসের সাথেই খেলছে। দলের বোলিং সামঞ্জস্যতাকে বাবর খুব ভালো ভাবে কাজে লাগাতে পারেন। হারিস রউফ কোন ওভারে বল করবেন আর কোন ওভারে শাহীন করবে, তা তিনি জানেন। এছাড়া টি-২০ আন্তর্জাতিক র্যাংকিং-এ ৩য় স্থান অধিকার করা তাদের পুনরায় বিশ্বকাপ জয়ের আগ্রহটাকে ন্যায্যতা দিয়েছে।
অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগে ৩৩ ইনিংসে বাবরের গড় রান ছিল ৪৯.৬২, যেটি অধিনায়ক হওয়া পর হয়ে যায় ৫১ ইনিংসে ৪১.১১। তাই ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের দিক থেকে একটু শঙ্কা থেকেই যায় এই ডান হাতি ব্যাটসম্যানকে নিয়ে।
অ্যারন ফিঞ্চ | অস্ট্রেলিয়া
স্বল্পদৈর্ঘ্য ম্যাচ জয়ের শীর্ষ তালিকায় ৩য় অবস্থানটিতে রয়েছে এই অসি ক্রিকেটার। ২০১৪ তে ক্যাপ্টেন হওয়ার পর থেকে ৭১টি ম্যাচের ৩৯টিতে জয় পেয়ে তিনি ৫৪.০৫ শতাংশ জয়ের সম্মানজনক অবস্থানটি ধরে রেখেছেন। এছাড়া বর্তমান টি-২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ান হওয়ার কৃতিত্বটাও এসেছে অ্যারন ফিঞ্চের পরিচালনায়। ব্যাট হাতেও তার জুড়ি মেলা ভার। মাঠ কাঁপানো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনি এখনকার সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জার্সি অনলাইনে বিক্রির পরিকল্পনা বিসিবির
২০১১ তে ক্রিকেটের ভূবনে অবতরণ করে অধিনায়ক হওয়ার আগ পর্যন্ত ২৭ ইনিংসে তিনি সংগ্রহ করেন গড়ে ৪০.১৮ রান। কিন্তু নেতৃত্ব দানের সময় ৭১ ইনিংসে তার গড় রান দাড়ায় ৩২.৫৫। এই ধারাবাহিকতায় স্বাভাবিক ভাবেই তার রানের গ্রাফটা আরো অধ্বঃগামী হওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি মার্কি ইভেন্টের ইতিহাস পুরো বিশ্ববাসীকে একদম ভিন্ন ছবি দেখিয়েছে। আর এই অফুরন্ত সম্ভাবনাটি নিশ্চয়তায় রূপান্তর হবে, যদি তিনি টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার-১২ স্টেজে অস্ট্রেলিয়াকে একটি শক্তিশালী সূচনা এনে দিতে পারেন।
কেন উইলিয়ামসন | নিউজিল্যান্ড
অনেক ক্রিকেট বোদ্ধারাই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, যে টেস্ট খেলোয়াররা খেলার এই সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে টিকে থাকতে পারবেন না। কারণ তাদের কাছে নাকি টি-২০ মাত্রার পাহাড়সম স্ট্রাইকিং রেট সৃষ্টির দক্ষতা নেই। তাদের এই ধারণাকে শক্ত হাতে বাউন্ডারির ওপারে নিক্ষেপ করেছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
২০১১ তে ক্রিকেটে পদার্পণ করার পরের বছরেই পুরো দলের দায়িত্ব পেয়ে যান। একজন সাধারণ অল রাউন্ডার হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম বছরটিতে তিনি ১৬ ইনিংসে ৩২.৪৬ গড় রান সংগ্রহ করেছিলেন। আর বোলিংয়ে রান দিয়েছিলেন গড়ে ৫০। এরপর অধিনায়কত্বের দীর্ঘ ১০ বছরে ৬১ ইনিংসে সংগৃহিত ৩২.১৩ এবং বোলিংয়ে প্রদানকৃত ১৬ রানের গড় ধরে রেখেছেন। উইলিয়ামসন নিউজিল্যান্ডের জন্য এখন একজন নির্ভরযোগ্য ক্যাপ্টেন।
আরও পড়ুন: শেষ ম্যাচও হারল বাংলাদেশ
বিগত টি-২০ বিশ্বকাপে ব্ল্যাক ক্যাপদের ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার অবদান অনস্বীকার্য। তার দীর্ঘ নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড ৬১টি খেলায় ৩১টিতে জয়ের মুখ দেখেছে। অর্থাৎ জয়ের সংখ্যা ৫০.৮২ শতাংশ, যেটি এবারের শিরোপা জয়ের নিমিত্তে কোন ভাবেই উপেক্ষনীয় নয়।
দাসুন শানাকা | শ্রীলঙ্কা
২০১৫ থেকে ক্যারিয়ারের শুরু; ২০১৯ এ দলপতি হওয়া, অতঃপর মোট নেতৃত্ব দেয়া ম্যাচের অর্ধেকটিতে দলকে জয় এনে দেয়া। এই বৃত্তান্ত এই সময়কার স্বনামধন্য অল রাউন্ডার দাসুন শানাকার। ক্যাপ্টেন হওয়ার আগের ৪ বছরে নিজেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে গড়েছেন শানাকা। ৩৯ ইনিংসে রানের গড় ১৫.৩৮ আর বোলিংয়ে রানের গড় সীমাবদ্ধ রেখেছেন ২০.৬৪-এ। পরিসংখ্যানটি আহামরি না হলেও ক্যাপ্টেন হওয়ার পর তার রানের গড় বেড়ে হয়েছে ২৮.৮২ (৩১ ইনিংসে)। দুভার্গ্যজনকভাবে বোলিংয়েও গড়টা বেড়ে ২৮.১১ হয়েছে।
কিন্তু তার বোলিংয়ে আছে ম্যাচের ভাগ্য বদলানোর যাদু। পাওয়ার প্লের সময় বোলিং করেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ম্যাচে তিনি ভারসাম্য ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। এবারের এশিয়া কাপে সবাই যখন ভারত-পাকিস্তান নিয়ে ব্যস্ত, তখন সবার অলক্ষ্যে সুকৌশলে তিনি লঙ্কানদের এনে দিলেন এশিয়া কাপের শিরোপা। শুধুমাত্র এই আত্মবিশ্বাসটাই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার আধাআধি জয়ের পাল্লাটাকে ইতিবাচক দিকে ভারী করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজক ৭ শহর ভ্রমণ
শেষাংশ
আইসিসি টি-২০ ২০২২ বিশ্বকাপের সেরা ৬ ক্যাপ্টেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এই সুপার খেলোয়াররা বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমিদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু থাকবেন। যুক্তির মাপকাঠিতে সংখ্যার ভবিষ্যদ্বাণী কখনো বিফলে যায় না। কিন্তু এরপরেও ক্রিকেট যুদ্ধের এক বিশাল বলয় জুড়ে রয়েছে অদৃষ্ট। ভাগ্যের বিভ্রমে খেলার মাঠে যে কোন কিছুই ঘটে যেতে পারে। সেই দিক থেকে টি-২০ আন্তর্জাতিক র্যাংকিং-এ ২য় অবস্থানে থাকা ইংল্যান্ডের নতুন ক্যাপ্টেন জস বাটলারকেও ছোট করে দেখা যাবে না। ঠিক যেভাবে একদমই মুছে ফেলা যাবে না টাইগার দলনেতা বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নাম।
কুষ্টিয়ার সেই পুরুষ শূন্য গ্রাম থেকে ৩৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, আটক ২
কুষ্টিয়ার সেই পুরুষ শূন্য গ্রাম থেকে ঢাল, হাঁসুয়া, বল্লমসহ মোট ৩৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। এ সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- কুমারখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড বাটিকামারা এলাকার মো. মনির হোসেনের ছেলে মো. ফাহিম হোসেন (২৫) ও নন্দনালপুর ইউনিয়নের পুরাতন চুড়াইকোল এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে গালিব আশরাফ ওরফে সেতু (৩০)।
আরও পড়ুন:পিস্তল-গুলিসহ কুষ্টিয়ায় ছাত্রদল নেতা আটক
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার শনিবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পুরুষ শূন্য চরপাড়া গ্রামে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে ৩৫টি দেশীয় অস্ত্রসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জব্দ করা অস্ত্রগুলো আগের মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে শনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০২০ সাল থেকে চরপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন দুলাল মিস্ত্রি। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন সাবেক ইউপি সদস্য আনসার আলী। ২০২০ সালের ৬ মে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুলাল মিস্ত্রির সমর্থক হুমায়ুন মন্ডলকে (৪৪) কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় ৩৬ জনের নামের একটি মামলা করেছিলেন। মামলা নম্বর ৯।
এরপর গত সোমবার বদলা নিতে হুমায়ুন হত্যা মামলার ৪ নং আসামি সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের ভাই শাহীন আলী থানায় ২৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২।
জানা গেছে, হত্যা পাল্টা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষ হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ি-ঘরেই ভাংচুরের ক্ষত চিহৃ রয়েছে।
বর্তমানে গ্রামটি বলা চলে এক প্রকার পুরুষ শূন্য।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যুবক কারাগারে
কুষ্টিয়ায় বয়লার মেশিন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পুরুষের চেয়ে নারী বেশি
বাংলাদেশে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। দেশে জনশুমারি শুরুর পর থেকে এবারই প্রথমবারের মতো এমন তথ্য পাওয়া গেল।
সর্বশেষ জনশুমারিতে দেশের মোট জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটি রেকর্ড করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন এবং নারী ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন। এর মানে হলো প্রতি ১০০ জন নারীর বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা ৯৯ জন।
অন্যদিকে দেশে ট্রান্সজেন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৬২৯ জন।
স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো ঘটেছে এবং তাও একজন নারী প্রধানমন্ত্রীর অধীনে যিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ এর প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: জনশুমারি দেশের সঠিক চিত্র তুলে ধরবে: শিক্ষামন্ত্রী
২১ জুন জনশুমারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দেশের উত্তর-পূর্বের জেলায় বন্যার কারণে এটি ২৮ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে মুসলমান ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় কমিউনিটির জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া এ প্রতিবেদন অনুসারে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন।
মোট জনসংখ্যার ৯১ শতাংশ মুসলিম। হিন্দু জনসংখ্যা ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ যা ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এছাড়া বৌদ্ধ জনসংখ্যা শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ যা ২০১১ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম প্রমুখ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আজ রাত থেকে ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা শুরু
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে বার্ষিক গড় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এক দশমিক ২২ শতাংশ যা ২০১১ সালে এক দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল। এছাড়া জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে হয়েছে এক হাজার ১১৯ জন যা ২০১১ সালে ছিল ৯৭৬।
স্বাক্ষরতার হার বেড়ে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছে যা গত জনশুমারিতে ছিল ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
৫৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর বয়স পাঁচ বছরের বেশি। আর ইন্টারনেট ব্যবহারীকারী মোট জনসংখ্যার ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
দেশে বর্তমানে মোট রেস্তোরাঁর সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ যা গত জনশুমারিতে ছিল তিন কোটি ২১ লাখ। চার সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের সংখ্যা বর্তমানে চার কোটি ১০ লাখ।
কোনটা এগুচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন, নাকি পুরুষতান্ত্রিকতা?
আমাদের উচ্চ আদালতকে আবারও সাধুবাদ দিচ্ছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আদালত দুটি অতি গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে বেশ সাড়াজাগানো নির্দেশনা দিয়েছেন। দুটি বিষয়ই বাংলাদেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, ব্যক্তির ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার বিশেষত নারীর সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কিত। নির্দেশনার সঙ্গে আদালত বেশ কিছু কড়া মন্তব্য করেছেন আমাদের দেশের নিম্ন বিচারিক আদালতের বিচারক, পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-এর ভূমিকা নিয়ে।
প্রথম নির্দেশনাটি এসেছে ১ সেপ্টেম্বর। বিষয়,চিত্রনায়িকা পরীমণির রিমান্ড হয়রানি ও প্রলম্বিত জামিন শুনানি। পরীমণি জামিন পেয়েছে এবং জেল থেকে মুক্তিও পেয়েছে। তবে উচ্চ আদালত হস্তক্ষেপ না করলে সে এখনও কারাগারে বন্দি থাকত। কারণ ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন আদালত তার সর্বশেষ জামিন আবেদনটির শুনানির দিন নির্ধারণ করেছিল ১৩ সেপ্টেম্বর। এর আগে পরীমণির জামিন শুনানি কেন দ্রুত শুনানির নির্দেশনা দেয়া হবে না এই বলে এক রুল জারি করেছিলেন। সেই রুলের শুনানির দিন ছিল ১ সেপ্টেম্বর।
এর সাথে আদালত বলেছেন, পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড চাইলেই আসামিকে রিমান্ডে পাঠাতে হবে এমনটা কোন সভ্য দেশে চলতে পারে না। পরিস্কার বুঝতে পেরেছি পরীমণিকে একটি মাদক মামলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিম্ন আদালতে পরপর তিনবার পুলিশের রিমান্ড আবেদনে আদালত বেশ ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। আমার কথা হলো, উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে নিম্ন আদালত শেষ পর্যন্ত জামিন শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ আগস্ট এগিয়ে আনেন। জামিনও মঞ্জুর করেন। গল্প এখনও শেষ হয়নি। পরীমণিকে বারবার রিমান্ডে নেয়া, আবেদন ও তা গ্রহণ করার কি যৌক্তিক কারণ ছিল বা রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদৌ কোন উপাদান ছিল কিনা তা ব্যাখা করার জন্য নিম্ন আদালতের দুই বিচারক ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে উচ্চ আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের দ্বিতীয় প্রশ্নটি এল ৫ সেপ্টেম্বর রবিবার। এর সঙ্গে ক্ষুদ্ধ মনোভাবের প্রকাশ। সম্প্রতি পরীমণিসহ বেশ কয়েকজন নারীর (জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া) ব্যক্তি অধিকার ক্ষুন্ন হয় এমন সব ছবি, ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এগুলো নিয়ে বেশ রসালো প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে।
ব্যক্তির মানহানিকর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারী এমন ছবি, ভিডিও ও প্রতিবেদন বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্ট রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ। রিটের শুনানিতে আদালত বলেছেন, বিটিআরসি কী করে? তাদের কি প্রতিনিয়ত নির্দেশনা দিয়ে এসব বন্ধ করতে হবে, মনে হয় এতে বিটিআরসি আনন্দ অনুভব করে? দেখতে ভালো লাগে? আমরা সন্তান-সন্ততি নিয়ে থাকি না? আমাদের পরিবার আছে না? সব সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় কেন (প্রথম আলোর সৌজন্যে) অন্যত্র আদালত বলেছেন, বিটিআরসি এসব ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুন্নকারী আপত্তিকর বিষয়গুলো অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা আছে। আদালত এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট একটি নীতিমালাও করে দিয়েছেন।
লক্ষ্যণীয় যে, সম্প্রতি যাদের ব্যক্তিগত গোপন বিষয়গুলো ভাইরাল হয়েছে তাদের বেশিরভাগই নারী। রিটে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কলেজ ছাত্রী মুনিয়া বাদে বাকিরা বিভিন্ন মামলার আসামি। মজার বিষয় হলো, এদের সকলেরই ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ছিল মূলত তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে। মুনিয়ার মৃত্যুর পর তার মোবাইল ফোন জব্দ করে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা।
পরীমণিসহ অন্য আসামিদের মোবাইল ফোনও তাদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশের হাতে। পুলিশের কাছে জব্দ থাকা সময় যদি তাদের মোবাইল ফোনে ধারণকৃত কোন ছবি, ভিডিও বা কথাবার্তা প্রকাশ্যে চলে আসে তবে তার দায় কার? নিশ্চয় এ ব্যাপারে যে প্রশ্ন তার জবাব দিতে হবে তাদেরই যারা আসামিদের মোবাইল ফোন জব্দ করেছেন। ভাইরাল হওয়ার পর এগুলো দ্রুত সরিয়ে নেয়ার কাজ যে বিটিআরসির সেটা উচ্চ আদালত সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নির্দেশনা দিয়েছেন।
এখানে মনে পড়ছে, আমাদের দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে একটি অতি বিতর্কিত ও সমালোচিত আইন আছে। আইনটি বিতর্কিত হয়েছে এ কারণে যে এটির ব্যবহার বা অপব্যবহার হচ্ছে মূলত সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে। এর অধীনে যারা মামলা করেছেন তাদের বেশিরভাগই সরকারি দলের লোক। সামাজিক মাধ্যমে ঠুনকো কোন পোস্ট যা কোন সরাকারি দলের লোক,পুলিশ বা আমলার বিরুদ্ধে কটাক্ষ বা সমালোচনামূলক মনে হচ্ছে, তাৎক্ষণিক মামলা ঠুকে দেয়া হচ্ছে। পুলিশ তা আমলে নিচ্ছে, গ্রেপ্তার করছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক থাকা অবস্থায় জামিন বঞ্চিত হয়ে কারাগারে মারা যান লেখক ও উদ্যোক্তা মোসতাক আহমেদ। এখনও বেশ কয়েকজন এই আইনের আওতায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করছেন। অথচ এই আইনের একটি মূল উদ্দেশ্য হল সামাজিক মাধ্যমে নারী যে প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, স্কুল কলেজের অনেক মেয়েরা এই হয়রানির কারণে পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে। কেউবা আত্মহত্যা করতেও বাধ্য হচ্ছে। এই জঘন্য অপরাধের জন্য যারা দায়ী তারা দিব্যি আমাদের সমাজে মুক্ত মানুষ হিসেবে ঘুরছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এদের ক’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা আমরা জানি না। এই আইনের ফলে নারীর যৌন হয়রানি ও তার বিরুদ্ধে পুরুষতান্ত্রিক যৌনতার আক্রমণ কিছুটা কমেছে বলে আমরা জানি না। একদিকে আমরা আমাদের দেশে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে গর্ব করছি, আর সেই একই সমাজ নারীকে পুরুষতান্ত্রিক মনোভঙ্গিজাত নানা হেনস্থা, অপমান ও যৌনতার জাঁতাকলে পিষ্ট করছি। ক্ষমতায়ন নাকি পুরুষতন্ত্র এগিয়ে যাচ্ছে তা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।
ফরিদ হোসেন: উপদেষ্টা সম্পাদক, ইউএনবি
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবি’র নয়)
আরও পড়ুন:পরীমণির জামিন শুনানি দ্রুত করার বিষয়ে হাইকোর্টের রুল
পরীমণির জামিন শুনানির তারিখ এগিয়েছে
মুক্তি পেয়ে কী বার্তা দিলেন পরীমণি