প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তিনি যখনই সময় পান ফুটবল খেলা দেখেন এবং স্বপ্ন দেখেন একদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলবে।
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বকাপ হচ্ছে, কিন্তু ফুটবলে আমাদের কোনো অবস্থান নেই। এটা আসলে আমাকে কষ্ট দেয়।’ তিনি সেই দিনের স্বপ্ন দেখেন যেদিন ‘আমাদের ছেলেরা এবং মেয়েরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে’।
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের সমাপনী ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তৃতীয় বারের মতো ১২টি ইভেন্টে দেশের ১২৫টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ৮৫০ জন মহিলাসহ প্রায় ছয় হাজার ৯৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
তরুণ প্রজন্মকে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক চর্চার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা মাদক, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস চাই না। আমরা শান্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্বাস করি। আমি জানি শিক্ষা, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য সরকারের সহযোগিতা সবসময় প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: বিলাসিতা পরিহার করে জনগণের সেবা করুন: নির্বাচিত জেলা পরিষদকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে। এসব প্রতিযোগিতার ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে আরও ভালো করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, দেশের শিশুরা বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সুবাদে নিজেদের সাজিয়ে তুলছে। ‘শিশুরা যতটা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারে ততই তাদের জন্য ভাল হবে।’
বাংলাদেশের শিশুদের অত্যন্ত প্রতিভাবান ও মেধাবী হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, একটু সুযোগ পেলেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণসহ খেলাধুলার উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর আলোকপাত করেন।
ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল, বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস এবং ব্যাডমিন্টন, কাবাডি ও দাবাসহ ১২টি ইভেন্টের অধীনে সেরা পারফরমারদের মধ্যে প্রায় ৭২০টি পদক বিতরণ করা হয়।
প্রতিযোগিতার তৃতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আর ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছেন- যৌথভাবে সেরা পুরুষ অ্যাথলেট উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশিফ রেজা ও মাহমুদুন নবী এবং সেরা মহিলা ক্রীড়াবিদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) তামান্না আক্তার।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মেসবাহ উদ্দিন।
এর আগে, গণবিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) ৩-১ গোলে পরাজিত হলে নারী ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিভিন্ন ইভেন্টের অধীনে চ্যাম্পিয়ন দলগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরুষ ফুটবলে ড্যাফোডিলস ইউনিভার্সিটি, মহিলাদের হ্যান্ডবল, মহিলাদের ভলিবল এবং মহিলাদের কাবাডি; নারী ফুটবল, পুরুষ ভলিবল ও পুরুষ কাবাডিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়; পুরুষদের হ্যান্ডবল এবং পুরুষদের বাস্কেট বলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়; মহিলাদের বাস্কেট বলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি; পুরুষদের ক্রিকেটে এআইউবি এবং মহিলাদের ক্রিকেটে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৯ সালে প্রবর্তন করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য প্রস্তুত যশোর