বরগুনায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার পর হত্যার শিকার মন্টু চন্দ্র দাশের ১৮ মাস বয়সী শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে পৌরশহরের কালিবাড়ী কড়ইতলায় মন্টু দাশের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এসময় মন্টু চন্দ্রের স্ত্রীর সঙ্গে তাদের দৈনন্দিন দুঃখ-কষ্টের কথা শোনেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান এসময় নিহতের পরিবারকে বিভিন্ন রকমের ফল ও ঈদ সামগ্রীসহ নগদ টাকা উপহার দেন।
আরও পড়ুন: আজহারকে মুক্তি না দিলে নিজেকে গ্রেপ্তারের আর্জি জামায়াত আমিরের
নিহত মন্টু দাসের দেড় মাসের ছোট শিশু কন্যাটিকে কোলে নিয়ে তিনি বলেন, এই কন্যা শিশুটির বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সকল ধরনের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা আমরা করব। আপনাদের সব রকম সহযোগিতা করার জন্য আমরা আপনাদের পাশে থাকব।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে নেমে নিহত মন্টু দাস ও ধর্ষিতা নন্দিনী দাসের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান।
পরে বরগুনা শহীদ মিনার চত্বরে পথসভায় তিনি বলেন, বরগুনার আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও তার বাবাকে হত্যার এ ঘটনায় মামলার রায় ৯০ দিনের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। কিন্তু সতর্ক করে দিতে চাই, এটা ৯১ দিন হলে আমরা মানব না।
বরগুনা ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবাকে হাড়ানো শিশুটির পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জমায়াত প্রধান।
এ সময় তিনি তাদের মেয়েদের লেখাপড়া এবং সংসারের অন্যান্য খরচের ব্যবস্থা করাপর জন্য কিছু সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এ জন্য মন্টুর স্ত্রী শিখা রানী দাশকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, অ্যাডভোকেট. মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, বরগুনা জেলা জামায়াতের আমির মো. মহিবুল্লাহ হারুনসহসহ অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক, অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত
উল্লেখ্য, ১১ মার্চ রাতে বরগুনা পৌর শহরের কালিবাড়ি স্টাফ কোয়ার্টার দীঘির দক্ষিণ পাশে ঝোপঝাড় থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মন্টু চন্দ্র বরগুনা বাজারের একটি মুরগির দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তার পরিবারে দেড় মাসের এক কন্যা শিশু, চার বছরের এবং ১২ বছরের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।
মন্টুর পরিবারের দাবি, তার মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ এনে মন্টু বরগুনা থানায় মামলা করার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মন্টুর স্ত্রী আরেকটি মামলা করেছেন। অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সৃজীব চন্দ্র রায়, তার সহযোগী কালু ও রফিক কারাগারে আছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।