মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হুদা শ্রীপুর গ্রামে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মন্দির নির্মাণের কথা বলে বাটুল বিশ্বাস নামে এক কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর, জবর দখল ও ৪ নারীসহ অন্তত ৮ জনকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সময় হামলাকারীরা ওই কৃষকের জমিতে থাকা টিনশেড বাড়িটির দরজা-জানালা ভেঙে বাইরে ফেলে দেয়। এদিকে ভাঙচুরে বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ৪ নারীসহ অন্তত ৮ জনকে লাঠি, হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে আহত করে।
আরও পড়ুন: নাটোরে আ’লীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৭, যুবলীগ নেতার বাড়ি ভাঙচুর
আহত ৮ জন হলেন- বাটুল বিশ্বাসের স্ত্রী শেফালী বিশ্বাস ও তার ভাইয়ের স্ত্রী প্রেমা রানী বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাসের স্ত্রী রূপা সেন, প্রহ্লাদ বিশ্বাসের স্ত্রী শিখা বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, মহিদ বিশ্বাস ও শান্তনু বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী কৃষক বাটুল বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস জানান, দুই মাস আগে তার বাবা প্রতিবেশী কাকাতো ভাই দিপংকর বিশ্বাসের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ১৩ শতক জমি কিনে নেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে একই গ্রামের প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, বিধান বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, সুব্রত বিশ্বাসসহ একটি গ্রুপ শাবল, কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের আধা পাকা ঘরে হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, এ সময় তারা এই ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা ৯৯৯ এ কল দিলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে ওই বাড়িটির দরজা-জানালা ও গ্রিল ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
এর আগে ওই বাড়ির সামনের জমিতে একটি পাটকাঠির বেড়া ও উপরে টিন দিয়ে বাঁশের তৈরি একটি মন্দির নির্মাণ করে গ্রামবাসী।
তিনি জানান, গ্রামে মন্দির হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের জমি দখল করে কেন মন্দির তৈরি করতে হবে? মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমরা তিল তিল করে অর্থ সংগ্রহ করে হালের গরু বিক্রি করে জমিটি কিনেছি। এখন গ্রামের কিছু ক্ষমতাশালী মানুষ জোর করে আমাদের জমি দখল করে সেখানে মন্দির ও ক্লাবঘর তৈরি করতে চায়। আমরা বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের বাড়ির মা-বোনসহ অন্তত ৮ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
আরও পড়ুন: বসতবাড়ি ভাঙচুর মামলায় বিআরডিবির চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
এ প্রসঙ্গে ওই জমিতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা এই জমিতে মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে ৭ লাখ টাকা এবং মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর ও স্থানীয় নাকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমুয়ুনুর রশিদ মুহিতের অনুদান মিলিয়ে মোট ৯ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি।