পর্যটনকেন্দ্র
খাগড়াছড়ির পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বেড়েছে পর্যটকদের সমাগম
খাগড়াছড়ির পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের সমাগম বেড়েছে। এতে ক্ষতি পুষিয়ে উঠছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের সুদিন ফেরার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
করোনার সময় থেকেই এই পর্যটন খাতে ধস নামতে শুরু করে। আঞ্চলিক সমস্যাসহ নানা কারণে মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়ে যায় পর্যটন স্পটগুলো। ফলে পর্যটকের অভাবে লোকসানও গুণতে হয় বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের।
দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বেড়েছে পর্যটকের সংখ্যা।
এদিকে খাগড়াছড়ির আলুটিলা, রিছাং ঝর্ণা, জেলাপরিষদ পার্ক ঘুরে দেখা যায়- পর্যটক ভরপুর রয়েছে। পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন পর্যটকরা।
তবে খাগড়াছড়ি ভ্রমণে আসা অধিকাংশ পর্যটক মূলত সাজেক কেন্দ্রিক বেড়াতে আসেন। খাগড়াছড়িতে কম সংখ্যক কয়েকটি পর্যটনস্পট হওয়ায় সাজেক আসা যাওয়ার ফাঁকে স্পটগুলো ঘুরে যান পর্যটকরা।
পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খাগড়াছড়িতে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে নিত্য নতুন পর্যটন স্পট তৈরি করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ইকো-ট্যুরিজমের পাশাপাশি আধুনিকতার মিশেলে তৈরি করতে হবে এসব স্পট। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটবে।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবসায়ী পরিতোষ ত্রিপুরা বলেন, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকের আসা-যাওয়া বেড়েছে। আগের তুলনায় বেচা বিক্রি বেড়েছে। সামনে শিক্ষার্থীদের স্কুল বন্ধ হবে। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসবে। প্রত্যাশা করছি পর্যটক আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তা ও মেডিকেল ক্যাম্প
জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কের দোকানদার্ খুমালি ত্রিপুরা বলেন, কিছুদিন আগে বেচা বিক্রি ছিল না। সারাদিন অলস বসে থাকতে হতো।
এছাড়া এখন পর্যটকের সঙ্গে বেচা-বিক্রিও বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে আরও পর্যটকের সমাগম হবে আশা প্রকাশ করেন খুমালি ত্রিপুরা।
গাড়ি চালক আব্দুল জলিল বলেন, পর্যটক বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। পর্যটক না থাকলে বেকার হয়ে পরেন গাড়িচালক এবং সহকারীরা।
মনটানা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক মো. রুবেল পারভেজ বলেন, সাজেক কেন্দ্রিক পর্যটক বেড়েছে। বেশিরভাগ গাড়ি খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চলে যাওয়ায় খাগড়াছড়ি সদর কেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাচ্ছে।
অরণ্য বিলাসের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রশীদ সাগর বলেন, হোটেলের বুকিং রয়েছে, তবে গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম। এ বছর সরাসরি পর্যটকরা দীঘিনালা চলে যাচ্ছে। এরফলে রাত্রিযাপন কমে যাচ্ছে পর্যটকদের।
খাগড়াছড়ি সাজেক কাউন্টারের লাইনম্যান মো. আরিফ বলেন, প্রতিদিন খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাতায়াত করে ৫০-৬০টি পর্যটকবাহী গাড়ি। এছাড়া ছুটির দিনগুলোতে ৮০-১০০ গাড়ি সাজেক যাতায়াত করছে।
জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কের তত্ত্বাবধায়ক থোয়াইংঅংগ্য মারমা বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৪০০-৫০০ পর্যটক পার্কে আসছেন। ছুটির দিনগুলোতে দ্বিগুণের বেশি পর্যটক হয়। ইতোমধ্যে পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য কিডস জোন রয়েছে।
অনেকেই মনে করেন পাহাড়ে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। সরকারি-বেসরকারি উদ্যেগে এ খাত আরও এগিয়ে যাবে প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: তিন ইউপিডিএফ কর্মী হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ
১ সপ্তাহ আগে
জাফলংয়ে প্রবেশ ফি: ৭ মাসে আয় ৪০ লাখ টাকা
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন জাফলংয়ের জনপ্রিয় ও প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি থেকে গত সাত মাসে ৪০ লাখ টাকা আয় করেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে জাফলংয়ে প্রবেশে চালু করা হয় ফি। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে জনপ্রতি এখন ১০ টাকা ফি দিয়ে টিকিটের মাধ্যমে পর্যটকদের প্রবেশ করতে হয় জাফলংয়ে।
এদিকে, ফি চালুর পর থেকে অনেকেই এর সমালোচনা করেছেন। জাফলংয়ের টিকিট কাউন্টারে বৃহস্পতিবার (৫ মে) পর্যটকদের মারধরের ঘটনার পর আবারও টিকিটের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
আগে পর্যটকরা জাফলং জিরো পয়েন্টে যেতেন বল্লাঘাট এলাকা দিয়ে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন গুচ্ছগ্রাম এলাকা দিয়ে পর্যটক প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদের ওঠানামার সুবিধার জন্য বানানো হয়েছে সিঁড়ি। আর গুচ্ছগ্রামে বিজিবি ক্যাম্পের পাশেই বসানো হয়েছে টিকিট কাউন্টার।
প্রবেশ ফি চালুর বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘গত বছর জেলা পর্যটন কমিটির সভায় ফি চালুর সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এটি কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মীর মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ফি আদায় করে।’
তিনি বলেন, ‘জাফলং পরিষ্কার রাখাসহ পর্যটকদের সেবা দেয়ার জন্য কিছু অস্থায়ী কর্মী রাখা হয়েছে। এই টাকায় ঘণ্টাপ্রতি ৫০ টাকা হিসাবে তাদের বেতন দেয়া হয়। কর্মীর সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। সর্বনিম্ন পাঁচ-ছয়জন থেকে সর্বোচ্চ ৩০ জন কাজ করেন।’
পর্যটকদের ওপর হামলাকারীদের সম্পর্কে তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক বলা হলেও আসলে তারা স্বেচ্ছাসেবক নন। সম্মানির বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। অন্যদের থেকে তাদের আলাদা করার জন্য অ্যাপ্রোন দেয়া হয়েছে।’
পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘১০ টাকার বিনিময়ে আমরা পর্যটকদের কয়েকটি সেবা দেই। পর্যটন এলাকায় ড্রেস চেঞ্জ করার রুম ও টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যটকরা এগুলো বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারেন। সেই সঙ্গে রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবস্থা। এ ছাড়া প্রবেশ ফি দিয়ে পর্যটন এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখারও কাজ করা হয়। টিকিট দেখালে পর্যটকরা সহজে ও নির্ধারিত দামে ফটোগ্রাফার, ট্যুর গাইড ও নৌকার মাঝি পান।’
জমা হওয়া টাকার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘টিকিট ফি থেকে প্রতিদিন সমান টাকা ওঠে না। একেক দিন একেক রকম হয়। আমি দিনে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা আদায় হতে দেখেছি। উপজেলা পর্যটন কমিটি নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। এই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ ফি জমা হয়। ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করেন। এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকা জমা হয়েছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার গোয়াইনঘাট প্রশাসনের নিয়োগকৃত স্বেচ্ছাসেবকরা জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নারী ও শিশুসহ একদল পর্যটককে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুপুর ২টার দিকে টিকিট কেনাকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় উপজেলা প্রশাসনের টোল কাউন্টারে নিযুক্ত কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক।
পড়ুন: জাফলংয়ে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ৫
প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে বিকাল ৫টার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও জাফলং সাব জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক ঘটনাস্থলে যান। পরে হামলাকারী পাঁচ স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। হামলার ঘটনায় আহত সুমন নামের এক পর্যটক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- গোয়াইঘাটের পন্নগ্রামের মৃত রাখা চন্দ্রের ছেলে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস (২১), ইসলামপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো. সেলিম আহমেদ (২১), নয়াবস্তি এলাকার ইউসুফ মিয়ার ছেলে সোহেল রানা, পশ্চিম কালীনগর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও ইসলামপুর রাধানগর গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দীনের ছেলে জয়নাল আবেদীন। তাদেরকে শুক্রবার দুপুরে সিলেটের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার (৬ মে) সকাল থেকে আগামী সাত দিন পর্যটকদের কাছ থেকে কোনো ধরনের টিকিট বাবদ টাকা আদায় করা হবে না। জাফলং সবার জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও (ইউএনও) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্য আগামী সাত দিন জাফলং উন্মুক্ত থাকবে।
পড়ুন: জাফলংয়ে পর্যটকের ওপর স্বেচ্ছাসেবীদের হামলা, আহত ৬
২ বছর আগে
স্বপ্নের ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ নির্মাণ শেষ পর্যায়ে
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম নির্মিত হল স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল (সুড়ঙ্গ সড়ক)। নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্তমান সরকারের অন্যতম এ মেগা প্রকল্প শেষ হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের প্রায় ৭৩ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। করোনাকালেও টানেল নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলেছে। একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি কর্মযজ্ঞ।
টানেলের প্রথম টিউবের ভেতরে গাড়ি চলাচলের জন্য পিচঢালা রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে দ্বিতীয় টিউব তৈরির কাজও শেষ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্ত থেকে পতেঙ্গা প্রান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ এই চ্যানেলের খননকাজ শেষ হয়। পূর্ব ঘোষণা অনু্যায়ী, চ্যানেলটির মুখ খুলে দেয়া হচ্ছে আজ শুক্রবার।আগামী বছরের শেষ নাগাদ বহুল প্রত্যাশার এই টানেলের ভিতর দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু সেতুতে টানেল নির্মাণে সমীক্ষা চলছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই টানেল দিয়ে প্রথম বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করবে। কয়েক বছরের মধ্যে গাড়ি চলাচলের পরিমাণ ১ কোটি ৪০ লাখে পৌঁছবে। এসব গাড়ির প্রায় ৫১ শতাংশ কন্টেইনারবাহী ট্রেইলর, বিভিন্ন ধরণের পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান। বাকি ৪৯ শতাংশের মধ্যে ১৩ লাখ বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস। ১২ লাখ কার, জিপ ও বিভিন্ন ধরনের ছোট গাড়ি।তিন দশমিক ৪০ কিলোমিটার মূল টানেলের সঙ্গে উভয় প্রান্তে পাচঁ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মিত হচ্ছে। নদীর তলদেশে এর গভীরতা হবে ১৮ থেকে ৩১ মিটার। চারলেনের টানেলে দুটি টিউব থাকছে। টানেলের ভেতরে দুটি টিউবে ওয়ানওয়ে গাড়ি চলবে। একটি দিয়ে শহর থেকে আনোয়ারামুখী গাড়ি যাবে, অপরটি দিয়ে আনোয়ারা থেকে শহরমুখী গাড়ি আসবে। একটি টিউব ১০ দশমিক ৮ মিটার বা ৩৫ ফুট চওড়া এবং উচ্চতায় হবে ৪ দশমিক ৮ মিটার বা প্রায় ১৬ ফুট।জানা যায়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আনোয়ারা প্রান্ত থেকে টানেলের দ্বিতীয় টিউব নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথম টিউব থেকে ১২ মিটার দূরে নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতীয় ও শেষ টিউবটি। মাটির ১৮ মিটার থেকে ৪৩ মিটার নিচ দিয়ে যাবে টানেল বোরিং মেশিন। এছাড়া টানেলের শক্ত দেয়াল হিসেবে ২০ হাজারের বেশি সেগমেন্ট স্থাপন করা হবে দুটি টিউবে।
আরও পড়ুন: করোনার মধ্যেই কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের ‘যুগান্তকারী’ সাফল্যচীনের জিয়াংসু প্রদেশের জিংজিয়ান শহরে টানেলের সেগমেন্টগুলো তৈরি হচ্ছে। চীন থেকে সেগমেন্টসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র আনার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে ১০ হাজারের বেশি সেগমেন্ট স্থাপন করে প্রথম টিউব তৈরি করা হয়েছে।কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে সড়ক তৈরির কাজ চলছে। ইতোমধ্যে টানেলের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্ত পর্যন্ত একটি টিউবের নির্মাণ আগেই শেষ হয়েছে। আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আরেকটি টিউবের কাজও গতকাল শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের একটি ইতিবাচক দিক হলো, এর মেয়াদ ও ব্যয় বাড়াতে হয়নি। নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ হচ্ছে। তবে আগেও শেষ হয়ে যেতে পারে।প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, কাজের গতি বাড়াতে জনবল ও যন্ত্রপাতি বাড়ানো হয়েছে। দ্রুতগতিতে চলছে কাজ। প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হচ্ছে। আগামী বছরের শেষ দিকে যাতে টানেল দিয়ে গাড়ি চলাচল করে, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রায় ৭৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে দুই সুড়ঙ্গের খননকাজই ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। সুরঙ্গ খনন শেষ হওয়ায় আনুসাঙ্গিক বাকি কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হবে বলে আশাবাদী তারা।এর আগে গত ৫ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, নির্মাণকাজ শেষে আজ শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাতে বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় চ্যানেলের মুখ খুলে দেওয়া হবে। আগেই টানেলের প্রথম চ্যানেলের মুখ খুলে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যে দুই চ্যানেলেরই নির্মাণকাজই শেষ হবে। এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী বছরের ২২ ডিসেম্বর টানেল চালুর কথা ছিল। এখন মনে হচ্ছে এরও আগে এটা চালু করতে পারব।
আরও পড়ুন: টানেলের মাধ্যমে উন্নয়নের নতুন ধাপে প্রবেশ করল বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রীএদিকে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পে দ্রুতগতিতে চলছে আনোয়ারা অংশের সংযোগ সড়কের কাজ। সড়ক ও টানেলকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার মানুষ। কর্ণফুলীর শিকলবাহা ওয়াই জংশন (ক্রসিং) থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সড়কটি ৬ লাইনে প্রশস্ত হচ্ছে। বর্তমানে দুই লাইনের ১৮ ফুটের সড়কটি হবে ১৬০ ফুট। সাড়ে ১১ কিলোমিটার এই সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ২৯৫ কোটি টাকা।মূলত কর্ণফুলীর তলদেশে বাস্তবায়নাধীন টানেলের সংযোগ সড়ক হিসাবে ব্যবহার ও গাড়ির অতিরিক্ত চাপ সামলানোর জন্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে প্রশস্ত এই সড়ক বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে আনোয়ারা-কর্ণফুলীর চিত্র।আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্ বলেন, দেশের জন্য বঙ্গবন্ধু টালেন বড় প্রকল্প। এটির কাজ শেষ হলে আনোয়ারার মানুষ উপকৃত হবে। তেমনি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষদেরও।তিনি বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বড় পর্যটনকেন্দ্র পারকি সমুদ্র সৈকত। সৈকতের পর্যটকদের জন্য যদি টালেন সড়ক ব্যবহারের জন্য একটি সংযোগ সড়ক করে দেয়া যায়, তবে ঢাকাগামী পর্যটকদের সৈকতে আসা সহজ হবে।
আরও পড়ুন: আগামী জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে: সেতুমন্ত্রী
৩ বছর আগে
গোপালগঞ্জের চার এলাকায় সাত দিনের বিধিনিষেধ
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গোপালগঞ্জের দুটি পৌরসভা ও দুটি ইউনিয়নে বিধিনিষেধ জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার বেলা ৫ টায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন। গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত এলাকাগুলো হলো, জেলার গোপালগঞ্জ পৌরসভা ও সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর পৌরসভা ও কাশিয়ানী উপজেলার কাশিয়ানী ইউনিয়ন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় তৃতীয় দফায় লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ল
জেলা প্রশাসনের ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৮ জুন ভোর ৬ টা থেকে ২৪ জুন রাত ১২ পর্যন্ত গোপালগঞ্জ জেলার দুটি পৌর এলাকায় ও সদর উপজেলার লতিফপুর এবং কাশিয়ানী উপজেলার কাশিয়ানী ইউনিয়নে এ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। এসব এলাকার মধ্যে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, দোকান, শপিং মল সকাল ৭ টা থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রেস্তোরাঁ রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রেস্তোরাঁয় বসে খেতে পারবে না ক্রেতারা। কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৭টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। তবে ফুটপাতে কোন ধরনের দোকান বসাতে পারবে না।
জেলা প্রশাসনের ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিধিনিষেধ চলাকালে ওইসব এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এ ছাড়া এ সময় সব ধরনের পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী সিটিতে আরেক দফা বাড়লো বিশেষ লকডাউন
গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ২ জুন থেকে ১০ জুন জেলায় ৫১৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এর মধ্যে ৯৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। কিন্তুএই সপ্তাহে এই পর্যন্ত ৪৮৬ নমুনা সংগ্রহ করা হয় এর মধ্যে ১৮০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩৭ দশমিক ০৩ শতাংশ। শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের কাছে ঝুকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিধিনিষেধ আরোপ করার জন্য অনুরোধ করলে জেলা প্রশাসন ১৮ জুন থেকে এসব এলাকায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
সিভিল সার্জন জানান, করোনা ভাইরাস শনাক্তের দিক দিয়ে মুকসুদপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি। সেখানে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এরপর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৭ শতাংশ এবং কাশিয়ানী উপজেলায় ২৬ শতাংশ ।
৩ বছর আগে
ভোলার ১৬ চরে সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু
নদীর তলদেশ দিয়ে ভোলার ১৬ চরে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
৪ বছর আগে