এনায়েতুল্লাহ খান
ঢাকায় কিশোর মাহবুবনী: যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বৈরথে ভূ-রাজনীতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে
আগামী ১০ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ‘ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার’ মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। যা বিশ্বের কয়েক বিলিয়ন মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। বিশেষত, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো এর সম্ভাব্য সব ধরনের প্রভাব মোকাবিলায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে কসমস ডায়ালগের সর্বশেষ সংস্করণে মূল বক্তব্য দেয়ার সময় প্রখ্যাত লেখক, কূটনীতিক ও ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ কিশোর মাহবুবনী এসব কথা বলেন।
সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির সাবেক ডিন মাহবুবনী বলেছেন, ‘আপনারা যেখানেই থাকেন না কেন, আপনারা যাই করেন না কেন, আপনাদের জীবন এই ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার দ্বারা প্রভাবিত বা ব্যাহত হবে। আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিতে পারি।’
কসমস গ্রুপের জনহিতকর বিভাগ ‘কসমস ফাউন্ডেশন’ তার চলমান রাষ্ট্রদূতের বক্তৃতা সিরিজের অংশ হিসেবে এই সংলাপের আয়োজন করছে।
কসমস ফাউন্ডেশন, কসমস গ্রুপের জনহিতকর শাখা ‘কসমস ফাউন্ডেশন’ এর বিশিষ্ট বক্তাদের বক্তৃতা সিরিজের অংশ হিসেবে ‘ইমার্জিং এশিয়ান নেশনস ইন গ্লোবাল জিওপলিটিক্স: ইমপ্লিকেশনস ফর বাংলাদেশ’- শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করেছে। যার সভাপতিত্ব করেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
২ বছর আগে
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন অবস্থান কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়: মিলার
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। তিনি বলেছেন,‘ ব্যাপারটা এমন না যে তাদের নির্দিষ্ট কোনো পক্ষে থাকতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন কোনো স্নায়ু যুদ্ধ বা বিভক্তি চাইছে না।’
কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংলাপে মূল বক্তব্য দেয়ার সময় মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেয় তারা কোন সংস্থা বা অংশীদারিত্বে যোগ দেবে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের সফলতা অব্যাহত থাকুক। আমরা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব বাড়াতে চাই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি এটি আমাদের উভয় দেশের জনগণের জন্যই কল্যাণকর হবে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম বৃদ্ধি এই অঞ্চলে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য।’
কসমস গ্রুপের জনহিতকর শাখা কসমস ফাউন্ডেশন রাষ্ট্রদূতদের চলমান লেকচার সিরিজের ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক ভার্চুয়াল এই সংলাপের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। প্রখ্যাত কূটনীতিক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।
আলোচক প্যানেলে ছিলেন বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) বিশিষ্ট ফেলো ও বোর্ড সদস্য সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আনম মুনিরুজ্জামান, কসমস ফাউন্ডেশনের সম্মানিত উপদেষ্টা ইমেরিটাস, সাবেক রাষ্ট্রদূত (অব.) তারিক এ করিম এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।
৩ বছর আগে
বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক নিয়ে কসমস ফাউন্ডেশনের ওয়েবিনার বৃহস্পতিবার
কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের ‘বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে।
কসমস ফাউন্ডেশন, ইউএনবি এবং এর ইউটিউব চ্যানেলের ফেসবুক পেজে প্রিমিয়ার হওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কিউন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেবেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান।
প্রখ্যাত কূটনীতিক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন।
আলোচক প্যানেলে থাকবেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ইয়াংওয়ান কর্পোরেশন এবং কেইপিজেড কর্পোরেশন (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও কিহাক সুং, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারপারসন ড. রুবানা হক, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইফতিখারুল করিম এবং রিসার্চ ফেলো ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর টেররিজম রিসার্চের (বিসিটিআর) প্রধান শাফকাত মুনীর।
আরও পড়ুন: 'ইনসাইড আউট’: শিশুদের জন্য গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী পেইন্টিং ও অরিগামি ওয়ার্কশপ
২০২৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তীকে দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনার একটি সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রদূত লি সংলাপে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে তার পরিকল্পনা শেয়ার করবেন।
১৯৭৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই দেশ রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, উন্নয়ন সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে আসছে।
পড়ুন: কালিদাস কর্মকারের স্মরণে গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী আয়োজন
কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
৩ বছর আগে
বাংলাদেশকে এক কোটি ডোজ টিকা দেবে ইইউ
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের প্রধান রাষ্ট্রদূত রেনসে তিরিঙ্ক জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের জন্য এক কোটি ডোজ করোনা টিকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, টিকা ভাগ করে নেয়ার ব্যাপারে ইইউ যথেষ্ট উদার নয়- এই কথা যুক্তিযুক্ত নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিরিঙ্ক বলেন, ‘আমরা বলতে পারি যে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী যে কর্মতৎপরতার চলছে তার নেপথ্য চালিকা শক্তি হচ্ছে ইইউ। কীভাবে আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে পৌঁছাতে চাই, আসুন আমরা সে বিষয়টিকে অবমূল্যায়ন না করি।’
ইইউ দূত অবশ্য বলেছেন, তারা জানেন যে এই এক কোটি ডোজ টিকা যথেষ্ট নয় এবং আশা করা যাচ্ছে তারা আরও টিকা সরবরাহ করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক: ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় (ওয়েবিনার) মূল বক্তা হিসেবে ইইউ দূত এসব কথা বলেন।
আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান এবং সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
এছাড়া সভায় আলোচক প্যানেলে ছিলেন সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিজিএমইএ'র সাবেক প্রধান ড. রুবানা হক, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জিয়াদি সাত্তার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং কসমস ফাউন্ডেশনের ইমেরিটাস উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।
আরও পড়ুন: নতুন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ‘রোহিঙ্গা ইস্যু’ এজেন্ডায় থাকবে: ইইউ
রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা আরও টিকার ডোজের জন্য চাপ দিতে থাকবেন। যদিও বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একার হাতে নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, তারা টিকা ভাগ করে নেয়ার ক্ষেত্রে ইইউর আরও উদারতা প্রত্যাশা করেন। ইইউ মানবাধিকার নিয়ে অনেক কথা বলে। কিন্তু টিকা ভাগাভাগির বিষয়ে তারা খুব কমই উদার।
কিন্তু ইইউ রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ‘বেশ হতাশাজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই বছরের শেষের দিকে ইইউ এবং এর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুত কোভ্যাক্সের আওতায় করোনার ২০ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা বিভিন্ন দেশে পৌঁছাবে।
অধ্যাপক ইমতিয়াজ টিকা নিয়ে সরকার ও জনগণের মাঝে হতাশা দেখতে পেয়েছেন বলে জানান। এটা যৌক্তিক কারণ ইইউ -এর কাছ থেকে তাদের কথা মতো কিছুই পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, বিষয়টি পাইপলাইনে আছে, কিন্তু এটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।'
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের আরও সক্রিয় ভূমিকা আশা করে ইইউ
তিনি বলেন, ‘আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না, সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন সম্পর্কে শুনেছি, কিন্তু ইইউ থেকে কিছুই পাইনি।’
এই আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক বলেন, করোনা মহামারি এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যু। কারণ একটি দেশ যত দ্রুত তার জনগণকে টিকা দিতে পারবে, তত দ্রুত ওই দেশ সারা বিশ্বে একটি ভাবমূর্তি তৈরি করতে পারবে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে।এখানেই ইইউ’র কমতি রয়েছে।’
অধ্যাপক ইমতিয়াজ আরও বলেন, টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসময় তিনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার শুধুমাত্র একটি উৎসের ওপর বাংলাদেশের নির্ভর করার বিষয়টি স্মরণ করে বলেন, এই একক উৎসের ওপর নির্ভর করার ক্ষেত্রে আমাদের আংশিক দোষ ছিল। যে কারণে পুরো ভারতে টিকা কূটনীতি যখন ভেংগে পড়লো, তখন টিকার এই একমাত্র উৎসও বন্ধ হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
৩ বছর আগে
ঢাকা-টোকিও সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ৫ চ্যালেঞ্জ দেখছেন রাষ্ট্রদূত ইতো
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো দু'দেশের বহুমুখী সহযোগিতার দৃঢ় অংশীদারিত্ব উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য পাঁচটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেছেন,এই পাঁচ চ্যালেঞ্জ হলো- বাংলাদেশ-জাপান কৌশলগত অংশীদারিত্ব উন্নয়ন করা, বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য আরও আকর্ষণীয় করা, জনগণের মধ্যে বিনিময় সম্প্রসারণ, অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা বাড়ানো এবং এই অঞ্চলে ও এর বাইরে বাংলাদেশের সম্মান বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা।
রবিবার কসমস গ্রুপ আয়োজিত এক অনলাইন সংলাপে রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, ‘আমাদের এগিয়ে যাওয়া দরকার। আমি মনে করি আমাদের সম্পর্ক প্রাকৃতিকভাবে প্রতিটি এজেন্ডার মাধ্যমে গভীরতর হবে।’
কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক সংলাপটি আয়োজন করে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও জাপান আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করবে।
সংলাপে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
আলোচক প্যানেলে ছিলেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বিশেষ দূত মো. আবুল কালাম আজাদ, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইউহো, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, টোকিও’র স্যাক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মাসাকা ওহাশি, সাংবাদিক ও লেখক মনজুরুল হক, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক পলিসির ডীন অধ্যাপক তাকাহারা আকিও এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।
রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, ‘দু’দেশের উচিত সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা উপভোগ করা এবং আরও উন্নত করার জন্য সচেতন এবং প্রাণান্তকর চেষ্টা করা। আমাদের নিজেদের সম্পর্কে আত্মতুষ্ট হওয়া উচিত নয়।’
তিনি বলেন, “২০২২ সাল অংশীদারিত্বকে আরও উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য একটি চমৎকার সুযোগ প্রদান করবে এবং আমি আশাবাদী যে দুটি দেশই এই অংশীদারিত্বকে ‘সত্যিকারের কৌশলগত অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করতে পারবে।”
রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথের (বিগ-বি ইনিশিয়েটিভ) অধীনে মানসম্মত অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং যোগাযোগ জোরদারকরণ কেবল বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যই নয়, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও উপকারী হবে।
তিনি বলেন, ‘এই বিগ-বি কেবল বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নয়, সমগ্র বে অব বেঙ্গল অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, ‘জাপানের ভূ-কৌশলগত ভূমিকা ও অবস্থান এবং বাংলাদেশের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি এখনও বিশ্বস্ত রয়েছে, যা বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্ব কেবল পারস্পরিক স্বার্থের জন্য নয়, মূলত খাঁটি সহানুভূতিরই একটি অংশ।’
প্রখ্যাত জাপানি চিত্রশিল্পী হোকুসাইয়ের আঁকা ফুজি পাহাড়ের ৩৬টি দৃশ্য বাংলাদেশ-জাপানের সর্ম্পককে মনে করিয়ে দেয় বলে এনায়েতুল্লাহ খান উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, জাপান বাঙালির অন্তরে জায়গা করে নিয়েছে এবং এই সম্পর্কের ভিত্তি বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলোতেই অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
এনায়েতুল্লাহ খান আরও বলেন, এশিয়া মহাদেশের ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় মিল রয়েছে।
তিনি বলেন, উভয় পক্ষই সামনের দিনগুলোতে এই সম্পর্ক থেকে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র এবং জনগণের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সুফল পাওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে পারে।
ড. ইফতেখার আশা প্রকাশ করেন যে দু'দেশই তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে একসাথে কাজ করে যাবে। পররাষ্ট্র বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ বলেন, জাপান সর্বদা বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।
ড. ইফতেখার আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে উঠে আসার ক্ষেত্রে জাপান চমৎকার বাণিজ্যিক অংশীদার। তিনি বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমি স্পষ্টতই বলতে পারি যে বাংলাদেশ এখন যেখানে পৌঁছেছে তার একটি বড় কারণ জাপান সর্বদা আমাদের পাশে রয়েছে।’
ড. ইফতেখার বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছাড়াও জাপান বরাবরই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের তহবিল বাংলাদেশের জন্য সহজতর করেছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০১৪ সালে শুরু হওয়া পিপিইডি (পাবলিক-প্রাইভেট ইকোনমিক ডায়লগ) জাপানের সহযোগিতায় বাংলাদেশের উন্নয়নে এক নতুন যুগের ভিত্তি।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে প্রায় ৮০টি জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে ৩৪০টিরও বেশি জাপানি কোম্পানি। পিপিইডি অনুসরণ করেই এই অর্জন এসেছে।
আজাদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা যে পতাকা বহন করছি, জাপান এবং বাংলাদেশের একই পতাকা রয়েছে, সে যাত্রা আরও ত্বরান্বিত হবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে, জাপানের মতো ঘনিষ্ঠ বন্ধু সর্বদা বাংলাদেশের সাথে থাকলে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার গতি ত্বরান্বিত হবে।
হায়াকাওয়া ইউহো বলেন, দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে জাইকা বাংলাদেশের উন্নয়নে কার্যকর সহযোগিতা দেবে। তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে জাইকা বিশেষ অংশীদার হিসেবে সবসময় পাশে থাকবে। বাংলাদেশের জনসাধারণের বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।’
পড়ুন: কসমস সেন্টারে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে প্রদর্শনী দেখলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত
তিনি আরও বলেন, জাইকা অন্যান্য মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সাথে পরিবেশগত উন্নতি, উচ্চশিক্ষা, বয়স্ক সমাজের জন্য প্রস্তুতি, প্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়তা, শিল্প বৈচিত্র্যকরণ এবং বেসরকারি বিনিয়োগ একত্রিতকরণের মতো ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করে যাচ্ছে।
ইউহো বলেন, ডিজিটাল রূপান্তরকে কাজে লাগানোর জন্যও আমাদের সহযোগিতা বাড়াতে হবে। আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশেও এই নতুন ক্ষেত্রে সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি জাপানের প্রতি মুগ্ধ, কারণ দেশটি সর্বদা বাংলাদেশের বন্ধু। তিনি বলেন, ‘জাপান শুধুমাত্র সেতুর মতো অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়, বাংলাদেশে দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রেও অসামান্য ভূমিকা পালন করে আসছে।’
সাবেক এই গভর্নর বলেন, জাপান তহবিল দেয়ার পাশাপাশি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে বাংলাদেশের মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলতেই হবে যে কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ করে কুমিল্লা একাডেমি এবং অন্যান্য অনেক উপায়ে জাপান প্রচুর অবদান রেখেছে। এটি যথেষ্ট পরিমাণে সহায়তা। শুধু আর্থিক দিক থেকে এই অবদানগুলো পরিমাপ করতে পারবেন না।’
আর্থিক সহায়তার বিষয়ে সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘জাপান সব ঋণকে অনুদানে পরিণত করে একটি দুর্দান্ত কাজ করে। এটি কেবল আমাদের সেতু এবং অবকাঠামো তৈরি করতে সহায়তা করছে না বরং আমাদের অবস্থানকেও সমৃদ্ধ করছে ।’
বঙ্গোপসাগর এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অঞ্চলে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নতুন ধরণের কূটনীতির মাধ্যমে তার অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি লক্ষ্য করা উচিত। তিনি বলেন, ‘জাপান এবং বাংলাদেশের মধ্যে কারিগরি ও সামাজিক উন্নয়নের উভয় দিকে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।’
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এখনও নিম্নপর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘এটি বিকেন্দ্রীকরণ ও উন্নত করা উচিত। জাপান এ ক্ষেত্রে আমাদের সহায়তা করতে পারে কারণ আমি তাদের হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা দেখেছি।’
অধ্যাপক ওহাশি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে এনজিও- জনগণ পর্যায়ে সহযোগিতা এবং বিনিময় প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, সর্বজনীন মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য নিজ নিজ দেশে সুশীল সমাজের উপযুক্ত স্থান নিশ্চিত করতে হবে।
পড়ুন: গ্যালারি কসমসের মাসব্যাপী ভার্চুয়াল চিত্র প্রদর্শনী ‘দ্য ব্ল্যাক স্টোরি’ শুরু
মনজুরুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে জাপানের সম্পর্ক এই অর্থে অনন্য যে এই বন্ধন কখনই বিতর্কিত হয়নি। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সফরের পর দু'দেশের সম্পর্কে এক নতুন মাত্রা পেয়েছিল। আমরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হলেও জাপানের সাথে এক সাথে কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছি।’
অধ্যাপক তাকাহারা আকিও আশা প্রকাশ করেন যে জাপান ও বাংলাদেশ এই অঞ্চলে আরও বেশি আকর্ষণীয় সম্পর্ক তৈরি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এটি সম্ভব। এই সংলাপ পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং আমাদের ভালো সহযোগিতার ভিত্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক অবদান রাখবে।
তারিক এ করিম বলেন, ‘আমরা প্রায় একই অবস্থানে আছি। জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে একটি কঠিন জায়গায় রয়েছে। আমরাও ভারত এবং চীন এবং এখন দুটি ন্যারেটিভের মধ্যে: ইন্দো প্যাসিফিক এবং বিআরআইয়ের মধ্যে একটি কঠিন জায়গায় আছি।’
সাবেক এই কূটনীতিক জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে উভয়ের সাথে সুসম্পর্ক এবং উভয়ের সাথে সক্রিয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনও দ্বন্দ্ব দেখতে পান না। তিনি বলেন, তাদের মূলত পরবর্তী ১০ বছর বা ২৫ বছরের দিকে নজর দেয়া উচিত এবং তাদের পরিপূরকতা কোথায় এবং কীভাবে তারা এই পরিপূরকগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে এবং গড়ে তুলতে পারে তা চিহ্নিত করতে হবে।
কসমস ফাউন্ডেশনের এই অনুষ্ঠানটি এর আগে ‘অ্যাম্বাসেডরস লেকচার সিরিজ’ নামে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতো। মহামারির কারণে এখন অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে এ জাতীয় ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং ইস্যুতে গঠনমূলক আলোচনার জন্য কসমস ফাউন্ডেশনের এ জাতীয় আরও ওয়েবিনার আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
৩ বছর আগে
মাসব্যাপী ভার্চুয়াল চিত্র প্রদর্শনী ‘দ্য ব্ল্যাক স্টোরি’ রাতে শুরু
বিশ্বব্যাপী ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের আলোকে ‘দ্য ব্ল্যাক স্টোরি’ শীর্ষক মাসব্যাপী ভার্চুয়াল চিত্র প্রদর্শনী বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হবে।
৩ বছর আগে
গ্যালারি কসমসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘটনাবহুল জীবন প্রদর্শিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে কসমস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় শুক্রবার কসমস আতেলিয়ার৭১-এর সাথে যৌথভাবে গ্যালারি কসমস আয়োজন করেছে ‘শেখ হাসিনা: অন দ্য রাইট সাইড অব হিস্ট্রি’ শীর্ষক আর্ট ক্যাম্প।
৪ বছর আগে