পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালির উৎসব আর পান্তা-ইলিশ। প্রতিবছর নববর্ষ ঘিরে ইলিশের বাজার থাকে জমজমাট। কিন্তু এবার চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে ছিল একেবারেই ভিন্ন চিত্র।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ বিক্রিতে নেই কোনো জোয়ার।
ব্যবসায়ীরা মাছ সাজিয়ে বসে থাকলেও ক্রেতা ছিলেন হাতে গোনা। দাম তুলনামূলক কম হলেও ইলিশ বিক্রি হয়নি বললেই চলে— ফলে চরম হতাশায় ভুগছেন বিক্রেতারা।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের মাছ বাজারে দেখা যায়, মাত্র চারজন বিক্রেতা ইলিশ বিক্রির চেষ্টা করছেন। তাদের একজন বলেন, ‘অন্যান্য বছর পহেলা বৈশাখের দুই থেকে তিন দিন আগেই ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকত। হুড়োহুড়ি লেগে যেত। এবার মানুষ আসছেই না, আগ্রহও নেই।’
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের দাম তুলনামূলকভাবে ক। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এরপরও বিক্রিতে একেবারেই মন্দা।
একজন বিক্রেতা জানালেন, গত বছর এই সময়ে দিনে ২০ থেকে ৩০ কেজি বিক্রি হতো। এবার দিনে ৫ কেজিও বিক্রি হচ্ছে না। দাম কমিয়েও লাভ হচ্ছে না।
ইলিশ কিনতে আসা শাহারিয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাই। এবার বাজারে এসে দেখি মাছ কম, আর দাম বেশি। মাঝারি সাইজের ইলিশের দাম চাচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। পরিবারের অন্য খরচ সামলে ইলিশ কেনা কঠিন। তাছাড়া ইলিশের স্বাদ নিয়েও অভিযোগ আছে। আগের মতো সুস্বাদু না। একটিমাত্র মাছ কিনেছি ৬০০ টাকায়, বাচ্চারা খেতে চেয়েছে তাই।’
আরও পড়ুন: ১১ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি হবে সৌদি আরব ও আমিরাতে
মাছ ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে ইলিশ বিক্রি করি। এই সময়টায় ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এবার সেই চিত্র নেই। দাম কমিয়েও লাভ হচ্ছে না। কেউ বলছেন মাছের স্বাদ নেই, কেউ বলছেন দাম বেশি। বৈশাখে ইলিশ বিক্রি না হওয়ায় আমরা খুবই হতাশ।’
চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের নিচের অংশে বাজার করতে আসা শিউলি আক্তার নামের এক চাকরিজীবী নারী বলেন, ‘ছুটির দিনে বিশেষ রান্না করব বলে বাজারে এসেছি। তবে পান্তা-ইলিশে আমাদের পরিবারের তেমন আগ্রহ নেই। বাচ্চারাও খেতে চায় না, তাই আয়োজন করিনি।’
বিক্রেতারা বলছেন, চুয়াডাঙ্গায় এবারের বৈশাখে ইলিশ বিক্রির বাজার ছিল একেবারেই মলিন।