মধ্যপ্রাচ্য
মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হার অনেক কম এবং দিন দিন পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটছে।’
উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে মূলত আলোচনা হয়েছে মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে। মানবাধিকার ইস্যুতে আমরা যেন তাদের সহযোগিতা করি, তারা এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছে। তাছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উত্তরণ ও বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের কাজেও তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: যানজট নিরসনে রাস্তা ও পার্কিংয়ের স্থান বাড়ানোর নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
তিনি বলেন, মানবাধিকার প্রতিনিধিদল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের পাঠানোর ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে যাচাই-বাছাই ও স্ক্রিনিং করে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছে। তবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ যে ভালো পারফর্ম করছে, সে বিষয়ে তারা প্রশংসা করেছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া পুলিশ সংস্কার কমিশনে মানবাধিকার সংরক্ষণের বিষয়টি যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা আমাদের বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষী সুরক্ষা ও ভিকটিম সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছি। যদিও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে আমাদের সাহায্য করছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এটি অনেক কম।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে সহিংস পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আরও কিছু রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
সেজন্য জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণে আমরা চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।
ভলকার তুর্কের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, জেনেভায় অবস্থিত অফিস অব দ্য ইউএন হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের (ওএইচসিএইচআর) এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন, মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি, মানবাধিকার কর্মকর্তা লিভিয়া কোসেঞ্জা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম, বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ৩২ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
৩ সপ্তাহ আগে
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ল যুদ্ধের ঝুঁকি
চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের প্রতিশোধ নিতে ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
ইরানের রাজধানী তেহরানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের এই হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার সময় পরস্পর চিরশত্রুদের সর্বাত্মক যুদ্ধের কাছাকাছি ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। যেখানে গাজার হামাসসহ ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ ইতোমধ্যেই ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শনিবার বলেছে, তারা ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়েছে। তবে পারমাণবিক বা তেল স্থাপনাগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি বলে দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে চলমান অভিযান নিয়ে কথা বলেছেন ওই কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: গাজার স্কুলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি শনিবার এক ভিডিওতে বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবর থেকে ইরান ও এ অঞ্চলে তাদের সমর্থিত বাহিনী ইসরাইলের ওপর অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ইরানের মাটি থেকে সরাসরি হামলা অন্যতম। বিশ্বের অন্য সব সার্বভৌম দেশের মতো ইসরায়েল রাষ্ট্রেরও জবাব দেওয়ার অধিকার ও কর্তব্য রয়েছে বলে জানান তিনি।’
প্রাথমিকভাবে, ইরানের ১ অক্টোবরের হামলার প্রতিক্রিয়ার জন্য ইসরায়েলের হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেল স্থাপনাগুলো সবই দেখা হয়েছিল। তবে অক্টোবরের মাঝামাঝি ইসরায়েলের কাছ থেকে বাইডেন প্রশাসন আশ্বাস পায় যে তারা এ জাতীয় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানবে না।
তেহরানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে স্বীকার করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এছাড়া কিছু শব্দ শহরের আশপাশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে এসেছে বলে জানিয়েছে।
তবে সংক্ষিপ্ত উদ্বৃতি ছাড়া ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি এবং এমনকি তেহরানের একটি সবজি বাজারে লোকজনের ট্রাক লোড করার লাইভ ফুটেজও দেখিয়েছে।
তেহরানের এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, অন্তত সাতটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাসিন্দা কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩ গণমাধ্যমকর্মী নিহত
তেহরানের লোকজন বিস্ফোরণের শব্দের সঙ্গে সঙ্গে আকাশে আগুনের আভাস দেখতে পাচ্ছিল। অন্যান্য ফুটেজে দেখা গেছে, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র আকাশের দিকে ছুটছে এবং অন্যান্য বিস্ফোরণ ঘটছে।
ইরান শনিবার ভোরে দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফ্লাইট-ট্র্যাকিং ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে বাণিজ্যিক বিমান সংস্থাগুলো ইরান এবং ইরাক, সিরিয়া এবং লেবাননের আকাশ এড়িয়ে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় আনা হয়। গাজা ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলের হামলায় হামাস ও হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্ব ইসমাইল হানিয়া ও হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধাদের পৃথক না করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এদিকে লেবাননের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় তিন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: হিজবুল্লার হামলায় দক্ষিণ লেবাননে ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
৩ সপ্তাহ আগে
মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় জাহাজে হুথিদের হামলা বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
লোহিত সাগরে জাহাজে সব ধরনের হামলা বন্ধ করতে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) অনুমোদন দেওয়া ওই প্রস্তাবে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার বিষয়ে জরুরিভাবে সমাধানের আহ্বানও জানানো হয়।
তবে গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীরা এ হামলা চালাচ্ছে- এমন কোনো দাবি প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়নি।
লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে হুথিদের হামলা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মাসিক প্রতিবেদনের শর্ত বাড়িয়েও ১২-০ ভোটে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। তবে রাশিয়া, চীন ও আলজেরিয়া ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনের হুদেইদায় মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান হামলায় নিহত ১৬
হুথিরা বলছে, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ রুট দিয়ে জাহাজ চলাচল ব্যাপকভাবে কমে গেছে। গাজা উপত্যকায় যতদিন যুদ্ধ চলবে ততদিন জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে।
প্রস্তাবে হুথিদের অব্যাহত হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। আর বিদ্রোহীরা বলছে, তাদের হামলার উদ্দেশ্য গাজায় ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটানো। প্রস্তাবে ‘আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং সামুদ্রিক সুরক্ষা ব্যাহত করার ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বসহ মূল কারণগুলো সমাধানের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের অতর্কিত হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। আর গাজা -ইসরায়েল যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হুথিরা নৌপথে ৬০টিরও বেশি জাহাজ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। নভেম্বর থেকে বিদ্রোহীদের হামলায় চার নাবিক নিহত, একটি জাহাজ জব্দ এবং আরও দুটি ডুবে গেছে।
আরও পড়ুন: লোহিত সাগরে হুথিদের ৪টি নৌকা ও ২টি ড্রোন ধ্বংস করার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
হুথিদের দাবি, তারা ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে। তবে যেসব জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই সঙ্গে ইরানসহ ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই।
বিদ্রোহীদের মতে, হুথিদের হামলার প্রতিক্রিয়ায় জানুয়ারি থেকে হামলা হুথিদের লক্ষ্য করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান চালানো হয়েছে। ধারাবাহিক হামলার অংশ হিসেবে মে মাসের ৩০ তারিখের হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত এবং ৪২ জন আহত হয়েছেন।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেন গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সেসময় হুথিরা উত্তর ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয়। ফলে রাজধানী সানা থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার পালাতে বাধ্য করে। পরের বছর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারি বাহিনীর সমর্থনে হস্তক্ষেপ করে। একপর্যায়ে এই সংঘাত সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে প্রক্সি যুদ্ধে রূপ নেয়।
যদিও ২০২২ সালে ছয় মাসের যুদ্ধবিরতির পর থেকে লড়াই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে এই যুদ্ধের ফলে আরব অঞ্চলের দরিদ্রতম দেশটিকে ধ্বংস করে ফেলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।
বৃহস্পতিবারের প্রস্তাবটি গত ১০ জানুয়ারি গৃহীত একটি প্রস্তাবের ফলো-আপ রেজোলিউশন। এতে হুথিদের হামলার নিন্দা ও অবিলম্বে হামলা বন্ধের দাবি জানানো হয়। ‘লোহিত সাগর এবং বিস্তৃত অঞ্চলে পরিস্থিতির আরও অবনতি এড়াতে সতর্কতা ও সংযমের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
বৃহস্পতিবারের ভোটের পর প্রস্তাবটি উত্থাপনকারী যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেন, হুথিদের হামলা 'আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।' এটি একটি 'বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ' এবং এর 'বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে পরিষদ আবারও হুথিদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। ‘অবিলম্বে এই হামলা বন্ধ করুন।’
আরও পড়ুন: গাজায় আবারও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী
তিনি হুথিদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রস্তাবটি ইয়েমেনের স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করে এমন হুথি ও অন্যদের উপর ২০১৫ সালের জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে সব দেশকে মনে করিয়ে দেয়।
রাশিয়ার উপরাষ্ট্রদূত আন্না ইভস্টিগনেভা বলেছেন, মস্কো লোহিত সাগর এবং ইয়েমেন সংলগ্ন অন্যান্য জলসীমায় নৌ চলাচলের নিরাপত্তাকে সমর্থন করেন। তবে তিনি অভিযোগ করেছেন যে ‘তথাকথিত মার্কিন জোট’ হুথিদের উপর তার আক্রমণকে বৈধতা দিতে জানুয়ারির প্রস্তাবটি ব্যবহার করছে।
ইভস্টিগনেভা বলেন, 'আমরা জোটের সব অংশগ্রহণকারীকে অবিলম্বে অবৈধ হামলা বন্ধ করার এবং ইয়েমেনসংলগ্ন জলসীমায় উত্তেজনা কমাতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
জাতিসংঘে চীনের উপরাষ্ট্রদূত গেং শুয়াং বলেছেন, বেইজিং হুথিদের বারবার বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু জানুয়ারিতে তারা ভোটদানে বিরত থেকেছে। কারণ, প্রস্তাবের কিছু মূল উপাদান 'নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনতে পারে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।’
তিনি ইয়েমেনের বিরুদ্ধে 'নির্দিষ্ট কিছু দেশের' পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, যারা কেবল বেসামরিক লোককে হত্যা করেনি বরং অবকাঠামোই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সেই সঙ্গে লোহিত সাগরে নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলেছে।’
গেং বলেন, ‘গাজায় দ্রুত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ইয়েমেন ও লোহিত সাগরের পরিস্থিতি শান্ত করতে সহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলের ‘যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা’ হামাসের প্রত্যাখ্যান
৪ মাস আগে
মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে ৩ দেশ সফরে প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
মধ্যপ্রাচের শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও সাময়িক সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও ওমান সফরে গিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী শুক্রবার (২৪ মে) সকালে ৭ দিনের এই সফরে যান।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনার কাজ করা হচ্ছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সফরে প্রতিমন্ত্রী দুবাইয়ে বেশ কয়েকটি পৃথক সভা ও বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী দুবাইয়ের বিজনেস কাউন্সিলের মেম্বারদের (সিআইপি) সঙ্গে সভা করবেন।
এছাড়া কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে সভা করার কথা রয়েছে তার।
এছাড়া প্রতিমন্ত্রী শনিবার (২৫ মে) দুবাই দূতাবাস আয়োজিত রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ এবং সিআইপি পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
প্রতিমন্ত্রী সোমবার (২৭ মে) কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলী বিন সাঈদ বিন সামিখ আল মারির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
তিনি কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করবেন। এছাড়াও বাংলাদেশের কর্মী ও কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) প্রতিমন্ত্রী ওমানের শ্রমমন্ত্রী ড. মাহাদ বিন সাঈদ বিন আলী বউইনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়াও তিনি ওমানে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কমিটির সঙ্গে সভায় মিলিত হবেন।
এ সফরে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম ও প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মামুনুর রহমান তার সফর সঙ্গী হবেন।
প্রতিমন্ত্রী আগামী ৩১ মে দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে-বিদেশে কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে কাজ করছে সরকার: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
ঈদের ১১ দিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
৫ মাস আগে
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানি প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনাটি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অঞ্চলে ইরানের বেশ গভীর ও বিস্তৃত প্রভাব রয়েছে।
গত কয়েক দশক ধরে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। যার ফলে এই দেশগুলো শক্তি প্রদর্শন করতে এবং ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের কট্টর শত্রু যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের হামলা প্রতিহত করতে পারে।
গত মাসে সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলায় দুই ইরানি জেনারেল ও পাঁচ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার জবাবে রাইসি ও সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নেতৃত্বে ইসরায়েলে ইরানের শত শত ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে।
আরও পড়ুন: ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর গভীর শোক
অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জর্ডান এবং অন্যান্যদের সহায়তায় ইসরায়েল প্রায় সব হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।
কিন্তু জবাবে ইরানের ইস্পাহান শহরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা রাডার সিস্টেমের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এই হামলা একটি সতর্ক বার্তাই ছিল বলা যায়।
বছরের পর বছর ধরে দুই পক্ষের মধ্যে গোপন অভিযান ও সাইবার হামলার মতো আড়ালে যুদ্ধ চললেও গত এপ্রিলে গোলাগুলি ছিল তাদের প্রথম সরাসরি সামরিক সংঘাত।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধে ইরানের অন্যান্য মিত্ররাও জড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে হামলা-পাল্টা হামলা বড় এক যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যার কারণে রবিবারের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মতো অপ্রত্যাশিত মারাত্মক ঘটনা ঘটতে পারে।
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। তেহরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইসরায়েলকে ধ্বংসের শপথ নেওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ইরানকে সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখে আসছে ইসরায়েল।
অন্যদিকে ইরানও নিজেকে ইসরায়েলি শাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দেখে এবং দেশটির শীর্ষ নেতারা বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
আরও পড়ুন: ইরানের অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হলেন মোহাম্মদ মোখবার
কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত রাইসি যিনি খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি ছিলেন তিনি গত মাসে ইসরাইলের সমালোচনা করে বলেন, 'ইহুদিবাদী ইসরাইল ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, 'প্রথমত দখলদারদের বিতাড়িত করতে হবে, দ্বিতীয়ত, তারা যে ক্ষতি করেছে তার মূল্য আদায় করতে হবে এবং তৃতীয়ত, অত্যাচারী ও দখলদারকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
ধারণা করা হয়, ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে কয়েক বছর ধরে ইসরায়েল অসংখ্য হামলা চালিয়েছে।
তবে রবিবারের হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইসরায়েলের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
ইরান বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছে। হামাসের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা, যা গাজা যুদ্ধের সূত্রপাতের কারণ। তবে এর সঙ্গে হামলায় ইরান সরাসরি জড়িত ছিল এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইরানের নেতারা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আসছেন। এ অঞ্চলে তাদের মিত্ররা অনেক দূর এগিয়েছে।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননের উগ্রপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই দুই পক্ষের মধ্যে হামলা চলছে, যার ফলে উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত এই সংঘাত পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়নি তবে সেটা উভয় দেশের জন্যই বিপর্যয়কর হবে।
ইরানের আরেক মিত্র ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলকে প্রতিহত করার নামে বারবার আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এক্ষেত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে আপাত সম্পর্ক নেই এমন জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করেও হামলা চালায় তারা। সেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জাহাজও পাল্টা হামলা চালায়।
শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, ইরান বিশ্বের অন্য অঞ্চলগুলোতেও প্রভাব বিস্তার করেছিল।
আরও পড়ুন: ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় এ পর্যন্ত যা জানা গেল
ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ করে আসছে যে, শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে ইরান পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ করছে।
বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ৯০ শতাংশের কাছাকাছি অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য।
জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার ক্যামেরা ও পরিদর্শকদের নিষিদ্ধ করেছে ইরান। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বরাবরই শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে বলে দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যরা মনে করে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তাদের সক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ছিল।
ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হলেও তাদের কাছে এ ধরনের অস্ত্র থাকার কথা কখনোই স্বীকার করেনি।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর ইরান রাশিয়ার প্রধান মিত্র হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছে। ইউক্রেনের শহরগুলোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো বিস্ফোরক ড্রোনগুলো ইরানের সরবরাহ করা এমন অভিযোগ এসেছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাইসি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরান এ ধরনের অস্ত্র সরবরাহ করেনি।
ইরানি কর্মকর্তারা ড্রোন সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করলেও মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধে ড্রোনের ব্যাপক ব্যবহারই বলে দেয় যুদ্ধ শুরুর পর এই অস্ত্রের সরবরাহও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: ইরানের প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লাশ উদ্ধার
৬ মাস আগে
সৌদি আরবের জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জেদ্দায় ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
আগস্ট মাস থেকে প্রবাসী ও শ্রমজীবী বাংলাদেশিদের উন্নত যাত্রীসেবা দিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হয়েছে ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস
সপ্তাহে প্রতিদিন ৪৩৬ আসনের বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ফ্লাইট শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে দুইটি এয়ারবাসসহ মোট ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে।
রাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরালো করতে বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস-বাংলা ঢাকা-জেদ্দা রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিযোগিতামূলক ভাড়া ও যাত্রীদের পছন্দ অনুযায়ী সময়কে প্রাধান্য দিয়ে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিকল্পনা সাজাচ্ছে।
বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সব রুট ছাড়াও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, মাসকাট, দোহা, মালে, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, চেন্নাই ও কলকাতা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
আরও পড়ুন: আবুধাবিতে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরু
১৯ এপ্রিল থেকে চেন্নাই রুটে বাড়ছে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট
৬ মাস আগে
ওমান সাগরে নেমে ২ প্রবাসী ভাইয়ের মৃত্যু
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান সাগরে নেমে চট্টগ্রাম ফটিকছড়ির প্রবাসী দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে সাগরের পানিতে ভাসমান অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করেছে ওমান রয়েল পুলিশ।
নিহতরা হলেন- উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভাধীন ৪ নং ওয়ার্ডের চাঁদগাঁও পাড়ার মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে আব্বাস (২৫ ) ও আজাদ (২০)। পরিবারে ছয় ভাইয়ের মধ্যে আব্বাস দ্বিতীয় আজাদ চতুর্থ। তারা অবিবাহিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিকভাবে তারা ওমানের হামিরিয়া এলাকায় বসবাস করছেন। কয়েকমাস পূর্বে দেশে তাদের বাবা মারা গেলে পরিবারের সবাই দেশে আসে। সম্প্রতি মাকে রেখে আব্বাস ও আজাদ ওমান চলে যান।
সোমবার স্থানীয় সময় রাত তিনটার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে সাগর পাড়ের শিফা এলাকায় আড্ডা দিতে যান তারা। সেখানে দুই ভাই সাগরে গোসল করতে নামলে পানিতে তলিয়ে যায়। সঙ্গে থাকা বন্ধুরা খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। ভোরে পুলিশ এসে পানি থেকে দুই জনের লাশ উদ্ধার করে।
নাজিরহাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহাজাহান নিহত দুই ভাইয়ের পরিবারের বরাতে বলেন, দুই ভাই দীর্ঘদিন পরিবারসহ ওমানের হামিরিয়ায় বসবাস করেন। রবিবার রাতে দুই ভাই পাঁচ বন্ধু মিলে মাস্কাট জেবল সিফা সাগরে বেড়াতে যান। সবাই মিলে সাগরে নামলে জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন দুই ভাই।
তিনি আরও বলেন, রাতে খোঁজাখুঁজি করে না পেলেও সোমবার সকালে ওমান রয়েল পুলিশের একটি দল দুই ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে। বর্তমান তাদের লাশ ওমানের রাজধানীর কুরুম রয়েল পুলিশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চৌগাছায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছেলে নিহত, বাবা আহত
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গৃহবধূর মৃত্যু
১ বছর আগে
বিশ্ব করোনা: আক্রান্ত বেড়ে ৬২ কোটি ৫৫ লাখ ছাড়াল
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ কোটি ৫০ লাখ অতিক্রম করেছে।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪২৫ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব করোনা: মৃত্যু ৬৪ লাখ ২০ হাজারের কাছাকাছি
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫৫জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫০ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে শুক্রবার পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৫ হাজার ১৪৯জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ৭৪৫ জনে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব করোনা:মৃত্যু ৫৩ লাখ ১১ হাজার
বিশ্ব করোনা: মৃত্যু ৫৩ লাখ ছুঁই ছুঁই
২ বছর আগে
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সমাচার: গোল্ডেন ভিসা ও গ্রিন ভিসা
শুধু প্রবেশাধিকার নয়; সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ভিসা মানে কাজের সুব্যবস্থা এবং পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবিধা। চাকরি, বিনিয়োগ, উদ্যোক্তা, শিক্ষা এবং জীবনধারণের জন্য আদর্শ গন্তব্য হয়ে ওঠার সুদূরপ্রসারী প্রকল্প নিয়ে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি।
বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের জনসাধারণ দেশটিতে প্রবেশ করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে সফল হচ্ছে। সেই সুযোগ-সুবিধা এবার যেন আরও বিস্তৃত হলো বিশ্ব জুড়ে মেধাবী শ্রেণির জন্য। ২০২২ এর ৩ অক্টোবর থেকে ইউএইর গোল্ডেন ভিসার ক্যাটাগরি আরও বৃদ্ধি করা হবে। পাশাপাশি নতুনভাবে ইউএই গ্রিন ভিসা চালু হচ্ছে।
সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টিকারি ইউএই ভিসা নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা
ইউএই গোল্ডেন ভিসা প্রকল্প
এই ভিসার মাধ্যমে মেধা সম্পন্ন বিদেশিরা ১০ বছর পর্যন্ত ইউএইতে বসবাস, চাকরি ও অধ্যয়ন করতে পারেন। এই রেসিডেন্সি প্রকল্পটি পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং এ ভিসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে বাছাই করা হয়। এবার এর আওতাভুক্ত হবে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ। নতুন বিভাগ সম্প্রসারণের জন্য বাড়বে আবেদনকারী মেধা শ্রেণি। নতুন সংযোজনের মধ্যে রয়েছে পেশাদার, বিশেষজ্ঞ এবং ব্যতিক্রমী প্রতিভাধর শ্রেণি।
নতুন প্রকল্পে পর্যটক, ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী, চাকরিপ্রার্থী, বন্ধুবান্ধব এবং দেশে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক ইউএইর বাসিন্দাদের আত্মীয়দের থাকার জন্য অতিরিক্ত প্রবেশের অনুমতি যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের মেডিকেল ভিসা: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ভিসা প্রসেসিং ফি
ইউএই গোল্ডেন ভিসার মেয়াদ ও অন্যান্য সুবিধা
→ ছয় মাসের মধ্যে একাধিকবার ইউএইতে এন্ট্রির অনুমতি থাকে। এরপর রেসিডেন্সি পারমিট ইস্যু করা হয়
→ আবাসিক ভিসা ১০ বছরের জন্য বৈধ এবং পুনঃনবায়নযোগ্য
→ যেকোনো সময় ধরে ইউএইর বাইরে থাকা যায়; এমনকি এতে ভিসা বাতিলও হয় না
→ স্বামী/স্ত্রী ও যে কোনো বয়সের সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের স্পন্সর করা যায়
→ যে কোনো সংখ্যক গৃহকর্মীকে স্পনসর করা যায়
→ গোল্ডেন ভিসাধারী মারা গেলে ভিসার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার পরিবারের লোকেরা ইউএইতে থাকতে পারেন|
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মুক্ত দেশের তালিকা ২০২১
ইউএই গোল্ডেন ভিসা লাভের যোগ্যতা
বিশ্বের সেরা প্রতিভাদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ইউএই ছয়টি নতুন বিভাগ যুক্ত করেছে এই ভিসা প্রকল্পে।
১০ বছর মেয়াদী ভিসার এই নতুন বিভাগগুলো বর্তমানে ট্রায়াল করা হচ্ছে এবং আগামী ৩ অক্টোবর থেকে কার্যকর করা হবে। গোল্ডেন ভিসা সম্প্রসারিত প্রকল্পের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী বিভাগগুলো হলো- পেশাদার, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ, মানবিক ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিত্ব, ডাক্তার ও নার্স এবং ফ্রন্টলাইন হিরো।
পেশাদার কর্মকর্তা
শিক্ষা, আইন, বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি, সামাজিক বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন শাখায় পেশাদার চাকরিজীবীরা এই ক্যাটাগরিতে পড়বেন। এখানে শর্ত হলো-
→ ব্যক্তির অবশ্যই ইউএইর সঙ একটি বৈধ কর্মসংস্থান চুক্তি থাকতে হবে
→ মানবসম্পদ ও আমিরাতের শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী ব্যক্তিকে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হতে হবে
→ ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম স্নাতক ডিগ্রি বা তার সমতুল্য হতে হবে
→ ব্যক্তির মাসিক বেতন ৩০ হাজার আমিরাতি দিরহাম (নূন্যতম ৮,১৬৭ মার্কিন ডলার) হতে হবে|
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের জন্য কার্ডে ও অনলাইনে ভিসা ফি প্রদানের সুযোগ আনল যুক্তরাজ্য
রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকারী
→ নূন্যতম ২ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম মূল্যের সম্পত্তির মালিকানা থাকতে হবে, অথবা
→ স্থানীয় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ক্রয় করা কোন সম্পত্তি থাকতে হবে, অথবা
→ অনুমোদিত স্থানীয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানির তালিকা থেকে এক বা একাধিক ২ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম মূল্যের কমপ্লিট বা অফ-প্ল্যান সম্পত্তির মালিকানা থাকতে হবে|
সফল উদ্যোক্তা
উদ্যোক্তাগণ তাদের কোম্পানিকে ইউএইতে নিবন্ধিত করলে এই ভিসা পেতে পারেন। তবে সে জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে অবশ্যই ১ মিলিয়ন বা তার বেশি বার্ষিক আয় সহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) বিভাগের অধীনে পড়তে হবে। অধিকন্তু, উদ্যোক্তাদের জন্য গোল্ডেন রেসিডেন্সও পাওয়া যেতে পারে, যদি-
→ ব্যক্তিটি একজন প্রতিষ্ঠাতা বা পূর্ববর্তী উদ্যোক্তা প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন হন। এক্ষেত্রে পূর্ববর্তী বিক্রিত প্রকল্পটির মূল্য কমপক্ষে ৭ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম (প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) হতে হবে
→ প্রকল্প বা ধারণার জন্য অর্থনীতি মন্ত্রণালয় বা উপযুক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন|
আরও পড়ুন: ধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রিমিয়াম ভিসা চালু করছে মালয়েশিয়া
ব্যতিক্রমী প্রতিভা সম্পন্ন
শিল্প, সংস্কৃতি, ডিজিটাল প্রযুক্তি খেলাধুলা, উদ্ভাবন, ওষুধ, আইন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিরা এই ভিসায় আবেদন করার যোগ্য। ১০ বছরের এই ভিসাটির জন্য শুধুমাত্র তাদের মেধা যাচাই করা হবে। কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরির অবস্থা, মাসিক বেতন বা পেশাগত অবস্থার নয়। তবে এর জন্য স্থানীয় সরকারের সুপারিশ বা অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
বিশেষজ্ঞদের জন্য
চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি, ব্যবসা ও প্রশাসন, শিক্ষা, আইন, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বিজ্ঞান সহ বিভিন্ন শাখায় শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশাগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উচ্চ দক্ষ কর্মীরা এই ক্যাটাগরির আওতাভুক্ত।
বিজ্ঞানী বা গবেষক
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল, প্রযুক্তি, জীবন বিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে পিএইচডি বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এর জন্য তাদেরকে অবশ্যই এমিরেটস সায়েন্টিস্ট কাউন্সিলের সুপারিশ লাভ করতে হবে।
অসামান্য মেধাসম্পন্ন স্নাতক শিক্ষার্থী
ইউএইর মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ স্কোর প্রাপ্ত বিদেশি শিক্ষার্থীরা ১০ বছরের ভিসাটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তদুপরি, বিশ্বের ১০০টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থী এবং স্নাতকরাও এই ভিসা প্রকল্পের আওতায় পড়বেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-তাসখন্দ এফওসি: দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরের আহ্বান বাংলাদেশের
মানবিক ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিত্ব
→ আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক সংস্থার বিশিষ্ট সদস্যরা
→ জনসাধারণের কল্যাণার্থে নিয়জিত সমিতির সেরা সদস্যরা
→ মানবিক ক্ষেত্রে স্বীকৃতি পুরস্কারপ্রাপ্তরা
→ বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক এবং মানবিক প্রচেষ্টার স্পন্সর
ডাক্তার, নার্সদের এবং ফ্রন্টলাইন হিরো
ইউএই প্রতিরক্ষার প্রথম লাইনের ডাক্তার ও নার্সদের তাদের প্রচেষ্টা এবং ত্যাগের স্বীকৃতিতে দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের অনুমতি দিচ্ছে। ইউএইর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার লাইসেন্সপ্রাপ্ত সমস্ত ডাক্তাররা আইসিএ’র (ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ) গোল্ডেন রেসিডেন্সি পরিষেবার মাধ্যমে জুলাই ২০২১ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২২-এর মধ্যে গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। করোনা মহামারির সময় জীবন বাজী রেখে কাজ করা নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও এখন মর্যাদাপূর্ণ গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার যোগ্য। আইসিএ’র সঙ্গে সম্পৃক্ত ইউএই জুড়ে স্থাপিত সাতটি কেন্দ্র যে ডাক্তার এবং নার্সদের পরিশ্রমের ফসল, তারা ব্যক্তিগতভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে চান।
আরও পড়ুন: ভারতের টুরিস্ট ভিসা কীভাবে পাবেন: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রসেসিং ফি
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্রিন ভিসা
ইউএই গ্রিন ভিসা প্রকল্প
এটি ইউএইর কাজ এবং রেসিডেন্সি পারমিট থেকে ভিন্ন একটি নতুন ভিসা ক্যাটাগরি। এর মাধ্যমে উচ্চ দক্ষ ব্যক্তি, বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, শীর্ষ ফলাফলধারী শিক্ষার্থী ও স্নাতকদের ইউএইর কোন কোম্পানির সাথে চুক্তি ছাড়াই নিজস্ব স্পন্সরে ইউএইতে বসবাসের অনুমতি দেবে। এটি মূলত ইউএই সরকারের ব্যতিক্রমী প্রতিভা আকর্ষণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রচেষ্টার একটি অংশ।
ইউএই গ্রিন ভিসার মেয়াদ ও অন্যান্য সুবিধা
গোল্ডেন ভিসার পাশাপাশি ইউএই গ্রিন ভিসাতে কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নতি বাস্তবায়িত হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন পাঁচ বছরের আবাসিক সুবিধা, যা মূলত প্রতিভাধর, দক্ষ পেশাদার, ফ্রিল্যান্সার, বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ। তাদের জন্য সব ধরনের আবাসিক চাহিদাগুলোকে সহজতর করার পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও উন্মুক্ত করা হচ্ছে। বসবাসের অনুমতি বাতিল বা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে পরিবারের লোকদের দেশে থাকার জন্য দীর্ঘ নমনীয় গ্রেস পিরিয়ডসহ আরও সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
নতুন প্রকল্প ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের সুযোগ-সুবিধার পরিধি আরও প্রসারিত করেছে। একজন বাসিন্দা এখন সহজেই তাদের তাদের স্ত্রী-সন্তানদের ইউএইতে আনতে পারেন। উপরন্তু শিশুদের বয়স আগে ১৮ বছর থাকলেও এখন ২৫ বছর করা হয়েছে। অবিবাহিত মেয়েদের জন্য কোনো বয়সসীমা নেই। মেধাবী শিশুদের তাদের বয়স নির্বিশেষে বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়। গ্রিন রেসিডেন্স ধারককে তার অতি নিকটস্থ আত্মীয়দের নিয়ে আসার অনুমতি দেয়া হবে এবং সমস্ত ক্ষেত্রে, পরিবারের সদস্যদের বসবাসের সময়কাল ভিসাধারীর মতোই হবে।
আরও পড়ুন: ভিসা ছাড়া পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন ইউক্রেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা
ইউএই গ্রিন ভিসা লাভের যোগ্যতা
দক্ষ কর্মী
যে কোনো কাজে দক্ষ কর্মীদের জন্য এই ভিসা কোন স্পন্সর বা নিয়োগকর্তা ছাড়াই পাঁচ বছরের আবাসিক সময়কাল প্রদান করে।
→ আবেদনকারীদের একটি বৈধ কর্মসংস্থান চুক্তি থাকতে হবে
→ মানব সম্পদ ও আমিরাত মন্ত্রণালয় অনুযায়ী ব্যক্তিকে প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি হতে হবে
→ শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি বা তার সমতুল্য হওয়া বাঞ্ছনীয়
→ আবেদনকারীর বেতন নূন্যতম ১৫ হাজার আমিরাতি দিরহাম (৪,০৮৩.৭৪ মার্কিন ডলার) হতে হবে
ফ্রিল্যান্সার
→ ফ্রিল্যান্সিং এবং স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য গ্রিন রেসিডেন্স ইউএইতে স্পন্সর বা নিয়োগকর্তার প্রয়োজন ছাড়াই পাঁচ বছরের বসবাসের ব্যবস্থা করে
→ মানব সম্পদ ও আমিরাত মন্ত্রণালয় থেকে ব্যক্তিকে ফ্রিল্যান্স বা স্ব-কর্মসংস্থানের অনুমতি প্রাপ্ত হতে হবে
→ ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে স্নাতক ডিগ্রি বা বিশেষ ডিপ্লোমা
→ বিগত দুই বছরে স্ব-কর্মসংস্থান থেকে বার্ষিক আয় কমপক্ষে তিন দশমিক ছয় লাখ আমিরাতি দিরহাম (৯,৮০০ মার্কিন ডলার), অথবা আবেদনকারীকে দেশে থাকার সময় তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রমাণ করতে সক্ষম হতে হবে|
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ব্রাজিলের ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষর
বিনিয়োগকারী বা অংশীদার
→ বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য এই ভিসা বাণিজ্যিক কার্যক্রম প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগকারীদের জন্য পাঁচ বছরের বসবাসের ব্যবস্থা করে।
→ ব্যক্তির বিনিয়োগের অনুমোদন এবং কমপক্ষে এক মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম বিনিয়োগের প্রমাণপত্র লাগবে
→ যদি বিনিয়োগকারীর একাধিক লাইসেন্স থাকে, তাহলে মোট বিনিয়োগকৃত মূলধন গণনা করা হবে। সেক্ষেত্রে উপযুক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।
জব এক্সপ্লোরেশন ভিসা
এই ভিসা মূলত তরুণ প্রতিভা এবং দক্ষ পেশাদারদের দেশে উপলব্ধ চাকরির সুযোগ অন্বেষণের জন্য আকৃষ্ট করার এক মহৎ উদ্যোগ। ভিসার জন্য স্পন্সরের প্রয়োজন নেই, তবে ব্যক্তিকে অবশ্যই-
→ মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় অনুসারে প্রথম বা দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি হতে হবে
→ বিশ্বের সেরা ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক করা থাকতে হবে
→ স্নাতক ডিগ্রি বা তার সমতুল্য শিক্ষাগত যোগ্যতার নিচে গ্রহণযোগ্য নয়|
আরও পড়ুন: ঢাকা থেকে ভিসা দেয়ায় রোমানিয়াকে ধন্যবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রিমোট ওয়ার্ক ভিসা
দুবাইয়ের এক বছরের ভিসা আনুষ্ঠানিকভাবে ভার্চুয়াল ওয়ার্কিং প্রোগ্রাম (ভিডব্লিউপি) নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থাটি ভিসাধারীদের ইউএইর বাইরে থেকে দুবাইতে স্থানান্তরিত করতে এবং আইনত তাদের বর্তমান কোম্পানি বা সংস্থার জন্য দূর থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়। এটি বিদেশি নাগরিকদের নিজস্ব খরচে ইউএইতে প্রবেশ করতে এবং ভিসার সঙ্গে সম্পৃক্ত শর্তাবলী অনুসারে কাজ করার অনুমতি দেয়।
এক বছরের ভিসাটি বিশেষভাবে দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি অন্যান্য অবস্থান-স্বাধীন ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। দুবাইতে বসবাসের জন্য আবেদন যদি ইউএই দ্বারা অনুমোদিত হয়, তাহলে পরিবারকেও সঙ্গে আনা যাবে। সেক্ষেত্রে শর্তগুলো হলো-
→ বর্তমান নিয়োগকর্তার কাছ থেকে এক বছরের একটি বৈধ চুক্তিসহ কর্মসংস্থানের প্রমাণ লাগবে
→ প্রতি মাসে উপার্জিত বেতন ন্যূনতম পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার হতে হবে। এর জন্য বিগত মাসের বেতন স্লিপ এবং আগের তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে।
→ কোম্পানির মালিক হলে, এক বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কোম্পানির মালিকানার প্রমাণ লাগবে
→ উদ্যোক্তার মাসিক গড় আয় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার হতে হবে। এর জন্য পূর্ববর্তী তিন মাসের জন্য কোম্পানির অ্যাকাউন্টের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপে অবৈধ বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভিসা সংগ্রহের আহ্বান
পরিশেষে
কর্মক্ষেত্র হিসেবে সেরা গন্তব্য হওয়ায় বাংলাদেশিদের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা প্রাপ্তি বরাবরই আকর্ষণীয় ছিল। এখন গোল্ডেন ভিসার নতুন ক্যাটাগরি ও গ্রিন ভিসার মাধ্যমে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। মেধাবী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নিজেদের কর্মক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিরা এখন নিমেষেই অতি প্রত্যাশিত সুবিধাগুলো অর্জন করে নিতে পারবে। মানবসম্পদ উন্নয়নের এই মহান উদ্যোগ অচিরেই উন্নত সংস্কৃতি ও সমৃদ্ধশালী অবকাঠামোর অধিকারি হয়ে ওঠার দৃষ্টান্তমূলক নকশা।
২ বছর আগে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে করোনায় শনাক্ত বেড়েছে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে গত এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এ সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা ১৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বুধবার সর্বশেষ সাপ্তাহিক মহামারি প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য জানায়, গত এক সপ্তাহে তিন দশমিক তিন মিলিয়ন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যা চার শতাংশ হ্রাস এবং সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু ১, বেড়েছে শনাক্তের হার
তবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে ৪৫ শতাংশ এবং ইউরোপে ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একমাত্র অঞ্চল যেখানে করোনায় মৃত্যু চার শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অন্যত্র কমেছে।
মহামারি বিশেষজ্ঞ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সেলিম আবদুল করিম বলেন, কোভিড-১৯ এর শনাক্তের সংখ্যা ‘ট্রফ’ স্তরে পৌঁছেছে এবং গত আড়াই বছরে খুব বেশি দেখা যায়নি। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ব্রিটেনসহ কিছু দেশে করোনায় শনাক্ত ফের বাড়তে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত সাড়ে ৫৪ কোটি ছাড়াল
২ বছর আগে