জনগোষ্ঠী
মানব পাচার হ্রাসে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রকল্প ‘অগ্রযাত্রা’
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জেলে ও কৃষকদের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলে 'অগ্রযাত্রা' প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারকে তা আরও ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হেলেন লা-ফেইভ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে মানব পাচার বৃদ্ধির ঝুঁকি হ্রাস করতে সর্বোত্তম পদক্ষেপ সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ সরবরাহ করবে এটি।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) 'অগ্রযাত্রা' প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনীতে এসব কথা বলেন মার্কিন এই কর্মকর্তা।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী মানব পাচারের শিকার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাসে জলবায়ু অভিযোজন, সহনশীলতা ও প্রশমন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে করতে বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াতে ও সম্পদ সংগ্রহে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
উইনরক ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন 'অগ্রযাত্রা' প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি বিভাগ) এ কে এম টিপু সুলতান এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, এই কর্মসূচি মানব পাচার ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারের উদাহরণ।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় জলবায়ু পরিবর্তন, মানব পাচার ও আধুনিক দাসত্বের মধ্যে যোগসূত্র সম্পর্কে জ্ঞান বাড়াবে ‘অগ্রযাত্রা’ প্রকল্প।
আরও পড়ুন: বাইডেনের চিঠির জবাব দিলেন শেখ হাসিনা
মার্কিন দূতাবাস জানায়, সারা বাংলাদেশে প্রায়শই কৃষিকাজ ও জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সম্পত্তি বিলীন হয় এবং জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে। প্রমাণ সংগ্রহের মাধ্যমে প্রকল্পটি এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানব পাচারের ঝুঁকি হ্রাস করবে।
প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য জলবায়ুসহনশীল জীবিকার উন্নতি এবং নীতি ও পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং মানব পাচার প্রতিরোধে সমন্বিত পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা।
রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল ও পটুয়াখালীসহ দেশের ১১টি জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: দেশ-উন্নয়নকে আরও কাছ থেকে দেখবেন বিদেশি কূটনীতিকরা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৮ মাস আগে
‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম, আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই।
মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভূমিকা বিষয়ক গবেষক সিহাবুল ইসলামের গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
বুধবার ইউএনবিতে সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠান ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘নারী ও ৭১’ এ অতিথি হিসেবে ছিলেন সিহাবুল ইসলাম। তরুণ প্রজন্মের এই গবেষক মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে হিন্দু জনগোষ্ঠী ও নারীদের ওপর পাক বাহিনীর চালানো বহুমাত্রিক নির্যাতন এবং মুক্তিযুদ্ধে এই দুই জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক অবদান নিয়ে দুটি সমৃদ্ধ বই রচনা করেছেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো নির্মম গণহত্যা নিয়ে ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ শিরোনামের চার পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে ইউএনবিতে। এর আগে ১৬ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের প্রথম পর্ব ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পরাজয়’ এবং ২৩ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘গণহত্যা ও ৭১’।
আরও পড়ুন: গণহত্যা নিয়ে ইউএনবিতে আলোচনা অনুষ্ঠান
চার পর্বের এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করছেন ইউএনবি’র এডিটর এট লার্জ আফসান চৌধুরী। তিনি একজন শিক্ষক, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন আফসান চৌধুরী।
গবেষণা করতে গিয়ে সিহাবুল ইসলাম দেখেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম, আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই। এমনকি তাদের ওপর চলা নির্যাতনের চিত্রও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণায় তেমন উঠে আসেনা।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, তেমনি এদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীদের ওপর পাকবাহিনীর চালানো বহুমাত্রিক নির্যাতনের চিত্রও আমাদের মূলধারার ইতিহাস চর্চায় উঠে আসেনি। আমাদের পত্র-পত্রিকা, পাঠ্য বই;কোথাও আমরা এইসব বিশদ ইতিহাস খুঁজে পাইনা।
গবেষক এ জন্য আমাদের গবেষকদের মানসিকতার পশ্চাদপদতাকে দায়ী করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাস জানতে গ্রামে যেতে হয়, আমাদের গবেষকরা এই কষ্টটা করতে চান না। গুগল-উইকিপিডিয়ার এই যুগে তারা,সহজ পন্থা অনুসরণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য করেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আবার গবেষক আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না।
সঞ্চালক আফসান চৌধুরীর করা এক প্রশ্নের জবাব আলোচক সিহাবুল ইসলাম আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নারীর ওপর ধর্ষণ ছাড়াও বহুমাত্রিক নির্যাতন হয়েছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী; এই নারীদের প্রকৃত ইতিহাস এই পঞ্চাশ বছরেও অদৃশ্য হয়ে আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারীর ইতিহাস ১০-২০ শতাংশও উঠে আসেনি।
আরও পড়ুন: জাতীয় গণহত্যা দিবস আজ
মুক্তিযুদ্ধে নারীর কথা বললেই আমাদের প্রচলিত গবেষণাগুলোতে শুধু শারিরীক নিপীড়নের কথাই উঠে আসে। কিন্তু নারীর অবদান শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ না। নারী সেসময় যেমন শারিরীকভাবে নির্যিাতিত হয়েছে, তেমনি অনেক নারী সরাসরি যুদ্ধ করেছে, অনেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছে। এছাড়া সেসময় অধিকাংশ সংসারের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে নারীরা। তারা ধান কেটেছে, শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছে আরও বহু কাজ করে সমাজটাকে টিকিয়ে রেখেছে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মতো নারীদের অবদানও আমাদের ইতিহাস চর্চায় না উঠে আসার কারণ হিসাবে আলোচক আমাদের গবেষকদের লিঙ্গ বৈষম্যমূলক মনোভাবকে দায়ী করেন।
সবশেষে আমাদের মূলধারার ইতিহাস চর্চায় হিন্দু ও নারীদের তথা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাস তুলে ধরার জন্য গবেষক সিহাবুল ইসলাম এ সময়ের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন। লেখা, গবেষণা, সিনেমা, অডিও-ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যম কাজে লাগিয়ে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তুলে ধরা উচিত। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই গুরু দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের হাতেই পুরো ইতিহাস চর্চার ভাগ্য নির্ধারণী পড়ে আছে। তাদের চেষ্টায়ই আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলো আমাদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণহত্যার ‘স্বীকৃতি’ আদায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান
২ বছর আগে
সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কোরিয়ানদের অ্যাসোসিয়েশনের অনুদান
সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে খাদ্য, পোশাক ও স্বাস্থ্যকর দ্রব্যাদি অনুদান হিসেবে দিয়েছে বাংলাদেশে কোরিয়ানদের অ্যাসোসিয়েশন।
৩ বছর আগে