শিল্প-সংস্কৃতি
শিল্প-সংস্কৃতিকে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসার অঙ্গীকার আমীর খসরুর
ক্ষমতায় গেলে আগামী দিনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিল্প-সংস্কৃতিকে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ সময়ে ‘সৃষ্টিশীল শিল্প’ নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমাদের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে জনমিতিক সুফল কাজে লাগাতে হবে। এ জন্য সবাইকে লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি চার তারকা হোটেলে তরুণদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে আমীর খসরু এমন কথা বলেন।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে গণতন্ত্রই যথেষ্ট না, যদি অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করা না যায়, তাহলে কোনো রাজনীতি কাজ করবে না, গণতন্ত্রও কাজে লাগবে না। সবার জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা যেমন করতে হবে, তেমনই সমানাধিকার দিতে হবে। একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে আগামী বাংলাদেশের সমস্ত কার্যক্রম প্রত্যন্তাঞ্চলের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির নেতা। এ সময়ে ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি বা সৃষ্টিশীল শিল্পের একটি ধারণা দেন তিনি।
ক্রিয়েটিভ শিল্পের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘এটিতে হবে বাংলাদেশের সব মানুষ, তাঁতি, কামার-কুমার, চারুশিল্পী, ডিজাইনার, সঙ্গীতশিল্পী—সবাইকে অর্থনীতির মধ্যে নিয়ে আসা। যেমন, আমাদের হরেক ধরনের সঙ্গীত আছে—ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি, লালনগীতি—এগুলো আমরা এখনো মূলধারায় নিয়ে আসতে পারিনি। বাংলাদেশে অনেক সঙ্গীত হারিয়ে যাচ্ছে।’
‘আবার বিশ্বে হস্তশিল্পের অনেক দাম। কিন্তু আমরা এগুলোকে কাজে লাগাতে পারিনি। এদের সবাইকে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসতে ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রির কর্মসূচি নেব। তাদের যে কাঁচামাল দরকার, সেগুলো তাদের দিতে হবে। তাদের সহায়তা করতে হবে, পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ দিতে হবে, বিপণনের প্ল্যাটফর্ম দিতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা, সংস্কারের অঙ্গীকার আমির খসরুর
থাইল্যান্ডের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, থাকসিন সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে আমাদের দেশটিতে নেওয়া হয়েছিল, সেখানকার ‘একটি গ্রাম, একটি পণ্য’ দেখাতে। তারা প্রতিটি গ্রামকে শনাক্ত করেছে এভাবে যে সেখানকার কোন পণ্যটি ভালো। এই গ্রামে এই পণ্যটি ভালো তৈরি হয়, ওই গ্রামে অন্যটি—কাজেই ওই পণ্যটির ডিজাইন, রফতানি ও ব্র্যান্ডিং সহায়তা দেব। তারা এমন পরিকল্পনা করে এগিয়েছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজন ও আলিবাবার মতো তারা নিজেদের পণ্যগুলোকে ব্র্যান্ডিং করেছেন।
আমীর খসরু বলেন, লোকজনকে আমরা এমন প্ল্যাটফর্ম করে দেব, যেন গ্রামে-গঞ্জে বসে তারা পণ্য রফতানি করতে পারেন। তাদের ঢাকা শহর কিংবা চট্টগ্রামে যাওয়ার দরকার পড়বে না।
‘আমরা নাটক ও থিয়েটার উপভোগ করি। কিন্তু সেটাকে আমরা প্রমোট করতে পারি না। সেটিকে আর্থিকীকরণ করতে পারিনি। কিন্তু লন্ডনের থিয়েটারের মতো ঢাকার থিয়েটারও হতে পারে, চট্টগ্রামেও হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এটা কেবল বিনোদন না, বিপুল কর্মসংস্থানও তৈরি হবে এটা করতে পারলে। এগুলোও অর্থনীতি। কেবল তৈরি পোশাক শিল্প কিংবা উৎপাদন খাতই অর্থনীতি না। বিগত দিনে এই অর্থনীতি আমরা কাজে লাগাইনি।’
‘সঙ্গীতের সীমান্ত নেই, আমরা বাংলাদেশে বসে ইংরেজি, স্প্যানিশ গান শুনি। এখনকার ছেলে-মেয়েরা কোরিয়ান নাটক দেখায় সবসময় মগ্ন থাকে। তার মানে হলো, শিল্প-সংস্কৃতির কোনো সীমান্ত নেই। এগুলো মূলধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে হবে।’
এ সময়ে দেশের সর্বত্র আইটি ব্যবসাকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশ হিসেবে আমরা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনসংখ্যাগত সুফলে আছি। অর্থাৎ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে তরুণ ও কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বেশি। এটাই আমাদের সম্পদ। কিন্তু এটিকে যখন আর্থিকীকরণ করতে পারব, তখনই এটা সম্পদ হবে। আর এ জন্য কাজ করতে হবে, লেখাপড়ার পাশাপাশি দক্ষতা বাড়াতে হবে। দক্ষতার অভাবে দেশের জনমিতিক সুফলটা আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।
৯৮ দিন আগে
কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির গোড়াপত্তনের এক বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে গীতিকাব্য, লোকগীতি ও পালাগান। এই সৃজনশীলতা চর্চার এক মজবুত বুনিয়াদ গড়ে উঠেছিল অতীন্দ্রিয় বাউল সংগীতের মুক্তাঙ্গনে। বাংলা ভাষাভাষি বাউল সংগীতের মঞ্চে সর্বাধিক সমাদৃত নামটি হচ্ছে লালন শাহ। একাধারে ফকির সাধক, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক- এই শিল্পীর গানগুলো যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে মানুষকে। এখনো তার সৃষ্টিগুলোকে ঘিরে রচিত হয় গান, কবিতা, ও উপন্যাস; নির্মিত হয় নাটক ও চলচ্চিত্র। তার জীবনচরিতের অনুসারী ও ভক্তরা এখনো তার মাজার দর্শনে ছুটে যান কুষ্টিয়ায়। লোকজ সংস্কৃতির প্রবাদ পুরুষ ফকির লালন শাহের মাজার নিয়েই আজকের ভ্রমণকড়চা। চলুন, ঘুরে আসা যাক আধ্যাত্মিকতার এক অচীন দেশে।
লালন ফকিরের মাজারের অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার একটি প্রশাসনিক অঞ্চল হচ্ছে কুমারখালী উপজেলা। এই উপজেলার অন্তর্গত ছেউড়িয়া গ্রামেই অবস্থান জগদ্বিখ্যাত লালন ফকিরের মাজার।
আরও পড়ুন: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাউল সাধক লালনের আখড়ার ইতিহাস
এই ছেউড়িয়াতেই ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর শুক্রবার মৃত্যুবরণ করেন বাউল গুরু লালন। কিন্তু তারপরেও জায়গাটিকে ছেড়ে যাননি তার শিষ্যরা। বরং বছরের পর বছর ধরে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের সংখ্যা, যা উৎপত্তি ঘটিয়েছিল এই মাজারের।
এই জায়গাটিতে সাধক লালন জীবন ও আধ্যাত্মিকতার দীক্ষা দিতেন তার গুনমুগ্ধ স্থানীয় লোকজন ও ভক্তদের। শিষ্যরা ভক্তি ভরে তাকে ‘সাঁই’ বলে ডাকতেন।
প্রতিবছর শীতের সময় এখানে মহোৎসবের আয়োজন করতেন লালন। এই উৎসবে হাজার হাজার ভক্তরা গুরুর সঙ্গে বাউল গান ও দেহতত্ত্ব নিয়ে আলোচনায় শামিল হোতেন।
গুরুর প্রয়াণের পরেও থেমে যায়নি বৈঠক, বরং নিয়ম মেনে প্রতিবছরই এই সময় আয়োজন হয় উৎসবের। আর এভাবেই গড়ে ওঠে লালন অনুসারীদের আখড়া। তার শিষ্যদের মধ্যে শুধু দেশীয়রাই ছিল না। দেশের বাইরে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে অগণিত বাউল ও ভক্তকুল সমবেত হতো এই আখড়ায়।
গুরুর পাশাপাশি তার প্রিয় শিষ্যদেরও সমাহিত করা হয়েছে এই মাজারে।
বর্তমান যে মাজারটি দেখা যায়, সেটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৬৩ সালে। উদ্বোধন করেছিলেন সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর মোনায়েম খান। তারও ৪ দশক পর ২০০৪ সালে মাজারটির আধুনিকায়ন করা হয়। পাশেই বিশাল জায়গাজুড়ে নির্মিত হয় অডিটোরিয়াম ও একাডেমি ভবন।
আরও পড়ুন:ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক: কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন
কি কি দেখবেন লালনের আখড়ায়
আকর্ষণীয় অবকাঠামোগুলোর মধ্যে অডিটোরিয়াম ও একাডেমি ভবনটি ছাড়াও রয়েছে লালনের জাদুঘর, আবক্ষ ম্যুরাল এবং একতারার ভাস্কর্য। জাদুঘরে পরম যত্নে সংরক্ষিত রয়েছে লালনের ব্যবহৃত জলচকি, একটি দরজা, ভক্তদের ঘটি-বাটি ও বেশ কিছু ছবি। জাদুঘর ঘুরে দেখতে ২ টাকা প্রবেশমূল্য দিতে হবে।
লালন মেলা
লালনের মাজারের মূল আকর্ষণ হচ্ছে এখানকার পরিবেশ, যা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে লালন মেলার সময়ে। প্রতি বছর দুইবার এই মেলাটি হয়- একবার, ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিকে কেন্দ্র করে দোলযাত্রা উৎসবের সময়, যেটি মূলত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে- লালন সাঁইজির প্রয়াণ দিবস তথা পহেলা কার্তিক বা ১৬ অক্টোবর উপলক্ষে।
এই দ্বিতীয়টি হচ্ছে সবচেয়ে বড় মেলা, যেটি ৩ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। মেলা উপলক্ষে গোটা আখড়াবাড়ী সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। প্রধান ফটক আর মূল মাজার ভরে যায় রঙিন আলোকসজ্জায়। সম্মুখে নির্মাণ করা হয় বিশাল তোরণ। মাজারের বাইরে কালী নদীর ভরাটকৃত অংশে লালন মঞ্চের সামনে টাঙানো হয় বিশাল সামিয়ানা।
আলোচনা মঞ্চের চারপাশে মাজারের প্রধান রাস্তা ছেয়ে যায় গ্রামীণমেলায়। এখানে বিক্রি হয় নানান ধরনের গৃহসামগ্রী, গেঞ্জি, কাঠের তৈরি সাংসারিক জিনিসপত্র এবং লালনের গানের সিডি। এছাড়াও পাঁপড় ভাজা, গরম জিলাপি, শন পাঁপড়ি, আখের রস ও খই-বাতাসাসহ বসে হরেক রকম খাবারের পসরা। উৎসবের প্রতিদিন সারা রাত ধরে চলে লালন গানের আসর।
এমন জাঁকজমক উৎসবে পুরো মাজার প্রাঙ্গণ পরিণত হয় দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের মিলনমেলায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শীর্ষ ১৫টি ঐতিহ্যবাহী স্থান
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার লালনের আখড়ায় যাওয়ার উপায়
রাজধানী ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যেতে হলে পাড়ি দিতে হবে ২৪৮ কিলোমিটার স্থলপথ। পাড়ি দিতে হবে স্থলপথে ২৪৮ কিলোমিটার, যা অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা। বাসে করে এই পথ অতিক্রম করতে হলে কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে উঠতে হবে কুষ্টিয়ার বাসে। এগুলো ৬ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে দিবে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে। এই যাত্রায় বাস ভাড়া পড়তে নন এসির জন্য জনপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা এবং এসির ক্ষেত্রে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা।
সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশা করে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছা যাবে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে ছেউরিয়া।
এছাড়া কমলাপুর রেল জংশন থেকে ট্রেনে করেও যাওয়া যাবে। এখান থেকে কুষ্টিয়ার ট্রেনগুলো ছাড়ে সকাল সোয়া ৮ টা, সন্ধ্যা ৭ টা এবং রাত সোয়া ১১ টায়। আসন ভেদে এগুলোতে সিট ভাড়া পড়তে পারে জনপ্রতি ৩৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৮২৮ টাকা।
কুষ্টিয়া শহরের আগেই পোড়াদহ বা ভেড়ামারা স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে পড়তে হবে। স্টেশনেই পাওয়া যাবে শহরে যাওয়ার বাস বা সিএনজি। তারপর অটোরিকশায় চড়ে সোজা লালন গ্রাম ছেউরিয়া।
আরও পড়ুন: সিলেটের জাফলং ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
কুষ্টিয়ায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
কুষ্টিয়ায় থাকার জন্য মোটামুটি ভালোমানের আবাসিক হোটেল পাওয়া যাবে শাপলা চত্বর, মজমপুর গেট, চৌড়হাস মোড়, এন এস রোড, এবং বড় বাজার এলাকায়। এগুলোতে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে রাত্রি যাপনের জন্য। এছাড়া অনুমতি নিয়ে থাকা যেতে পারে শিলাইদহ ডাকবাংলোতে।
খাবারের হোটেলের জন্য কোর্ট স্টেশন এলাকার রেস্তোরাঁগুলো বেশ ভালো। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে আগত পর্যটকরা এখানকার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাইয়ের স্বাদ নিতে একদমি ভোলেন না।
আরও পড়ুন: মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচ
আশেপাশের কিছু দর্শনীয় স্থান
কুষ্টিয়া শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখার জন্য একটা ডে-ট্যুরই যথেষ্ট। তাই লালনের আখড়ার দর্শনার্থীরা আনন্দ পুষিয়ে নিতে ঘুরে দেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, মীর মোশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা এবং গড়াই নদীর তীরে রেনউইকের বাধ।
এছাড়াও পরমাণু শক্তিকেন্দ্র ও ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মাঝে লালন শাহ সেতুর দৃশ্যটাও ভোলার নয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় দৃষ্টিনন্দন ‘সাত গম্বুজ মসজিদ’
পরিশিষ্ট
কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ নিঃসন্দেহে এক ভিন্ন আমেজের অভিজ্ঞতা দিবে। শুধু তাই নয়, মানুষের যাপিত জীবন যে কতটা বিচিত্র হতে পারে তা লালন মেলায় না গেলে বোঝা যাবে না। আর এজন্য লালন আখড়ায় যেতে হবে কার্তিক মাসের শুরুতে অথবা ফাল্গুনের শেষার্ধে।
এক্ষেত্রে বাউল সাধক লালন শাহের আখড়া ঘুরে দেখার সময় অবশ্যই শ্রদ্ধার সঙ্গে সেখানকার পরিবেশের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখা উচিৎ। অনেক বিদেশি পর্যটকদেরও তীর্থস্থান হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানটি অনায়াসেই প্রভাবিত করতে পারে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে। এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভ্রমণের সময় একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করা দেশীয় দর্শনার্থীদের জাতীয় ও নৈতিক দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: মিরসরাই খৈয়াছড়া ঝর্ণা: যাওয়ার উপায় ও ভ্রমণ খরচ
৬৮৯ দিন আগে
বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির হাজার বছরের যে ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলোকে আরও সমৃদ্ধ করতে আমাদের দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের আরও বেশি মনযোগী হতে হবে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) সিলেটে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সিলেট অঞ্চলের অনেক মনীষী আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশিষ্টতা দিয়েছেন। বিশেষ করে হাসন রাজার গান, শাহ আব্দুল করিমের গান ওনাদের সৃষ্টিশীল কর্ম মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ সম্ভবত এসব গুণীজন একাধারে গান রচনা, সুরারোপ, সংগীত চর্চায় আত্মনিবেদিত ছিলেন। সে কারণে তাদের সৃষ্টি অনন্য এবং অমর হয়ে আছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু সিলেট অঞ্চলের নয়, আমাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেন এরকম অনেক গুণীজন তাদের অনন্য সৃষ্টি রেখে গেছেন। এদের মতো করে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় মনোনিবেশ করলে আমাদের সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে, আরও বৈচিত্র্যময় হবে। আর সেজন্য আজ যারা শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য সম্মাননা পেলেন এবং আগামীতে যারা পাবেন তারা এসব সৃষ্টিশীল কাজে আরও বেশি মনোনিবেশ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আরও পড়ুন: অন্য দেশে এমন ঘটনা ঘটলে বিদেশি মিশন কি বিবৃতি দেয়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের সংস্কৃতি চর্চায় সবধরনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলার নিয়মিত কর্মকাণ্ড আয়োজনে সরকারি ব্যবস্থাপনা পূর্বের চেয়ে এখন অনেক বাড়ানো হয়েছে।’
গুণীজনদের কাজের সরকারি স্বীকৃতি হিসেবে শিল্পকলা একাডেমির সম্মাননা সংস্কৃতি কর্মীদের উৎসাহিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে পাঁচজন গুণিজনের হাতে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০২২’ তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- লোকসংস্কৃতিতে মিহিরকান্তি চৌধুরী, কণ্ঠসংগীতে পূর্ণিমা দত্ত রায়, নাট্যকলায় চম্পক সরকার, আবৃত্তিতে জ্যোতি ভট্টাচার্য, যন্ত্রসংগীতে (বাঁশি) মো. মিনু মিয়া।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সিলেটের গুণীজন, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিলেটের জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্ত।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘গোপন তথ্য’ কারা ফাঁস করেছে তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি: মোমেন
৮৬৭ দিন আগে
ইয়ুথ গ্লোবালের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে শিল্প-সংস্কৃতির ১৪ প্লাটফর্ম
শিল্প-সংস্কৃতির ১৪ প্লাটফর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশের অন্যতম বড় যুব সংগঠন ইয়ুথ গ্লোবাল ফাউন্ডেশন।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মাদানি এভিনিউ সংলগ্ন ‘ইচ্ছে বাড়ি’তে শিল্পী-কলাকুশলীদের নিয়ে আয়োজিত ‘আসুন আলাপ করিয়ে দেই’ শিরোনামে এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন ইয়ুথ গ্লোবালের চেয়ারম্যান ড. সীমা হামিদ।
গুরুকুল অনলাইন লার্নিং নেটওয়ার্কের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা শিল্প-সংস্কৃতিবিষয়ক ১৪টি প্লাটফর্ম হচ্ছে- সেতার গুরুকুল, বেহালা গুরুকুল, বাঁশি গুরুকুল, আমার রবীন্দ্রনাথ, আমার নজরুল, অভিনয় গুরুকুল, চলচ্চিত্র গুরুকুল, ফাইন আর্টস গুরুকুল, বাচিকশিল্প গুরুকুল, নৃত্য গুরুকুল, তবলা গুরুকুল, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গুরুকুল, লোকগান গুরুকুল, সঙ্গীত গুরুকুল।
প্লাটফর্মগুলো বর্তমানে শিল্প-সংস্কৃতির ১৪টি বিশেষায়িত শাখা নিয়ে কাজ করছে।
আয়োজকরা জানান, ইয়ুথ গ্লোবাল ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিটি প্লাটফরম থেকে বছরে একজন শিক্ষার্থী বা গবেষককে এগিয়ে দিতে বৃত্তি দেয়া হবে। এছাড়া ইয়ুথ গ্লোবালের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতি বছর ওই ১৪টি প্লাটফর্ম থেকে প্রতিটি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেয়া হবে।
ড. সীমা হামিদ জানান, এই প্লাটফর্মগুলো জন্য তার ফাউন্ডেশন এক্সেলেটর হিসেবে কাজ করবে। এগুলো এতদিন এসব বিষয়ের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছিল। তার ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় শিক্ষার পাশাপাশি তারা শিল্পগুলোর ভিত্তি মজবুত করা ও সম্প্রসারণের কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘এসব প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে যারা যথাযথ মেধা ও আগ্রহের পরিচয় দিতে পারবেন, তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রতি বছর আমরা স্কলারশিপের আওতায় নিয়ে আসব। অর্থাৎ মোট ১৪টি স্কলারশিপ আমরা দেব। স্কলারশিপ হতে পারে দেশে-বিদেশে অধিকতর তালিমের জন্য, হতে পারে নিবেদিত হয়ে রেয়াজ করার জন্য। আবার ওই বিষয়ে গবেষণার জন্যও হতে পারে।’
ড. সীমা হামিদ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, গুণী মানুষদের সম্মান জানানোর মাধ্যমে আরও গুণী মানুষ তৈরিতে উৎসাহ দেয়া যায়। ফলে আমরা তাদের সম্মাননাও দেব।’
১০২১ দিন আগে
মাগুরায় ৭১২ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এ উৎসব দুর্গার্পজা আগামী ১১ অক্টোবর (সোমবার) থেকে শুরু হবে। এ বছর মাগুরা জেলায় চারটি থানায় মোট ৭১২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদ।
গত বছর জেলায় ৬০২ মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। এ বছর ১১০টি মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালিমন্দিরে পূজা দিলেন মোদি
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে দেবীর বোধন আমন্ত্রণ অধিবাস দিয়ে শুরু হয়ে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার মহাবিজয়া উৎসবের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। এবার সদর উপজেলায় ২৩২টি, শ্রীপুরে ১৫৪, শালিখায় ১৭১, মহম্মদপুরে ১৩২ ও পৌরসভায় ২৩টিসহ জেলায় মোট ৭১২টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের মতো করোনার কারণে এবারও পূজায় কোনো আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা, কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হবে না। বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সরেজমিনে মাগুরা সদরের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে শিল্পীরা ইতোমধ্যে প্রতিমায় মাটির কাজ শেষ করেছেন। চলছে রঙ-তুলির কাজ।
প্রতিমা শিল্পী মুকুল বৈদ্য বলেন, ‘ব্যস্ত সময় পার করছি। বেশ কিছু প্রতিমার কাজ পেয়েছি; কিন্তু পারিশ্রমিক ভালো না। পূজামণ্ডপে চলছে ডেকোরেশনের কাজ। আগে যে প্রতিমা ৫০ হাজার টাকায় তৈরি করেছি, এবার ২৫ হাজার টাকায় তৈরি করতে হচ্ছে। সারাবছর আমাদের এই দুর্গাপূজার আয়ের টাকায় সংসার চলে।’
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ মিষ্টি বিনিময়
মাগুরা নতুন বাজার স্মৃতি সংঘের আয়োজক প্রকাশ সাহা বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও পূজার আয়োজন চলছে।’
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুণ্ডু বলেন, ‘মাগুরায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম- সবাই মিলেমিশে বাস করে। উৎসবে সবার একাত্বতা হলেও এবার পূজায় উৎসব আমেজ সীমিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।’
জেলার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, প্রতিটি মণ্ডপে আনসার, গ্রামপুলিশ, পূজা পরিষদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবে। এছাড়া শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল টিমসহ ডিবি পুলিশের টহল ও গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করবে।
১৫২৩ দিন আগে
মাগুরায় ঐতিহ্যবাহী ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের চর-যশোবন্তপুরে সোমবার বিকালে এ ঘোড়দৌড় মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭৩৯ দিন আগে
ঝালকাঠিতে ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঝালকাঠির নলছিটিতে ৫০টি ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৭৪১ দিন আগে