লক্ষ্যমাত্রা
আইএমএফ শর্ত শিথিল করলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নিট রিজার্ভের শর্ত শিথিল করা সত্ত্বেও ২০২৩ সালের শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ।
আইএমএফের ঋণের নথি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বছর শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদও আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে বাংলাদেশের অনুরোধে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেয় বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি। এমনকি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
আইএমএফের নতুন শর্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে প্রকৃত রিজার্ভ ১৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে ২০ দশমকি ১০ বিলিয়ন ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আর্থিক খাতের অংশীজনরা এই লক্ষ্য অর্জন হবে কি না তা নিশ্চিত করতে পারছে না।
প্রকৃত রিজার্ভ হলো- আইএমএফের এসডিআর, ব্যাংকের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে রাখা ডলার এবং এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (এসিইউ) বিলের জন্য জমা করা ডলারবাদ দিয়ে গণনা করা রিজার্ভ।
আরও পড়ুন: ৬৯০ মিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে শর্তারোপ আইএমএফের
এ ছাড়া রিজার্ভের আরও দুটি হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো মোট রিজার্ভ। আরেকটি আইএমএফ অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম হলো বিপিএম৬ এর অধীনে রক্ষণাবেক্ষণ করা রিজার্ভ।
২০২৩ সাল শেষে মোট বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ বিলিয়ন ডলারে। তবে আইএমএফ শুধু নিট বা সত্যিকার রিজার্ভ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, আইএমএফ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রিজার্ভ ১৭ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করেছে।
আইএমএফের সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর ইউএনবিকে বলেন, আইএমএফ নির্ধারিত আগের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েও পূরণ করা যায়নি, যা অপ্রত্যাশিত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিমালা পরিবর্তন না করলে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪ সালের মার্চে আইএমএফের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতে পারবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন মনসুর।
আরও পড়ুন: আইএমএফ ফর্মুলায় ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির পর বাংলাদেশের রিজার্ভ ২০.২৫ বিলিয়ন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক
ফরিদপুর চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু, লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার টন
ফরিদপুরের মধুখালীর ফরিদপুর চিনিকলের ২০২৩-২০২৪ (৩৮তম) আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকাল ৫টায় চিনিকলের কেইন কেরিয়ার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাট সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু
বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) সচিব ও অপারেটিং ডিরেক্টর ফসুমি চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মুহাম্মদ আনিস উজ্জামান, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম, চিনিকল শ্রমজীবি ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহিন মিয়া, সাধারন সম্পাদক মির্জা মাঝহারুল ইসলাম মিলন, চিনিকল আখচাষী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম খান, সাবেক শ্রমিক নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. হামিদুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত আখ চাষী হাজী মো. মোতালেব ফকির।
এই মৌসুমে ৫০ দিনে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে তিন হাজার ১২৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৪৮তম আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হলো। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বৃহত্তম চিনিকল জয়পুরহাট সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু
চিনিকল রক্ষায় জাতীয় সমাবেশ ২৭ ফেব্রুয়ারি
জুলাই-অক্টোবরে রাজস্ব আদায় ১৪.৩৬% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা পিছিয়ে: এনবিআর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুসারে, আগের অর্থবছরের ২০২২-২৩ একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ২০২৩-২৪ প্রথম চার মাসে রাজস্ব সংগ্রহ ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা হয়েছে।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজস্ব বোর্ডের তিনটি শাখা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং শুল্ক বাবদ ১ লাখ ০৩ হাজার ৯৭৬ টাকা সংগ্রহ করেছে। এটি চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ রাজস্ব বেড়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব বোর্ড ৯০ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল।
খাতভিত্তিক রাজস্ব আয় হয়েছে- শুল্ক থেকে ৩২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে ৪০ হাজার ০৪৮ দশমিক ৬২ কোটি টাকা এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত থেকে ৩১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা।
তবে এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। চার মাসে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ দশমিক ২৩ লাখ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত আয় বিবেচনায় করদাতার সংখ্যা ১ কোটিতে পৌঁছাতে হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা দুই মাস বাড়াল এনবিআর
জুলাই-আগস্টে রাজস্ব কমেছে ৪৮৭০ কোটি টাকা: এনবিআর
১০০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনুন: টিপু মুনশি
১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শুধু পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভর না করে পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার(৮ নভেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২০-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুন্সী বলেন, আরও অনেক পণ্য রপ্তানি করা যেতে পারে এবং দেশের শুধু তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা পণ্যবৈচিত্র্য আনতে পারে এবং আরও অনেক দেশ বাংলাদেশের রপ্তানি গন্তব্য হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘(এভাবে) সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দেশ সমৃদ্ধি লাভ করবে। রপ্তানি থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: কৃষি ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে রপ্তানি সম্প্রসারণ ও এলসি নিয়ে আলোচনা রাষ্ট্রদূতের
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল ব্যবসায়ীকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের ভিত্তিতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ২৮টি ক্যাটাগরিতে ৭৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি ট্রফি দিয়েছে ইপিবি।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন দ্বিগুণ ডেনিম রপ্তানি
আইএমএফ ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ, রাজস্ব সংগ্রহ, জ্বালানির স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমন্বয়সহ বেশ কয়েকটি লক্ষ্য শিথিল করেছে।
চলতি বছরের শুরুতে আইএমএফ ঋণ প্যাকেজের শর্ত হিসেবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী বছরের জুনের মধ্যে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
নিট ভিত্তিতে, এই পরিমাণ আরও হ্রাস পেয়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফকে ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আহ্বান বাংলাদেশের
এ অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
সেই অনুরোধ বিবেচনায় আইএমএফ লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী বছরের জুন শেষে ২০ বিলিয়ন ডলারে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ও বুধবার সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার পর আইএমএফ কিছু শর্তে নমনীয় হতে সম্মত হয়। সভায় সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। আইএমএফ মিশনের নেতৃত্বে ছিলেন আইএমএফের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইএমএফ দল
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
৩০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে রপ্তানি আয় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে দেশের রপ্তানি খাত বহুমুখীকরণ করতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে।
সোমবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদারগুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো’-ব্লিস-২০২৩’ উপলক্ষে লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে দ্রব্যমূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করার অন্যতম হাতিয়ার রপ্তানি বহুমুখীকরণ। বাংলাদেশ বর্তমানে এশিয়ার অন্যতম রপ্তানিমুখী দেশ হিসেবে বিশ্ববাজারে আবির্ভূত হয়েছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিদেশি ক্রেতা-ব্র্যান্ডস ও বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর জন্য উদ্ভাবনী নীতি প্রণয়ন ও ব্যবসাবান্ধব নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি আয়কারী চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ৩০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
টিপু মুনশি আরও বলেন, রপ্তানি আয়কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চামড়াজাত পণ্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ একটি নির্ভরযোগ্য গন্তব্য হিসেবে দ্রুত স্থান করে নিচ্ছে। বিশ্ববাজারে প্রবেশ করতে হবে। আমাদের পণ্যের কোয়ালিটি অনেক এগিয়ে গেছে যা আন্তর্জাতিক মান ধরে রেখেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের বিকল্প নেই। ব্লিস-২০২৩ এই লক্ষ্য অর্জনে অসামান্য অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের টোটাল রপ্তানির তৈরি পোশাক খাত ৮৩ ভাগ দখল করে আছে। কিন্তু এই খাত একদিনে এই জায়গায় আসেনি! চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের একটি বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি অনেক সম্ভাবনাময় একটি খাত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়া শিল্পখাতসহ সব রপ্তানি শিল্পগুলোর সমান নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয় পণ্যগুলোর আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং ও বিপণনে সুনির্দিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সময়োপযোগী নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আগামী ১২-১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি)-তে চতুর্থবারের মতো “বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো-ব্লিস-২০২৩” এর আয়োজন করতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিদেশি ব্যবসায়ীদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
আগামী জানুয়ারির মধ্যে টিসিবির স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ টন: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ টন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।
এসময় মন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ টন। যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। উৎপাদিত মাছ যাতে মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে।
২০২০ সালে মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছে। সমুদ্রসীমাসহ অন্যত্র যারা মাছ আহরণে সম্পৃক্ত তাদের প্রতিটি নৌযানে যান্ত্রিক পদ্ধতি সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে তাদের মনিটরিং এর আওতায় রাখা যায়। পাশাপাশি কোনো মৎস্য নৌযান দুর্ঘটনায় পতিত হলে তাদের অবস্থান জানার জন্যও এই পদ্ধতি কাজে লাগানো হচ্ছে। এভাবে মৎস্য খাতে ডিজিটালাইজড পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মৎস্য খাত গড়ে তোলা। স্মার্ট মৎস্য খাতে উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির প্রক্রিয়ায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখার লক্ষ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদন এবং দেশে ও বিদেশে সরবরাহের জন্য সরকার দেশে আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার তৈরি করেছে। পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, বিদেশ থেকে মাছের জন্য যেসব খাদ্য উপাদান আসে সেগুলোও এ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে মাছ উৎপাদন, আহরণ ও বিপণনে অস্বাস্থ্যকর কোনো উপাদান প্রবেশ করতে না পারে। শুধু মাছ উৎপাদন নয় বরং স্বাস্থ্যসম্মত ও খাবার উপযোগী নিরাপদ মাছ উৎপাদন সরকারের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
তিনি বলেন, আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি। এখন আমাদের লক্ষ্য দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
মন্ত্রী বলেন, মাছ উৎপাদনে বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের বহুমুখী ব্যবহারে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। মাছ থেকে চিপস, কেকসহ অন্যান্য মৎস্যজাত পণ্য তৈরি করলে মাছের ভোক্তাও বৃদ্ধি পাবে। এভাবে মাছের বহুমুখী ব্যবহার প্রক্রিয়াকে সরকার উৎসাহিত করছে।
তিনি বলেন, মাছের বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে যারা কাজ করতে চায় তাদের সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ সরকার নানারকম সহায়তা প্রদান করছে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর ৫২টি দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মাছ রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
মন্ত্রী বলেন, মাছের উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিদেশে রপ্তানি সবকিছু মিলে দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের উন্নয়নে, মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হলে খাবারের একটি বড় যোগান হয়। মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ করে মাছ। যারা মাছ উৎপাদন করেন তাদের বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে, তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছেন। গ্রামাঞ্চলে মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে।
আরও পড়ুন: চিংড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি সমস্যা সমাধানে সরকার বদ্ধপরিকর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে অভয়াশ্রম তৈরিসহ বিভিন্ন সময়ে সরকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে মৎস্যজীবীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার প্রণোদনা প্রদান, খাদ্য সহায়তা, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও উপকরণ সহায়তা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান একজন মৎস্যজীবীও যেন কষ্ট না পায়।
শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে। মিঠা পানি ও বদ্ধ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়,বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের জলসীমায় প্রচলিত ও অপ্রচলিত মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ৩৯ প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছ ফিরিয়ে এনেছে। দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য ময়মনসিংহে লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং মোট ৭২ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
এসময়ে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাতের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি চলতি অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের এই লক্ষ্যমাত্রার কথা জানান।
আরও পড়ুন: বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
২০২২-২৩ অর্থবছরের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, এই অর্থবছরে ৬৪ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করা হয়েছে। যা ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই অর্থবছরে ৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মূল্যের পণ্য এবং ৯ বিলিয়ন মূল্যের পরিষেবা রপ্তানি করা হয়েছিল এবং প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ৬৭ এবং ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ঘোষণার আগে মন্ত্রী বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়া রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তারা মন্ত্রীকে বলেন।
নতুন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার সময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সময় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনা করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সময় গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটও বিবেচনা করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষিত শ্রমশক্তি এবং পণ্যের সাশ্রয়ী মূল্যসহ বাংলাদেশের কিছু সুবিধা রয়েছে।
এছাড়াও, বিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তারা ভূ-রাজনৈতিক কারণে চীন থেকে শিল্প স্থানান্তর করছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ভিয়েতনামেও শ্রমিক সংকট রয়েছে। এসব সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৯.৯৩ শতাংশ
ভারতে নির্বাচন, হিলি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গেলো আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা বোরো ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
চাষীরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরোর আবাদ করেছেন। এখন জেলা জুড়ে ফসলের মাঠে মাঠে শুধু সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ আসতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া, সেচ, সার সংকট না থাকাও পোকামাকড়ের তেমন উপদ্রব না হওয়ায় এবং শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার বোরোর ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার চাষী মুঞ্জুর আলী বলেন, এবার তিনি আট বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। এ বছর বীজ ও সারের কোনো সংকট হয়নি। তবে কীটনাশকের দাম বেড়েছে। জমিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত রোগবালাই অনেক কম। আবহাওয়া ভালো আছে, তাপমাত্রা ভালো আছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আশা করা যায় ভলো ফলন হবে।
আরও পড়ুন: আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
আতাহার এলাকার আরেক বেরো চাষী আকবর আলী বলেন, গেলো আমনে দর মোটামুটি ভালো পেয়েছিলাম। এ কারণে এবার সাত বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছি। এবার বিদ্যুতের সমস্যা না থাকায় সেচের কোনো সমস্যা হয়নি। পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমনভাবে নাই। কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। তবে কীটনাশক ও বালাইনাশকের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে খরচ বেড়েছে। এখন ধানের অবস্থা খুব ভালো। কিছু কিছু জমিতে ধান গাছে শীষ আসতে শুরু করেছে। আশা করা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে এ এলাকার সব জমিতে পুরোপুরি শীষ ফুটে যাবে।
দক্ষিণশহর এলাকার চাষী আবেদ আলী বলেন, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান গাছের অবস্থা ভালো আছে। জমিতে এসে ধান গাছ দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। পোকামাকড় তুলনামূলকভাবে এবার অনেক কম। দুই বার কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। বর্তমানে জমিতে শীষ ফুটতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত এরকম আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করা যায় ভালো ফলন পাব।
নাচোল উপজেলার নেজমপুর এলাকার চাষী সেরাজুল ইসলাম জানান, তিনি তার তিন বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছেন। বর্তমানে শীষ আসতে শুরু করেছে। ধান গাছের চেহারা বেশ ভালো আছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। এমনটি শেষ পর্যন্ত থাকলে ভালো ফলন আশা করছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকারজানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪০৫ হেক্টর বেশি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার জেলায় দুই লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন বোরো চাল উৎপাদিত হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
আরও পড়ুন: খরা: খুলনায় আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা
আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে আমন আবাদে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তাকে পিছনে ফেলে চলমান আমন মৌসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয়েছে।
শনিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা হলো ৫৯ লাখ হেক্টর। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ মেট্রিক টন চাল। ২০২০-২১ সালে আমন মোট আবাদ হয়েছিল ৫৬ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল এক কোটি ৪৫ লাখ টন। গতবছর ২০২১-২২ সালে আবাদ হয়েছিল ৫৭ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এবংআর উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টন চাল।
এতে আরও বলা হয়েছে, খরা আর কম বৃষ্টিপাতের কারণে আমনে প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। সেচকাজে প্রায় ছয় লাখ ৭৪ হাজার গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, এলএলপিসহ বিভিন্ন সেচযন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। দেশে মোট সেচযন্ত্রের পরিমাণ ১৪ লাখেরও বেশি।সম্প্রতি ময়মনসিংহে এক কর্মসূচিতে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমন উৎপাদনে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমনে উৎপাদন গতবছরের তুলনায় বেশিও হতে পারে।
আরও পড়ুন: খরা-অনাবৃষ্টি: অবশেষে আমন আবাদে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রার অর্জন
ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষকদের খোলা চিঠি
জামানাত ছাড়াই কৃষককে ঋণ দেয়া যায়: কৃষিমন্ত্রী