১৪ এপ্রিল
রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখকে স্বাগত জানাচ্ছে ছায়ানট
১৪ এপ্রিল সকালে ঐতিহ্যবাহী ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের মাধ্যমে বাংলা নতুন ক্যালেন্ডার বর্ষকে স্বাগত জানানোর জন্য পরিচিত দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট শুক্রবার সকালে রাজধানীর রমনা পার্কে ঐতিহ্যবাহী পহেলা বৈশাখ সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করে।
সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে রমনার বটগাছের নিচে (রমনা বটমূল) উৎসব শুরু হয়, গান, আবৃত্তি এবং আরও অনেক কিছু দিয়ে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করার আগে সারেঙ্গীতে ট্যাবর-ভিত্তিক 'রাগ অহীর ভৈরব' সুরের আট মিনিটের পরিবেশনা দিয়ে।
অনুষ্ঠানে মোট ১২টি একক গান, দুটি আবৃত্তি এবং ১০টি কোরাস পরিবেশন করা হয়, যার মধ্যে প্রকৃতি, মানবতার প্রতি ভালোবাসা, আত্মশুদ্ধি ও দেশপ্রেম ছিল, যা বিশিষ্ট শিল্পীরা পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখের সূচনা
রাজধানীর প্রতিটি প্রান্ত থেকে শ্রোতারা উদযাপনের জন্য জড়ো হয়েছিল ভোর হওয়ার আগেই, গান গেয়ে এবং নৃত্য করে নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার বর্ষকে স্বাগত জানায়।
দলগতভাবে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতার অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে, এবং ছায়ানট তার ইউটিউব চ্যানেলেও উৎসবটি সরাসরি সম্প্রচার করছে https://www.youtube.com/@ChhayanautDigitalPlatform -এ।
সরকারের নিরাপত্তা প্রয়োগকারী ইউনিট এবং ছায়ানট কর্মীদের পাশাপাশি ১৩তম হুসারস ওপেন রোভার স্কাউট গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবকরা অনুষ্ঠানস্থলে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখে।
১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে প্রতি বছর রমনা পার্কে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী, অসামান্য সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনের জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং তারপর ২০২০-২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে। এছাড়াও, পবিত্র রমজান মাসে এই অনুষ্ঠানটি দ্বিতীয়বারের মতো উদযাপিত হয়েছে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে কাঙ্খিত এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উৎসবগুলোর মধ্যে একটি। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিয়মিত সাংস্কৃতিক উদযাপন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: 'এসো হে বৈশাখ': বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশ
উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
১ বছর আগে
১৪ এপ্রিল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু; প্রজ্ঞাপন জারি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় ১৪-২১ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন এই কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সোমবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, নতুন এই লকডাউনে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকবে কিন্তু কর্মকর্তা কর্মচারীদের যার যার কর্মস্থলেই থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: চলমান লকডাউন ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত: কাদের
সব ধরনের গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে।
তবে, জরুরী পরিষেবা, পণ্য বহন, উত্পাদনের ক্ষেত্র এই বিধি-নিষেধের আওতার বাইরে থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্ত সাপেক্ষে সকল শিল্প-কারখানা খোলা থাকবে।
এছাড়া, শপিংমল ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। রেস্তোরাঁ ও হোটেলসমূহ বেলা ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এবং টেকওয়ে বা অনলাইনে সেবা প্রদান করতে পারবে।
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন, আজ প্রজ্ঞাপন
ক্রমবর্ধমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণের কারণে সারাদেশে রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭৮ জন, যা এ পর্যন্ত দেশের একদিনের মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে গত শনিবার দেশে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেন ৭৭জন।
বর্তমানে দেশে করোনা সংক্রমণের কারণে মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৭৯৩ জনে এবং মোট মৃত্যুর হার ১.৪৫ শতাংশ।
গত বছরের মার্চের ১৮ তারিখ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যায়। এ বছরের জানুয়ারিতে ৫৬৮ জন,ফেব্রুয়ারিতে ২৮১ জন এবং মার্চে ৬৩৮ জন করোনা রোগী মারা যায়।
আরও পড়ুন: ভয়ংকর হচ্ছে করোনা: পরিপূর্ণ লকডাউনে যাচ্ছে বাংলাদেশ
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভাবে ৫ হাজার ৮১৯ জন রোগী সংক্রমিত হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৬ জনে।
করোনার সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকার ৫ এপ্রিল হতে ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করে। পরবর্তীতে দোকান ও বিপণিবিতান খোলা রাখার এবং সিটি করপোরেশন এলাকাতে যানচলাচলের অনুমতি দেয়।
৩ বছর আগে
১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন, আজ প্রজ্ঞাপন
করোনাভাইরাসের লাগাম টেনে ধরতে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আজ প্রজ্ঞাপন জারি করবে সরকার।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘দেশব্যাপী করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নতুনভাবে কঠোর লকডাউন আসছে।’
আরও পড়ুন: ভয়ংকর হচ্ছে করোনা: পরিপূর্ণ লকডাউনে যাচ্ছে বাংলাদেশ
‘আজ দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে। কঠোর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তাই আমরা ১৪ এপ্রিল থেকে পরিপূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি,’ বলেন তিনি।
১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হলে মাঝে ১২-১৩ এপ্রিল এই দুইদিনের বিষয়ে কী নির্দেশনা থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১২ ও ১৩ এপ্রিল বিষয়ে লকডাউন নিয়ে রবিবার যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে সেখানে সব নির্দেশনা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, 'এই অবস্থায় মানুষের ঘরে থাকাটাই জরুরি। মানুষ যদি এই কয়েকদিন ঘর থেকে না বের হয় এবং যে যেখানে আছে এভাবে থাকতে পারে তাহলেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার নিম্নমুখী হয়ে আসবে।'
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের চিন্তা করছে সরকার: কাদের
তিনি আরও বলেন, তাই মানুষকে কীভাবে ঘরে রাখা যায় সরকার সে ব্যবস্থা করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে গ্রাম, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনগুলোতে যারা নিম্ন আয়ের মানুষ এই লকডাউনে যাতে তাদের খাবারের সমস্যা না হয় এবং খাবারের জন্য যাতে ঘর থেকে বের হতে না হয় সে বিষয়ে সরকার আর্থিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এসব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মানুষ তো সরকারের নির্দশনা মানছে না। মানুষকে সরকারের নির্দশনা মানাতে সেনাবাহিনী মাঠে নামানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেনাবাহিনী নামানোর কোনো তথ্য এখনও আমি পাইনি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন। আর যদি এরকম কোনো সিদ্ধান্ত আসে তাহলে যথাসময়ে নিশ্চয়ই জানতে পারবেন।'
এর আগে শুক্রবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইউএনবিকে বলেছিলেন, ১৪ এপ্রিল থেকে জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ থাকবে। ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অত্যন্ত কঠোর লকডাউন আসছে।
আরও পড়ুন: সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি: বিশ্বে মৃত্যু ২৯ লাখ ১৪ হাজার ছাড়াল
তিনি আরও বলেন, জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ছাড়া সব অফিস ও গার্মেন্টস শিল্প কারখানা বন্ধ থাকবে। লকডাউনে কোনো ধরনের যানবাহন চলবে না।
২০ তারিখের পর কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পরিস্থিতি দেখে সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত ২০ তারিখের মধ্যেই জানিয়ে দেয়া হবে।'
করোনাভাইরাসের ২য় ঢেউয়ে সংক্রমণবৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশ শপিংমল, দোকান-পাট, হোটেল, রেস্তোরাঁসহ গনণপরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
সরকারের প্রজ্ঞাপনে ১১ দফার নির্দশনায় সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলার রাখার কথা বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী চলমান লকডাউনকে 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
কোভিড-১৯ আক্রান্ত সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার গণনপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করলেও সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত বুধবার থেকে ঢাকাসহ দেশের সকল সিটিতে বাস চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।
এরপর কয়েকদিন ধরে শপিংমল ও দোকান খুলে দেয়ার দাবিতে দোকান মালিক কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার লকডাউনের মধ্যেই ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শপিং ও দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয়।
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যা একদিনে সর্বোচ্চ।
এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৬৬১ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে আরও ৫ হাজার ৩৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৯৩৭ জনে।
সারাদেশে ২৪ ঘণ্টায় ২৪৩টি পরীক্ষাগারে ২৫ হাজার ১৮৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ৩৬ হাজার ৭৭টি নমুনা।
আরও পড়ুন: করোনায় একদিনে মৃত্যুতে আগের সব রেকর্ড চুরমার, শনাক্ত কমেছে
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২০.৪৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৮৩৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৮ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
৩ বছর আগে