পাকিস্তানি
গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকায় ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসী ছিল: কর্মকর্তারা
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ খান বলেছেন, গত সপ্তাহে গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরার নৌকায় আনুমানিক ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসীদে ছিলেন। এ ঘটনায় এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছে এবং মধ্য ভূমধ্যসাগরে ঘটা সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি এটি।
শুক্রবার দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে থাকা সংসদ সদস্যদের রানা সানাউল্লাহ খান জানান, ১৪ জুন নৌকাটি ডুবে যাওয়ার সময় সেটিতে আনুমানিক ৭০০ অভিবাসী ছিলেন। ১২ জন পাকিস্তানিসহ মাত্র ১০৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৮২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নৌকাটিতে মোট কতজন যাত্রী ছিল তা নিশ্চিত জানা যায়নি।
খান বলেন, নিখোঁজ পাকিস্তানিদের মধ্যে অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ‘এখন পর্যন্ত ২৮১টি পরিবার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবি করেচে যে ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে তাদের ছেলে বা প্রিয়জন থাকতে পারে।’
খানের মন্তব্য দেশটির আইনপ্রণেতাদের হতবাক করেছে এবং তিনি কথা বলার সময় তারা সবাই দুঃখ প্রকাশ করেন।
এই প্রথম দেশটির কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে নৌকাডুবির পর এত বেশি পাকিস্তানি নাগরিক নিখোঁজ হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণে নিহত ২৫, আহত ১৪৫
লাশ শনাক্ত করতে কর্মকর্তারা বর্তমানে এমন লোকদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন, যারা দাবি করছেন যে তাদের স্বজন ওই নৌকায় ছিলেন।
মাছ ধরার নৌকায় পাকিস্তানিদের অভিবাসনের ব্যবস্থা করা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তানের সরকার। এসব অধিবাসীদের অনেকেই ইউরোপে চাকরি খুঁজছিল। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই মামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অন্তত ১৭ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, ভুক্তভোগীরা পাচারকারীদের সমুদ্রযাত্রার জন্য ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক জলসীমায় ডুবে যাওয়ার আগে অভিবাসীদের বাঁচানোর চেষ্টা না করায় গ্রিস ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
যদিও এথেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন যে যাত্রীরা কোনো সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ইতালিতে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিল। কেননা জাহাজটির যাত্রীদের মধ্যে সন্দেহভাজন ৯জন মিশরীয় ব্যক্তিকে গ্রিসে একটি অপরাধমূলক সংগঠনে অংশ নেওয়া, হত্যাকাণ্ড এবং জাহাজ ভাঙার মতো অভিযোগের মুখোমুখি করা হয়েছে।
স্বজন হারানো পাকিস্তানিরা অন্যদেরকে তাদের প্রিয়জনকে অবৈধভাবে বিদেশে না পাঠাতে অনুরোধ করছেন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতের আশঙ্কা করা আলী রাজা নামক এক ব্যক্তির ভাই সাওয়ান রাজা বলেছেন, ‘পাকিস্তানে থেকে দুপুর বা রাতের খাবার না খেয়ে থাকাও, চোরাকারবারীদের সাহায্যে বিদেশে যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়ার পরিবর্তে অনেক ভালো।’
রাজাসহ অনেক নিখোঁজ অভিবাসী পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশ ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত শহরের বাসিন্দা।
পাকিস্তান তার রেকর্ড সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে এবং অনেক যুবক ভাল চাকরি খোঁজার জন্য ইউরোপে বিপজ্জনক ভ্রমণ করেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কয়লা খনি নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৫
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুনে নিহত ৭
১ বছর আগে
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-৩
লাশের স্তূপ
ডিসেম্বর মাসের চূড়ান্ত যুদ্ধের আগেই মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি হানাদারদের কার্যত বিভিন্ন সুরক্ষিত ক্যাম্পে কোণঠাসা করে রাখে। যৌথবাহিনী সীমান্ত পোস্টগুলো এড়িয়ে গভীরে আঘাত করার জন্য এগিয়ে যেতে থাকে। চৌদ্দগ্রামের থানা ক্যাম্প এড়িয়ে ভারতীয় বাহিনী এবং ১০ ইস্ট বেঙ্গলের যৌথ বাহিনী রাধানগর (ভারতীয় থানা) দিয়ে লাকসাম অভিমুখে যেতে থাকে। যুদ্ধকালীন সম্পূর্ণ সময় চৌদ্দগ্রামের আশপাশ এলাকার গ্রামগুলো জনমানব শুন্য ছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের পূর্ব দিকের লোকেরা ভারতে শরণার্থী হয়। সম্ভাব্য যুদ্ধের ভয়াবহতা এড়াতে সবাই আরও পশ্চিমে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। রাতের বেলায় ভয়াবহ গোলাগুলি। কোথায় কি হচ্ছে বুঝে উঠতে পারলাম না। সকাল হল। আলো হওয়ার পর দেখি আমরা চৌদ্দগ্রাম ছেড়ে পরিকুট (লাকসাম চৌদ্দগ্রাম থানার সীমা রেখা) এর কাছাকাছি। দেড়কোটা ও ছাতিয়ানি গ্রাম আমার পরিচিত। আমার খালার বাড়ি। ছোটবেলায় কত দূর মনে হতো। এটাই ছিল যুদ্ধক্ষেত্র।
পাকিস্তানি সেনাদের লাশের ছড়াছড়ি একের উপরে অনেকগুলো। এভাবে মারা গেলো কিভাবে? অনেকের গায়ে কাপড় নেই। কারো গায়ে সিভিল পোশাক। তারা কি সিভিল পোশাক পরে আপাতত জান বাচাতে ব্যস্ত ছিল? কারও মুখ ও চোয়াল ভাঙা, হাত পা নেই । গ্রামের দু’একজন লোকের দেখা পেলাম। বাকিরা কোথায় গেছে কেউ জানেনা। স্থানীয় লোকেরা লাশ দেখছে আর মন্তব্য করছে। এক জটলায় দেখলাম কয়েকটি উলঙ্গ লাশ নিয়ে কথা বার্তা হচ্ছে। একজন মন্তব্য করলো দেখ দেখ কয়েকটা লাশের পুরুষাঙ্গে গুলি লেগেছে। হারামির পুত মনে হয় মেয়েদের উপর বেশি অত্যাচার করেছে। এ কথা বলেই একটা বাঁশ দিয়ে লাশগুলোকে পেটাতে শুরু করলো। জানিনা তার হয়তো ক্ষোভ আছে। আমাদের কমান্ডার সামনে এগিয়ে যেতে বললেন। আবার শুরু হল চলা।
যুদ্ধবন্দী ১৯৭১
একে একে সীমান্ত শহরগুলো শত্রু মুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কুমিল্লা ও লাকসামে জয় বাংলার পতাকা উড়ছে। পথে ঘাটে লাশ ছড়িয়ে আছে। রাস্তাঘাট ভারতীয় সেনাদের তদারকিতে মেরামত চলছে। পাবলিককে ধরে ধরে এনে বাধ্যতামূলক শ্রমে লাগানো হচ্ছে। যুদ্ধের সাপ্লাই রুট ঠিক রাখতে রাস্তা, সেতু মেরামত জরুরি। গ্রামে গঞ্জের জঙ্গলে যে সব পাকিস্তানি সেনারা লুকিয়ে ছিল তারা বের হয়ে আসছে। জনতা ধরে এদের লাঠি পেটা করছে। যাহোক সচেতন জনগণের সহায়তায় তাদেরকে ভারতীয় সেনাদের হাতে তুলে দেয়া হল। কোন যুদ্ধবন্দী ক্যাম্প নেই। এদেরকে স্কুলের মাঠে বা কোন খোলা যায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। শীতের সকালের রোদ পোহাচ্ছে। পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। পালালে মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে জীবন দিতে হবে।
প্রশিক্ষণকালে আমাদেরকে শেখানো হয়েছিল যুদ্ধবন্দী কিভাবে হ্যানডলিং করতে হয়। তারা জেনেভা কনভেনশনের কি কি সুযোগ সুবিধা পাবে ইত্যাদি। তাদেরকে কিভাবে নিরাপত্তা দিতে হবে। এক ঘরে কতজন থাকবে, তাদের খাবার কি হবে তারা দৈনন্দিন কি কি কাজ করবে ইত্যাদি। যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা অনেক দেশে অনেক বড় বড় স্থাপনা তৈরি হয়েছিল। আমাদের খুব কাছেই থাইল্যান্ডে ‘ব্রিজ অন দ্য রিভার কাওয়াই’ ব্রিটিশ যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। মস্কোর রেড স্কয়ারে যে দর্শনীয় গির্জা আছে সেগুলোও যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা নির্মিত। এরূপ আরও অনেক আছে।
যুদ্ধবন্দীদের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিয়ে যাওয়ারও নিয়ম আছে। বিশেষ করে নিরাপত্তার বিবেচনায়। গাড়ী, ট্রেন, জাহাজ ও পদব্রজে যাওয়ার ভিন্ন ভিন্ন নিরাপত্তা নির্দেশ আছে। পদব্রজে গমনকাররীরা দলবদ্ধ হয়ে মার্চ করে এগোতে থাকে। কয়েকজন অস্ত্র হাতে চারিদিকে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে। এরূপ একটি দলের সাথে আমরা যাচ্ছিলাম। পাকিস্তানি সেনারা ক্লান্ত ও পরাজয়ের গ্লানিতে মৌন। এদের সাথে সাথে উৎসুক জনতাও চলছে। কয়েকজন যুবক এসে তাদের মারধর করতে চাইছে। এক বুড়ো বটি নিয়ে এগিয়ে আসছে আর বলছে, এই বেটা আমার সব ডাব মুরগি খেয়ে শেষ করেছে। আমার মুরগির টাকা দে, ছাগলের টাকা দে। ভারতীয় সেনারা ওদেরকে সরিয়ে দিচ্ছে। যুদ্ধবন্দীরা মার্চ করে এগিয়ে যাচ্ছে। পেছনের গ্রামের লোকেরা সরে যাচ্ছে। আবার নতুন গ্রামের লোকেরা যোগ দিচ্ছে। কিছু উৎসাহী যুবকেরা দৌড়ে এসে যুদ্ধবন্দীদের কাছে এসে জোর গলায় জয় বাংলা বলে সুর তুলছে আর দূর থেকে থুথু দিচ্ছে। এমন সময় যুদ্ধবন্দীদের মাঝে থেকে এক সেনা বলে উঠলো, ‘কেয়া জয় বাংলা? ইয়েতো হিন্দুস্তান হো গিয়া’।
লেখক: কলামিস্ট কর্নেল (অব.) মো. শাহ জাহান মোল্লা
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-১
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি- ২
২ বছর আগে
জামায়াত ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি দেশের কল্যানের কথা কখনো ভাবেনি: পলক
জামায়াত ও হেফাজতের মত প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী দেশের উন্নয়ন বা কল্যানের কথা কখনোই ভাবেনি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, তারা সবসময় ধর্মকে সামনে এনে বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষদের বিভ্রান্ত করেছে। পাকিস্তানিরা যখন ষড়যন্ত্র করে বাঙ্গালীদের দমাতে পারেনি, তখন বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়াশীল কোন অপশক্তি ধর্মকে অপব্যবহার করে সফল হবে না।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সাইবার নিরাপত্তা হাব হিসেবে গড়ে তোলা হবে: পলক
সোমবার দুপুরে সিংড়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলার ১০৮টি ওয়ার্ডের তৃণমুল নেতাদের ও ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আরও পড়ুন: ‘ট্যুর ফর সোশ্যাল গুডস’ পর্যটন খাতকে জাগিয়ে তুলবে: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
এসময় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিকে অনুসরণ করে দেশ ও জাতির কল্যানে দলীয় নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ২০২১ সালের মধ্যে অনলাইনে আসবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক ৪০টি সার্ভিস: পলক
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস সহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে
ছাপড়া ঘরে বীরাঙ্গনা চারুবালার বসবাস, দেখতে গেলেন ওসি
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের দুর্গম চরাঞ্চলের রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে অসুস্থ বীরাঙ্গনা চারুবালাকে (৬৭) দেখতে গেলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ সময় তিনি অসুস্থ চারুবালার হাতে বিভিন্ন রকমের ফল তুলে দেন।
৩ বছর আগে