দাবদাহ
গ্রীষ্মের দাবদাহে জাপানে হিট স্ট্রোকের সতর্কতা জারি
তীব্র গ্রীষ্মকালীন দাবদাহে বিপর্যস্ত অবস্থায় জাপানবাসী। তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ায় টোকিওসহ জাপানের অনেক জায়গায় বছরের প্রথম হিট স্ট্রোক সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উচ্চ আর্দ্রতার কারণে তাপজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি আরও বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণের সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন।
জেএমএ টোকিও অঞ্চলসহ ১৫টি এলাকায় হিট স্ট্রোক সতর্কতা জারি করে লোকজনকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন এবং বাইরের কার্যক্রম এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
জাপানে ‘দুর্যোগ স্তরের গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা’ বিরাজমান যার ফলে রোদের পরিমাণ ও গরমের তীব্রতাও অনেক বেশি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মধ্য টোকিওর তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। অন্যদিকে শিজুওকা, গুনমা ও তোচিগি অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। যা বছরের প্রথম তাপপ্রবাহের আভাস দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জেএমএ।
শিজুওকায় ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছর জাপানে সর্বোচ্চ এবং ১৯৪০ সালে পর্যবেক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে রেকর্ড।
শুক্রবার, কান্তো থেকে কিউশু পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহের, রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশ এবং উচ্চ তাপমাত্রার পূর্বাভাস দিয়েছে জেএমএ।
অন্যদিকে পশ্চিম জাপানের তোহোকু, হোকুরিকু ও জাপান সাগরে দুপুরের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্ষা মৌসুমের কারণে শনিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আর রবিবার কান্তো থেকে কিউশুর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আবারও তাপমাত্রা বেড়ে যাবে।
৫ মাস আগে
দাবদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই
দিন দিন তাপমাত্রার পারদ বেড়েই চলেছে চুয়াডাঙ্গায়। তাপদাহে ওষ্ঠাগত জনজীবন। ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
শনিবার দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ২৫ বছরের ইতিহাসে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৮ ডিগ্রির রেকর্ড, সতর্কতা জারি
এদিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণীরা। চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ।
জেলাটিতে গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র দাবদাহ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, টানা ১৯ দিন (৬ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত) চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৯ ডিগ্রির মধ্যে উঠা নামা করছিল।
শুক্রবার (২৪ মে) দুপুর ৩ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ।
শনিবার (২৫ মে) দুপুর ৩ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা উঠেছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ।
ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা মো. আক্তার হোসেন জানান, কয়েকদিন বৃষ্টির পর আবার তাপমাত্রা বাড়ছে। আজ ভ্যাপসা গরমে ডাব বেশি বিক্রি হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় শহীদ চত্বর মোড় ঘুরে দেখা যায়, জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া মানুষের মুখে ক্লান্তির ছাপ। অনেকেই ক্লান্তি দূর করতে ভিড় জমাচ্ছে শরবতের দোকানে। এক গ্লাস শরবতে মিলছে ক্ষণিকের প্রশান্তি।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, গত ৬ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত ৩৪ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস মধ্যে উঠানামা করছিল।
সবশেষ শনিবার (২৫ মে) দুপুর ৩ টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ। বাতাসে জলীয় বাষ্পর পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গার শুক্রবারের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি
৪৩ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে গেল পাবনার তাপমাত্রা!
৬ মাস আগে
দাবদাহ মোকাবিলায় দরিদ্র-অসহায় মানুষের পাশে আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা পূজা উদযাপন পরিষদ
দাবদাহ মোকাবিলায় দরিদ্র-অসহায় মানুষের পাশে আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা পূজা উদযাপন পরিষদ।
রবিবার (৫ মে) আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা পূজা উদযাপন পরিষদের মানবিক ‘শীতল ছায়া’ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন- আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
আরও পড়ুন: মৌলিক শিক্ষা অধিকার: প্রাথমিক থেকে নিম্ন-মাধ্যমিক স্তরে উত্তরণে কাজ করবে দুই মন্ত্রণালয়
এদিকে তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় ‘শীতল ছায়া’ কর্মসূচির মাধ্যমে শতাধিক রিকশাচালক, গরিব, দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে খাবার স্যালাইন, পানি, ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস ও পাউরুটি বিতরণ করা হয়েছে।
প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, দেশে চলমান তীব্র দাবদাহে অসহায় দিনমজুর, রিকশাওয়ালা ও খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা পূজা উদযাপন পরিষদ আনন্দিত।
তিনি অসহায় ও দরিদ্রদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ইউজিসি'র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক জনাব মো. ওমর ফারুখ, পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. দূর্গা রানী সরকার, ড. অশোক কুমার রায়, নন্দলাল দাস, বিষ্ণু মল্লিক, শিবানন্দ শীল, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র দাস।
উল্লেখ্য, আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা পূজা উদযাপন পরিষদ ২০২২ সাল থেকে বাণী অর্চনা উদযাপনের পাশাপাশি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের হামলার নিন্দা জবিরিইউর
৭ মাস আগে
৪৩ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে গেল পাবনার তাপমাত্রা!
দিন যতোই যাচ্ছে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। অসহনীয় এই দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
পাবনা জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রার তাপপ্রবাহ।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর বাতাসের আদ্রর্তা ছিল ১৫ শতাংশ।
এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। আর বাতাসের আদ্রর্তা ছিল ১২ শতাংশ।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন বলেন, ঈশ্বরদীতে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। এ তাপমাত্রা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে জেলায় অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২৫ বছরের ইতিহাসে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৮ ডিগ্রির রেকর্ড, সতর্কতা জারি
৭ মাস আগে
চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
চলতি বছরের দাবদাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিএনএন এক রিপোর্টে জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এই সংখ্যা চরম আবহাওয়ার কারণে প্রাণ হারানোর প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম।
দেশটির তিনটি রাজ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এসব রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আগস্টের প্রথম দিকে অ্যারিজোনার পিমা কাউন্টিতে ৬৪ জন মারা গেছেন; অ্যারিজোনায় ম্যারিকোপা কাউন্টিতে, ৩৯ জন মারা গেছেন; নেভাদার ক্লার্ক কাউন্টিতে ২৬ জন মারা গেছেন; টেক্সাসের ওয়েব কাউন্টিতে ১১ জন মারা গেছেন এবং এবং টেক্সাসের হ্যারিস কাউন্টিতে সাত জন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে ৪০০টিরও বেশি
এছাড়াও দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ ও মধ্যপশ্চিমের কিছু অংশেও তাপজনিত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ম্যারিকোপা কাউন্টিতে কমপক্ষে ৩৯ জনের তাপজনিত মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও মৃত্যুর সম্ভাব্য তাপ-সম্পর্কিত কারণ উদঘাটনে আরও ৩১২টি মৃত্যু এখনও তদন্তাধীন।
সিএনএন-এর মতে, জুনের শেষের দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং জুলাই মাস পর্যন্ত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের বেশিরভাগ অংশে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে উপকূলে ভেসে এসেছে কয়েক হাজার মরা মাছ
যুক্তরাষ্ট্রে হাইস্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ২, আহত ৫
১ বছর আগে
তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয়
গ্রীষ্ম শুরুর পর থেকে প্রতিটি দিন পূর্বাপেক্ষা বেশি দাবদাহ নিয়ে হাজির হয়। জুলাইয়ের শুরুতে তা নিতান্ত প্রকট আকার ধারণ করে। এমনকি এই মাত্রা প্রতি বছর বেরেই চলেছে। তাই গরমের এই তীব্রতা আগের তুলনায় অধিক গুরুত্ব সহকারে নেওয়া আবশ্যক। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাপের সংস্পর্শে আশা ব্যক্তির শরীরের বাইরের অংশের সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভেতরের প্রত্যঙ্গগুলোও। জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই এই বিপজ্জনক তাপের সংস্পর্শে থাকতে হয়। অসহনীয় গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচবার জন্য করণীসমূহ নিয়েই আজকের স্বাস্থ্য কথন।
প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক এড়িয়ে চলার উপায়
শরীরকে যথেষ্ট পরিমাণে হাইড্রেটেড রাখা
সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যাদের খুব বেশি ঘরের বাইরে থাকার প্রয়োজন হয়, তাদের শরীরকে ভালভাবে হাইড্রেটেড করে বাইরে বের হওয়ার পরিকল্পনা করতে হবে। এখানে নিছক এক গ্লাস পানি পান যথেষ্ট নয়। সারা দিন হাইড্রেটেড থাকা মানে সাথে সব সময় পানির বোতল রাখতে হবে।
যখনি ঘামের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে তখনি সাথে সাথে স্পোর্টস ড্রিঙ্কে চুমুক দেয়া উচিত। এতে ঘামের কারণে শরীরের হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইটগুলোকে পুনরায় পূরণ করা যায়। পানি পানের সাথে এমনভাবে অভ্যস্ত হতে হবে যে, পানির পিপাসা পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
উষ্ণ মৌসুমের উপযুক্ত পোশাক পরিধান
মৌসুম অনুযায়ী পোশাক পরিধানটা সুস্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার জন্য খুবই দরকারি। আঁটসাঁট, রঙিন এবং একাধিক স্তরের মোট পোশাক শরীর থেকে ঘামকে বাষ্পীভূত করা কঠিন করে তুলতে পারে। ফলে শরীরের অতিরিক্ত তাপ মুক্তি বাধাগ্রস্ত হয়। আশপাশের অপরিবর্তিত আর্দ্রতা শরীরে ঘামের হওয়ার প্রবণতাকে বাড়াতে থাকে। পোশাক এমনিতেই গরম থাকে আর ঘাম কাপড়কে আর্দ্র করে উষ্ণতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে শরীরের তাপমাত্রা ভারসাম্য হারিয়ে কেবল অস্বস্তি বাড়াতে থাকে।
তাই প্রচন্ড গরম আবহাওয়াতে সাদা, অথবা যে কোনো হাল্কা রঙের এবং সুতি ফেব্রিকের কাপড় পড়া উচিত। এতে শরীরের অতিরিক্ত তাপ বের করে দিতে সুবিধা হয়। মুখমন্ডল রক্ষার জন্য একটি চওড়া হ্যাট পরা উত্তম।
শরীরের উন্মুক্ত জায়গাগুলোকে সূর্য থেকে বাঁচানোর জন্য প্রচুর ঘাম-প্রতিরোধী সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
পড়ুন: মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত গরম স্থান থেকে দূরে থাকা
প্রচন্ড গরমের সময় সব জায়গাতেই তাপের ভয়াবহতা বিরাজ করে। এরপরেও যতটা সম্ভব তীব্র তাপ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা শরীরকে স্বাভাবিক রাখার কার্যকরি উপায় হতে পারে। ইঞ্জিনযুক্ত যে কোন গাড়ি তাপের এক বিরাট উৎস। তাই যতটা পারা যায় এ ধরনের যানবাহনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। হোক সেটা ইঞ্জিন চালুরত অথবা পার্ক করা, উভয় ক্ষেত্রেই গাড়িটি বিপজ্জনক।
রাস্তা দিয়ে হাটার সময় ছায়ার নিচ দিয়ে চলাচল করা উচিত। যতটা সম্ভব অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। সম্ভব হলে দিনের অধিকাংশ সময় বিশেষ করে উষ্ণতম সময়গুলো তথা- দুপুরবেলায় বাড়ির ভিতরে থাকতে হবে। সারাটা সময় বাইরে থাকতে হলে ঘন ঘন বিরতি নিয়ে কাজ করতে হবে।
ঘরের ভেতরে থাকার ক্ষেত্রে ঘরটাকেও ঠান্ডা রাখার কথা বিবেচনা করা উচিত। টেবিল ফ্যানের সামনে কতগুলো বরফ রেখে এবং ভেজা কাপড় দিয়ে ঘরের মেঝে মুছে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা যেতে পারে। রান্নার সময় এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখা আবশ্যক।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
ভারী খাবার এড়িয়ে চলা
যে কোন খাবার গ্রহণের সময় শরীরের তাপ তৈরি হয়। খাবারে পরিমাণের সাথে সমানুপাতিক হারে শরীরে তাপের যোগান হতে থাকে। তাই দুপুর এমনকি রাতের খাবারও যারা ভরপেট খান তাদেরকে সাবধান হতে হবে। ছায়ায় বা ফ্যানের নিচে বসে খাওয়া-দাওয়া করলেও এর ব্যতিক্রম হয় না। এই তাপ বৃদ্ধিটা ভেতর থেকে শরীরকে জ্বালিয়ে দিতে থাকে।
খাবারের পর হেটে হেটে হজমের চিন্তা করলেও লাভ নেই। উল্টো হাটার ফলে শরীরের তাপ আরো বেড়ে যাবে। আবার অনেক কম খাবার খাওয়া শরীরকে দুর্বল করে তুলবে। তাই কোন এক বেলা একদম ভরপেট খাবার না খেয়ে অল্প করে ৩ ঘন্টা পর পর খাবার খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকবে।
জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া
প্রচন্ড গরমের কারণে অনেক সুঠাম দেহের অধিকারিও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারে। এগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি, প্রচন্ড মাথাব্যথা প্রভৃতি লক্ষণগুলো গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও রয়েছে হঠাৎ বিভ্রান্তি বা হ্যালুসিনেশন, হাঁটতে অসুবিধা, খিঁচুনি এবং মূর্ছা যাওয়া।
পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
এ অবস্থায় অতিরিক্ত গরম কমানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে হিট স্ট্রোক চরম আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি খুব খারাপ অবস্থায় এটি জীবনের জন্য হুমকিতে পরিণত হয়। এতে মস্তিষ্কসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ক্ষতি সাধন হতে পারে। তাই হিট স্ট্রোকের এই অবস্থায় অবশ্যই অবিলম্বে ডাক্তারের সরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় খাবার
ফলের সালাদ
শরীরে খাবারের চাহিদা, মুখে স্বাদের ভিন্নতা এবং শরীরকে পুনরায় হাইড্রেটিং-এর জন্য সেরা খাবার হচ্ছে ফলের সালাদ। বিভিন্ন রসাল ফলের ককটেল দারুণ একটি খাবার হতে পারে ব্রেকফাস্ট অথবা সন্ধ্যার স্ন্যাকসে।
তরমুজে পানির পরিমাণ শতকরা ৯০ ভাগ, কমলায় ৮৭ ভাগ, আর শসাতে ৯৫ ভাগ।
পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
এক কাপ শসার টুকরোতে মাত্র ১৬ ক্যালোরি থাকে, যা ভারী খাবারের ঝামেলা থেকে অনেক অনেক দূরে। আপেল গরমের মাসগুলোতে দেহকে সতেজ রাখার গ্যারান্টিযুক্ত।
টমেটো শুধুমাত্র একটি সুস্বাদু খাবারই নয়, এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। টমেটোতে থাকা লাইকোপিন মুলত একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এই ফলগুলোর সংমিশ্রণে তৈরি স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ডিশ-ই যথেষ্ট গরমের অস্বস্তির সাথে যুদ্ধ করতে।
পাতাযুক্ত সবুজ শাক
পালং শাকের মত এক গাঢ় সবুজ শাকেই পানি আছে শতকরা ৯২ ভাগ। এটি যা ঘামের মাধ্যমে নষ্ট হয়ে যাওয়া ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মত খনিজের ঘাটতি পূরন করে। পুদিনা আরও প্রাণবন্ত ভেষজগুলোর মধ্যে একটি। তাজা পুদিনা কয়েক শতাব্দী ধরে গরম আবহাওয়ায় মানুষকে শীতল করতে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। কখনো চা-এ বা ঠান্ডা পানীয়তে কখনো বা সালাদে অভিজাত উপস্থিতি পাওয়া যায় এই পাতাটির।
পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
ডাবের পানি
ডাবের পানি ইলেক্ট্রোলাইট দিয়ে ভরা থাকে যা শরীরকে হাইড্রেটেড এবং ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এই পাওয়ার পানীয়টি তাপকে পরাস্ত করে সারাদিন ধরে শরীরকে সক্রিয় রাখে। এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতেও কাজে লাগে। গরমের সময়ে পাকস্থলি সংক্রান্ত জটিলতায় অনেককে হরহামেশাই ভুগতে দেখা যায়।
মাছ
মাংসের উপর নির্ভর না করে ডায়েটে প্রোটিনের চাহিদা পূরণে মাছের রাখা উত্তম। ভাল ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ মাংসের একটি উপযুক্ত বিকল্প। এটি আহারের পর কম তাপ উৎপন্ন করে, তাই অস্বস্তিকরভাবে ভরপেট বোধ হবে না, যা সাধারণত মুরগি এবং গো-মাংস খাবারের সময় অনুভূত হয়।
দই
দই গরমের সময় জনপ্রিয় কারণ এতে জলের পরিমাণ বেশি এবং শীতল প্রভাব রয়েছে। দই অন্ত্রের উপকারি ব্যাকটেরিয়ার অনূকুলে থাকে, যা শরীরকে খাদ্যের বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। উষ্ণ মৌসুমে ঘরের বাইরে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বেড়ে যায়। এখানে দই একটি প্রতিরোধী খাবার হিসেবে কাজ করে।
পড়ুন: এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কার্যকরী উপায়
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এই মিষ্টান্নটি প্রচন্ড উষ্ণতায় ঠান্ডা পানীয়ের বিকল্প হিসেবে কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন বি এবং অন্ত্র-বান্ধব ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ দই শরীরকে ভেতর থেকে প্রশান্তি দেয়। বিভিন্ন ফলের সাথে মিশিয়ে দইয়ে দারুণ স্বাদ যোগ করা যেতে পারে।
পরিশিষ্ট
প্রচন্ড দাবদাহে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে উপরোক্ত উপায়গুলো অনেকটাই স্বাস্থ্যের অনুকূলে আসতে পারে। যদিও মানুষ সৃষ্ট কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতার দরুণ প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজের ও আশেপাশের মানুষগুলোর সুরক্ষায় প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশেষ করে যারা তুলনামুলক ভাবে বেশি ঝুঁকিতে আছেন তাদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। এদের মধ্যে আছেন শিশু, বৃদ্ধ, স্থুলকায় ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় অসুস্থ মানুষেরা। পারস্পরিক যত্নশীল হওয়ার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তীব্র গরমে দুর্ভোগকে কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
২ বছর আগে
খুলনাঞ্চলে যেসব কারণে বোরোর আশানুরূপ ফলন হয়নি
টানা আট মাস অনাবৃষ্টি, মাত্রাতিরিক্ত দাবদাহ, গরম বাতাসের ঝড়ো হাওয়া ও প্রয়োজনীয় সেচ সুবিধা না থাকায় খুলনায় এবার বোরোর আশানুরূপ ফলন হয়নি। ধান মাড়াইয়ের পর ১০ শতাংশ চিটে পাওয়া যাচ্ছে। উৎপাদনে বেশি ঘাটতি হয়েছে হাইব্রীড জাতের।
কর্তৃপক্ষ আশাবাদী ছিলেন মৌসুমে খুলনা জেলায় ২ লাখ ৫৭ হাজার মেট্টিক টন ধান উৎপাদিত হবে, তা হয়নি।
খুলনা জেলায় এ মৌসুমে ৫৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল। আবাদ হয় ৬০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে ডুমুরিয়া জেলায়, ২১ হাজার হেক্টর জমিতে।
আরও পড়ুন: কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে ধান কাটলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক
কৃষি কর্তৃপক্ষ ২ লাখ ৫৭ হাজার মেট্টিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। ইতোমধ্যেই ধান কাটা শেষ হয়েছে। অল্প-স্বল্প মাড়াই বাকি। প্রতি হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের ধান ৪.৯৬ মেট্টিক টন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা থাকলেও উৎপাদন হয়েছে ৪.৯৫ মেট্টিক টন।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার
খুলনার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) মো. আতিকুল ইসলাম জানান, টানা আট মাস অনাবৃষ্টি। বোরো সেচের ওপরেই নির্ভরশীল। বীজতলা থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত ভূ-গর্ভের পানির ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। কালবৈশাখীর ঝড়ে ১১০ হেক্টর জমির বোরো আক্রান্ত হয়। দাপদাহ জনিত কারণে ১৯ হেক্টর জমির বোরো ফসল ক্ষতি হয়। পুরো মৌসুমে বোরো ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহনশীল। গত মাসে খুলনায় ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা বয়ে যায়। সবমিলিয়ে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি। উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে আগাম জাতের বোরো ধান কাটার উদ্বোধন করলেন কৃষিমন্ত্রী
জেলায় হাইব্রীড জাতের বোরো আবাদের পরিমাণ বেশি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে। জেলার হাট-বাজারগুলোতে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
৩ বছর আগে