ভিডিও গেম
পোকেমন গো’র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিয়ানটিক এক-চতুর্থাংশ কর্মী ছাঁটাই করবে
পোকেমন গো ভিডিও গেমের নির্মাতা কোম্পানি নিয়ান্টিক ইনকরপোরেটেড জানিয়েছে, মহামারি চলাকালীন সময়ে ডাউনলোড বেড়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে গেমিং শিল্পে চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা তাদের এক চতুর্থাংশ কর্মী ছাঁটাই করবে।
কোম্পানিটি লস অ্যাঞ্জেলেসে এর স্টুডিও-ও বন্ধ করবে এবং দুটি গেম বাতিল করবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিয়ান্টিকের প্রধান নির্বাহী জন হ্যাঙ্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যয়কে রাজস্বের চেয়ে দ্রুত বাড়তে দিয়েছি।’
পোকেমন গো ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়ার পরে এটি বিশ্বব্যাপী আলোচনা ও আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
সে সময় প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল জানিয়েছিল যে অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) গেমটি এক সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোডে অ্যাপ স্টোরের রেকর্ড ভেঙেছিল।
আরও পড়ুন: গুগল স্ট্রিমিং গেম পরিষেবা বন্ধ করবে আগামী জানুয়ারিতে
হ্যাঙ্ক বলেন, ‘শীর্ষ অগ্রাধিকার হলো পোকেমন গো-কে পরিচ্ছন্ন রাখা এবং চিরদিনের জন্য একটি গেম হিসেবে এগিয়ে নেওয়া।’
তিনি আরও বলেন যে গেমটি চালু করার পর স্মার্টফোন মার্কেটে বেশ ভিড় বেড়েছে, তাছাড়া অ্যাপ স্টোর ও বিজ্ঞাপনের পরিবর্তনের কারণে বড় পরিসরে নতুন গেম ছাড়া এখন অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ছাঁটাইয়ের ফলে নিয়ান্টিকের গেম প্ল্যাটটফর্ম টিমসহ মোট ২৩০ জন কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
কোম্পানিটি এর এনবিএ অল-ওয়ার্ল্ড গেমটিও বাতিল করবে, যা জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এর মার্ভেল ওয়ার্ল্ড অব হিরোস শিরোনামের গেমের বাজারজাত বন্ধ করবে।
সূত্র: বিবিসি
আরও পড়ুন: পোকেমনে আর দেখা যাবে না অ্যাশ-পিকাচুর বন্ধুত্ব
ইন্টারেক্টিভ গেমিং প্ল্যাটফর্ম ‘হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ উদ্বোধন করলেন পলক
১ বছর আগে
রেললাইনে বসে ভিডিও গেম: ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ১, আহত ২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেললাইনে বসে মোবাইলে গেমস খেলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে রিমঝিম (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই জন।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে পুনিয়াউট এলাকার রেললাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রিমঝিম জেলা শহরের সরকার পাড়া এলাকার মনজু মিয়ার ছেলে এবং আহত আরাফাত (২২) সরকারপাড়া এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে ও দিপু মিয়া (২৫) একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুসহ নিহত ৩
তারা তিনজনই রাজমিস্ত্রি সহকারী হিসাবে কাজ করত।
এদিকে, নিহত রিমঝিমের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা লিপি বেগম।
তিনি জানান, রিমঝিমের বাবা ১০ বছর আগে মারা গেছে। এরপর থেকেই বহু কষ্টে চলছিল তাদের পরিবার। রিমঝিম বড় হয়ে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। দুই ভাই, এক বোন ও নানীসহ পাঁচজনের পরিবারটি চালিয়ে আসছিল সে।
লিপি বেগম বলেন, শনিবারও প্রতিদিনের মত দিনভর কাজ শেষ করে সন্ধ্যার পর সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তাকে মোবাইলে গেম খেলতে বার বার বারণ করেছি। সে কথা শুনল না। আমাদের অজান্তের সে ওইখানে গিয়ে বন্ধুদের নিয়ে মোবাইলে গেইমস খেলছিল।
এছাড়াও এলাকাবাসী জানান, প্রায় সময়ই রেললাইনে কাটা পড়ে অনেকের মৃত্যু হয়। তাই সকলকে সচেতন হতে হবে। সে সঙ্গে রেল লাইনের নিরাপত্তায় রেলওয়ে পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, রাতে পুনিয়াউট এলাকায় তিন যুবক রেললাইনে বসে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তারা ট্রেন আসার বিষয়টি খেয়াল করতে পারেননি। এসময় তিনজনই ট্রেনে কাটা পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই রিমঝিম মারা যান। অন্য দু’জন পা ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে আহত দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
এছাড়া এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে রেল সড়কের ওপর অহেতুক আড্ডা, গেম খেলা বন্ধে পুলিশি তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে। সেসঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন: মোবাইলে কথা বলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু
১ বছর আগে
যে ভিডিও গেমগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিফলক
প্রযুক্তির বিকাশ ও সাহিত্য-সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমে সৃজনশীলতার চর্চার ফলে বাংলাদেশের ইতিহাস সমৃদ্ধ জ্ঞান ক্রমাগত সহজলভ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মের কাছে। তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গেমিংগুলো। বাংলাদেশে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নশীলতায় এক অমূল্য সংযোজন স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট। এতে বাংলাদেশি গেমের নিজস্বতার পাশাপাশি এ দেশের বাংলা ভাষাভাষি নতুন প্রজন্মের উপর প্রতিফলিত হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সরকারি পদক্ষেপের সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য হারে বেসরকারি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো রীতিমত প্রতিযোগিতা করে গেম তৈরি ও ক্রমান্বয়ে সেগুলোর মানোন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই ধরনের কয়েকটি গেম নিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের ফিচারের আলোচ্য বিষয়বস্তু।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাতটি ভিডিও গেম
হিরো’স অফ সেভেন্টি ওয়ান (Heroes of 71)
হিরো’স অফ সেভেন্টি ওয়ান গেমটি মুক্তি পায় ২০১৫ সাল। গেমটির গেমপ্লে এবং বিশদ কাহিনী বিন্যাস প্রচন্ড গেমপ্রিয়দের পাশাপাশি যারা সাধারণত গেম খেলায় অভ্যস্ত নন তাদেরকেও সমানভাবে আকৃষ্ট করেছিল।
১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার বরিশাল বিভাগের একটি কাল্পনিক গ্রামকে কেন্দ্র করে গেমটির কাহিনী অগ্রসর হয়। গেমটির ইউজাররা গ্রামের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের জন্য মুক্তিবাহিনীর সদস্য হিসাবে খেলতে পারে। গেমের খেলোয়াড়দের প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানি নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি শিবিরকে রক্ষা করার জন্য একটি আউটপোস্টে নিযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
ব্যতিক্রমী আবহ সঙ্গীতের সাথে দারুণ গ্রাফিক্সের মেলবন্ধনে আকর্ষণীয় গেম হিরো’স অফ সেভেন্টি ওয়ান। শান্ত এবং নিরিবিলি গ্রামীণ ল্যান্ডস্কেপ এবং যুদ্ধক্ষেত্রের ভয়াবহতা গেমটিতে সুন্দরভাবে দৃশ্যায়ন করা হয়েছে।
দুর্দন্ত গেমপ্লে ও অত্যাশ্চর্য গ্রাফিক্সের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ায় গেমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইন্ডফিশার এর আরও দুটি সিক্যুয়াল বের করে।
হিরো’স অফ সেভেন্টি ওয়ান: রিটালিয়েশান (Heroes of 71: Retalliation)
২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিরো’স অফ সেভেন্টি ওয়ান: রিটালিয়েশান-ই হচ্ছে ২০১৫ সালের সেই হিরো’স অফ সেভেন্টি ওয়ানের দ্বিতীয় সংস্করণ। এর গেমপ্লে প্রথমটির চেয়ে কোন অংশে কম নয়। বরং এখানে নতুন বৈশিষ্ট্য হিসেবে যুক্ত করা হয় একজন নারী চরিত্র। এটি ছিলো বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গেমে গেরিলা সদস্য হিসেবে প্রথম নারী চরিত্রের আবির্ভাব। পূর্বে যেখানে একমাত্র লক্ষ্য ছিল একটি ফাঁড়ি রক্ষা করা, এখানে তার জায়গায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে একাধিক মিশন।
আরও পড়ুন: সুবর্ণ আইজাক বারী: বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ অধ্যাপক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ‘বিস্ময় বালক’
৩ বছর আগে
অ্যানিহিলেশন: বাংলদেশের প্রথম ব্যাটেল রয়েল গেমের ইতিবৃত্ত
আপনি যদি একজন গেম প্রিয় হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এতদিনে জেনে গেছেন বাংলাদেশের তৈরী প্রথম ব্যাটেল রয়েল গেম অ্যানিহিলেশন এর কথা। গত ৫ জানুয়ারি গেমটির একটি টিজার প্রকাশের পর থেকে অনলাইন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় গেমটি। রাজধানী ঢাকা সহ বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলগুলো মূল লোকেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গেমটিতে।
তবে সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হলো, গেমটির একটি প্রধান চরিত্র হিসেবে ফিচার করা হয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা জগতের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহকে। ফার্স্ট পার্সন শ্যুটার গেমটির প্রধান ডেভেলপার তরুণ গেমার ও প্রোগ্রামার সিয়াম হাসান উদয়।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী পাওয়া যাচ্ছে সুপার অ্যামোলেড গেমিং ফোন রিয়েলমি ৮
চলুন, বাংলাদেশের গেম শিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা এই গেমটির ব্যাপারে আরো কিছু জেনে নিই।
প্রথম ব্যাটেল রয়েল গেমটির শেষ খবর
গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিস এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যানারে গেমটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল গত ৩০ এপ্রিল। অ্যানিহিলেশন কমিউনিটি ৩ দিন আগে গুগল প্লে স্টোরে গেমটি সাবমিটও করেছে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গুগল থেকে জানানো হয়, গেমটি প্রকাশে আরো দেরি হবে। সুতরাং মাল্টিপ্লেয়ার ভিডিও গেম প্রিয়দের গেমটি খেলার জন্য বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
অ্যানিহিলেশন গেমের পটভূমি
গেমটির গল্প মূলত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর। সময় ২০৩০ সাল। বাংলাদেশের সাহসী সৈনিকরা একত্রে আন্দোলন গড়ে তুলছে ‘কাউন্সিল’ নামের একটি গুপ্ত সংগঠনের বিরুদ্ধে। বহিঃবিশ্ব সংক্রান্ত কিছু অদ্ভূত ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সবাই বুঝতে পারে ঘটনা শুধু কাউন্সিলের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। এর ভেতরে রয়েছে ভয়ঙ্কর এক বহুজাগতিক ধ্বংসের বীজ।
অতঃপর চূড়ান্তভাবে ঢাকা শহরে এলিয়েনদের অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে থাকে কাহিনী। মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সম্পন্ন এই এলিয়েনরা পারস্পরিক সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিতে থাকে শহরবাসীকে। মানুষ ক্রমশ এগিয়ে যায় গৃহযুদ্ধের দিকে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সাহসী সৈনিকরা এলিয়েনদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। নেপথ্যে থাকা এলিয়েনদের পরিচালনাকারী অদৃশ্য চরিত্র, একজন গেম ভক্ত হিসেবে আপনার রোমাঞ্চের খোরাক যোগাবে।
সব মিলিয়ে গেমটি করোনা পরবর্তী পৃথিবীর সম্ভাব্য সব রকম ভয়াবহতা তুলে ধরবে গেমারদের সামনে।
গেমপ্লের ফিচারসমূহ
ফার্স্ট পার্সন শ্যুটার এই গেমটিতে মোট ৮টি চরিত্র থেকে আপনার পছন্দ মত একজন ফাইটার বাছাই করতে পারবেন সরাসরি এলিয়েনদের সাথে লড়াই করার জন্য। প্রত্যেক হিরোকে ক্রমান্বয়ে লড়তে হবে ৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে। এই ৮টি চরিত্রের মাঝেই প্রধান হিসেবে থাকছে সালমান শাহ চরিত্রটি। ইতিমধ্যে অবশ্যই আপনি গেম ট্রেইলার দেখে একটি বায়োনিক মানুষ বা রোবট চরিত্রের সাথে প্রিয় নায়কের সাদৃশ্যতা ধরতে পেরেছেন। রোবটটির চেহারা, গলার লকেট, পরণের পোশাক, চোখের গ্লাস, চুলের এবং হাটার স্টাইল প্রভৃতির সাথে অকপটেই সালমান শাহের ভক্তরা মিল খুঁজে পেয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা শহর সহ কিছু গ্রাম্য এলাকা ও আন্ডারগ্রাউন্ড দেখতে পাবেন। প্রতিটি ইভেন্টের জন্য দেখানো কাহিনীগুলোর মাধ্যমে পরবর্তীতে আপনি গেম খেলায় উৎসাহিত হবেন।
গেমটির একাধিক সিজন প্রকাশ হবে। প্রথমটা সিজন জিরো নামে আপনার নিকট পুরো প্লটটা তুলে ধরবে। ৮টি চরিত্রের প্রত্যেকের-ই থাকবে কিছু না কিছু ভালো এবং দুর্বল দিক। উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র, হিরোদের সাথে গল্পের সম্পর্ক সব কিছু বিস্তারিত জানতে পারবেন প্রাথমিক গেমিং মুডগুলোর সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যমে। ফার্স্ট পার্সন শ্যুটার হিসেবে যেহেতু আপনি একজন হিরোকে বাছাই করবেন, তাই আপনার প্রতিটি সিন্ধান্তের ওপর নির্ভর করে এগোতে থাকবে গেমের কাহিনীসূত্র।
সিজন ওয়ান এ আপনাকে সম্মুখীন হতে হবে এলিয়েনদের সাথে সংঘর্ষের। সিজন জিরোতে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি এখানে ব্যবহার করতে পারবেন মারণাত্মক অস্ত্র, লোকেশন ম্যাপ, প্রয়োজনীয় স্কিল।
যাই হোক, গেমটি বাংলাদেশের এলাকা নির্ভর হলেও আপনি গেমটিকে বাংলা ভাষায় পাচ্ছেন না। এর মূল কারণ হলো, নির্মাতারা গেমটিকে বিশ্বব্যাপী বাজারজাত করার উদ্দেশ্য নিয়েই বানিয়েছে। আপনি বাংলা ভাষায় গেমটির ডিজিটাল ব্যানার, পোস্টার পেতে পারেন। কিন্তু গেমের চরিত্রগুলো এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কণ্ঠগুলো সব গতানুগতিকভাবে ইংরেজিতেই কথা বলবে।
গেমটির খেলোয়ার এবং ডেভেলপারদের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে পুরো গেমপ্লে এখনো উন্নত করা হচ্ছে, সংযোজিত হচ্ছে নতুন ফিচার। প্রতিযোগিতামূলক এই গেমটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। গেমটিকে পরিপূর্ণ ভাবে সব রকম টেকনিক্যাল সমস্যা মুক্ত করে বাজারে ছাড়ার চিন্তা ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের।
আরও পড়ুন: ঈদে আসছে স্লিম এবং ট্রেন্ডি রিয়েলমি ৮, সি২৫ এবং গেম প্রো কিট
ইন্টারনেট কানেকশনের সাথে লাইভ গেমটি খেলায় আপনার আনন্দ আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিবে।
ডেক্সটপ কম্পিউটার ছাড়াও আপনি অ্যানিহিলেশন গেমটি খেলতে পারবেন স্টিম, প্লেস্টেশন কন্সোল্স, এক্সবক্স, অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইসগুলোতে। অবশ্য প্লেস্টেশন, এবং এক্সবক্সে গেমটির সহজলভ্যতা নির্ভর করছে গেমারদের চাহিদার ওপর। চাহিদা বাড়লে ক্রাইসিস এন্টারটেইনমেন্ট অবশ্য দু’টি প্ল্যাটফর্মের জন্যই গেমটি প্রকাশ করবে।
গেমটির নেপথ্যে যারা রয়েছেন
গেমটির প্রধান ডেভেলপার সিয়াম হাসান উদয়। তিনি বর্তমানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এ সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রিতে পড়ছেন। এর আগে তিনি রাইজআপ ল্যাব্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের গেম ডেভেলপার ছিলেন।
গেমটির ফাইন্যান্স এবং মার্কেটিং ডিরেক্টর শাদমান সিয়ান। গেম ম্যানেজমেন্টে আছেন ফারুক ইমরান। অ্যানিহিলেশনের থ্রিডি ও লেয়ার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন নাহিদ উল কবির। আর প্রোগ্রামার হিসেবে আছেন মিসবাহ হাবিব।
গেমটি বাংলাদেশের গেমারদের নিকট চূড়ান্তভাবে উন্মুক্ত হবে সহকারী প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিস এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যানারে।
গেম শিল্পে অ্যানিহিলেশনের সম্ভাবনা
টিজার এবং ট্রেইলার বের হবার পর পরই গেমটি অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। অনেকেই দাবী করেছেন যে, গেমটি দুর্বোধ্য, গেমপ্লে নিম্নমানের। গেমপ্লে থেকে ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবেশটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ট্রেইলারে। চরিত্র ও স্কিলগুলোর আধিক্য নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
আরও পড়ুন: বাজারে আসছে রিয়েলমি নারজো ৩০এ, শুরু হচ্ছে গেমিং চ্যাম্পিয়নশিপ
কিন্তু সবকিছুর ওপরে বাংলাদেশ এখনো এই শিল্পে হামাগুড়ি দিয়ে এগোচ্ছে। সে দিক থেকে ভাবলে, এরকম উচ্চ গ্রাফিক্স কোয়ালিটি সম্পন্ন গেম দেশের জন্য এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। ২০০২ সালে ঢাকা রেসিং, ২০০৪ সালে অগ্নিশিখা, ২০১১ সালে রেড ক্লাউড-৭১, ২০১২ সালে লিবারেশন-৭১, এভাবে গেমিংয়ের জগতে বাংলাদেশের প্রাথমিক যাত্রা অব্যাহত থাকে। সে সময় থেকে এখন অ্যানিহিলেশনের আবির্ভাবে নিমেষেই স্বীকার করা যায় যে, বাংলাদেশে গেম ডেভেলপমেন্ট সঠিক দিকেই এগোচ্ছে। এখন এই গেমটিকে টেক্কা দিতে হচ্ছে কল অফ ডিউটি, ফ্রি ফায়ার-এর মত জনপ্রিয় গেমগুলোকে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বাংলাদেশের গেমগুলো বিশ্বমানের প্রথম সাড়িতে অবস্থান করবে বলে আশা করা যায়। সে সূত্রে অ্যানিহিলেশনকে বিশ্বমানের গেমের মাইলস্টোনের অগ্রদূত বলা যেতে পারে। নিঃসন্দেহে তা বাংলাদেশে গেম শিল্পে আরো নতুনত্ব আনার পথিকৃৎ হয়ে থাকবে।
শেষাংশ
বাংলাদেশের গেম ডেভেলপমেন্ট নিয়ে বৃহৎ পরিসরে কাজ না হলেও অ্যানিহিলেশন অগ্রদূত হিসেবে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। ফলশ্রুতিতে দেশের সফ্টওয়্যার নিয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পাবে পেশাগতভাবে অনুশীলনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম।
আরও পড়ুন: অবরুদ্ধ সময়ে কিশোর-কিশোরীদের জন্য ফ্রি অনলাইন গেমস
শুধু তাই নয়, গেম শিল্পে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে তাদের দেশের বাইরে যেতে হবে না। বরং গেমের সমৃদ্ধশালী গ্রাহকদের সেবা সুনিশ্চিত করতে নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির মাধ্যমে সুযোগ বাড়বে নতুন কর্মসংস্থানের। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব মানচিত্রে গেম ডেভেলপার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নিজের জায়গা করে নিতে পারবে।
৩ বছর আগে