ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেললাইনে বসে মোবাইলে গেমস খেলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে রিমঝিম (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই জন।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে পুনিয়াউট এলাকার রেললাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রিমঝিম জেলা শহরের সরকার পাড়া এলাকার মনজু মিয়ার ছেলে এবং আহত আরাফাত (২২) সরকারপাড়া এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে ও দিপু মিয়া (২৫) একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুসহ নিহত ৩
তারা তিনজনই রাজমিস্ত্রি সহকারী হিসাবে কাজ করত।
এদিকে, নিহত রিমঝিমের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা লিপি বেগম।
তিনি জানান, রিমঝিমের বাবা ১০ বছর আগে মারা গেছে। এরপর থেকেই বহু কষ্টে চলছিল তাদের পরিবার। রিমঝিম বড় হয়ে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। দুই ভাই, এক বোন ও নানীসহ পাঁচজনের পরিবারটি চালিয়ে আসছিল সে।
লিপি বেগম বলেন, শনিবারও প্রতিদিনের মত দিনভর কাজ শেষ করে সন্ধ্যার পর সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তাকে মোবাইলে গেম খেলতে বার বার বারণ করেছি। সে কথা শুনল না। আমাদের অজান্তের সে ওইখানে গিয়ে বন্ধুদের নিয়ে মোবাইলে গেইমস খেলছিল।
এছাড়াও এলাকাবাসী জানান, প্রায় সময়ই রেললাইনে কাটা পড়ে অনেকের মৃত্যু হয়। তাই সকলকে সচেতন হতে হবে। সে সঙ্গে রেল লাইনের নিরাপত্তায় রেলওয়ে পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, রাতে পুনিয়াউট এলাকায় তিন যুবক রেললাইনে বসে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তারা ট্রেন আসার বিষয়টি খেয়াল করতে পারেননি। এসময় তিনজনই ট্রেনে কাটা পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই রিমঝিম মারা যান। অন্য দু’জন পা ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে আহত দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
এছাড়া এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে রেল সড়কের ওপর অহেতুক আড্ডা, গেম খেলা বন্ধে পুলিশি তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে। সেসঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন: মোবাইলে কথা বলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু